ছবি: অমিতাভ চন্দ্র।
এ শহরে জালিয়াতি কি আর আজকের কথা! ‘জাল জুয়াচুরি মিথ্যে কথা/ এই তিন নিয়ে কলকাতা।’— ছড়াটা লিখেছিলেন হরিহর শেঠ, তাঁর ‘প্রাচীন কলকাতা পরিচয়’-এ। লোক ঠকাতে এই শহরের এক শ্রেণি সদা তৎপর।
সেই আঠারো শতক থেকে কলকাতার নগরায়ণ যত এগিয়েছে, শহরের আর্থ-সামাজিক অবস্থা যত জটিল হয়েছে, তত বৃদ্ধি পেয়েছে বাঙালির মধ্যে জাল-জোচ্চুরির প্রবণতা। শুধু অর্থের প্রলোভনে নয়, কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রয়োজনেও আশ্রয় নেওয়া হত জালিয়াতির। ১৭৮৫-তে দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহের ছেলে প্রাণকৃষ্ণ সিংহ ছিলেন কমিটি অব রেভিনিউ-এর ডেপুটি দেওয়ান। তাঁকে ফাঁদে ফেলে পদচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করে রামচন্দ্র সেন এবং গোপী নাজির। তারা প্রাণকৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে, তিনি গোলাম আসরফকে ফৌজদারি রসিদ জাল করতে সাহায্য করেছেন, ইউনাইটেড কোম্পানির সঙ্গে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু তদন্ত করে দেখা গেল, ডেপুটি দেওয়ানের সই জাল করে তাঁর সর্বনাশ করার জন্য এই ষড়যন্ত্র।
এই সব জালিয়াতির সঙ্গে মাঝে মাঝে জড়িয়ে পড়তেন বিশিষ্ট সম্ভ্রান্ত মানুষও। রাজা বৈদ্যনাথ রায় ছিলেন রাজকিশোর দত্তের পৃষ্ঠপোষক। ১৮২৮-এর ১ মে রাজকিশোর প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া’। রাজা বৈদ্যনাথ তাঁকে ঘন ঘন ঋণ দিতেন লগ্নি হিসেবে। কিন্তু রাজকিশোর লোভে পড়ে শুরু করে দিল কোম্পানির কাগজ, নোট প্রভৃতি জাল করা। বাজার ছেয়ে গেল জাল নোটে। অবশেষে ধরা পড়ল রাজকিশোর। রাজা বৈদ্যনাথ জড়িয়ে পড়েছিলেন এই মামলায়, কারণ তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল কিছু জাল নোট। তবে তিনি রেহাই পেয়ে যান যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে। এই রাজকিশোরই কোম্পানির পদস্থ আমলাদের ঠকিয়ে আদায় করেছিলেন সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। তিনি কোম্পানির কাগজ বন্ধক রেখে টাকা ধার করার আর্জি পেশ করেন। কাগজগুলো যখন সেক্রেটারি জে এন ডারিন-এর কাছে পাঠানো হল খতিয়ে দেখার জন্য, সন্দেহ হল তাঁর। তিনি জানালেন, কাগজগুলো সম্ভবত জাল। কিন্তু অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল কাগজগুলোকে আসল বলে স্বীকৃতি দিলে রাজকিশোর দত্ত সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে চলে গেলেন হাসতে হাসতে। পরে জানা গেল, কাগজগুলো জাল। আসলে এমন নিপুণ কৌশলে এই প্রতারণা করা হয়েছিল যে, কোম্পানির খোদ অর্থনৈতিক সচিব এইচ পি প্রিন্সেপ পর্যন্ত ধরতে পারেননি, কাগজের উপরে তাঁর সইটা নকল।
১৮২৯ সালের ঘটনা। প্রাণকৃষ্ণ হালদার সে সময় কলকাতার অন্যতম বিশিষ্ট ধনী। সরকারের উঁচু মহলেও তাঁর বিশেষ প্রভাব। শহরের সম্ভ্রান্ত এবং পদস্থ সায়েবদের নিয়ে পার্টি দিতেন তাঁর বিলাসভবনে। নাচের মজলিশ বসাতেন কলকাতা ও চুঁচড়োয়। তিনি নাকি ধূমপান করতেন একশো টাকার নোট দিয়ে তামাক জড়িয়ে। এ হেন ব্যক্তি হঠাৎ এক দিন গ্রেফতার হলে হতবাক হয়ে গেল কলকাতার তাবৎ ধনী ও বিশিষ্টজনেরা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রমিসরি নোট জাল করে ওই নোটের বিনিময়ে সওদাগরদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন পঞ্চাশ-ষাট লক্ষ টাকা। আদালতের বিচারে প্রাণকৃষ্ণের শাস্তি হল সাত বছরের দ্বীপান্তর। তাঁর শাস্তি মকুব করার জন্য কলকাতার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা, এমনকি জুরির এক জন সদস্য পর্যন্ত উঠেপড়ে লেগেছিলেন। সুখের কথা, বিচারপতি প্রভাবিত হননি বিন্দুমাত্র।
১৮৫০-এর দশকে হস্তাক্ষর এবং স্বাক্ষর জাল করার বিখ্যাত বিশারদ ছিলেন শ্রীনাথ সরকার। সমসাময়িক পুলিশ রেকর্ডে লেখা আছে, ‘দ্য সেলিব্রেটেড শ্রীনাথ সরকার... দ্য মোস্ট ক্লেভার ফর্জার ইন বেঙ্গল’। অনেক জালিয়াতি মামলায় জড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করতে পারেনি বহু দিন। ১৮৫২-তে শেষ পর্যন্ত সাগরেদ-সহ শ্রীনাথ ধরা পড়েন চেকে সই জাল করতে গিয়ে। তাঁর দুই সঙ্গী শ্রীনাথ নিয়োগী এবং তারকনাথ দত্ত ছিলেন ব্যাঙ্কের কর্মী। উত্তর ভারতের জনৈক ব্যবসায়ী প্রেমভয় হেমচাঁদের নামে দরখাস্ত পেশ করে তাঁরা একটা চেকবই জোগাড় করেন। শ্রীনাথ নিয়োগী ও তারকনাথ দত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী ছিলেন বলে কাজটা সহজ হয়েছিল। তার পর শ্রীনাথ সরকার চেকে ব্যবসায়ীর সই জাল করে টাকা তুলে নেন ব্যাঙ্ক থেকে।
‘মিয়াজান দারোগার একরারনামা’ গ্রন্থে দলিল জাল করার যে কৌশলের বর্ণনা রয়েছে, তা পড়লে মনে হয়, ক্লাইভের মতো জালিয়াতও তাঁর কাছে শিশু, যিনি উমিচাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন অ্যাডমিরাল ওয়াটসনের সই নকল চুক্তিপত্রে জাল করে। বাঙালি জালিয়াতদের কাছে নতুন দলিলের কাগজকে পুরনো বানানো কোনও সমস্যাই ছিল না। যে খড় দিয়ে ঘর ছাওয়া হয়, তা জলে ভিজিয়ে তার মধ্যে কাগজ ডোবালেই কাজ হাসিল। এর পর সেই দলিল যে একশো বছরের পুরনো নয়, কে বলবে! অনেক সময় দলিল থেকে কোনও অপছন্দের কথা মুছে দেওয়ার প্রয়োজন হত। তারও কৌশল জানা ছিল ফেরেব্বাজদের। অপছন্দের শব্দটার ওপর মিষ্টি মাখিয়ে রেখে দিত আরশোলার সামনে। কিছু পরে দেখা যেত, অবাঞ্ছিত শব্দের জায়গাটা খেয়ে নিয়েছে আরশোলা।
কিছু মানুষ ছিল অত্যন্ত ঝানু। আইনের অলিগলি ছিল তাদের নখদর্পণে। তাই জালিয়াতি বা প্রতারণা করাই ছিল তাদের পেশা। হুতোম লিখেছেন, ‘হাইকোর্টের অ্যাটর্নীর বাড়ির প্যায়দা ও মালী পর্যন্ত আইনবাজ হয়ে থাকে, সুতরাং বঙ্কবেহারী বাবু যে তুখোড় আইনবাজ হবেন তা পূর্ব্বেই জানা গিয়েছিল— আইন আদালতের পরামর্শ, জাল জালিয়াতের তালিম, ইকুটীর খোঁচ ও কমন্লার প্যাঁচে বঙ্কবেহারী বাবু দ্বিতীয় শুভঙ্কর ছিলেন।... এমনকী টেকচাঁদ ঠাকুরের ঠক্ চাচাও তাঁর কাচে পরামর্শ নিতেন।’ টেকচাঁদ ঠাকুরের ‘আলালের ঘরের দুলাল’ উপন্যাসের বিখ্যাত চরিত্র ঠক্ চাচার আসল নাম ছিল মোকাজান মিয়া। জাল মোকদ্দমা সাজাতে পটু ছিলেন বলে লোকে তাঁর নাম দেয় ঠক্ চাচা। তাঁর জীবনদর্শন ছিল, ‘দুনিয়া সাঁচ্চা নয়— মুই একা সাঁচ্চা হয়ে কি কর্বো?’
কলকাতায় এক শ্রেণির বাঙালি মুদ্রা জাল করার চমৎকার পদ্ধতি আবিষ্কার করে বেশ কিছু কাল বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল কোম্পানির অর্থব্যবস্থাকে। আসল ও নকল মুদ্রার মধ্যে বিন্দুমাত্র পার্থক্য ধরা সম্ভব ছিল না সাধারণ মানুষের পক্ষে। কিন্তু মুদ্রা জাল করা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ১৮৫০-এর পর, যখন ইউরোপে উন্নততর প্রযুক্তিতে মুদ্রা তৈরি হতে থাকল। এই ‘সমস্যা’র সমাধান করলেন শ্যামাচরণ মুখোপাধ্যায়। তিনি নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে এমন জাল মুদ্রা বাজারে ছড়িয়ে দিলেন যে, ‘রানির মুদ্রা’ পিছু হঠার উপক্রম হল। শেষ পর্যন্ত দারোগা প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায় তদন্ত করে হদিস পেলেন চোরবাগানে জাল মুদ্রার কুটিরশিল্পের কেন্দ্রটির।
জালিয়াতি ও প্রতারণার কাজে পিছিয়ে ছিল না সায়েবরাও। ১৮২৩-এ জনৈক জেমস ট্রেজার-এর বাড়ি হানা দিয়ে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে ব্যাঙ্ক নোট এবং কোম্পানির কাগজ জাল করার সরঞ্জাম। উনিশ শতকে ইংরেজ-বাঙালির যৌথ কারবার টেকেনি মূলত সায়েবদের প্রতারণার জন্য। গোপীমোহন ঠাকুর প্রতারিত হয়েছিলেন ম্যাথু স্মিথ অ্যান্ড কোম্পানিকে বিশাল অঙ্কের ঋণ দিয়ে। তাঁর সঙ্গে রীতিমতো জালিয়াতি করা হয়েছিল। একই ভাবে মতিলাল শীল ঠকে গিয়েছিলেন হেনরি ডসন-কে ঋণ দিয়ে। লোকসান হয়েছিল পঞ্চাশ লক্ষ টাকা। ১৮৪০-এর দশকে এক বাণিজ্যিক সংস্থার শেয়ারহোল্ডার আশুতোষ দেবের সঙ্গে প্রতারণা করে জাহাজে চড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
ভেক বদল করে একেবারে এ কালের মতো প্রতারণা দেখা যেত উনিশ শতকেও। মধ্যবিত্ত পরিবারের এক বাঙালি যুবকের এমন প্রতারণার কথা লিখেছেন প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়। স্কুলের পাঠ মাঝপথে ছেড়ে-দেওয়া এই যুবকটি জাল নথিপত্র পেশ করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিল অল্প দিনের জন্য। ওষুধপত্র সম্পর্কে একটা ভাসা-ভাসা ধারণা সে তৈরি করে, তার পরেই বনে যায় ডাক্তার। শহরে ক্লিনিকও খুলেছিল সে। চিকিৎসা করতে গিয়ে কোনও রোগীর চোখে তার বিদ্যেবুদ্ধি সম্পর্কে সন্দেহের ছায়া দেখতে পেলেই সে যে বিষাক্ত ওষুধ প্রয়োগ করত, তাতে রোগী মারা যেত হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে বা অন্য কোনও অসুস্থতায়। উঁচু মহলের আমলাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় সে সব দায় ঝেড়ে ফেলতে পারত। কিন্তু দুর্ভাগ্য, নিজের ভাইয়ের জীবনবিমার টাকার লোভে ভাইকে বিষ প্রয়োগে খুন করে সে। জীবনবিমা কোম্পানির সন্দেহ হওয়ায় দারোগা প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে তদন্তের জন্য আবেদন করল তারা। কিন্তু তিনি অনেক চেষ্টা করা সত্ত্বেও খুনের প্রমাণ দাখিল করতে পারলেন না। তবে সার্টিফিকেট জাল করার অপরাধে তার শাস্তি হল ছ’বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। বছরখানেক জেলে কাটানোর পর সে পাগল হওয়ার ভান করল। তাকে পাঠানো হল পাগলা গারদে, সেখানে ক্রমশ ভাল হয়ে উঠল। কিন্তু হাসপাতালের ডাক্তার বললেন, তাকে আবার জেলে পাঠালে সে ভয়ঙ্কর উন্মাদে পরিণত হবে। সুপারিশ করলেন, পরিবারের সঙ্গে তার থাকা উচিত। অবাক কাণ্ড, ছোটলাটও গ্রাহ্য করলেন সেই সুপারিশ। শোনা যায়, পাগলা গারদের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ছিলেন যুবকটির পূর্বপরিচিত। ছোটলাটের সঙ্গে ডাক্তারের বিশেষ ঘনিষ্ঠতা ছিল। তিনিই ছোটলাটকে বুঝিয়ে তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন।
জালিয়াতিতে পিছিয়ে ছিল না মেয়েরাও। খুনখারাপির মতো অপরাধে তারা খুব একটা জড়িত না থাকলেও, ফেরেব্বাজিতে ছিল তাদের মুনশিয়ানা। সুশীলা ছিল এক পতিতা-কন্যা। লেখাপড়া করেছিল, ইংরেজি জানত। পতিতাপল্লি থেকে বেরিয়ে এসে সে বিয়ে করে এক ভদ্রলোককে। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যে স্বামীকে ত্যাগ করে আশ্রয় নেয় এক ব্যারিস্টারের বাড়িতে। বাস করতে থাকে তার সঙ্গে। জায়গাটা মেহেদিবাগান, আজকের ওয়েলেসলি স্ট্রিট। এই অঞ্চলে বাস করত ইউরোপীয়, ইউরেশীয় এবং কয়েকজন ধনী বাঙালি। এক দিন এক জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে সুশীলা উধাও হয়ে গেল মেহেদিবাগান থেকে।
বেশ কয়েক বছর পরে সুশীলার আবির্ভাব ঘটে কলকাতায়। বৌবাজারে এক সোনার দোকানে বিরাট প্রতারণা করে সে চমকে দেয় কলকাতার পুলিশমহলকে। এক দিন সন্ধেবেলায় এক সম্ভ্রান্ত মহিলার বেশে, দামি ঘোড়ায় টানা এক নতুন ব্রুহাম গাড়িতে চেপে সুশীলা পৌঁছল সোনার দোকানে। তার সঙ্গে কথা বলে দোকানের মালিকের মনে হল, মহিলা কোনও বিরাট ধনী পরিবারের উচ্চশিক্ষিতা বধূ। সে দেখতে চাইল খুব দামি এক জোড়া বালা, হিরে-মুক্তো বসানো। অলঙ্কারের রাশি তার সামনে রাখা হল পছন্দ করার জন্য। সুশীলা এক জোড়া বালার সঙ্গে হিরে ও রুবি বসানো দুটো কানের রিং তুলে নিল। মোট দাম বারো হাজার টাকা। তবে দাম দেওয়ার সময় সে একটা ছোট রুপোর বাক্স থেকে একটা দামি ও সুদৃশ্য কার্ড বার করল। কার্ডে লেখা ছিল কলকাতার এক প্রখ্যাত ব্যারিস্টারের নাম। সে নিজের পরিচয় দিল ব্যারিস্টারের স্ত্রী বলে। বলল, কেনার আগে অলঙ্কারগুলো সে দেখাতে চায় তার স্বামীকে, তাঁর পছন্দ হলে সে এগুলো কিনবে। অনুরোধ ঠেলতে না পেরে দোকানের মালিক তার সঙ্গে পাঠিয়ে দিলেন এক বিশ্বস্ত কর্মচারীকে। ব্যারিস্টারের বাড়ি থেকে সে হয় অলঙ্কারগুলো ফেরত আনবে, কিংবা টাকা। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দু’জনের কেউই ফিরল না। উদ্বিগ্ন মালিক খবর দিলেন পুলিশে। সেই রাতেই মাথায় গুরুতর আঘাতে অচেতন হয়ে পড়ে থাকা কর্মচারীকে পাওয়া গেল ময়দানের কাছে।
হাসপাতালে জ্ঞান ফিরলে কর্মচারীর কাছ থেকে জানা গেল, ব্রুহাম গাড়ি বেশ কিছুটা গিয়ে একটা নির্জন স্থানে দাঁড়িয়ে পড়ে, মহিলা তাকে নির্দেশ দেয় গাড়ি থেকে নেমে যেতে। কর্মচারীটি অলঙ্কারের ব্যাগ নিয়ে গাড়ি থেকে নামার সময় হঠাৎ তার মাথার পিছনে কেউ প্রচণ্ড আঘাত করে। অচেতন হয়ে সে পড়ে যায় মাটিতে। পুলিশ কার্ডে নাম লেখা ব্যারিস্টারের বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে তিনি আকাশ থেকে পড়লেন— তাঁর স্ত্রী সে সময় দার্জিলিঙে। পুলিশ শেষ পর্যন্ত সুশীলাকে গ্রেফতার করে চন্দননগরে।
উনিশ শতকে ও পরবর্তী কালে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং বেশ কিছু উচ্চবিত্ত পরিবারের মানুষের মধ্যে যে প্রতারণা, জালিয়াতি, জুয়াচুরি ইত্যাদি অপরাধের প্রবণতা বাসা বেঁধেছিল, তা নিছক অভাবের তাড়নায় নয়। এর জন্য দায়ী ছিল ব্যক্তিবিশেষের মনস্তত্ত্ব। প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতি জালিয়াতদের জুগিয়েছে প্রতারণার অনেক বাঁকা পথ। সে সব কাজে লাগিয়ে সেই ট্র্যাডিশন অব্যাহত একুশ শতকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy