ক্রীড়াঙ্গন: নিউ ইয়র্কে নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক প্র্যাকটিস ম্যাচে ভারতীয় সমর্থকরা Sourced by the ABP
তিনি, আর্থার মেলি নিশ্চয়ই উপর থেকে দেখছেন আর হাসছেন। স্যর ডন ব্র্যাডম্যানকে ডেকে হয়তো বলছেন— দেখো, ডন দেখো, ব্যাটাচ্ছেলেদের এত দিনে বুদ্ধি খুলল!
মাত্র ২১ টেস্ট খেলেই কেউ কিংবদন্তি হয়েছেন, সচরাচর খুঁজে পাওয়া যাবে না। মেলি ব্যতিক্রম। ২১ টেস্টে ৯৯ উইকেট নেন অস্ট্রেলিয়ার লেগস্পিনার। কিন্তু শুধু ক্রিকেটার নন, আর্থার মেলি ছিলেন ক্রিকেটের রানওয়ে ধরে ওড়া এক বহুমুখী প্রতিভার উড়ান। জীবন শুরু করেছিলেন শ্রমিক হিসেবে। দারুণ লিখতে পারতেন। কাউন্টিতে এক ইনিংসে দশ উইকেট নিয়েছিলেন ৬৬ রানে। পরে আত্মজীবনীর কাব্যিক নামকরণ করেছিলেন— ‘টেন ফর সিক্সটি-সিক্স অ্যান্ড অল দ্যাট’। যা আজও ক্রিকেটের উপরে লেখা সেরা দশটি বইয়ের একটি বলে গণ্য হয়। কার্টুনিস্ট হিসেবে নাম করেছিলেন। ছবি আঁকতে পারতেন। এর বাইরেও একটি বিশেষ গুণ ছিল তাঁর। ক্রিকেট-বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রখর বুদ্ধি। আইসিসি কর্তারা ২০২৪-এ আমেরিকায় বিশ্বকাপ নিয়ে এলেন। আর মেলি আজ থেকে ৯২ বছর আগে, ১৯৩২ সালে দাঁড়িয়ে ভেবেছিলেন, মার্কিন দেশে ব্যাট-বল নিয়ে হানা দিলে কেমন হয়? বলা যেতে পারে, তিনিই ক্রিকেটের কলম্বাস। আমেরিকার ক্রিকেট বাজার আবিষ্কার করতে ছোটেন।
মেলি জানতেন, আমেরিকায় বেসবল খুব জনপ্রিয়। জর্জ হার্মান রুথের নাম সেখানে কে না জানে! ‘নিউ ইয়র্ক ইয়াঙ্কিস’ দলের মহাতারকা জনপ্রিয় ছিলেন ‘বেব’ রুথ নামে। মেলি বেসবল সংগঠকদের বললেন, “আমি ক্রিকেটের বেব রুথকে নিয়ে আসছি। জমিয়ে দেব।”
তাঁরা রাজি। শর্ত একটাই— ব্র্যাডম্যানকে কিন্তু আসতেই হবে।
১৯৩২ ডনের জীবনের খুব স্মরণীয় বছর। সে বছরেই বিয়ে করেন বহু দিনের প্রিয়তমা জেসিকে। কে জানত, মধুচন্দ্রিমার সুর কেটে যাবে খুব দ্রুতই এবং দুনিয়ার সেরা ব্যাটসম্যানের শ্রেষ্ঠত্বই প্রশ্নের মুখে পড়বে! ডগলাস জার্ডিন নামক ধুরন্ধর এক সেনাপতি তৈরি হচ্ছেন তাঁর দুই সারথি হ্যারল্ড লারউড ও বিল ভোসকে নিয়ে। বডিলাইন-বর্শায় অপরাজেয় ডনকে গেঁথে ফেলবেন বলে। তার আগে বছরের মাঝামাঝি সময়ে আমেরিকা অভিযানের প্রস্তাব নিয়ে উদয় হন মেলি। খুব একটা ইচ্ছুক ছিলেন না ডন। মেলির জোরাজুরিতে অবশেষে রাজি হলেন একটাই শর্তে। সদ্যবিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে যাবেন। মেলি বললেন, “তাই সই। তুমি না হয় ক্রিকেটের পাশাপাশি মধুচন্দ্রিমাটাও সেরে এসো।”
ঠিক হল, কানাডা ও আমেরিকায় খেলবেন তাঁরা। তখনকার তারকাখচিত অস্ট্রেলিয়া দলের অনেকেই চেপে বসলেন সিডনি থেকে ছাড়া জাহাজে। ভিক রিচার্ডসন, স্ট্যান ম্যাকেব, চাক ফ্লিটউড স্মিথ।
ভ্যাঙ্কুভার, ব্রোকটন পার্ক, মনট্রিয়ল ঘুরে নিউ ইয়র্কে তাঁবু ফেলল ডন-প্রদর্শনী। দুনিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান কানাডায় বড় রান করে এসেছেন। কিন্তু নিউ ইয়র্কে শূন্য রানে ফিরলেন। দারুণ কাহিনি রয়েছে ডনের আউট হওয়া নিয়ে। তাঁর উইকেট নিয়ে বোলার বাউন্ডারি লাইন ধরে উল্লাস করতে করতে ছুটতে লাগলেন। তার পরে সেই বোলার টুপি খুলে দেখাতে থাকলেন, শুধু ব্র্যাডম্যানকে আউট করার জন্যই গ্যালারি থেকে কত মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছেন! শোনা যায়, পরের দিনের সংবাদপত্রের ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানকে নিয়ে শিরোনাম দেখে আকৃষ্ট হন ওয়াল্ট ডিজ়নি। সেই শিরোনাম ধার করেই নামকরণ হয় কার্টুন চরিত্র ‘ডোনাল্ড ডাক’-এর।
পৃথিবীর খুব কম শহরই পাওয়া যাবে, যাদের বরাতে পেলে এবং ব্র্যাডম্যান— দুই সম্রাটের খেলা দেখার বাম্পার লটারি জুটেছে। নিউ ইয়র্ক সেই বিরল ব্যতিক্রমী শহর। যেখানে ‘টুইন টাওয়ার’-এর মতোই পেলে এবং ব্র্যাডম্যান— দুই মহাস্তম্ভ জ্বলজ্বল করছে। পেলে নিউ ইয়র্ক কসমস-এ সই করেন ১৯৭৫-এ। ব্র্যাডম্যানের জাহাজ নোঙর ফেলে তারও তেতাল্লিশ বছর আগে। তত দিনে বাজারে এসেছে নিউ ইয়র্কের নতুন নাম— ‘দ্য বিগ অ্যাপেল’। যে নামকরণের নেপথ্যে, শোনা যায়, এক ঘোড়দৌড় সংবাদদাতা। তিনি— জন জে ফিৎজ়েরাল্ড, ১৯২০ নাগাদ ‘নিউ ইয়র্ক মর্নিং টেলিগ্রাফ’-এ ঘোড়দৌড়ের একাধিক প্রতিবেদনে ‘বিগ অ্যাপেল’-কথাটি উল্লেখ করেন। পরে নিউ ইয়র্ক টুরিস্ট সংস্থা উপলব্ধি করে, বাহ্, নামটি তো বেশ। শহরের প্রচারকার্যে লাগানোই যায়।
উপরে কোথাও আর্থার মেলির সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে জগমোহন ডালমিয়ার। একটা সময় ডালমিয়াকে নেশার মতো তাড়া করত ‘গ্লোবালাইজ়েশন অব ক্রিকেট’। সেটা কী, খায় না মাথায় দেয়, তখন অনেকেই বুঝতে পারছেন না। আর প্রথম এশীয় হিসেবে আইসিসি প্রেসিডেন্টের চেয়ার জিতে নেওয়া ডালমিয়া বলতে থাকেন, মাত্র আট-দশটা দেশ কেন ক্রিকেট খেলবে? সারা বিশ্ব খেলবে। ক্রিকেটের বিশ্বায়ন তিনি ঘটিয়েই ছাড়বেন। দু’টি দেশের দিকে তাঁর বিশেষ নজর ছিল। আমেরিকা ও চিন। দুই সর্বশক্তিমান দেশকে ক্রিকেটে আগ্রহী করে তুলতে পারলে নাকি একেবারে ‘খুল যা সিম সিম’ হয়ে যাবে। ধনভান্ডারে ভর্তি লুক্কায়িত গুহার দরজা খুলে ফেলা যাবে। ডালমিয়ার স্বপ্নের প্রকল্প শেষ পর্যন্ত বুদবুদের মতো দেখা দিয়ে মিলিয়ে যায়। ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তিনি। কিন্তু আমেরিকা বা চিনকে দিয়ে নিয়মিত ভাবে ক্রিকেট খেলাতে পারেননি। কানাডার টরন্টোতে ভারত-পাক এক দিনের ম্যাচের সিরিজ় হয়েছে ডালমিয়া সর্বশক্তিমান থাকার সময়ে। ১৯৯৭-এ। বাঙালি ক্রিকেট অনুরাগীদের ভোলার কথা নয়, সেই সিরিজ়ে পাঁচটি ম্যাচের চারটিতেই ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তার পরেও কেটে গেল সাতাশ বছর। আমেরিকায় ক্রিকেটের প্রসার তো ঘটেইনি, কানাডাতেও ভারত-পাক বন্ধ। ডালমিয়ার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার আলি বাখার চেষ্টা করেছিলেন। আইসিসি-তে ঝড় বইয়ে দেন বাখার যে, ডিজ়নিল্যান্ডে বিশ্বকাপ হোক। নতুন দেশে কেন পাড়ি দেবে না ক্রিকেট? কিন্তু প্রস্তাব ফাইলবন্দি হয়েই থেকে গিয়েছে। ইন্টারনেট, গুগ্ল, টুইটার (অধুনা এক্স), ফেসবুকের মতো বিপ্লব ঘটে গিয়েছে। আমেরিকায় চিকেন টিক্কা কাবাব জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দেশ আইফোন বানানো ফেলে ক্রিকেট খেলতে ছুটেছে বলে শোনা যায়নি। হলিউড কোনও ক্রিকেট চরিত্রকে নিয়ে বায়োপিক করার আগ্রহ দেখায়নি। এ রকম জটিল নিয়মকানুনের একটা খেলা। রাতারাতি বুঝিয়ে ওঠাই বা সম্ভব কী ভাবে? ভারতে এসে ও দেশের কেউ যদি বলে, ‘এই চলো বেসবল দেখবে’, কেউ ছুটবে?
ক’দিন আগেও ধন্য ধন্য করা হচ্ছিল, আইসেনহাওয়ার পার্কে রাতারাতি কী ভাবে ৩৪,০০০ দর্শকাসনের একটা স্টেডিয়াম বানিয়ে ফেলা হয়েছে। শুধু আমেরিকার পক্ষেই সম্ভব। বিশ্বকাপের পরে আবার নাকি সেই স্টেডিয়ামকে পার্কে পরিণত করে ফেলা হবে। কিন্তু নিউ ইয়র্কের এই নতুন স্টেডিয়াম নিয়েই এখন বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ‘ড্রপ-ইন’ পিচ অর্থাৎ অন্যত্র তৈরি করা বাইশ গজ এনে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা অনেকের ভাষায় ক্রিকেটের অযোগ্য। বল লাফাচ্ছে, নিচু হচ্ছে, কোনওটা মন্থর গতিতে যাচ্ছে, কোনওটা দ্রুত গতিতে। বেশি রান উঠছে না। এই ক্রিকেট দেখে কারও নিশ্চয়ই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বন্ধু অ্যালেন গিন্সবার্গের কবিতা মনে পড়বে না। ভারতের প্রথম ম্যাচে ঋষভ পন্থের বাজে লাগল। ভারত-পাক নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে, কিন্তু যশপ্রীত বুমরা বা শাহিন শাহ আফ্রিদির একটা দ্রুতগতির বল লাফিয়ে উঠে কাউকে আহত করে দিলে তো কেলেঙ্কারি হবে।
এই প্রথম কোনও বিশ্বকাপ হচ্ছে, যেখানে স্থানীয় সংগঠকদের কোনও ভূমিকা নেই। আমেরিকায় যে ক্রিকেট সংস্থা খেলা চালাত, তাদের কয়েক বছর আগে আইসিসি বাতিল করেছে। এখন যারা ক্ষমতায়, তারা বিশ্বকাপের কোনও কিছুর দায়িত্বে নেই। সব করছে আইসিসি। বিশ্বকাপের ৫৫টি ম্যাচের মাত্র ১৬টি হবে আমেরিকার তিনটি কেন্দ্রে— ডালাস, ফ্লরিডা ও নিউ ইয়র্ক। বাকি ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে। ১৯৯৪-এ আমেরিকায় বিশ্বকাপ ফুটবল হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, আমেরিকাবাসী সব ছেড়েছুড়ে ফুটবলই খেলছে। তাদের প্রধান খেলা তিনটি ছিল, তিনটিই আছে। বেসবল, বাস্কেটবল অর্থাৎ এনবিএ ও এনএফএল, অর্থাৎ আমেরিকান ফুটবল।
সম্প্রতি মেজর লিগ ক্রিকেট চালু হয়েছে। মাইক্রোসফ্ট সিইও সত্য নাদেলা লিগের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। স্টিভ স্মিথ, ট্র্যাভিস হেড, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, রাচিন রবীন্দ্রের মতো তারকারা খেলছেন। বিশ্বকাপ এনে দিচ্ছে বিরাট কোহলির মতো এ যুগের মহাতারকাকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ। এই ইন্টারনেট-যুগে যিনি শুধু ভারতের নন, বিশ্ব-নায়ক হয়ে উঠেছেন। ক্রিকেট না বুঝতে পারি, কিন্তু কে এই কোহলি ছেলেটা, যে কিনা সমাজমাধ্যমে অনুরাগীর সংখ্যায় নেমারকেও ছাপিয়ে গিয়েছে? তার খোঁজ করতেও কি লোকে আসবে না? এর মধ্যেই আবার আয়োজক দেশ হিসেবে আমেরিকা হারিয়ে দিল পাকিস্তানকে। নিঃসন্দেহে বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অঘটন। তাতে আগ্রহ বাড়বে না? আবার এটাও মনে রাখতে হবে, পনেরো জনের এই আমেরিকা দলে মাত্র চার জন সে দেশের। আশার পাশাপাশি আশঙ্কাও থাকছে। বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেলেই রাশিয়ান সার্কাস তাঁবু গুটিয়ে চলে যাওয়ার মতো হবে না তো? সব উৎসাহ, উন্মাদনা উড়ে যায় যদি?
ম্যাচগুলোও এমন বিচ্ছিরি সময়ে হচ্ছে! ভারতের খেলা ভারতীয় সময় রাত আটটায়। আমেরিকার সময়ে সকালবেলায়। মেক্সিকো বিশ্বকাপে ফিফা প্রধান হোয়াও হ্যাভেলাঞ্জ সকালে খেলা করাচ্ছিলেন টিভি সম্প্রচারকদের কথায়। যাতে ফিফার কোষাগারে বেশি টাকা ঢোকে। মাঠের অবস্থাও ছিল খুব খারাপ। যে কারণে মারাদোনার সেই ফুটবল আরও বেশি করে অমর শিল্প হয়ে থেকে যাবে। বর্তমান আইসিসি প্রেসিডেন্টের নামই অনেকে জানে না। তিনি, নিউ জ়িল্যান্ডের গ্রেগ বার্কলে, এ বারের বিশ্বকাপের খলনায়ক হয়ে উঠলে কিন্তু অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
উপরের সেই আড্ডায় যদি হঠাৎ যোগ দেন প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়? মন্দ হয় না। ডালমিয়া তখন আইসিসি প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে শীর্ষ বৈঠক হচ্ছে। লবিতে সাংবাদিকদের ঝাঁক। হঠাৎ সেখানে হাজির পিকে। জানতে চাইলেন, ‘এত ভিড় কিসের?’ বলা হল, ক্রিকেটের বিশ্বায়ন নিয়ে বৈঠক করছেন ডালমিয়া। শুনে স্বভাবসিদ্ধ ভোকাল টনিক ঢঙে প্রসিদ্ধ প্রতিক্রিয়া, “জগুও পারে। গ্লোবালাইজ়েশন অব ক্রিকেট! মালয়েশিয়া নাকি খেলবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। মালয়েশিয়া অলআউট ১০! বোঝো!”
ফুটবলের লোক হয়েও কি পিকে ঠিক দেখেছিলেন? ওহে জল নয়, মরীচিকার পিছনে ছুটছ তোমরা! হলিউড পাড়ায় ক্রিকেট কি আগন্তুকই থেকে যাবে? নাকি টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো আধুনিক অস্ত্রসজ্জায় বলীয়ান কোহলি হয়ে উঠবেন
সুপারহিরো? ওয়াল্ট ডিজ়নি ফের শিরোনাম ধার করবেন বিশ্বকাপের ম্যাচ থেকে?
এক-এক সময় মনে হচ্ছে, দু’টো বিশ্বকাপ যেন সমান্তরাল ভাবে চলছে। একটায় দেখা হবে, বিশ্বকাপ কারা জিতল। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা অধরা আইসিসি ট্রফি জিতলেন কি না। অন্যটা আরও গভীর। আরও তাৎপর্যের। বিশ্বকাপ আমেরিকাকে জিততে পারল কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy