ভিন্ন স্বাদের ইলিশেই ভরবে মন। ছবি: দ্য স্পাইস অফ ওডিসি।
গরমাগরম ভাত, ইলিশের তেল ,ইলিশ মাছ ভাজা, কাঁচালঙ্কা আর নুন— দুপুরের খাবারে আর কিছু না থাকলেও এ দিয়েই পুরো ভাত খাওয়া হয়ে যাবে বাঙালির। বর্ষার মরসুম শুরু হলেই ইলিশপ্রেমে হাবুডুবু বাঙালির মন। কাঁচালঙ্কা দিয়ে পাতলা ঝোল আর সর্ষের ঝালের বাইরেও যে ইলিশের বিশাল দুনিয়া রয়েছে, তার স্বাদ ইতিমধ্যেই চেখে দেখতে শুরু করেছে শহরবাসী। বর্ষা শুরু হতেই শহরের বিভিন্ন রেস্তরাঁ ভোজনরসিকদের জন্য ইলিশ উৎসবের আয়োজন করছে। কোথাও খাঁটি বাঙালি, তো কোথাও ইলিশের রেসিপিতে বিলিতি ‘টুইস্ট’। ইলিশের মন ভোলানো স্বাদ ও ঘ্রাণের মাঝে একমাত্র বাধা মাছের কাঁটাগুলিও এখন রান্নার আগেই সরিয়ে ফেলার রেওয়াজ শুরু করেছে রেস্তরাঁগুলি। ইলিশ খেতে গিয়ে কোনও রকম ঝক্কি নয়, বোন-লেস ইলিশেই মজেছে শহরের জেন-ওয়াই। তবে বড় বড় রেস্তরাঁতে ইলিশ উৎসবে খেতে যাওয়া মানেই অনেক খরচ। যদি বাজার থেকে ভাল ইলিশ কিনে এনে বাড়িতেই ইলিশ উৎসবের আয়োজন করা যায়, তা হলে কেমন হয়? পাঁচ-ছ’জন খেতে গেলে খরচ পড়বে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা কিংবা তারও বেশি।
বাড়িতে ৫-৬ জন বন্ধুবন্ধব নিয়ে ইলিশ উৎসবের আয়োজন করতে হলে বাজার থেকে দু’টি বড় ইলিশ আনলেই হয়ে যাবে। বাজারে এখন মাঝারি মাপের ইলিশের দাম কিলো প্রতি ১২০০ টাকার কাছাকাছি। আর মাছের ওজন বেশি হলে কিলো প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। বাজার থেকে ভাল ইলিশ তো কিনলেন, তবে উৎসবের আয়োজনে কী কী বানানো যায় ভাবছেন? রইল ইলিশের কয়েকটি রেসিপির সন্ধান।
ইলিশের পোলাও: দইয়ে পেঁয়াজবাটা, রসুনবাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, পরিমাণ মতো নুন ও আধ কাপ নারকেল দুধ ভাল করে মিশিয়ে এর মধ্যে ইলিশ মাছ মাখিয়ে রাখুন। মিনিট কুড়ি পরে কড়াইয়ে সামান্য তেল গরম করে মাছগুলি দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। সামান্য নুন দিয়ে বাসমতী চালের ঝরঝরে ভাত বানিয়ে নিন। একটি পাত্রে ভাতগুলি ঢেলে তার উপরে সাজিয়ে দিন আগে থেকে কষিয়ে রাখা মাছগুলি। উপরে কাঁচালঙ্কা, ঘি আর ভাজা পেঁয়াজ ছড়িয়ে দিন। এ বার হাঁড়ির মুখ আটার ঘন মিশ্রণ দিয়ে ভাল করে আটকে দিন, যাতে হাঁড়ির ভাপ বাইরে বেরোতে না পারে। ১০ মিনিট মতো মাঝারি আঁচে রাখুন। তৈরি হয়ে যাবে ইলিশ পোলাও।
মালাই ইলিশ: প্রথমে নুন হলুদ লাগিয়ে মাছগুলি অল্প ভেজে নিন। ওই তেলেই তেজপাতা, ছোট এলাচ ফোড়ন দিয়ে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পর পেঁয়াজ, আদা, রসুন বাটা ও কাঁচালঙ্কা দিয়ে অল্প আঁচে ভাল করে কষাতে থাকুন। এর পরে হলুদ, জিরে ও ধনে গুড়ো দিয়ে পরিমাণ মতো নুন মিষ্টি দিন। এ বার মিহি করে বাটা কাজু ও ফেটানো টক দই দিয়ে ভাল করে কষিয়ে অল্প জল দিন। গ্রেভি তৈরি হয়ে গেলে একে একে মাছগুলি দিয়ে দিন। গরম ভাত কিংবা পোলাওয়ের সঙ্গে ইলিশের কোর্মা জমবে ভাল।
ইলিশ ভাজা: ইলিশ উৎসবে মাছ ভাজা থাকবে না তা কখনও হয়? তবে সাধারণ ভাজা নয়, তাতেও থাকুক বাংলাদেশের টুইস্ট। নুন, হলুদ আর লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে মাছগুলি মাখিয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিন। এ বার খানিকটা তেল তুলে রেখে বাকি তেলে পেঁয়াজ আর কাঁচালঙ্কা লাল লাল করে ভেজে নিন। ইলিশ মাছের উপর ভাজা পেঁয়াজ ছড়িয়ে তেল দিয়ে পরিবেশন করুন।
লেজ ভর্তা: ইলিশের লেজা কিন্তু কেউই খুব একটা খেতে চান না। লেজাগুলি নুন-হলুদ মাখিয়ে কড়া করে ভেজে নিন। এ বার ভাজা মাছ শিলনোড়া দিয়ে গুঁড়ো গুঁড়ো করে কাঁটা বার করে নিন। মাছের সঙ্গে কাঁচা সর্ষের তেল, নুন, কাঁচালঙ্কা, পেঁয়াজকুচি, লঙ্কাগুঁড়ো আর সামান্য গোলমরিচের গুঁড়ো, লেবুর রস দিয়ে মেকে নিন। সাদা ভাতের সঙ্গে জমে যাবে লেজ ভর্তা।
ইলিশ পাতুরি: পাতুরি ছাড়া ইলিশ উৎসব জমবে না। সর্ষে, পোস্ত, দই, কাঁচালঙ্কা বাটা, নারকেল বাটা, সর্ষের তেল আর নুন-হলুদ দিয়ে মাখিয়ে কলাপাতায় নয়, কুমড়ো পাতা দিয়ে মুড়িয়ে নিন। এ বার মিনিট পনেরো ভাপিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে ইলিশ পাতুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy