বিশ্বের বিরলতম পাস্তা অবলুপ্তির পথে। ছবি: সংগৃহীত।
ইটালির পদ পাস্তা। সেই পাস্তাই বহু দিন ঢুকে পড়েছে ভারতের হেঁশেলেও। পাস্তা বলতে অধিকাংশ ভারতবাসী বোঝেন প্যাঁচানো, নলের মতো কিম্বা বাঁকানো আকৃতির স্প্যাগেটি, ম্যাকারনি অথবা পেনে দিয়ে তৈরি পদ। মাংসময় ঝাল স্বাদের স্প্যাগেটি বোলোনিজ় থেকে পেনে অ্যারাবিয়াতা— বিভিন্ন রকমের পাস্তার সঙ্গে বঙ্গজন আজ পরিচিত। কিন্তু, ‘সু ফিলেনডিউ’ নামটি শুনেছেন কখনও?
তথ্য বলছে, পাস্তার জগতে এ নাকি বিরলতম। ইটালির সার্ডিনিয়া ‘সু ফিলেনডিউ’-এর আঁতুড়ঘর। তবে গড়পড়তা পাস্তার মতো মোটেই এটি দেখতে নয়। বরং তাতে শিল্পনৈপুণ্য স্পষ্ট। দেখলে মনে হবে, এটি যেন একটি পাতলা কাপড়ের খণ্ড। নিখুঁত তার বুনন।
বিরলতম কেন!
ভূমধ্যসাগরের মধ্যে একটি দ্বীপ সার্ডিনিয়া। ইটালির এই দ্বীপটিই নাকি ‘সু ফিলেনডিউ’-এর জন্মস্থল। এই পাস্তা তৈরির পদ্ধতি একটি নির্দিষ্ট পরিবারেই সীমাবদ্ধ। সেই পরিবারের হাতেগোনা সদস্যই এই শিক্ষা পেয়েছেন।
‘সু ফিলেনডিউ’-এর অর্থ হল ‘ঈশ্বরের সুতো’। নামেই বোঝা যায়, কত সূক্ষ্ম এটি তৈরির প্রণালী। খাবার সময় মনে হয়, এক টুকরো বস্ত্র যেন ব্রথে ভিজিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, ওই দ্বীপের একটি মাত্র পরিবার ৩০০ বছর ধরে এই পাস্তা বানিয়ে আসছে। কোনও যন্ত্রের ব্যবহার নেই, নিখুঁত হাতের কাজে তৈরি হয় পাস্তা তথা ‘বস্ত্র’-এর বুনন।
বিবিসির তথ্যসূত্র বলছে, সার্ডিনিয়ার ওই পরিবারের মহিলারাই শুধু এই রন্ধনশৈলীর গোপন কথা জনেন। বংশপরম্পরায় তাঁরা হাতেকলমে কাজটি শেখেন। নিউরো শহরের ৬২ বছরের পাওলা আব্রেইনি প্রতি দিন পাস্তাটি বানান। আর এই কাজ জানেন তাঁর পরিবারের দুই মহিলা।
আর কেউ পারেন না কেন?
বাইরের কেউ কেউ যে এই শিল্পকর্ম আয়ত্ত করার চেষ্টা করেননি, তা নয়। তবে পারেননি। জানা গিয়েছে, ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল গিয়ে এই পাস্তা বানানোর যন্ত্র তৈরির চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। আর এক বিখ্যাত শেফ ওই পরিবারে গিয়ে পাস্তা তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ২ ঘণ্টা চেষ্টার পরে তিনিও রণে ভঙ্গ দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘২০ বছর পাস্তা তৈরির পরেও এমনটা হবে, ভাবতে পারিনি।’’ কারও কারও বক্তব্য, আসল পদ্ধতি ওই পরিবার বাইরের কাউকে শেখাতে চায় না।
তৈরি হয় কী ভাবে?
সুজি দিয়ে এই পাস্তা তৈরি হয়। প্রথমে সুজি মেখে নেওয়া হয়, তার পর হাতের নিপুণ কারিকুরিতে তা দিয়ে সুতোর মতো পাতলা জিনিস তৈরি করা হয়। সেই সুতোই নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সাজিয়ে তৈরি হয় ‘সু ফিলেনডিউ’। জিনিসটি তৈরির পর রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয়।
খাওয়ার পদ্ধতি
ভেড়া বা পাঁঠার মাংসের ব্রথ-এর সঙ্গে পাস্তাটি খাওয়া হয়। ব্রথের মধ্যে পাতলা এই টুকরো দিলে মনে হয় যেন একখণ্ড বস্ত্র তাতে ভিজিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy