Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৩২
Bengali Story

হাওয়ার আড়ালে

চন্দন হয়তো চা নিয়ে এই ঘরেই আসবে একটু পরে। কেতকীবালা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলেন। শ্যামলেন্দু স্ত্রীর হাত ছাড়লেন না।

ছবি: পিয়ালী বালা।

ছবি: পিয়ালী বালা।

অজিতেশ নাগ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৩ ০৫:০৯
Share: Save:

বৃষ্টি! মিশুক আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল, ও মা! সত্যি তো! আকাশটা কখন কালো হয়ে এসেছে ও খেয়ালই করেনি। ও চেকটা নিতেই চোখটা নিজে থেকেই চলে গেল অ্যামাউন্টের ঘরের দিকে। থ্যাঙ্কস জানিয়ে ফিরতে গিয়ে থমকে গেল।

সোনেলা সরকার না? হ্যাঁ। সোনেলাই তো। পুরো মেকআপে দাঁড়িয়ে একটা ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। সোনেলা মেয়েটা বড্ড বাজে বকে। মিশুক মাথা নিচু করে গেটের দিকেই এগোতেই সোনেলা দেখতে পেয়েছে। বাধ্য হয়ে ঘুরে দাঁড়াতেই চমকে উঠল।

সোনেলার সঙ্গে কথা বলছে সব্য!

সব্যর নাকি বাড়িতে গেস্ট আসবে? আর না আসলেও সব্য এখানে দাঁড়িয়ে গল্প করছে, আর সে জানে না! সব্য কিন্তু এতটুকুও ঘাবড়ে না গিয়ে হেসে এগিয়ে এসে অভ্যেস মতো মিশুকের ব্যাগটা নিজের হাতে নিয়ে বলল, “তুই এখানে?”

প্রশ্নটা তো মিশুকের করার কথা। সব্যকে।

সোনেলা বলল, “ব্যাটা সবে অফিস থেকে বেরিয়েছে। আর আমিও বসে বসে বোর হচ্ছিলাম। হব না বল? সেই এগারোটায় কল টাইম দিয়েছিল, তার পর থেকে মোটে একটা শট নিয়েই বসিয়ে রেখেছে। কত ক্ষণ আর ওটিটি দেখা যায়? ব্যাটাকে ফোন করলাম। বাড়ি চলে যাচ্ছিল বুঝলি, আমিই জোর করে আনিয়েছি। ভালই হয়েছে। আমারও আজকের লাস্ট শট হয়ে গেছে। ওকে বললাম, চল আজ আড্ডা মারি। ও-ও বলল হাতে কাজ কিছু নেই, চল, কোথায় নিয়ে যাবি। তাই আমরা ভাবছি আজকে কোথাও বসে আড্ডা মারব। শুধু আমরাই নয়, আরও দু’-চারটে জ়াভেরিয়ানকেও ডেকেছি। ওরাও আসছে। ভালই হল তুই এলি। তুইও চল। দাঁড়া। আগে মেকআপটা তুলে আসি। তোরা তত ক্ষণ আড্ডা মার। আমি এই যাব আর আসব।”

উফ! এত বকবক করতে পারে! কিন্তু সোনেলা হাওয়া হয়ে যেতেই অনেকগুলো প্রশ্ন ঠোঁটের আগায় এসে বুজকুড়ি মেরে জমে গেল মুখের মধ্যেই। এ সবের মানে কী? আর সব্য এমন ব্যবহার করছে যেন কিছুই হয়নি। সব কিছু একেবারে নর্মাল। একটা আলগা অভিমান এসে মিশুকের মুখ বন্ধ করে দিল।

সব্যসাচী বলল, “এই সেরেছে! আজ ইভনিংয়ে তোর সঙ্গে অ্যাপো না? আমি তো ভুলেই মেরে দিয়েছিলাম মাইরি।”

কোনও উত্তর না দিয়ে গেটের দিকে হাঁটা দিল মিশুক। দৌড়ে এসে সব্য হাত ধরে ফেলল, “কোথায় যাচ্ছিস নিনি? দাঁড়া। সোনেলার হয়ে এসেছে। আর একটু সময়...”

“হাত ছাড়। আমি জ়াভেরিয়ান নই।”

“ধুস, তাতে কী হল। আড্ডা মারতে দোষ কী?”

“তোর না বাড়িতে গেস্ট আসার কথা?”

“বলেছিলাম? তা হলে ঢপ মেরেছি।”

ভীষণ আহত হয়ে মিশুক বলল, “ঢপ মারতে হল কেন!”

“কী জানি। আচমকা কেমন ইচ্ছে করল। আসলে সোনেলা...”

“ফাক ইয়োর সোনেলা!”

আচমকাই মাথাটায় আগুন ধরে গেল মিশুকের। আশপাশের চারটে লোককে চমকে দিয়ে সে ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিল সব্যর গালে। অথচ সব্যর বিশেষ কোনও ভাবান্তর হল না।

একই ভাবে মিশুকের কব্জির কাছটা চেপে ধরে বলল, “রাগ করছিস কেন? সোনেলা আমার অনেক দিনের বন্ধু, বলেইছিলাম তোকে। তা ছাড়া আয়্যাম কামিং টু...”

হিসহিস করে উঠল মিশুক, বলল, “শোওয়া হয়ে গেছে, তাই তো? তাই এখন অন্য বডি খুঁজছিস। তাই তো?”

অবাক হয়ে সব্যসাচী বলল, “কী বলছিস!”

দ্রুতপায়ে গেটের দিকে চলল মিশুক। পিছনে সব্যর গলার আওয়াজ পাওয়া গেল, “হোয়াট হ্যাপেন্ড নিনি?”

হনহন করে গেট পেরিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে এল মিশুক। তার পর সেই একই গতিতে মিনিট কুড়ি হেঁটে এসে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ল।

কোথায় যাচ্ছে সে? পরমুহূর্তে বুঝতে পারল, টুপটাপ বৃষ্টির ফোঁটা এসে মাথায় পড়ছে। তার সঙ্গে ভীষণ ঠান্ডা-ঠান্ডা হাওয়া। মিশুকের মনে হল বিবিকে একটা ফোন করা দরকার। মোবাইলটা বার করতে হাতের দিকে তাকিয়ে বুঝল, ব্যাগটা সব্যর হাতেই থেকে গেছে। যাঃ, ব্যাগের মধ্যেই তো সব কিছু। আজকের চেক, মানিপার্স, কার্ড সব সব কিছু। ভীষণ জলতেষ্টা পাচ্ছে ওর।

নিজেই নিজেকেই ধমকাল, “পাক, তেষ্টা পাক, একটু কষ্ট পাক শরীরটা। আরামে থেকে থেকে তোমার খুব বাড়বাড়ন্ত হয়েছে, তাই না?”

বৃষ্টির তোড় বাড়তেই আশপাশের মানুষজনের মধ্যে দৌড়োদৌড়ি পড়ে গেল। সবাই মাথা বাঁচাতে যে যার মতো আশ্রয় খুঁজে নিচ্ছে। মিশুক ভাবল, চার দিকে যত্ত বোকা মানুষের দল। একটু কিছু সহ্য করতে পারে না। একটু বেশি গরম হলেই, গেলুম গেলুম। একটু হিমেল হাওয়া দিলেই রাজ্যের লেপ-তোশক নামিয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলবে, মলুম মলুম। আর আজ দেখো, কী সুন্দর একটা রিমঝিম বৃষ্টি নেমেছে। অমনি মরতে মরতে সবাই দৌড়চ্ছে, বাঁচাও বাঁচাও। সবার মনোযোগ বৃষ্টির দিকে নয়, বৃষ্টিহীনতার দিকে। আশ্চর্য! আজ হাঁটবে মিশুক, অনেকটা হাঁটবে। বৃষ্টিতে ভিজবে, অনেকটা ভিজবে। সারা জীবনটাই তো বাড়ি আর স্কুল, বাড়ি আর ফ্লোর, বাড়ি আর মাচা— এই করেই গেল।

স্কুলে থাকার সময় স্কুলের ভ্যান ছিল, আর এখন রাস্তায় নামলেই ট্যাক্সি, নয়তো অ্যাপ-ক্যাব। সারা জীবনে সে কত কত বছর ঘুমোল, কত কত বছর খেয়েদেয়ে, গপ্পো করে কাটিয়ে দিল, কিন্তু হাঁটল কতটা? মনে মনে ম্লান হেসে ফেলল মিশুক। না হেঁটেই বা উপায় কী? সঙ্গে একটা টাকাও নেই। স্টুডিয়োয় ফিরে গেলেই হত, ইচ্ছে নেই।

একটা মোড় ঘুরতে দেখল একটা চায়ের দোকান। ইস, চা খেতে খুব ইচ্ছে করছে। উপায় নেই। চায়ের দোকানের চালার নীচে আশ্রয় নেওয়া লোকগুলো অবাক হয়ে মিশুককে দেখছে। হয়তো পাগলি ভাবছে। মিশুক লক্ষ করল এক জনের হাতের চায়ের গ্লাসে টুপটাপ করে জল ঝরে পড়ছে উপরের চালের কানা বেয়ে। লোকটার হুঁশ নেই। সে অবাক হয়ে তাকেই দেখছে। এমনই ভারী মজার সব লং শট, ক্লোজ় শট চার দিকে। না হাঁটলে কোনও দিন জানতেই পারত না মিশুক। পাটুলির রাস্তা তার চেনা। কিন্তু বড্ড শীত করছে মিশুকের। করুক। করুক শীত। ভিজতে ভিজতে সে হেঁটে চলল রাস্তার এক পাশ ধরে।

এই জন্যই লোকে বলে সহ্যের একটা সীমা আছে। আজ সকাল থেকেই মনটা ভারী চঞ্চল হয়ে আছে কস্তুরীর। রাতে ভাল ঘুম হয়নি। কেমন ছিঁড়ে ছিঁড়ে যাচ্ছিল। একটা দুঃস্বপ্নও দেখেছিল, সকালে আর মনে নেই। গোদের উপরে বিষফোড়া, কাল ডিনারের পর থেকে টের পেয়েছে তলপেটে ব্যথা হচ্ছে। রাতে শুতে যাওয়ার আগে বুঝল, শুরু হয়ে গেছে। ভাগ্যিস কাল অফিসে ছুটি। তাই রেস্ট নিতে পারবে। অনেকটা বেলা অবধি ঘুমোবে।

কিন্তু অভ্যেস বড় বিচিত্র! ভোরবেলা উঠে ঠান্ডা জলে স্নান কস্তুরীর অভ্যেস, সেই মালবাজার থেকেই। সেই অভ্যেসে আজ সকালে লেপের নীচ থেকে উঠে বারান্দায় এসে দেখল, চার দিকে কুয়াশা। বাপরে কী শীত! একটা ঠান্ডা হাওয়া এসে যেন র‍্যাপার-ঢাকা কস্তুরীর বুকের হাড়গুলো কাঁপিয়ে দিয়ে চলে গেল। তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে এল সে। কিন্তু যতই ঠান্ডা হোক, স্নান তার চাই, তাও আবার গিজ়ারের জলে আরাম করে নয়। আজ শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে নব ঘোরাতেই হু-হু করে বরফঠান্ডা জল এসে কস্তুরীর ব্রহ্মতালু জমিয়ে দিল। তারই ধাক্কায় সামান্য কেঁপে উঠলেও শাওয়ারের নীচ থেকে নড়ল না কস্তুরী।

মনের মতো করে স্নান সেরে বাইরে আসতেই বুঝল, রাত জাগার ক্লান্তিটা আর নেই। তবে তলপেটের ব্যথাটা মারাত্মক।

কস্তুরী প্রাতরাশ তৈরি করে খেয়েও নিল। কাল ভেবেছিল বাড়িতেই থাকবে। কিন্তু ভোর হতেই ভেবে দেখল তাকে বেরোতেই হবে। চিন্তা কি একটা? মেহুলি আয়ারল্যান্ডে পৌঁছে ইস্তক একটাও ফোন করেনি। কোনও বিপদ-আপদ হল না তো?

স্বর্ণেন্দু কী আশ্চর্য লোক রে বাবা! তা হলে প্রথম যে দিন তাদের বাড়িতে এসেছিল, সে দিনই কস্তুরীকে চিনতে পেরেছিল! তা হলে পরিচয় দেয়নি কেন? সেটা কি আকিঞ্চনের জন্য? না কি প্রচ্ছন্ন অভিমান? এটা ভাবতেই অন্য আর একটা ভাবনা মনে এসেছিল।

এতগুলো বছর পেরিয়ে দু’জনের চেহারাতেই তো পরিবর্তন এসেছে। তা হলে স্বর্ণেন্দু চিনতে পারল, কস্তুরী পারল না কেন? তা হলে কি কস্তুরীর চেহারায় পরিবর্তন অনেকটাই কম? দূর, আয়নায় সে কি নিজেকে দেখে না? সেই মালবাজারের ছিপছিপে, গন্ধওয়ালা তেল দেওয়া দু’বিনুনিওয়ালা কস্তুরী মজুমদারের চেয়ে এখন গিন্নিবান্নি কস্তুরী রায়ের অনেকটাই ফারাক।

আর একটা জ্বালা। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই হোয়াটসঅ্যাপ চেক করেছে কস্তুরী। নাঃ। ‘তিতি’ নামের কন্ট্যাক্টে শেষ মেসেজ এসেছে পরশু দুপুর তিনটে। লেখা আছে, ‘শটে আছি। বেরিয়ে ফোন করছি’। ব্যস। তার পরে কস্তুরীর চার-চারটে মেসেজ। নো রিপ্লাই। তার চেয়েও চিন্তার ‘লাস্ট সিন’ দেখাচ্ছে পরশু বিকেল পাঁচটা বেজে তিন। তার মানে এর মধ্যে মিশুক হোয়াটসঅ্যাপ দেখেনি। কিন্তু কেন? যে মেয়ে ফাঁক পেলেই হোয়াটসঅ্যাপ আর মেসেঞ্জার চেক করে, সে দিব্যি বেপাত্তা? তার উপরে কাল সকালে একটু বেলার দিকে ফোন করেছিল আর না থাকতে পেরে। ফোন সুইচড অফ। এ কী রে বাবা! শুনেছিল মিশুকের আর একটা নম্বর আছে। সেটা তো নেওয়া হয়নি! মিশুকের বাড়িতে অন্য মেম্বারদের নিশ্চয়ই ফোন আছে। কিন্তু নম্বর জানা নেই। মহা মুশকিল। আর যদি মিশুকের একটা ভালমন্দ কিছু হয়েই যায়, অন্তত আরতিদেবীর তো তাকে জানানো উচিত।

চটপট রেডি হয়ে নীচে আসতেই দেখল ড্রয়িংরুমে কেতকীবালা বসে আছেন সোফায়, জানলার দিকে মুখ করে। চন্দন কিছু একটা করছে রান্নাঘরে, টুংটাং আওয়াজ ভেসে আসছে। শ্যামলেন্দুকে দেখতে পেল না সে। হয়তো টয়লেটে। কস্তুরী কেতকীবালার দিকে তাকিয়ে বলল, “মা, আমি একটু বেরোচ্ছি। দুপুরের মধ্যেই ফিরে আসব। আপনাদের যদি ওষুধবিষুধ কিছু লাগে, তা হলে...”

কেতকিবালা যেন এই কথাগুলোর অপেক্ষাতেই ছিলেন। তিনি মুখ ফেরালেন কস্তুরীর দিকে এবং চাপা গলায় গর্জে উঠলেন, “স্বামী তো নেই। আর কী? বেরিয়ে পড়ো সক্কাল সক্কাল। রাতে না ফিরলেই বা কে আটকাচ্ছে? কে না জানে হাড় থাকলেই মাস হবে। তাই এখন তোমার নতুন জীবন, নতুন...”

নাঃ, আর নেওয়া গেল না। এত ক্ষণ ধরে একটু একটু করে জমিয়ে রাখা শান্তির পাখিটা আচমকাই পাখা মেলে সাঁইসাঁই করে উড়ে পালিয়ে গেল। কস্তুরী হাতের ব্যাগটা নামিয়ে রেখে নিজের মুখটা কেতকীবালা মুখের সামনে এনে দেড়শো ডেসিবেলে চেঁচিয়ে উঠল, “আপনার ছেলে আমার সঙ্গে সঙ্গে আর একটা মেয়ের সঙ্গেও শুত। বুঝতে পারছেন আপনি? অন্য মেয়ের সঙ্গেও শুত। বাবা এই কাজটা করলে আপনি কী করতেন মা? বসে বসে অপেক্ষা করতেন? কখন বাবা জেল থেকে বেরোবে আর আপনি মালাচন্দন দিয়ে তাকে ইনভিটেশন করে ঘরে এনে তার সঙ্গে ফের ঘুমোবেন? পারতেন আপনি? পারতেন? মনে রাখবেন, আকিঞ্চন আপনারই ছেলে। আপনার রক্ত ওর শরীরে। বুঝতে পেরেছেন মা আমি কী বললাম?”

স্তম্ভিত কেতকীবালার চোখের সামনে দিয়ে ব্যাগ হাতে বেরিয়ে গেল কস্তুরী। খেয়াল করেনি কখন শ্যামলেন্দু টয়লেট থেকে বেরিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন দরজার সামনে। কস্তুরী বেরিয়ে যেতেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন কেতকীবালা। শ্যামলেন্দু কান্নার শব্দ শুনতে শুনতে অপেক্ষা করতে লাগলেন। কাঁদুক কেতকী, কাঁদুক। শ্যামলেন্দু জানে এটা কস্তুরীর কথায় নয়, নিজের ভিতরে জমিয়ে রাখা নিজের পেটের ছেলের জন্য এত দিনের রাগ, কষ্ট, যন্ত্রণা, দুঃখ আর আবেগ। মা হয়ে কি আর কেতকী বুঝতে পারেননি, কোন অকালকুষ্মাণ্ডকে পেটে ধরেছিলেন তিনি!

শ্যামলেন্দু আন্দাজে হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে এসে ঠিক স্ত্রীর পাশে এসে বসলেন। একটা ইন্দ্রিয় অকেজো হয়ে বাকিগুলোকে বেশি সজাগ করে দিয়েছে। তার পর কেতকীবালার ডান হাতটা নিজের হাতে নিয়ে শ্যামলেন্দু বললেন, “কেঁদে নাও কেতকী, সবটা কেঁদে নাও। বুকটা খালি করে দাও। তুমি কি ভাবো, কষ্ট কেবল তোমার? আমার নেই? আমার ঔরসেই তো বদমাশটার জন্ম। আমি তো তোমার মতো কাঁদতেও পারি না। আর ওই মেয়েটার কথা ভাবো, যে সব কিছু ছেড়েছুড়ে এই রায়বাড়িতে চলে এসেছিল কত দিন আগে। তখন বছর উনিশ-কুড়ি তো হবেই। নাতনিটাও তো বাপের কপি। এখন কস্তুরীর কী হবে?”

চন্দন হয়তো চা নিয়ে এই ঘরেই আসবে একটু পরে। কেতকীবালা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলেন। শ্যামলেন্দু স্ত্রীর হাত ছাড়লেন না। কেতকীবালার দুটো চোখ ফের জলে ভেসে যেতে লাগল।

ক্রমশ

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali Story Society
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy