Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Shoe

চাই না সিন্ডারেলার জুতো

হিল থাকবে কি থাকবে না? থাকলে পেন্সিল না প্ল্যাটফর্ম? পুজোর আগে জুতো কেনার ঝকমারি কী কম! ইউরোপের সিন্ডারেলা বা চিনে মেয়েদের লোটাস শু— পায়ের মাপ বাড়লেই মুশকিল। গুপী-বাঘা ছেলে বলেই কি তাদের যেখানে খুশি যাওয়ার জুতো? আর মেয়েরা বন্দি স্টাইলের ঘেরাটোপে? আসলে সব সিন্ডারেলাই অপেক্ষায় থাকে, কবে সেই রাজপুত্র আসবে এবং তাকে স্লিপার-এর মাপ মিলিয়ে তুলে নিয়ে যাবে। ‘রাঙা মাথায় চিরুনি, বর আসবে এখুনি, নিয়ে যাবে তখুনি’-র সাহেবি সংস্করণ।

রূপকধর্মী: মাজিদ মাজিদি-র ‘চিলড্রেন অব হেভেন’ ছবিতে ভাই-বোন, আলি ও জ়াহরা

রূপকধর্মী: মাজিদ মাজিদি-র ‘চিলড্রেন অব হেভেন’ ছবিতে ভাই-বোন, আলি ও জ়াহরা

টুটুল চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২০ ২২:৫০
Share: Save:

শব্দটি ছিল জুৎসই, হয়ে গেল জুতসই। ছোটবেলা থেকেই জেনে গিয়েছিলাম আমার পায়ের মাপে জুতসই জুতো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শৈশবে পুজোর জুতো কিনতে গিয়ে দোকানের কর্মীকে বলেছিলাম, আমার পায়ের ছাতি একটু চওড়া, সেই মাপে কী জুতো দেবেন! শুনে বাড়ির বড়রা হাসাহাসি করলেন। কিন্তু আমার স্বাভাবিক বুদ্ধিতে মনে হয়েছিল বুকের ছাতি আর পায়ের ছাতি সমার্থক। একটু বেঢপ পায়ের গড়নকে এ ভাবে বোধহয় ব্যাখ্যা করা যায়। সেই থেকে শৌখিন মেয়েলি জুতোর সঙ্গে আমার আড়ি। বিদেশে কাজের সূত্রে দীর্ঘ দিন থাকার জন্যে অনেক বার জুতো কিনতে গিয়ে ধরণী দ্বিধা হও গোছের অবস্থা হয়েছে। দেশের মাটিতে জুতো পছন্দও একই রকম গেরো, মাপসই জুতো মেলে না।

আজকাল তাই কেড্স পরছি, সেও অনেক কষ্টে জোগাড় করতে হয়। মহিলাদের সুশ্রী জুতো বা স্লিপারের আকৃতি মোটামুটি এক। পায়ের পাতার দিকটি ঈষৎ সরু, গোড়ালিটি বেশ উঁচু। পায়ের পাতা ও গোড়ালির মধ্যে একটি ঢালু আর্চ। এই জুতোগুলি পরার নিয়ম হচ্ছে, জুতো পরবার আগে আওড়াতে হবে হিল-টু-টো, অর্থাৎ একই সঙ্গে গোড়ালি এবং পায়ের পাতা ফেলা যাবে না। ছোট্ট ছোট্ট পদক্ষেপের সঙ্গে হালকা মন্ত্র উচ্চারণ— হিল-টু-টো, হিল-টু-টো। এই ভাবে রপ্ত হলে তবেই হাঁটা যাবে। মহিলাদের চলন আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য হিল-তোলা জুতোর নাকি তুলনা নেই! তবে ব্লক হিল না পেন্সিল হিল, কিসে এক জন মহিলা আরও অতুলনীয়া হবেন বা তাঁর আত্মবিশ্বাস বর্ধিত হবে, সেটা নির্ভর করছে এই হিল-টু-টো মন্ত্র জপ করতে করতে একদম হোঁচট না খেয়ে তাঁর চলার ছন্দের ওপর।

এই মুখ-সরু, খুরওয়ালা জুতো দেখলে আমার ঠিক মনে পড়ে সিন্ডারেলার জুতো ও রাজপুত্রের কথা। সিন্ডারেলার সেই আদি অকৃত্রিম নীল হাই হিল স্ফটিক জুতো বা স্লিপার। মারিয়ান রালফ কক্স ১৮৯৩-এ ‘সিন্ডারেলা’ সৃষ্টি করার পর সেই গল্পের তিনশো পঁয়তাল্লিশ রকমফের তৈরি হল। অসহায়া, পরিশ্রমী সিন্ডারেলা সহনশীলতার প্রতীক এবং বিমাতার অত্যাচারে বিপন্ন। এ দিকে দেশের রাজা তাঁর পুত্রের পাত্রী মনোনয়নের জন্য একটি নাচের আসরের আয়োজন করেছেন। সিন্ডারেলার সৎমা ও সৎবোনেরা তাতে অংশগ্রহণ করবে। নিরুপায় সিন্ডারেলাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এল পরি-মা। জাদুর সাহায্য নিয়ে মেয়ে সুন্দর পোশাকে, জাদুরথে সেই নাচের আসরে যায়, কিন্তু রাত বারোটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ফিরতে হয়। কারণ তার পর জাদুমন্ত্র অচল। তবে নাচের আসর থেকে ফিরে আসার তাড়ায় সে ফেলে আসে এক পাটি স্ফটিক নির্মিত গ্লাস স্লিপার, রাজপ্রাসাদের সোপানে। এ দিকে রাজপুত্র তো তাকে দেখেই মোহিত হয়েছেন। তাই খোঁজ শুরু হয় পরিত্যক্ত এক পাটি স্লিপারের অধিকারিণীর। ঘোষণা করা হয়, ওই স্লিপার যে মহিলার পায়ের মাপে মিলে যাবে— সে যে-ই হোক— তারই সঙ্গে বিয়ে হবে রাজপুত্রের। শেষ পর্যন্ত খুঁজতে খুঁজতে স্লিপারের মাপে পা মিলে যায় একমাত্র সিন্ডারেলারই। সুতরাং রাজপুত্রের সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং তারা সুখে বাকি জীবন কাটায়। এই হল গল্প।

আসলে সব সিন্ডারেলাই অপেক্ষায় থাকে, কবে সেই রাজপুত্র আসবে এবং তাকে স্লিপার-এর মাপ মিলিয়ে তুলে নিয়ে যাবে। ‘রাঙা মাথায় চিরুনি, বর আসবে এখুনি, নিয়ে যাবে তখুনি’-র সাহেবি সংস্করণ। যুগ যুগ ধরে সিন্ডারেলার গল্প বাণিজ্য-সফল, সিন্ডারেলা ব্র্যান্ড জামা, জুতো, গয়না, চুলের রকমারি সাজ, এমনকি বিয়ে বা মধুচন্দ্রিমাতেও তার ছোঁয়া।

আপ্তবাক্যটি হল, পুরুষ জুতো কিনবেন পায়ের মাপে, আর মহিলারা রাজপুত্রের দ্বারা মনোনীত হওয়ার জন্য পা তৈরি করে নেবেন জুতোর মাপে। যে হেতু জুতোটি একটি বিশেষ মাপের, তাই এক বার মাপে মাপে মিলে গেলেই পা-কে নির্দিষ্ট মাপে আটকে রাখতে হবে, মাপ যেন আর না বদলায়। অর্থাৎ কষ্ট হলেও পা-টিকে যথাসাধ্য দুমড়ে-মুচড়ে জুতোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নাও।

২০০৬-এ ক্যামিলা মরটনের বই বেরল— ‘হাউ টু ওয়াক ইন হাই হিলস: দি গার্লস গাইড টু এভরিথিং’। বেরোল ঘরে ঘরে আরও সিন্ডারেলা তৈরি করার জন্য। কী করে আরও স্টাইলিশ হবেন— এবং যা অনুচ্চারিত রয়ে গেল, তা হল— কী ভাবে রাজপুত্র জোটাতে পারবেন, তার একটি চটজলদি মানে-বই।

সিন্ডারেলার গপ্পোকে হারিয়ে দিচ্ছে চিন দেশের ‘লোটাস শু’-এর কাহিনি। খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দী থেকে শুরু হল মহিলাদের পা বেঁধে তার গড়ন পাল্টে ফেলার চল, আর তা চলতে থাকল বিশ শতক অবধি! পায়ের পাতাকে রাখতে হবে ১১ সেন্টিমিটার বা চার ইঞ্চির আওতায়। প্রথমে এই ধারা প্রবর্তিত ছিল অভিজাতদের মধ্যেই, তার পর তা ছড়িয়ে গেল সর্ব স্তরে। এই যন্ত্রণাময় পা বেঁধে রাখা শুরু হত শিশুকন্যার বয়স যখন চার থেকে ছয় বছর, এবং শীতকাল তার আদর্শ সময়। কারণ ঠান্ডায় ঝিম-ধরা পা যন্ত্রণা টের পাবে না। কেউ কেউ সারা জীবনই এই যন্ত্রণার মধ্যে থাকতেন। কোনও মহিলা বিয়ের পর, উদ্দেশ্য সাধিত হয়েছে ভেবে, প্রথাটি থেকে মুক্তি দিতেন নিজেদের। ১৬৩৬-এ এই প্রথার বিরুদ্ধে প্রথম টনক নড়ে।

একটি সম্পূর্ণ ভিন্নগন্ধী ভারতীয় রূপকথা মনে আসছে, যেখানে দু’টি চাষাড়ে মানুষ স্বাধীন ভাবে গান গেয়ে, বাজনা বাজিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল। তাদের এই অভিপ্রায় ভন্ডুল হতে বসেছিল রাজামশায়ের অত্যাচারে। তারা দু’জনই বিতাড়িত হল আমলকী আর হরতুকী গ্রাম থেকে। জঙ্গলের মধ্যে ভূতের রাজা তাদের উপর সদয় হলেন। ভূতের রাজার তিনটি বরের জোরে তাদের এখন অন্নের সমস্যা নেই, গানও গাইতে পারে— যে গান শ্রোতাকে মন্ত্রমুগ্ধ ও নিশ্চল করে দেয়। সবচেয়ে বড় জিনিস, তারা ভূতের রাজার দেওয়া জুতো পরে ‘যেখান খুশি যাইতে’ পারে। সম্পূর্ণ স্বাধীন এক পরিপূর্ণ জীবনের আস্বাদ পেল তারা। এই গুপী ও বাঘা আমাদের মাটির খুব কাছাকাছি চরিত্র, তারা রাজায়-রাজায় যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

আপাত-বিচ্ছিন্ন দু’টি রূপকথা— সিন্ডারেলা ও গুপী-বাঘা। কিন্তু দু’টি রূপকথাতেই জাদু-জুতো গুরুত্বপূর্ণ। অন্য মিলটি হল, সিন্ডারেলা তার বিমাতার অত্যাচারে কাতর এবং গুপী-বাঘাকে রাজামশায় ‘তাড়ায়ে দেছে’। কিন্তু কাহিনি দু’টির উপসংহার বিপরীত। সিন্ডারেলা পেল সোনার খাঁচায় বন্দিনির জীবন। সে ভাবল, এটাই মোক্ষ। আর গুপী-বাঘা পেল নীল আকাশ, যেখানে উড়ে যেতে কোথাও বাধা নেই এবং তার সঙ্গে অদ্ভুত এক ক্ষমতা, যা তাদের শান্তির দৌত্যে সহায়তা করে। উপেন্দ্রকিশোর যদি গুপী-বাঘার বদলে কোন মহিলাকে নিয়ে গল্প লিখতেন, তা হলে কি তার জীবন গুপী-বাঘার মতো এমন বর্ণময় হত? কে জানে! সিন্ডারেলার গ্লাস-স্লিপার এবং চিন দেশের লোটাস শু’র মধ্যে একই সুরের প্রতিধ্বনি হয়— মহিলারা যেন জুতোর মাপে পা-টি সইয়ে নেন।

শুরু করেছিলাম আমার মাপসই জুতো না খুঁজে পাওয়ার কাহিনি দিয়ে, সেখানেই ফিরব। নেদারল্যান্ডসে থাকাকালীন যে দিন রাজকন্যাসুলভ মাপের জুতোগুলো আমার বেখাপ্পা পায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল, অনেক ধস্তাধস্তির শেষে এক জোড়া কেড্স কিনে ভ্যান গখ মিউজ়িয়ামে গেলাম। ছবি দেখতে দেখতে দাঁড়িয়ে পড়লাম ছেঁড়াখোঁড়া, বিধ্বস্ত জুতোজোড়ার সামনে। কত ক্ষণ ধরে দেখেছিলাম মনে নেই। এক বিপন্ন বিস্ময় অনুভব করলাম। মনে হল, রাজপুত্র, রাজকন্যা ও তাদের জাদু-জুতোর বাইরে যে দুনিয়া, সেখানে মানুষের মিছিল আর মিছিলে পথ হাঁটার গল্পও শিল্প বা কাহিনির উপজীব্য হতে পারে।

রুক্ষ, কর্কশ জুতোজোড়ার পরতে পরতে অন্তহীন হেঁটে-যাওয়া যাত্রীটির স্বেদ-রক্তের কাহিনি। শতচ্ছিন্ন জুতোটি মনে করিয়ে দেয়, এই অতিমারির সময়ে ঘরছাড়া হাজার হাজার শ্রমিকের ঘরে ফেরার অথবা না-ফেরার কাহিনি। জুতোজোড়ার সঙ্গে চার্লি চ্যাপলিনের অসাধারণ সৃষ্টি, ১৯২১ সালের, ‘দ্য কিড’ ছবির কোথায় যেন খুব মিল! একই ধরনের বিব্রত জুতো পায়ে গলিয়ে এক রক্তাক্ত জীবন হাঁটছে এক ভাঁড়, যার সঙ্গী তার মানসিক ঐশ্বর্য, আর একটি পরিত্যক্ত শিশু। অথবা ‘দ্য গোল্ড রাশ’-এর চ্যাপলিন যে সোনার খনির খোঁজে বেরিয়ে পড়েছে। অনাহারের সঙ্গে লড়াই করতে করতে জুতোজোড়াই তার খাদ্য হয়ে যায়।

মনে পড়ে গেল মাজিদ মাজিদির ১৯৯৭ সালের ‘চিলড্রেন অব হেভেন’ ছবিটির কথা। তেহরানের দরিদ্র এক পরিবারের দুই সন্তান আলি ও জ়াহরা। জ়াহরার শতচ্ছিন্ন গোলাপি জুতোটি সারানোর পর বাজার করতে গিয়ে হারিয়ে ফেলে আলি। আসলে যে অন্ধ লোকটি ময়লা সাফ করছিল, সে ভুল করে জুতোর প্যাকেটটি ফেলে দেয়। আলির মা অসুস্থ। এই রকম অবস্থায় জুতো হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি তাদের গোপন রাখতে হয় মা-বাবার কাছ থেকে। কিন্তু জ়াহরা স্কুলে যাবে কী করে? সমাধান হয়, ওই সবেধন নীলমণি একই জুতো ভাই-বোন ভাগাভাগি করে পরবে, যাতে তাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ না হয়ে যায়। এক দমবন্ধ গল্প এর পর শুরু হল। বোন সকালের স্কুল থেকে ফিরে এলে ভাই জুতোজোড়া পরে দুপুরের স্কুলের দিকে হাঁটা দেয়। কখনও দেরি হয়ে যায়, আলি তিরস্কৃত হয়। গল্প এগোয়। শেষ পর্যন্ত আলি সমাধান খুঁজে পায়। একটি দৌড় প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকারীর বরাদ্দ পুরস্কারের ঘোষণা তার মনে আশার সঞ্চার করে। পুরস্কারটি হল স্কুলে যাওয়ার উপযোগী একজোড়া জুতো। কিন্তু প্রতিযোগিতায় আলি তৃতীয় না হয়ে হয় প্রথম! সুতরাং জুতোর স্বপ্ন পূরণ হয় না। জ়াহরা প্রতীক্ষায় থাকে— কখন তার ভাই নতুন জুতো আনবে। আর আলি? মরিয়া হয়ে ছুটতে গিয়ে তাদের একটি মাত্র জুতোকে আর ব্যবহারযোগ্যও রাখতে পারেনি সে। অথচ পা দু’টি তার রক্তাক্ত, তাই কিছু ক্ষণ আরামের জন্যে জলে পা ডুবিয়ে ক্ষতের জ্বালা শান্ত করে।

হাত যেমন ধরাছোঁয়ার ইন্দ্রিয়, পা হল চলাফেরার। চলা মানে এগিয়ে যাওয়া, আর ফেরা মানে তার বিপরীত পানে যাওয়া। তাই পায়ে চলার অনুপ্রেরণায় ছোটবেলায় শেখানো হয়, ‘চলে মশমশ, মশমশ পা গাড়ি মশমশ/ সবচেয়ে-ভাল-পা-গাড়ি’। কোনও সন্দেহ নেই এই ছড়ার মধ্যে কোথাও যেন পা-গাড়ির ইঞ্জিন বা উপযুক্ত এক জোড়া জুতোর বিজ্ঞাপন লুকিয়ে আছে।

পুজো আসছে, অতিমারির প্রাবল্য আশ্বিনের আকাশকে ম্লান করতে পারেনি। জানি না এ বারের পুজোয় ক’জন জুতোর দোকানে যাবেন। নাকি বেশির ভাগ মহিলাই অ্যামাজ়ন বা ফ্লিপকার্টকে হুকুম করে জুতো আনিয়ে নেবেন। তবে যে-কোনও পথ চলায় পথভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায় যদি সঙ্গে থাকে একটি দরদি মনের শুভকামনা। আলি-জ়াহরার মতো মরমি ভাই-বোন সঙ্গে থাকলে যে কোনও পথ চলাই মসৃণ হতে বাধ্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Shoe Fantasy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy