হাতি তাড়ানো শুরু হয়েছে। তবে তাতে কাজের কাজ হচ্ছে না। বনকর্মীরা হাতির দলটিকে পাঠানোর চেষ্টা করছেন, সে দিকে দলটি যাচ্ছে না। ফলে, বন-কর্তাদের চিন্তা বাড়ছে। মেদিনীপুরের ডিএফও বিজয় সালিমঠ বলেন, “হাতি তাড়ানো শুরু হয়েছে। তবে দলটি যে দিকে যাওয়ার কথা সে দিকে যাচ্ছে না। সঙ্গে সদ্যোজাত থাকায় দলটি ধীরে ধীরে এগোচ্ছে।”
ইতিমধ্যে হাতির হানায় শালবনি এবং মেদিনীপুর সদর ব্লক এলাকায় প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির কথাও মানছেন ডিএফও। তিনি বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির হিসেব চলছে। তবে উদ্বেগের কিছু নেই। হাতির দলের গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়েছে।” হাতির হানায় ফসলের ক্ষতি হওয়ায় রবিবারই মৌপাল বিট অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় গ্রামবাসীরা। যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এ বার দলমার হাতির দল সপ্তাহ দুয়েক আগে ওড়িশা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে ঢুকে পড়ে। বেশ কয়েক দিন ধরে বড় দলটি পিড়াকাটা রেঞ্জের কালীবাসার জঙ্গলে ছিল। এই এলাকাটি মৌপাল বিটের অন্তর্গত। দলে প্রায় ৭০টি হাতি রয়েছে। সোমবার ভোরে দলটি ভাদুতলা রেঞ্জের আমশোলে চলে আসে। এ দিন দুপুরে এখান থেকেই হাতি তাড়ানো শুরু হয়। তবে দলটি বিশেষ এগোয়নি।
বন দফতর সূত্রে খবর, আশির দশক থেকে হাতি আসা শুরু হয়েছিল এ রাজ্যে। তখন শুধুমাত্র ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী এলাকা কাঁকড়াঝোর ও ময়ূরঝর্না পর্যন্ত হাতি আসত। ধীরে ধীরে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে হাতি জেলার অন্যত্রও ঢুকতে শুরু করে। এক সময়ে দাবি উঠেছিল, দলমা থেকে আসা হাতির দলকে সীমান্তেই আটকে দিতে হবে। এই দাবি সামনে রেখে আন্দোলনও হয়। তখন সরকার ময়ূরঝর্নায় একটি প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যেখানে হাতির খাবার উপযোগী গাছ লাগানো হবে, পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু, প্রকল্প সে ভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে, ফি বছর দলমা থেকে হাতির দল আসে। সঙ্গে প্রতি বছর যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাতির সংখ্যা। অবশ্য, এখন রেসিডেন্সিয়াল হাতির সংখ্যাও বেড়েছে। মাঝেমধ্যে রেসিডেন্সিয়াল হাতি বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়। কেন দলটির গতিবিধি দেখে বন-কর্তাদের চিন্তা বাড়ছে? হাতির দলটি গোয়ালতোড়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বনকর্মীরা অবশ্য দলটিকে লালগড়ের দিকে পাঠানোর চেষ্টা করছেন। কারণ, গোয়ালতোড়ের দিকে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। এক বন-কর্তার কথায়, “দেখে মনে হচ্ছে, দলটি গোয়ালতোড়ের দিকে এগোতে চাইছে। কিন্তু, আমরা দলটিতে লালগড়ের দিকে পাঠানোর চেষ্টা করছি। গোয়ালতোড়ের দিকে গেলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হবে। শষ্যহানি আরও বাড়বে।”
মেদিনীপুরের ডিএফও বিজয়বাবু বলেন, “সপ্তাহ খানেক ধরে হাতির দল একই এলাকায় রয়েছে। তাই ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ দিন দুপুর থেকে হাতি তাড়ানো শুরু হয়েছে। এর ফলে, অন্তত দলটি বুঝতে পারবে আর এই এলাকায় থাকা ওদের ঠিক হবে না। এ বার অন্যত্র সরে যেতে হবে। দলটি লালগড়-রামগড়ের দিকে গেলেই ভাল। এটাই রুট। দলটিকে ওই দিকে পাঠানোরই চেষ্টা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy