বহুমুখী: ইন্দুমাধব মল্লিক।
পুরীর মন্দিরে জগন্নাথদেবের রান্নাঘর দেখেই আইডিয়াটা ঝিলিক মেরেছিল তাঁর মাথায়। দরজার ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে, জ্বলন্ত উনুনে প্রথমে বড় একটি হাঁড়ি, তার পর ক্রমশ ছোট থেকে আরও ছোট, এই ভাবে পর পর ছ’টা হাঁড়ি বসানো। প্রতিটি হাঁড়িতেই খাবার রয়েছে। এই ভাবেই শত শত লোকের জন্য ভোগ রান্না হচ্ছে। মনে হল, এই ভাবে রান্না হলে পরিশ্রম বাঁচবে। সময় বাঁচবে। জ্বালানি সাশ্রয় হবে এবং খাদ্যগুণ বজায় রাখাও সম্ভব হবে।
শুরু হল তাঁর ভাবনাচিন্তা। কয়েক মাসের পরিশ্রমে তৈরি হল ‘ইকমিক কুকার’। ‘হাইজিনিক’-এর ‘ইক’, ‘ইকনমিক’-এর ‘মিক’, তার সঙ্গে ‘কুকার’— সব মিলিয়ে ইকমিক কুকার। আজকের প্রেশার কুকারের পূর্বসূরি।
১৯১০ সাল, তখনও ভারতের রাজধানী কলকাতা। বাঙালি আবিষ্কারকের সৌজন্যে সেই শহরেই বাণিজ্যিক ভাবে শুরু হল ইকমিক কুকারের উৎপাদন। এতে থাকত একটা বড় সিলিন্ডার, তার মধ্যে টিফিন ক্যারিয়ার। তার মধ্যে থাকত একাধিক বাটি। প্রত্যেক বাটিতে ভাত ডাল আনাজ আলাদা করে রাখা হত। সিলিন্ডারের মধ্যে অল্প জল দিয়ে আগুনের ওপর বসানো হত। আগুনে জল বাষ্প হয়ে সব খাবার রান্না হয়ে যেত। এতে খাবার পুড়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না।
এই বাঙালি আবিষ্কারক আজকের প্রজন্মের কাছে প্রায় বিস্মৃত। তাঁর নাম ইন্দুমাধব মল্লিক। পুরনো দিনের কেউ কেউ অবশ্য তাঁকে ইকমিক কুকারের আবিষ্কর্তা বলে মনে রেখেছেন। আর সেখানেই ছিল ভ্রান্তিবিলাস। ইন্দুমাধব শুধু কুকারের আবিষ্কর্তা নন, চিকিৎসক, আইনজ্ঞ, দেশপ্রেমিক, সুলেখক, সমাজসংস্কারক— অনেক কিছুই। উনিশ শতকের বিস্মৃত এক বহুমুখী প্রতিভা। গত বছরের ডিসেম্বরে নিঃশব্দে পেরিয়ে গিয়েছে তাঁর সার্ধশতবর্ষ।
দেড়শো বছরেও তিনি মনগড়া অনেক গালগল্পের শিকার। ইকমিক কুকারের জন্মকথা বলতে গিয়ে কেউ কেউ পুরীর কথা লিখেছেন। কেউ আবার জানিয়েছেন, চিন-এ বেড়াতে গিয়ে সেখানকার ফুটপাতে হরেক বাটি সাজিয়ে খাবার তৈরি দেখেই ইন্দুমাধবের মাথায় আসে ইকমিক কুকারের আইডিয়া।
ধরা গেল তাঁর পৌত্র রঞ্জিত মল্লিককে। অভিনেতা রঞ্জিতবাবু হাসছেন, ‘‘আমরা তো ছোটবেলায় পুরীর মন্দিরের ঘটনাটাই শুনেছিলাম। হ্যাঁ, সে যুগে বাঙালি চিনে বিশেষ বেড়াতে যেত
না। উনি গিয়েছিলেন এবং ‘চীন ভ্রমণ’ নামে একটি বইও লিখেছিলেন। মনে হয়, সেখান থেকেই ওই মিথটা ছড়িয়েছে।’’
মিথ জানে না, কুকার আবিষ্কারের আগে ইন্দুমাধবের জীবনে আর একটি ঘটনা ছিল। তখন দেশ জুড়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রতিবাদ জেগে উঠছে। কয়েকজন মানুষ ঠিক করলেন, তাঁরা বোমা বানাবেন। কিন্ত কী ভাবে বোমা তৈরি হবে তা জানা নেই তাঁদের। অতঃপর ভগিনী নিবেদিতার পরামর্শে তাঁরা গেলেন জগদীশচন্দ্র বসু আর আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের কাছে। তাঁদের পরামর্শে গোপনে তৈরি হল একখানা বোমা। তার মূল কারিগর ছিলেন উল্লাসকর দত্ত। বোমা তৈরি হল, কিন্তু তার কার্যকারিতা কতখানি তা জানবার জন্য পাঁচ জন গেলেন দেওঘরের কাছে এক জঙ্গলে। বোমা ফাটানো হল। সামান্য অসতর্কতায় মারা পড়লেন প্রফুল্ল চক্রবর্তী। গুরুতর আহত হলেন উল্লাসকর। গোপনে তাঁকে নিয়ে আসা হল কলকাতায়।
কিন্তু কোথায় তাঁর চিকিৎসা হবে? চারদিকে পুলিশের চর। ধরা পড়লে জেল। যিনি চিকিৎসা করবেন, তাঁকেও পুলিশ ছেড়ে দেবে না। এগিয়ে এলেন ইন্দুমাধব। নিজের বাড়িতে রেখে, এক মাসের চিকিৎসায় সুস্থ করে তুললেন উল্লাসকরকে।
বিপ্লবী আবিষ্কারক ইন্দুমাধবের জন্ম ১৮৬৯ সালের ৪ ডিসেম্বর, হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়ায়। বাবা রাধাগোবিন্দ মল্লিক, মা কালীকামিনী দেবী। ছেলেবেলায় অসম্ভব দুরন্ত ছিলেন ইন্দুমাধব। সাত বছর বয়সে কলকাতার হেয়ার স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকে পাশ করে এফ এ পড়তে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, অতঃপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর বিষয় ছিল দর্শন। ১৮৯১ সালে এম এ পাস করলেন। তার পরই মোড় ঘুরল। প্রতিভাবান ইন্দুমাধবের মনে হল, এ বার জানতে হবে আধুনিক বিজ্ঞান। পরের বছর পদার্থবিদ্যায় এম এ করলেন। পাশাপাশি এই সময় তিনি ভর্তি হলেন মেডিক্যাল কলেজে। উদ্দেশ্য ডাক্তারি পড়া। তাতে অনেক বেশি মানুষের সেবা করতে পারবেন। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানই শেষ নয়। ডাক্তারি পড়তে পড়তে, অসহায় মানুষদের সুবিচার দেওয়ার জন্য ভর্তি হলেন আইন কলেজে। তবে আইন পাশ করলেও তিনি ওকালতি প্র্যাকটিস করেননি।
১৮৯৮ সালে ডাক্তারি পাশ করলেন ইন্দুমাধব। পেলেন লাইসেন্স ইন মেডিসিন এন্ড সার্জারি (এলএমএস) ডিগ্রি। সেই সময়ে এম এ পড়ানো হত বঙ্গবাসী কলেজে। ছোটবেলা থেকে গাছপালার প্রতি ইন্দুমাধবের স্বাভাবিক আগ্রহ ছিল। স্থির করলেন, বটানিতে এম এ পরীক্ষা দেবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ছাত্রদের পড়াচ্ছেন, ফাঁকে ফাঁকে নিজেও পড়ছেন। পরের বছর পরীক্ষা দিলেন। পাশও করে গেলেন। কিন্তু ইন্দুমাধব তো শুধু ডিগ্রি জোগাড়ের জন্য পড়াশোনা করেন না। তাঁর উদ্দেশ্য, মানুষের সেবায় অধীত জ্ঞানের প্রয়োগ। অবসর সময়ে রোগী দেখা আরম্ভ করলেন। রোগী দেখছেন, পড়ছেন, পড়াচ্ছেন। ডিগ্রি তো কম নেওয়া হল না। হঠাৎ খেয়াল হল, বঙ্গবাসী কলেজে যে-ক’টা বিষয়ে এম এ পড়ানো হয়, একটি ছাড়া সব বিষয়ে তাঁর ডিগ্রি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি হল ‘ফিজ়িয়োলজি অ্যান্ড জ়ুলজি’। মনে হল, এটাই বা বাদ থাকে কেন! কয়েক মাস পড়াশোনা করে পরীক্ষায় বসে গেলেন। আশ্চর্যের বিষয়, এই পরীক্ষাতেও পাশ করে গেলেন।
ইকমিক কুকার
ইতিমধ্যে কলেজে পড়তে পড়তেই ইন্দুমাধবের বিয়ে হয়ে গেল। স্ত্রীর নাম ইন্দুমতী। স্বামীর উপযুক্ত স্ত্রী ছিলেন ইন্দুমতী। নিজের প্রথাগত শিক্ষা ছিল যৎসামান্য, কিন্তু জ্ঞানপিপাসু স্বামীর শিক্ষার ব্যাপারে কোনও দিন বাধা দেননি। ইন্দুমতী মোট দশটি সন্তানের মা হয়েছিলেন।
অতঃপর ইন্দুমাধবের শিক্ষক জীবনের শুরু। ১৮৯৭ সালে পড়াতে শুরু করলেন অ্যালবার্ট কলেজে। কয়েক মাস পরে গেলেন বঙ্গবাসী কলেজ। তখন বাঙালি ছাত্রদের কাছে বঙ্গবাসী কলেজের খুব নামডাক। ইন্দুমাধব পড়াতেন তর্কবিদ্যা, দর্শন, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা। প্রতিটি বিষয় এমন ভাবে বোঝাতেন, জটিল বিষয় সহজ হয়ে যেত। ১৯০৬
সাল পর্যন্ত তিনি এখানে অধ্যাপনা করেছেন।
বাংলা জুড়ে তখন স্বদেশি আন্দোলন শুরু হয়েছে। কিছু মানুষের মনে হল, আর বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, স্বদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাই, যেখানে স্বদেশি ভাবনার বীজ রোপণ করা সম্ভব। ১৯০৬ সালের ১৫ অগস্ট প্রতিষ্ঠা হল বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ। তার প্রথম অধ্যক্ষ হলেন অরবিন্দ ঘোষ। এগিয়ে এলেন বেশ কিছু গুণী মানুষ, যাঁরা নামমাত্র বেতন নিয়ে এখানে পড়াতে সম্মত হলেন। ইন্দুমাধবও শিক্ষক হিসেবে যোগ দিলেন এখানে। ১৯০৬ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত তিনি এখানে বিনা পারিশ্রমিকে অধ্যাপনা করেছেন। পড়াতেন জীববিদ্যা ও মেডিসিন। জীববিদ্যা পড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হত, যেমন মাইক্রোস্কোপ, স্টেথোস্কোপ, অপারেশনের যন্ত্রপাতি। এই জিনিসগুলো বিদেশ থেকে এ দেশে আসত। খারাপ হলে সারানোর কোনও উপায় থাকত না। পুরনো, ফেলে দেওয়া যন্ত্রপাতি খুলে তিনি দেখতেন কী ভাবে তা তৈরি হয়েছে। শুধু জোড়াই লাগাতেন না, ছাত্রদের শেখাতেনও— কী ভাবে সেই সব বাতিল যন্ত্রপাতিকে আবার কাজে লাগানো যায়।
কেমন শিক্ষক ছিলেন ইন্দুমাধব? সেই সময়ের ছাত্র, পরবর্তী কালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ত্রিগুণা সেনের স্মৃতিকথায় আছে, ‘ইন্দুমাধব ছিলেন সর্ব জ্ঞানের আধার। বহুমুখী ছিল তাঁর চিন্তাধারা। ছাত্রদের মুখ দেখে বুঝতে পারতেন তাদের দুঃখ-কষ্ট। কেউ টাকা দিতে না পারলে তিনি নিজেই পড়ার খরচ দিয়ে দিতেন। যেমন বিশাল হৃদয় তেমনি মমতা। আশৈশব বিদ্যাসাগরের প্রতি তাঁর ছিল গভীর শ্রদ্ধা। চেষ্টা করতেন তাঁর আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলতে। প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন বিদ্যাসাগরের যোগ্য উত্তরসূরী।’
সেই সময় কয়েকজন বাঙালি চিকিৎসক, সাহেবদের অধীনতা থেকে মুক্ত হবার জন্য প্রতিষ্ঠা করলেন ‘ক্যালকাটা মেডিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জেন’। ১৯০৮ সালে এখানে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিলেন ইন্দুমাধব। তবু মনে হল, চিকিৎসাবিদ্যায় তিনি যে জ্ঞান অর্জন করেছেন, তা অতি সামান্য। এম ডি করার জন্য মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হলেন। তাঁর সহপাঠী ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়। বয়সে ছোট বলে তাঁকে খুব স্নেহ করতেন ইন্দুমাধব। সেই সময় প্রতি বছর এক জন মাত্র চিকিৎসাবিদ্যায় এম ডি করতে পারত। মেডিক্যাল কলেজের তরফে সেই সুযোগ দেওয়া হল ইন্দুমাধবকে। ১৯০৮ সালে চিকিৎসাবিদ্যায়
এম ডি করলেন ইন্দুমাধব। পরের বছর এম ডি করেন বিধানচন্দ্র রায়।
ইতিমধ্যে ট্র্যাজেডি নেমে এসেছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে। ইন্দুমাধবের বড় ছেলে শৈশবে মারা যায়। অসুখের কারণ সম্ভবত জুভেনাইল ডায়াবিটিস। ছেলের মৃত্যুতে এত কষ্ট পেয়েছিলেন, পরবর্তী কালে ডায়াবিটিস নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন ইন্দুমাধব। সেই সময় ডায়াবিটিস রোগের কোনও ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। কী ভাবে এই রোগের প্রতিকার করা যায় তা নিয়ে আমৃত্যু কাজ করেছেন ইন্দুমাধব। তাঁর নিজের ছোট ল্যাবরেটরি ছিল, সেখানে রোগীদের রক্ত নিয়ে নানা ধরনের পরীক্ষা করতেন। চেষ্টা করতেন কী ভাবে তাঁদের সুস্থ করে তোলা যায়। তাঁর গবেষণাপত্র ও একাধিক প্রবন্ধে তিনি রোগীর খাদ্য তালিকা, বিভিন্ন ধরনের ওষুধের ব্যবহার নিয়ে লিখেছেন।
এ দেশের মানুষের আর্থিক দৈন্যের কথা তিনি জানতেন। অধিকাংশ অসুখের কারণ অপুষ্টি। ইন্দুমাধব বিশেষ করে শিশু ও প্রসূতি মায়েদের কথা ভেবেছেন। তিনি জোর দিতেন কম দামে পুষ্টিকর খাদ্যের ওপর। এক বার তাঁর এক বন্ধু এলেন, তাঁর পরিচিত এক জন ভীষণ অসুস্থ। ইন্দুমাধবের তখন খুব ব্যস্ততা, তবুও বন্ধুর সঙ্গে সেই মানুষটির বাড়ি গেলেন। রোগীর আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। ইন্দুমাধব রোগী দেখে ওষুধের দোকানে গেলেন, ওষুধ কিনে কিছু টাকাও বন্ধুর হাতে দিয়ে বললেন, শুধু ওষুধে কাজ হবে না, পথ্যও চাই। টাকা আর ওষুধগুলো রোগীকে দিতে বললেন, তবে তাঁর নাম না করে।
এমনই মানুষ ছিলেন ইন্দুমাধব। প্রতিভাবান, মানবদরদি। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়ও। বঙ্গবাসী কলেজে শিক্ষকতা করার সময় মনে হল, চিন গেলে কেমন হয়? রক্ষণশীল পরিবারের লোকজন স্বভাবতই তাঁর এই ইচ্ছার বিরুদ্ধে। পরিচিত মহলে প্রতিবাদের ঝড় উঠল। সঙ্কল্পে অটুট ইন্দুমাধব কিন্তু থামলেন না। ১৯০৬ সালে প্রকাশিত ‘চীন ভ্রমণ’ বইয়ে লিখে গেলেন সে দেশের অভিজ্ঞতা। ইন্দুমাধব পরিণত হলেন লেখক ইন্দুমাধবে।
চিন ভ্রমণের সাত বছর পর তাঁর ইচ্ছে হল, ইউরোপে যাবেন। পরিচিত হবেন আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে। এ বারও দেশে ফিরে এসে লিখলেন ‘বিলাত ভ্রমণ’। দু’টি বই-ই বাংলা ভ্রমণ সাহিত্যে এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন। পড়লে বোঝা যায়, বিদেশে গিয়েও স্বদেশের মাটিকে ভোলেননি তিনি। ইউরোপের মেয়েদের দেখে এ দেশের অপুষ্টিতে ভোগা মেয়েরাও এসেছে তাঁর স্মরণপথে। লিখেছেন, ‘গরু-বাছুর অপেক্ষাও হীন অবস্থা আমাদের স্ত্রীলোকেদের। তাঁহারা আজন্ম মৃত্যু পর্যন্ত কত কষ্ট, কত অত্যাচার সহ্য করেন। ইউরোপের বিশেষত্ব রমণী জাতির উন্নত অবস্থা, জাতীয় উন্নতির অনেক কারণের মধ্যে নিঃসন্দেহে এই সর্বশ্রেষ্ঠ কারণ। আমাদের দেশ এ বিষয়ে চিরকালই অন্ধ।’
৪৬ বছর বয়সে তাঁর মনে হল, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বেন। কিন্তু শেষ অবধি এই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। তখন মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। রবীন্দ্রনাথ, জগদীশচন্দ্র, বিধানচন্দ্র প্রমুখ আসতেন তাঁকে দেখার জন্য। এক রোগী সংক্রামক রোগে ভুগছিলেন, জরুরি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন, অথচ কোনও ডাক্তার তা করতে রাজি নন। সেই সময়েও এগিয়ে এলেন ইন্দুমাধব। তাঁর শরীরে ক্ষত ছিল, সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ল সারা শরীরে। ১৯১৭ সালের ৮ মে, মাত্র ৪৭ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন তিনি।
কৃতজ্ঞতা: রঞ্জিত মল্লিক, ডা. শংকর নাথ, আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়, রত্না গুপ্ত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy