Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Bengali Serial Novel

খরস্রোত

বুকের ভিতরটা কেমন ঢিপঢিপ করছে শশিকান্তর। মাঝে মাঝে চার পাশে তাকিয়ে দেখে নিচ্ছে, কেউ তাদের লক্ষ করছে কি না। বিশু আর ঈশানকে আর দেখা যাচ্ছে না।

ছবি: কুনাল বর্মণ।

ছবি: কুনাল বর্মণ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৪ ০৮:৫৮
Share: Save:

পূর্বানুবৃত্তি: বাবার উপস্থিতিতে ছোটমামা উষাপতির সঙ্গে সম্পর্ক সহজ করে নেয় শশিকান্ত। ভাগ্নেকে নিয়ে রাস্তায় বেড়াতে বেরোন উষাপতি। ভাগ্নের সাহচর্যে তাঁর বার বার মনে পড়ে যায় বোন রাখোমণির সঙ্গে ছোটবেলার নানা দুষ্টুমি খুনসুটির স্মৃতি। ভাগ্নেকে নিয়ে দ্রুত ফিরে আসেন তিনি। আর এক বর্ষার দিনে উষাপতি রওনা হন কলকাতার অ্যান্টনিবাগান লেনে যাবেন বলে। সেখানে মৌলবি আবদুর রহমানের বাড়িতে আয়োজিত এক সভায় তাঁর অংশ নেওয়ার কথা। রাস্তায় পরিচয় হয় নিবারণ দত্ত নামে এক জনের সঙ্গে। সে সদ্য চাকরি খুইয়েছে, তাই উষাপতিকেই অনুরোধ করে, কোনও কাজের খবর থাকলে তাকে জানাতে। অন্য দিকে, খেলার দুই সঙ্গী বিশু আর ঈশানের সঙ্গে সেই ভূতুড়ে বাড়িটায় লুকিয়ে লুকিয়ে ঢোকার চেষ্টা চালিয়ে যায় শশিকান্ত।

বন্ধুদের সম্মানে ঘা দিয়ে শশিকান্ত বলল, “তোরা দু’জনেই দেখছি এক-একটা ভিতুর ডিম। মুখেই বড় বড় কথা। কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা। ছেড়ে দে, আমি একাই যাব। তোরা বাড়ি গিয়ে দুধভাত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।”

কথায় কাজ হল। ঈশানের ঘাড় সোজা হল। সরাসরি তাকাল সে শশিকান্তর দিকে। বলল,
“আমি ভিতু?”

“তা নয় তো কী?” শশিকান্ত হাসতে
হাসতে বলল।

“একা গভীর রাতে শ্মশানে যেতে পারবি?”

“না। তুই পারবি?”

“অনেক বার গেছি। মনে হয়েছে, গেলেই মায়ের সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে। মাকে তো ওই শ্মশানেই... কিন্তু তুই ও-বাড়িতে যাবি কেন? আমি শ্মশানে যাই মা ডাকে বলে। তোকে কে ডাকে?”

“আমাকে ওই বাড়িটাই ডাকে।”

“ছাই! তোকে ওই বাড়ির পেতনিটাই ডাকে। চল তা হলে দেখা করেই আসি। কী বলিস বিশু!”

ঘাড় কাত করে সম্মতি দেয় বিশু। তরতর করে পাঁচিল বেয়ে উপরে উঠতে থাকে ঈশান। পাশাপাশি বিশু। ওদের দেখে হিংসে হয় শশিকান্তর। চেষ্টা করলে সেও হয়তো পাঁচিলের খানিকটা উঠতে পারবে। কিন্তু, সম্পূর্ণ পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকা তার পক্ষে অসম্ভব। কথা হয়েছে, বিশু আর ঈশান পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে দরজা খুলে দিলে, সে ঢুকে পড়বে।

বুকের ভিতরটা কেমন ঢিপঢিপ করছে শশিকান্তর। মাঝে মাঝে চার পাশে তাকিয়ে দেখে নিচ্ছে, কেউ তাদের লক্ষ করছে কি না। বিশু আর ঈশানকে আর দেখা যাচ্ছে না। তার মানে ওরা ভিতরে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ পাচ্ছে না কেন? ওদের কোনও বিপদ হয়নি তো? চিৎকার করে ডাকবে ওদের নাম ধরে? শশিকান্ত আবার পিছনে তাকাল। মনে হল কে যেন আসছে। ওই লোকগুলো নয় তো, যারা প্রায়ই আসে? কিন্তু ওরা তো এই সময় আসে না। এখন যে দুপুরবেলা। ওরা আসে ঠিক সন্ধের আগে, রাস্তায় গ্যাসবাতি জ্বালানোর ঠিক আগে। কলকাতার অনেক জায়গায় বৈদ্যুতিক আলো এলেও, তাদের গ্রামে এখনও আসেনি। সন্ধে হলে সারা গ্রাম নিঝুম অন্ধকারে ঢেকে যায়। সন্ধেবেলা প্রদীপের আলোয় শশিকান্ত পড়তে বসে। দালানে তক্তপোশে বাবা-জেঠারা তাস পিটোয়। শশিকান্তর ঘুম পায় তখন।

অপেক্ষা করতে করতেই একটা খুট করে শব্দ হয়। শশিকান্তর হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয়। সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে, রং-ওঠা দরজাটা কিছুটা খোলা। খোলা দরজা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে বিশু
শশিকান্তকে ডাকে, বলে, “আয়। কেউ নেই, আমি দেখে নিয়েছি।”

শশিকান্ত দৌড়ে ভিতরে ঢুকে যায়।

বাড়িটা বেশ বড়। যতটা ভেবেছিল শশিকান্ত, তার চেয়েও বড়। ভিতরে অনেকটা জায়গা। একটা পুকুরও আছে পিছন দিকে। শশিকান্ত পুকুরের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। একটা টালির টুকরো পড়েছিল পায়ের সামনে। সেই টুকরোটা তুলে নিয়ে পুকুরের জলে ছুড়ে মারে হাতটাকে একটু নীচের দিকে কাত করে। টালির টুকরোটা জলে ভাসতে ভাসতে দ্রুত ও-পারে চলে যায়। শশিকান্তদের বাড়ির পিছনে যে পুকুর আছে, সেখানে শশিকান্ত রোজ এই খেলাটা খেলে। এই খেলাটাকে ওরা বন্ধুরা বলে চ্যাংবাজি। চ্যাং মাছের মতো জলে লাফিয়ে লাফিয়ে যায় বলে হয়তো এই রকম নাম। শশিকান্ত আর একটা টালির ভাঙা টুকরো তোলে চ্যাংবাজি করার জন্য।

হঠাৎই মনে পড়ে যায় বিশু আর ঈশানের কথা। অনেক ক্ষণ ওদের দেখতে পাচ্ছে না। তা হলে কি ওরা বাড়ির ভিতরে ঢুকল? মুহূর্তে টালির ভাঙা টুকরোটা ফেলে শশিকান্ত দৌড়ল বাড়িটার দিকে।

বাড়ির একতলার ঘরগুলোর দরজা বন্ধ। প্রত্যেকটা ঘরেই তালা ঝুলছে। তা হলে কি ওরা দোতলায় উঠেছে? বিশু আর ঈশানের নাম ধরে চিৎকার করতে গিয়েও না করে, শশিকান্ত সিঁড়ি ধরে দোতলায় উঠে গেল। নীচের মতো এখানেও অনেকগুলো ঘর। কিন্তু এই ঘরগুলোও তালাবন্ধ। তা হলে? ওরা গেল কোথায়? শশিকান্ত চিন্তায় পড়ে গেল। হঠাৎ নজরে এল আর একটা সিঁড়ি। এটা বোধহয় ছাদে যাওয়ার সিঁড়ি। শশিকান্ত সময় নষ্ট না করে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠে গেল। ছাদে উঠেই আর একটি ঘর নজরে এল তার। শুধু তা-ই নয়, এই ঘর থেকে এক মহিলার কণ্ঠস্বরও তার কানে এল। ভয়ে ভয়ে দরজার দিকে এগোল সে। দরজাটা হালকা করে দেওয়া ছিল। একটু ঠেলতেই খুলে গেল। দেখল, বিশু আর ঈশান একটা চাটাইয়ের উপর বসে আছে। ওদের সামনে আর একটা চাটাইয়ে বসে আছেন এক নারীমূর্তি। দরজা খোলার শব্দে তিন জনের চোখ গিয়ে পড়ল শশিকান্তর উপর।

বিশু বলে উঠল, “ওই ওর জন্য আমরা এখানে এসেছি। ও-ই আমাদের এখানে নিয়ে এসেছে। আমাদের কোনও দোষ নেই।”

শশিকান্তর দিকে চেয়ে মহিলা বললেন, “এসো, কী নাম তোমার?”

ভয়ে ভয়ে শশিকান্ত নাম বলল।

“কেন এসেছ এই ভূতের বাড়িতে?” মহিলার কণ্ঠস্বর বেশ গম্ভীর।

“সত্যি ভূত আছে কি না দেখতে,” ভয়ে ভয়ে উত্তর দেয় শশিকান্ত।

“দেখবে?”

“না।”

“তা হলে? সত্যি করে বলো। না হলে, এখানে আটকে রাখব।”

শশিকান্ত বিশু আর ঈশানের দিকে তাকায়। ওদের চোখে ভয়।

শশিকান্ত ঠিক করে, সত্যিটাই বলবে।
নিজেকে গুছিয়ে নেয় সে। তার পর বলে, “কৌতূহল হত... তাই।”

“কিসের কৌতূহল?” মহিলার কণ্ঠস্বরে বিরক্তি।

শশিকান্ত চুপ করে থাকে খানিক ক্ষণ। তার পর বলে, “প্রায়ই একটা লোককে দেখি এ
বাড়িতে ঢুকতে...”

“তাতে তোমার কী?” শশিকান্তকে কথা শেষ করতে না দিয়ে মহিলা চড়া গলায় বলে ওঠেন। তার পর গলার স্বর অনেকটা নামিয়ে শান্ত স্বরে বলেন, “তুমি এক জনকে দেখো না, অনেককেই দেখো। ওরা ভারতমাতার বীর সন্তান। দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। আমরা যে পরাধীন, সেটা
বোঝো তো?”

শশিকান্ত ঘাড় নাড়ে। বলে, “হ্যাঁ, জানি তো। ইংরেজরা আমাদের দেশকে পরাধীন করে রেখেছে। আমার জেঠামশাইও দেশের জন্য লড়াই করেন। এক বার পুলিশ অ্যারেস্ট করেছিল।”

“কী নাম তোমার জেঠামশাইয়ের?” মহিলার কণ্ঠস্বরে কৌতূহল।

“নীলমণি বন্দ্যোপাধ্যায়,” শশিকান্ত উত্তর দেয়।

“তুমি নীলমণিদার ভাইপো? তা হলে তো নীলমণিদার কানেই তুলে দিতে হবে যে, দুপুরবেলা তুমি ভূত ধরতে এ বাড়ি-ও বাড়ি করে বেড়াচ্ছ!” মহিলার কণ্ঠস্বর এখন মোলায়েম, কিন্তু স্থির।

শশিকান্ত প্রায় কেঁদে ফেলে, এমন অবস্থা। এমনিতেই জেঠামশাইকে ভীষণ ভয় করে তার। সে কেন, বাড়ির সকলেই তাঁকে ভয় পায়। এমনকি বাবাও। এখন যদি জেঠামশাই জানতে পারেন যে, দুপুরবেলা সে অন্যের বাড়িতে পাঁচিল টপকে ঢুকেছে, তা হলে আর রক্ষে থাকবে না।

শশিকান্ত হঠাৎ মহিলার পা জড়িয়ে ধরে। বলে, “জেঠামশাইকে বলবেন না। উনি খুব রাগী। আমি আর এখানে আসব না। ওরাও আসবে না। কী রে বিশু, ঈশান, তোরাও বল না।”

ঘাড় কাত করে শশিকান্তর কথায় সম্মতি জানায় বিশু আর ঈশান।

“বেশ, মনে থাকে যেন!” মহিলা শশিকান্তকে একটা চাটাই পেতে বসতে বলেন।

শশিকান্ত এত ক্ষণ দাঁড়িয়েছিল। এ বার চাটাইয়ের উপর বসে পড়ল। অনেকটা সহজ হয়ে এসেছে সে। ভাল করে লক্ষ করল মহিলাকে। একটু লম্বাটে গড়ন। গায়ের রং কালোর দিকেই। পরনে ডুরে শাড়ি। অতি সাদামাটা চেহারা। কিন্তু চোখ দুটো তেজোদ্দীপ্ত। বেশি ক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায় না এমন চোখের দিকে।

“তোমার ভয় করে না এত বড় বাড়িতে একা থাকতে?” হঠাৎ প্রশ্ন করে বসে শশিকান্ত।

মহিলা হাসেন। বলেন, “দেশমাতৃকার জন্য আমাদের প্রাণ বলিপ্রদত্ত। আমাদের ভয় করলে চলবে? এই দেশ থেকে ইংরেজদের না তাড়িয়ে আমাদের মুক্তি নেই।”

“তুমিও বিপ্লবী?” ঈশান বলল।

মহিলা উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আমরা সবাই বিপ্লবের আদর্শে দীক্ষিত। ভারতমাতার নামে আমরা শপথ নিয়েছি।”

হঠাৎ ঈশান বলে বসে, “তোমাকে আমি মা
বলে ডাকব?”

“না,” মহিলা গম্ভীর ভাবে উত্তর দেন, “মা বলে গর্ভধারিণীকেই ডাকতে হয়।”

“আমার তো মা নেই। শশীরও মা মারা গেছে। আমরা কেন তোমাকে মা বলে ডাকতে পারব না?” ঈশানের চোখে জল চিকচিক করে।

মহিলা চুপ করে থাকেন খানিক ক্ষণ। কোনও রকম আবেগ তাঁকে মানায় না। দেশপ্রেমই তার একমাত্র আবেগ। মুখে আবার হালকা হাসির রেখা দেখা যায়। বলেন, “মায়ের মৃত্যু হয় না বাবা। তিনি তোমার অন্তরে সব সময়ই থাকেন। তোমরা আমাকে যোগিনী মা বলেই ডেকো। বিপ্লবীদের সকলের কাছে আমি ওই নামেই পরিচিত।”

“না, তোমাকে আমি মা বলেই ডাকব,” ঈশান হঠাৎ জেদ ধরে বসল।

যোগিনী মা হাসলেন। বললেন, “বেশ তা-ই বলো। তবে এই বাড়িতে আর আসার চেষ্টা কোরো না। তোমাদের বিপদ বাড়বে, তার সঙ্গে আমাদেরও। আর একটা কথা, তোমরা যে এখানে এসেছ, এ কথা কাউকে বোলো না। শশিকান্ত, সব ব্যাপারে এত কৌতূহল দেখাতে নেই। তুমি যে ঝোপের আড়াল থেকে মাঝে মধ্যে এ বাড়ির উপর লক্ষ রাখছ, তা আমি জানি। প্রভাত আমাকে বলেছে।”

বিস্মিত শশিকান্তর মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল, “প্রভাত?”

“হ্যাঁ,” যোগিনী মা বললেন, “প্রভাত বিপ্লবী দলের সদস্য।”

“আর অন্য যাঁরা আসেন?” শশিকান্ত বলল।

“তুমি কিন্তু আবার বেশি বেশি কৌতূহল দেখাচ্ছ,” যোগিনী মা-র স্বর ঈষৎ কঠোর।

শশিকান্ত মাথা চুলকে বলল, “ভুল হয়ে গেছে মা।”

“ঠিক আছে। দেশের কথা ভাবো। দেশই তোমাদের মা। তোমাদের মায়ের হাত-পায়ে শৃঙ্খল। তোমাদের কী করা উচিত?” যোগিনী
মা বললেন।

“মা-কে মুক্ত করা,” সকলে সমস্বরে বলল।

“ঠিক। তোমাদেরও প্রয়োজন হবে আমাদের। প্রস্তুত থেকো...” যোগিনী মা বললেন।

“আমরা সবাই প্রস্তুত!” ওরা এক সঙ্গে
বলে উঠল।

যোগিনী মা হাসলেন। বললেন, “না, এখনও তার সময় আসেনি। সময় এলেই জানতে পারবে। এখন তোমরা এসো। প্রভাতের আসার সময় হল।”

তিন জনই উঠে পড়ে চাটাই থেকে। যোগিনী মা পথ দেখিয়ে চলেন ওদের। সদর দরজার সামনে এসে থামে চার জন।

“আর এসো না এ বাড়িতে। মনে থাকবে?”

“থাকবে। যে দিন তুমি ডাকবে, সে
দিনই আসব।”

যোগিনী মা কোনও কথা বলেন না। হাসেন।

দরজা খুলে যায়। ওরা তিন জন বাইরে আসে। দরজা আবার বন্ধ হয়ে যায়।

রিকশাটা এসে থামে একটা প্রকাণ্ড বাড়ির সামনে। সামনের ফটকে দু’টি লোক দাঁড়িয়ে কথা বলছিল।

উষাপতি রিকশা থেকে নামতেই লোক দু’টি ছুটে এল তার কাছে। বলল, “আপনি কি উষাপতিবাবু? মজফ্ফরপুর থেকে আসছেন?”

উষাপতি বললেন, “হ্যাঁ।”

লোকগুলো বলল, “আমরা আপনার জন্যই দাঁড়িয়ে আছি। মৌলবি সাহেব আপনার কথা বলেছেন। ওই তো দেখুন না, মৌলবি সাহেব বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছেন।”

উষাপতির চোখ চলে গেল বারান্দায়। দেখলেন, এক মাঝবয়সি ভদ্রলোক হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। পরনে সাদা আলখাল্লা, মাথায় ফেজ টুপি, সারা মুখ দাড়িতে ঢাকা, দাড়ি চিবুক ছাড়িয়ে বুক পর্যন্ত নেমেছে। উষাপতি হাত জোড় করে মৌলবি সাহেবকে নমস্কার করলেন।

প্রতিনমস্কার করলেন মৌলবি সাহেব।

লোক দু’টি তত ক্ষণে উষাপতির ছোট্ট বাক্সটা নামিয়ে ফেলেছে। একটি লোক বাক্সটা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলল। অন্য লোকটি উষাপতিকে বলল, “আসেন, আরও অনেকে আইয়া পড়সে। আপনার লগেই অপেক্ষা করতাসে হগ্গলে।”

উষাপতি লোকটিকে অনুসরণ করে, বাড়ির অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেন। ঘোরানো সিঁড়ি উঠে গেছে দোতলায়। লোকটিকে অনুসরণ করে উষাপতি একটি প্রশস্ত ঘরে এসে উপস্থিত হলেন। ঘরের মেঝেয় লাল রঙের দামি ফরাস পাতা। সেখানে জনাসাতেক লোক উপবিষ্ট। সবাইকে না চিনলেও, উষাপতি এক জনকে চিনলেন। তিনি উষাপতির পূর্বপরিচিত মাস্টারমশাই কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক।

ক্রমশ

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali Novel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy