অতীতে উঁটের মাংসে তৈরি হত পারসিক বিরিয়ানি। ছবি সংগৃহীত
ভারতীয় খাবারে বৈচিত্রের শেষ নেই। আপনি কি জানেন যে ভারতে সর্বাধিক খাওয়া কিছু খাবার আদৌ ভারতীয় নয়? সবই এসেছে অন্য কোনও দেশ থেকে।
কর্ম ও বাণিজ্য সূত্রে বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ ভারতে এসে বসতি স্থাপন করেন। ফলে ভারতীয় খাবারে সেই সব প্রদেশের ছোঁয়া রয়েছে। তা ছাড়াও, যেহেতু ভারতীয় উপমহাদেশ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিদেশী শক্তির অধীনে ছিল, তাই তাদের বেশ কিছু খাবার আমাদের দেশে এখন এতটাই জনপ্রিয় যে অনেকেই এই খাবারগুলিকে ভারতীয় বলে ভুল করেন।
বিরিয়ানি
এখন বাঙালির প্রিয় খাদ্যের তালিকায় এক নম্বরে বিরিয়ানি, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। কেবল বাংলায় নয়, বিরিয়ানির জনপ্রিয়তা গোটা দেশজুড়ে। কলকাতা, হায়দরাবাদ, লখনউ, দিল্লি-বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম বিরিয়ানির প্রচলন রয়েছে। এই বিরিয়ানি কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য বা পারস্যের খাবার। পার্সি ভাষায় বিরিয়ান শব্দের অর্থ রোস্ট কিংবা ভাজা। মাংসের সঙ্গে বিভিন্ন রকম মশলা মাখিয়ে চালের সঙ্গে এই পদটি বানানো হয়। অতীতে উঁটের মাংসে তৈরি হত পারসিক বিরিয়ানি। তবে এখন চিকেন, মটন, এমনকি ইলিশ, চিংড়ির বিরিয়ানিও বেশ জনপ্রিয়।
জিলিপি
সকালে কচুরি, তরকারি আর সঙ্গে একটা জিলিপি— ভারতীয়দের কাছে এই জলখাবারটি বেশ প্রিয়। জানেন কি এই জিলিপির আবির্ভাব আসলে মধ্যপ্রাচ্যে? আরবের প্রচলিত ‘জালবিয়া’-ই এখন ভারতের প্রায় প্রতিটি মিষ্টির দোকানে বেশ চাহিদার।
সিঙাড়া
সিঙাড়ার জন্ম হয়েছে পারস্যে। পারস্যে এই পদটির নাম ছিল সানবুসাক। সুফি কবি সংগীতজ্ঞ, দার্শনিক আমির খোসরুর সময়ে দিল্লিতে আবির্ভাব হয় এই সানবুসাকের। সেই সময় ময়দার তিনকোনা ভাঁজে থাকত মাংস। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাংসের পরিবর্তে আলুর পুর দিয়ে দিল্লি সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রিয় হয় এটি। ভারতীয়রা এর নামকরণ করে সামোসা। বাঙালির কাছে এই সামোসাই আবার সিঙাড়া নামে পরিচিত।
ইডলি
দক্ষিণ ভারতের এই জনপ্রিয় খাবারটিও কিন্তু আদ্যোপান্ত বিদেশি পদ। ইডলিকে অনেকে ইন্ডিয়ান রাইস কেক নামে ডাকলেও ইতিহাসবিদদের দাবি, ইডলি প্রথম তৈরি হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ায়। সেখান থেকেই ইডলি ভারতে প্রবেশ করেছে। কিছু ইতিহাসবিদের আবার দাবি, ভারতে ইডলির প্রবেশ ঘটেছে আরব দেশের ব্যবসায়ীদের হাত ধরে। যদিও আরবে ইডলি তৈরির করতে মাংসের পুর ব্যবহার হত।
গোলাব জামুন
এই মিষ্টির জম্মও কিন্তু পারস্যে। ফার্সি শব্দে ‘গোল’ কথার অর্থ হল ফুল এবং ‘আব’ কথার অর্থ হল জল। আসল ফার্সি খাবারটি ‘লুকমাত আল কাদি’ নামে পরিচিত ছিল যা ক্ষীর দিয়ে বানানা ছোট ছোট গোল্লাগুলিকে মধুর শরবতে ভিজিয়ে তৈরি করা হত। তার পর চিনি ছড়িয়ে এগুলি পরিবেশন করা হত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy