ছবি: পিয়ালী বালা।
পূর্বানুবৃত্তি: বোঝা যায়, নেহাতই কিছু উল্টোপাল্টা কথার আড়ালে রাধিয়াকে ঠকাচ্ছে আকিঞ্চন। রাধিয়ার কাছে আর তার কিছু পাওয়ার নেই, সেই কারণে সম্ভবত সে আদিনাথ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাধিয়ার পুরোপুরি সর্বনাশ করার কথাও ভাবে। অন্য দিকে নির্দিষ্ট সময়ে নিউ টেকনিশিয়ানস স্টুডিয়োতে এসে পৌঁছয় কস্তুরী। আজ সে মিশুককে সামনে থেকে দেখবে। সিরিয়ালের এক-আধ জন চেনামুখের দেখা মেলে। শেষ পর্যন্ত সে খুঁজে বের করে ‘রাঙামাটির মেয়ে’ সিরিয়ালের সেট। তার দেখা হয় মিশুকের সঙ্গে। পর্দায় যত বড়সড় লাগে, আসলে তত বড় মেয়ে নয় মিশুক।
এর মধ্যেই একটা ঝোলা ব্যাগ খুলে তার মধ্যে হাতড়ে একটা ছোট্ট প্লাস্টিকের কৌটো বার করে টুকটাক করে কী খাচ্ছে। দৃষ্টি যদিও কস্তুরীর চোখের দিকে স্থির। বেশ মজা লাগল কস্তুরীর। অযথা ভদ্রতা নেই। সম্পূর্ণ অপরিচিতকে নিজের খাবার অফার করতে নেই, এটুকু সাধারণ জ্ঞান মেয়েটার আছে।
দরজায় টোকা পড়ল। মিশুক বলল, “ভিতরে।”
দরজা ঠেলে এক জন মোটাসোটা গোছের ভদ্রলোক ঢুকেই কস্তুরীকে দেখে দাঁড়িয়ে পড়লেন। মিশুক বলল, “হ্যাঁ, মলয়দা।”
মলয়দা বললেন, “এর পরে আট নাম্বারটা নেওয়া হবে। রিখি সেনের বাড়িতে আগুন লাগানোর তোড়জোড়। সারথি খবরটা পেয়ে গেছে। সে রিখিকে জানাবার জন্য তাকে মিট করতে যাবে। ঠিক আছে?”
“ওকে।”
“কাল তোমার পাঁচটায়। রাইট?”
“পাঁচটা নয়, চারটে।”
“হবে না রিখি। ওটা পাঁচটা করো। তার আগে লম্বা সিন আছে একটা।”
“পারব না মলয়দা। এখান থেকে বেরিয়ে একটা কাজ আছে।”
“কী কাজ?”
“তেমন কিছু নয়। অরবিন্দ বারিক এক বার ডেকেছে।”
“কোন অরবিন্দ? রেড উইন্ডোজ়ের...”
“হ্যাঁ। একটা নতুন প্রজেক্ট চালু হচ্ছে।”
“হুম। শুনছিলাম। তোকে নেবে না কি?”
“এখন কিছুই জানি না।”
“অক্টোবরের আগে ডেট নিস না। এখানে টাইট শিডিউল। দেবদা ছাড়বে না।”
“ও আমি ম্যানেজ করে নেব। অরবিন্দ বারিককে মিট করে বাড়ি যেতে যেতেই সাতটা বেজে যাবে। তার পর...”
“ও হ্যাঁ। আজ বুধবার না? তোর তো আবার পাঁশকুড়া আছে?”
“হুম, সেই জন্যই। চারটের মধ্যে না বেরোলে মুশকিলে পড়ে যাব মলয়দা।”
“দেখছি। তবে...”
ভদ্রলোক ঘাড় নাড়তে লাগলেন। তার পর হাতের কাগজগুলোয় চোখ বোলাতে বোলাতে বেরিয়ে গেলেন।
মিশুক ফের মুখ চালাতে চালাতে বলল, “আপনি থাকেন কোথায়?”
কস্তুরী বলল। দু’-একটা টুকিটাকি কথা চালানোর পর আচমকা মনে এসে যাওয়ায় হাতব্যাগ খুলে চকলেটটা বার করল কস্তুরী। মিশুকের দিকে এগিয়ে দিতেই অবাক কাণ্ড! মেয়েটি দ্বিরুক্তি না করে মোড়ক খুলে চকলেট চিবোতে লাগল। এক আশ্চর্য মমতায় মন ভরে গেল কস্তুরীর। যেন আগে থেকেই ও জানত কস্তুরী তার জন্যই চকলেট আনবে। এক হাতে স্ক্রিপ্টের পাতা, অন্য হাতে সামান্য কামড়ানো চকোলেট, এই অবস্থায় সোফায় আধশোয়া মেয়েটাকে এই মুহূর্তে দেখলে কে বলবে এই বাচ্চা মেয়েটাই রিখি সেন, পর্দায় দাপিয়ে অভিনয় করে!
“আর আনবেন না।”
চমকে গেল কস্তুরী। মিশুক তার দিকে তাকিয়ে আছে। কস্তুরী জানতে চাইল, “কিছু বললে?”
মিশুক হাসল, “বলছি, আর কিছু আনবেন না আমার জন্য।”
“ইয়ে... কেন... মানে, খারাপ খেতে?”
“আরে না না। খুব খিদে পেয়েছিল। কিন্তু ডোন্ট মাইন্ড...আমি কারও কাছ থেকে কিছু নিই না।”
সামান্য দমে গেল কস্তুরী। সেটা বুঝতে পেরে মিশুক বলল, “কিছু মাইন্ড করবেন না প্লিজ়। আর কিছু বলবেন?”
এ বার স্পষ্ট ইঙ্গিত তাকে উঠতে বলছে মেয়েটি। তড়িঘড়ি দাঁড়িয়ে কস্তুরী বলল, “তোমাকে এত বড় বড় লাগে পর্দায়। খুব ইচ্ছে ছিল তোমাকে কাছ থেকে দেখি।”
“আপনার কি এইচ ডি চ্যানেল?”
“অ্যাঁ… হ্যাঁ তো...”
“নর্মাল চ্যানেলে দেখলে আরও মোটা লাগবে। পর্দায় অমন লাগে। সেই জন্যই আমাদের বেশি রোগা থাকতে হয়।”
“ও মা! কী কাণ্ড! কত কী জানতাম না। আচ্ছা আমি উঠি।”
“আমি কিন্তু আপনাকে উঠতে বলিনি।”
“আরে না। তা বলবে কেন? তবে...”
“আমার একটা সিন বাকি আছে। দিয়ে আসি। আপনি বসবেন, না কি...”
“আজ যাই? ফের আসব?”
“ফের আসবেন? তবে টানা শুটিং দেখাটা কিন্তু খুব বোরিং।”
“শুটিং দেখার আমার কোনও ইচ্ছে নেই। আমি তো তোমাকে দেখতে এসেছিলাম। তুমি ডাকলে ফের আসব।”
“বাকিদের সঙ্গে আলাপ করবেন না? আরও আর্টিস্ট আছেন। আজ অনসূয়াদি, আই মিন অনসূয়া চক্রবর্তী আসছেন। আর একটু পরেই...”
“না না, আমার কোনও ইন্টারেস্ট নেই।”
ধীরে ধীরে উঠে বসল মিশুক। ভাবল, ভদ্রমহিলা ভারী অদ্ভুত তো! শুধুমাত্র তাকে দেখতেই এসেছে? আসলে এত দিন সে এটাই দেখে এসেছে যে, লোকজন স্টুডিয়োতে ঢুকতে চায় আর্টিস্ট দেখতে, চায় তাদের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করতে। মিশুক শপিং করতে, বিয়েবাড়িতে বা মুভি দেখতে গিয়ে দেখেছে লোকজন হাঁ করে তাকিয়ে থাকে, কাছে আসতে চায়, সেলফি তুলতে চায়। কোনও কোনও অতি উৎসাহী টাচ করতেও চায়। বেশ কয়েক বার কিছু মহিলা তার থুতনি নেড়ে দিয়েছিল। রাঙামাটির আটপৌরে শাড়ি পরা মেয়েকে টপ আর কেপরি-তে দেখে অনেকে বাঁকা চোখেও তাকিয়েছে। বেশ হাসি পায় মিশুকের, কখনও কখনও বিরক্তিও। কিন্তু এই মহিলাটি তার কাছে এসেছেন শুধুমাত্র তাকে দেখতে!
মিশুক বলে, “দাঁড়িয়ে পড়লেন কেন? বসুন না। আমি টয়লেট থেকে আসছি।”
মিশুক ঘরের সেই স্লাইডিং দরজা ঢেলে ভিতরে সেঁধিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইরের দরজায় টোকা। কী করবে বুঝে উঠতে পারল না কস্তুরী। সে দাঁড়িয়েই থাকল। এ বার এক জন উঁকি মারল। একটা উলোঝুলো চুলের ছেলের মুখ। ছেলেটি হয়তো কস্তুরীকে আশা করেনি। বুঝতে পেরে কস্তুরী ইশারায় টয়লেটের দরজা দেখিয়ে দিল। ছেলেটি গলা তুলে বলল, “রিখি সেন, সিন রেডি।”
টয়লেটের দরজার ভিতর থেকে মিশুকের গলা এল, “আসছি। তুই যা।”
ছেলেটির মুখ অদৃশ্য হতেই মিশুক বেরিয়ে এল। বলল, “আপনি কি বসবেন? আমি তত ক্ষণ শটটা দিয়ে...”
“আজ যাই?”
মিশুক অন্যমনস্ক হয়ে কী ভাবল। তার পর দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেল। কস্তুরী হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে থাকল। কোনও সো কলড কার্টসির ধার ধারে না মেয়েটি। সে কিছু ক্ষণ ফাঁকা মেকআপ রুমে দাঁড়িয়ে থেকে বেরিয়ে এল। বাইরে সন্ধে নেমে এসেছে। চার দিকটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা। কী একটা পাখি ডাকছে। পাঁচ-ছ’জনের একটা মেয়ের দল কলকল করতে করতে চলে গেল। সে পথ চিনে চিনে সেই পার্কিং লটটায় ফিরে এল, তার পর রাস্তায়।
অনেকটা লিখে পিঠটা একটু সোজা করতে বাইরে বেরিয়ে এলেন স্বর্ণেন্দু। আড়মোড়া ভাঙলেন। আসলে তাঁর উপন্যাস লিখতে আসা মোহরদার কথা শুনে। মোহরদা তার জীবনের মেন্টর। তিনি যখন প্রথম এই কাগজের অফিসে জয়েন করেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে, তখন বেশ কয়েক জন সিনিয়র স্টাফ তার পিছনে লেগেছিল। সেই সময় মোহরদা ছিলেন একমাত্র ত্রাণকর্তা। মোহরদা ওরফে পিনাকীরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। পিনাকীরঞ্জন কী ভাবে মোহরদা হয়ে গেছেন কেউ জানে না। তাঁর লেখার গুণেই কী না কে জানে, এক দিন ডিপার্টমেন্টাল প্রধান পিনাকী বাঁড়ুজ্জে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে রবিবারের সাপ্লিমেন্টের একটা বিভাগ দেখার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। নিজের দাদার মতো আগলে রাখতেন মোহরদা। বছরখানেক আগে থেকে একটা নিয়মিত ফিচার লেখার কাজ দেন তাকে। সেই কাজ আজও চলে আসছে। পাশাপাশি আরও কাজের দায়িত্ব বেড়েছে। তার লেখা ফিচারগুলো খুব মন দিয়ে পড়তেন মোহরদা। এক দিন নিজের চেম্বারে ডেকেছিলেন পিওন মারফত। বলেছিলেন, “মুকুজ্জে, তুই নভেল ল্যাখ।”
মোহরদা ও দেশ ছেড়ে এসেছেন কোন যৌবনকালে, তবু সর্বদা খাঁটি বাঙাল ভাষায় কথা বলতেন। স্বর্ণেন্দু ঘাবড়ে গিয়ে বলেছিল, “কী বলছেন দাদা, উপন্যাস? সে তো বিশাল ব্যাপার! আমি কি পারব?”
“মুকুজ্জে, আমি ম্যালা লোক চরাইয়া খাইছি। আমার এই হাত দু-হান দিয়া কত্ত দিগগজ বারাইছে, নাম কইলে তুই ঘাবড়াইয়া যাইবি। থাউক, নিজের কেত্তন নিজে বাজাইতে নাই। তর ল্যাখার হাত খাসা। বিস্তর কওয়ার থাকে, হেইগুলান ক্রিস্প কইরা তুই ল্যাখস। আমি দেখতেছি। একখান নভেল ল্যাখ দিহি। সামনের পূজায় ছাপুম।”
“মোহরদা, প্রথম উপন্যাস লিখেই এত বড় পত্রিকায়? তা ছাড়া...”
“ভালা না হইলে ছাপুম না। তুই অ্যাক কাম কর। তরে পাঁচ দিনের ছুটি অ্যালাউ করতাছি। বড়কত্তার লগে কথা কমু আমি। তুই বাড়ি বইয়া ল্যাখ দিহি।”
“পাঁচ দিনে! হবে না কি? তা ছাড়া এই মুহূর্তে তো তেমন কোনও ভাবনাও নেই...”
“ভাব। ভাইব্যা ঠিক কর। ভাবনা আইয়া গেলে তার পর পাঁচ দিনের ছুটি মঞ্জুর। জানি পাঁচ দিনে সবটা হইব না। কিন্তু যতটা পারিস ল্যাখ। লিখ্যা আমারে দেহা। যা এখন ফোট।”
মনে আছে, বড় ক্যাটক্যাট করে কথা বলতেন বলে অফিসের অনেকে কথা বলতে চাইত না, ভয় পেত সামনে যেতে। কেউ কেউ আড়ালে নিন্দে করত। তবে অসম্ভব গুণী মানুষ বলেই বড়কত্তা তাকে আগলে রাখতেন। আসল মানুষটা একদম নারকেলের মতো। এক বার গালাগালি হজম করতে পারলে মোহরদার মতো মানুষ হয় না।
‘বীরুৎপক্ষ’ এ ভাবেই এসেছিল। স্বর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস। এখনও মনে আছে, পাঁচ দিনে মোট সাড়ে পাঁচ হাজার শব্দ লিখতে পেরেছিলেন। ছুটি নেওয়ার প্রথম দিন তো সারা দিন গালে হাত দিয়ে আর সিগারেটের পর সিগারেট ফুঁকে কাটিয়ে দিয়েছিলেন। ভাবনা একটা এসেছিল, কিন্তু উপন্যাস লেখা কী চাট্টিখানি কথা! কত চরিত্র, কত অধ্যায়। শুরুটা কী ভাবে করবেন ভেবেই পাচ্ছিলেন না। জানালা দিয়ে চলমান কলকাতার দৃশ্য দেখেও কিচ্ছুটি মাথায় আসছিল না। অবশেষে এল, বিকেল চারটে নাগাদ। শুরু হয়েছিল ‘বীরুৎপক্ষ’।
ছুটি শেষ হলে দুরুদুরু বক্ষে মোহরদার হাতে তুলে দিতেই উল্টেপাল্টে দেখে বলেছিলেন, “পাঁচ দিনে মাত্তর এইটুহুন?”
স্বর্ণেন্দু আমতা আমতা করে বলেছিলেন, “আসলে প্রথম দিকে...”
মোহরদা বাকিটা শুনতেই চাইলেন না। বললেন, “রেসের ঘোড়া দ্যাখছস? তুই ম্যারাথন রানার না, যে ধীরে ধীরে শুরু কইরা শ্যাষে মারবি। তুই রেসের ঘোড়া, বুঝছস? এক্কেরে ডার্ক হর্স। শুরু থিক্ক্যাই ঝাইড়া দৌড়। এক দিনে পাঁচ হাজার চাই। বুঝছস? আর সাত দিন দিলাম। এখন ভাগ।”
এক দিনে পাঁচ হাজার শব্দ! ঘাবড়ে গিয়েছিলেন স্বর্ণেন্দু। বলেন কী মোহরদা! তাকে পিষে ফেললেও বেরোবে না। দিন সাতেক পর তাকে রাস্তায় ধরেন মোহরদা। কাছে ডেকে নিয়ে একটা এক হাট লোকের সামনে মোক্ষম একটা গালি দিয়ে পিঠ চাপড়ে বলেছিলেন, “খাইয়া ফ্যালাইছস। তুই বাঘ, বাঘ। আমার অ্যাজ়াম্পশন আজ অবধি মিথ্যা হয় নাই। লিখ্যা যা, কী জানি নাম দিছস নভেলটার?”
“দাদা, বীরুৎপক্ষ।”
“হ, হ। লিখ্যা যা। রোজ লিখবি, গ্যাপ দিবি না। গ্যাপ দিলেই কনটিনিউটি খারাপ অইয়া যাইব। আর যদি পঞ্চাশ হাজারের কমে থামছস, পাছায় একখান লাথি খাবি।”
লিখতে লিখতে মোহরদাকে দেখিয়ে নিতেন স্বর্ণেন্দু। কোনও দিন এমন হয়েছে, মোহরদা একটা পাতা পুরো দলা পাকিয়ে ছুড়ে দিয়েছেন ডাস্টবিনে। বলেছেন, “কিস্যু হয় নাই, কিস্যু না। সাপের আট পা দ্যাখছস? রিডারকে উল্লুক ভাবস? ফ্যার ল্যাখ।”
অনেক কাঁটাছেঁড়া হল। পঞ্চাশ হাজার হল না। তবে সাড়ে আটচল্লিশ হাজারের কাছাকাছি গিয়ে থেমেছিল ‘বীরুৎপক্ষ’। মোহরদা ছাপিয়েছিলেন পূজাবার্ষিকীতে। এমনিতে কিপ্টে বলে একটা নাম ছিল মোহরদার। সেই মোহরদা নিজের পয়সায় স্বর্ণেন্দুকে অনাদির মোগলাই খাইয়েছেন শুনে অনেকেই ঘাবড়ে গিয়েছিল।
কোথায় আছেন এখন মোহরদা? পরিষ্কার ঘন নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে স্বর্ণেন্দুর মনটা উদাস হয়ে গেল। মাঝেমধ্যেই এমন হয়। অনেকটা লিখে পিঠের নীচটা টনটন করলে তিনি বাইরে এসে দাঁড়ান। এক এক বার মনে হয় কী লাভ এই সব লিখে? আর কত দিন? বড়জোর বছর কুড়ি কি পঁচিশ। তার পরেই তো চলে যেতে হবে। সব সাহিত্যিকই যায়। থেকে যায় তাদের লেখা গল্প, উপন্যাস আর কবিতার সম্ভার।
আচ্ছা, আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পর কি স্বর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাসগুলো কেউ পড়বে? কী জানি। হয়তো পড়বে, হয়তো পড়বে না। এটা ভেবেই মনটা উদাস হয়ে যায় আজকাল।
ক্রমশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy