দিনমজুরির অবসরে ছবি আঁকেন ষষ্ঠী আহির, গোবিন্দ আহির, ভূপতি মল্লিকরা। জঙ্গলের শুকনো গাছের শিকড়-বাকল দিয়ে বানিয়ে ফেলেন কুটুম-কাটাম। তাঁদের সন্তানরাও মাটির বাড়ির দেওয়ালের ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলে ফুল, লতাপাতা। শিল্পরসিক আর পর্যটকদের নতুন ঠিকানা ঝাড়গ্রামের ‘খোয়াবগাঁ’। খেটে-খাওয়া লোধা জনজাতির বাসিন্দারা বছর তিনেক আগেও সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন। জঙ্গলের ডালপাতা সংগ্রহ করে বিক্রি, নয়তো খেতমজুর কিংবা দিনমজুরের হাড়ভাঙা খাটুনি, মরশুমে ভিন্ জেলায় ‘নামাল’ খাটতে যাওয়া। তাঁদের দিন-আনির সংসারে লড়াইটা ছিল খিদের সঙ্গে।
সেই রুক্ষ হাতগুলিই এখন ছবি আঁকেন মনের খিদে মেটাতে। তাঁদের শিল্প-কাজ দেখতে আসেন বাইরের বহু মানুষ। লোধা জনজাতির জীবনযাত্রার পালাবদলে জড়িয়ে রয়েছে কলকাতার ‘চালচিত্র অ্যাকাডেমি’। ‘খোয়াবগাঁ’ এখন স্বপ্নসম্ভবের গ্রাম। সরকারি সাহায্য ছাড়াই গ্রাম বদলের কাজে চালচিত্র অ্যাকাডেমির পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশ-বিদেশের নামী শিল্পীরা।
ছোট্ট গ্রামটির আসল নাম লালবাজার। ঝাড়গ্রাম শহরের কদমকানন থেকে জ়ুলজিক্যাল পার্ক যাওয়ার পিচরাস্তার মাঝে যেখানে তৈরি হয়েছে নতুন পুলিশ লাইন, তার পাশের সরু মেঠো পথ ধরে কিছুটা এগোলেই সোনাঝুরি, সেগুন, শালের বনপথ উজিয়ে কিলোমিটার তিনেক গেলেই চোখে পড়বে মাটির বাড়ির দেওয়ালে আঁকা মনোমুগ্ধকর সব ছবি। গ্রামের বাসিন্দা লোধা সম্প্রদায়ের শিল্পীদের তুলির ছোঁয়ায় সেজে ওঠা দেওয়ালচিত্রের টানে আসেন শিল্পরসিকজন। পর্যটকদের কাছেও এখন অন্যতম দ্রষ্টব্য এই খোয়াবগাঁ। গ্রামের ১৩টি পরিবারের মধ্যে ১২টি পরিবারই লোধা সম্প্রদায়ের। রয়েছে একটি কুর্মি পরিবারও। অন্যের জমিতে খেতমজুরি, রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে কিংবা দিনমজুরি করে সংসার চালানো মকর আহির, পিন্টু মল্লিক, ষষ্ঠীচরণ আহির এখন সময় পেলে ছবি আঁকেন, জঙ্গলের শুকনো ডাল, শিকড় সংগ্রহ করে এনে কুটুম-কাটাম তৈরি করেন। কচিকাঁচারাও ছবি আঁকার পাশাপাশি, মাটির পুতুল বানায়। অন্ত্যজদের গ্রামের বাসিন্দারাই এখন শিল্পের নতুন ধারায় আলোকিত করে তুলেছেন নিজেদের।
চালচিত্র অ্যাকাডেমির সম্পাদক মৃণাল মণ্ডল নিজেও এক জন শিল্পী। কলকাতাবাসী মৃণালের শিকড় ঝাড়গ্রামে। জঙ্গলজীবী মানুষগুলি রাতারাতি শিল্পী হয়ে উঠলেন কোন জাদুকাঠির ছোঁয়ায়? মৃণাল মনে করিয়ে দিচ্ছেন, লোধা জনজাতির ইতিহাস সুপ্রাচীন। হয়তো ওঁদেরই কোনও পূর্বপুরুষ আদিম যুগে গুহাচিত্র এঁকে থাকবেন। সহজাত অন্তর্নিহিত ভাব ও ভাবনা না-থাকলে মাত্র দু’বছরে শিল্পকলায় এ ভাবে হাত পাকিয়ে ফেলাটা সহজ নয়। তবে পিন্টু, মকররা বলছেন, সলতে পাকানোর কৃতিত্বটা ‘মৃণাল মাস্টার’-এর। এই নামেই মৃণাল পরিচিত সেখানে। বাসিন্দাদের রোজকার জীবনেও এসেছে পরিবর্তন। গ্রাম পরিচ্ছন্ন রাখেন বাসিন্দারা। গ্রামের খুদেরা সময় পেলেই দেওয়ালে-দরজায় ছবি এঁকে ভরিয়ে দেয়। পর্যটকরা গ্রামে এসে কিনে নিয়ে যান লোধা শিল্পীদের তৈরি কুটুম-কাটাম, মাটির পুতুল, ছবি। এক সময়ে জঙ্গলজীবী মানুষজন রুজির টানে বনজ সম্পদ বিক্রি করে সংসার চালাতেন। আর এখন তাঁরাই জঙ্গল রক্ষা করেন। গ্রামের কিছু পরিবার রুজির টানে ভিন্ জেলায় নামাল (খেতমজুরি) খাটতে যেতেন। এখন আর যান না। স্থানীয় ভাবে দিনমজুরি আর শিল্পচর্চায় মেতে রয়েছেন গ্রামবাসী। কলকাতার সংস্থাটির উদ্যোগে গ্রামে নানা মরসুমি ফল ও ছায়াদানকারী গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করা হচ্ছে। গ্রামে একটি কুটুম-কাটামের ‘হাব’ তৈরি করতে চান মৃণালরা। যাতে অনেক বেশি শিল্পকর্ম বিপণনের ব্যবস্থা করা যায়।
ছোট্ট গ্রাম লালবাজারে বসতি গড়ে ওঠার কথা শোনালেন প্রবীণ বাসিন্দা কালীপদ আহির। ঝাড়গ্রামের মল্লদেব রাজাদের চাষের জমি ছিল স্থানীয় অর্জুনডহর, রাজবাঁধ আর মধুপুর মৌজায়। পঞ্চাশের দশকে কালীপদ তখন নেহাতই কিশোর। বাবার সঙ্গে এসেছিলেন রাজাদের জমিতে খেতমজুরি করতে। পরে রাজপরিবারের তরফে তাঁকে থাকার ঘর দেওয়া হল। কালীপদ লালবাজারেই সংসার পাতেন। এ ভাবেই খেতমজুরের কাজে আসা লোধারা রাজানুগ্রহে এলাকায় থিতু হয়ে গেলেন। এ ভাবেই ১২টি লোধা পরিবার লালবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন। পরে শিমুলডাঙা থেকে ঠাঁইনাড়া হয়ে এসেছিলেন কমল মাহাতোর বাবা যোগী মাহাতোও। ১২ ঘর লোধার সঙ্গে দিব্যি মানিয়ে নিয়েছেন তিনি।
এখন গ্রামে শিল্পচর্চার ভগীরথ হলেন অশীতিপর কালীপদর ছেলে ষষ্ঠীচরণ আহির। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ষষ্ঠীর বাম হাত অপুষ্ট ও দুর্বল। স্কুলে পড়ার সময়ে খাতার পাতায় আঁকিবুকি কেটে অবয়ব আঁকতেন। ষষ্ঠী তখন সেবায়তন স্কুলের নবম শ্রেণিতে। স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক তাপস খান এক দিন ছাত্রের সঙ্গে গ্রামে এসে অবাক হয়েছিলেন, শহরের এত কাছে প্রান্তবাসী ১৩টি পরিবার! গ্রামের বেশির ভাগ পড়ুয়া স্কুলছুট। ২০১৮-র শেষ নাগাদ তাপসের মাধ্যমে মৃণাল খুঁজে পেলেন লালবাজার। ‘‘সেই অর্থে আমি ‘ভগীরথ’। স্কুলের শিক্ষক গ্রামে বেড়াতে এসেছিলেন বলেই তো তাঁর মাধ্যমে মৃণাল মাস্টারের সঙ্গে গ্রামবাসীর যোগাযোগ,’’ হাসতে হাসতে বলেন ষষ্ঠী।
এমনই একটা গ্রাম খুঁজছিলেন মৃণাল। যেখানে পরীক্ষামূলক ভাবে শিল্পচর্চার মাধ্যমে জনজাতি মানুষজনের জীবনে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন আনা যায়। আদিম জনজাতিদের মূলস্রোতে ফেরানোর কাজ অনেক ক্ষেত্রেই আশানুরূপ হয়নি। সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে জনজাতির জীবনযাত্রার পরিবর্তনের অনেক উদ্যোগই এখানে ফলপ্রসূ হয়নি। তাই বেসরকারি উদ্যোগে কতটা কী করা যাবে তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন মৃণালের সহযোগী-শুভানুধ্যায়ীরা। মৃণাল বলেন, ‘‘মাত্র কয়েকটা তো পরিবার। তাই মনে হল সীমিত পরিসরে কিছু একটা করতে পারব।’’ লালবাজারের বাসিন্দারা প্রথমে বুঝে উঠতে পারেননি, কী চাইছেন শহর থেকে আসা বাবু।
ষষ্ঠীর সাহায্য নিয়ে মৃণাল গ্রামবাসীর সঙ্গে মিশে, দিনরাত কাটিয়ে তাঁদের বোঝান, শিল্প দিয়েও জীবনযাত্রার হাল ফেরানো যায়। কয়েকটা বাড়ির দেওয়ালে ছবি এঁকে দেখানো হল। বিবর্ণ মাটির বাড়ির ভোলবদলে তাজ্জব বনে গেলেন লালবাজারবাসী। গ্রামের শিশু-কিশোর-কিশোরীদের ছবি আঁকা শেখানোর জন্য শুরু হল সাপ্তাহিক ক্লাস। সংস্থার শিল্পী রামেশ্বর সরেন ও যজ্ঞেশ্বর হাঁসদার তত্ত্বাবধানে আঁকা শিখতে শুরু করল কচিকাঁচারা। শুকনো ছাল-বাকল-শিকড়ের মধ্যে শিল্প আবিষ্কারের ‘চোখ’ তৈরির কাজও চলতে থাকল পুরোদমে। ২০১৯-এর গোড়ায় গ্রামে নিয়ে আসা হল পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়ার পটুয়াদের। মনু চিত্রকর, বাহাদুর চিত্রকর এসে গ্রামবাসী নন্দ আহিরের দেওয়ালে আঁকলেন লোধাদের বিয়ের ছবি। মৃণালের কথায়, “পটুয়াদের আঁকা ওই ছবি দেখে আগ্রহী হলেন লোধারা। বাড়ির দেওয়ালগুলিতে নিজেদের জীবনের কোলাজ দেখে গ্রামবাসীরাও এ বার একটু একটু সহজ ভাবে মিশতে শুরু করলেন। বিশ্বভারতীর কলাভবনের প্রাক্তনী উপমা চক্রবর্তী, বাবলি পাল, কৌস্তভ চক্রবর্তীর মতো তরুণ শিল্পীরা এসে বাসিন্দাদের দেওয়ালে কুলো, ঝুড়ি, পায়রা, হাঁড়ির ছবি আঁকলেন। দেখতে দেখতে ছবি আঁকায় হাত পাকিয়ে ফেলেন ষষ্ঠীচরণের মতো অনেকে। ছোটরাও ফাঁকা দেওয়ালে ফুটিয়ে তুলছে মনের ভাবনা।”
এটাই চেয়েছিলেন মৃণাল। কৃষ্ণনগরের আলপনাশিল্পী বিধান বিশ্বাস এসে আলপনার কর্মশালা করলেন। গ্রামের বধূরা শিখলেন আলপনার নানা কৌশল। ২০১৯-এর অগস্টে কলাভবনের প্রাক্তনী বিহারের নীতীশ কুমারের সঙ্গে কলকাতার দীপাঞ্জন পাল, উপমা চক্রবর্তী গ্রামে এসে ইনস্টলেশন আর্ট করলেন। গরুর গাড়ির চাকা, গরু-ছাগলের গলায় বাঁধার ঘণ্টি আমগাছের ডালে ঝুলিয়ে নতুন শিল্পের ধারা দেখালেন নীতীশ। কমল মাহাতোর বাড়ির উঠোনে জ্বালানি কাঠের বোঝা দিয়ে ইনস্টলেশন আর্ট করে দেখালেন দীপাঞ্জন। নবীন আহিরের ঘুপচি অন্ধকার কুঁড়ে ঘরের ভিতরে ‘বড়বাজার থেকে লালবাজার’ শিরোনামে একটি ইনস্টলেশন করলেন উপমা। ছবির বিষয়বস্তু ছিল বড়বাজারের ঘিঞ্জি বাড়িঘর। যানজটের ফাঁসে থমকানো রাজপথ। ট্রান্সপারেন্ট শিটের উপরে আঁকা ছবির উপরে টর্চের আলো ফেলে চলচ্চিত্রের মতো প্রদর্শিত হয়েছিল। তাতে বেজায় মজা পেয়েছিলেন গ্রামের সকলে। গ্রামবাসীদের উপমা হাতে-কলমে দেখিয়েছিলেন কী ভাবে কাজটা তিনি করছেন। বছর খানেক আগে ললিতকলা অকাদেমী-র কলকাতা শাখা ও চালচিত্র অ্যাকাডেমির যৌথ উদ্যোগে দুখুশ্যাম চিত্রকর, মন্টু চিত্রকর, স্বর্ণ চিত্রকরের মতো নয়ার ছ’জন পটুয়াশিল্পী এসে পট আঁকার প্রশিক্ষণ দিলেন। তাঁদের কাছে ফুল, পাতা, কাঁচা হলুদ, বেলের আঠার মতো প্রাকৃতিক ও ভেষজ উপাদান দিয়ে প্রাকৃতিক রং তৈরি করতে শিখলেন গ্রামবাসী। নামী শিল্পী ও সংস্কৃতি-জগতের লোকজনের সংস্পর্শে এসে লোধারাও এখন বুঝতে শিখেছেন লেখাপড়ার গুরুত্ব। গ্রামের তরুণ শ্রীপতি মল্লিক সবচেয়ে বেশি দূর পড়াশোনা করেছেন। বছর তিনেক আগে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পরে এখন রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করেন শ্রীপতি। তবে মৃণালদের চেষ্টায় গ্রামের নতুন প্রজন্ম পড়াশোনার গুরুত্ব বুঝতে শিখেছে। তাদের শপথ, ‘শিখব, পড়ব, জানব, স্কুলছুট হব না’। গ্রামের সব শিশু স্কুলে যাচ্ছে কি না সেই খোঁজ রাখেন শিল্প-প্রশিক্ষককেরা। এখন বছরভর শিল্পের নানা কর্মশালাও হচ্ছে গ্রামে। ইকোপ্রিন্ট, মুখোশ তৈরি, কাঁথা সেলাই, গ্রাফিতি। আরও কত কী!
গ্রামবাসীদের তৈরি শিল্প-কাজের প্রদর্শন ও বিপণনের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে চালচিত্র অ্যাকাডেমির উদ্যোগে গ্রামে তিন দিনের ‘খোয়াবগাঁ পার্বণ’-এর আয়োজন করা হয়। ওই শিল্পমেলায় লোধা শিল্পীদের হাতের কাজ ভালই বিক্রি হয়েছিল। ষষ্ঠী জানালেন, পার্বণীতে তাঁর ও অন্যান্যদের তৈরি শিল্পসামগ্রী ভালই বিক্রি হয়েছে। ষষ্ঠী একাই বেচেছেন দশ হাজার টাকার শিল্পসামগ্রী। মৃণাল বলেন, “ব্রিটিশ সরকার ১৮৭১-এ লোধাদের ‘অপরাধপ্রবণ জাতি’-র তকমা দিয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে সেই তকমা বাস্তবে কী ঘুচেছে! প্রাচীন সাহিত্যে, এমনকি পুরাকথায় ঈশ্বরের প্রিয় হিসেবে লোধা-শবর জনজাতির উল্লেখ রয়েছে। অথচ যুগে যুগে তারাই অবহেলিত, বঞ্চিত, শোষিত হয়ে এসেছে।” লালবাজার গ্রামের নাম বদলের ক্ষেত্রে রয়েছে মৃণালের সুনির্দিষ্ট ভাবনা। মৃণাল বলছিলেন, “লালবাজার কথার মধ্যে কেমন যেন পুলিশ-পুলিশ গন্ধ রয়েছে। তাই গ্রামবাসীর সম্মতিতে ২০১৮ সালের শেষে নাম বদলের সিদ্ধান্ত হয়। অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় ‘খোয়াবগাঁ’ নামটি ঠিক করে দেন।”
মৃণালরা চান আরও বেশি শিল্পরসিক ও গুণগ্রাহী খোয়াবগাঁয়ের উত্তরণের সঙ্গী হোন। একাদশ শ্রেণির দীপা আহির, দশম শ্রেণির পূজা আহিরের মতো পড়ুয়াদের আর্ট কলেজে ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য তৈরি করা হচ্ছে। প্রান্তিক মানুষগুলি উত্তরণের এই উদ্যোগকে সিন্ধুতে বিন্দুবৎ বলছেন মৃণাল। গ্রামের বধূ কাজল মল্লিক, দুর্গা ভুক্তারা জানালেন, “গত পাঁচ দশকে রাধানগর পঞ্চায়েত কিংবা জেলা প্রশাসনের কাউকেই গ্রামে আসতে দেখা যায়নি। ভোলবদলের পরে প্রশাসনের লোকজন গ্রামে আসা-যাওয়া শুরু করেছেন। তবে এখনও গ্রামে যাওয়ার সরু মেঠো পথের পরিবর্তন হয়নি। বর্ষায় জল-কাদা ভেঙে শহরে যেতে নাজেহাল হন এলাকাবাসী। এখনও বাসিন্দাদের বাড়িতে শৌচাগারও তৈরি হয়নি।”
প্রবীণ নবীন আহির বলছিলেন, “আমাদেরও যে সম্মান থাকতে পারে, সেটা আগে কখনও ভাবিনি। ছোটবেলায় শুনেছি, বাপ-ঠাকুরদাকে প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দিতে হত। আমরা নাকি অপরাধী জাতি। এক সময়ে বিদেশিরা আমাদের অপরাধপ্রবণ তকমা দিয়েছিল, এখন সেই বিদেশি লোকজন আমাদের শিল্পের প্রশংসা করেন। জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যান।” মাস সাতেক আগে ক্যালিফোর্নিয়ার ত্রিমাত্রিক চিত্রকলার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী ট্রেসি লি স্টাম খোয়াবগাঁ ঘুরে গিয়েছেন। লোধাশিশুদের থ্রি-ডি ছবি আঁকার প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন ট্রেসি।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য শুনেছেন খোয়াবগাঁয়ের কথা। ঝাড়গ্রামের ওই গ্রাম নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। মৃণাল জানালেন, করোনা-পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে তিনি আসবেন। দক্ষিণেশ্বর অঞ্চলের একটি পুজো মণ্ডপেও এ বার দেখা গেল ‘খোয়াবগাঁ’ থিম। মৃণাল বিশ্বাস করেন, এ ভাবে সব ক্ষেত্রের মানুষজন এগিয়ে এলে আদর্শ শিল্পগ্রাম হিসেবে ‘খোয়াবগাঁ’ জঙ্গলমহলের আরও অনেক গ্রামকে অনুপ্রাণিত করে তুলতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy