ছবি: সুমন চৌধুরী
* অ্যায় অ্যায়, সড়সড় করে সভায় ঢুকে পেন্নাম ঠুকে দিলি? কেন রে, আমার পদধূলি তো ব্ল্যাকে বিক্কিরি হচ্ছে বান্দ্রা বাজারে!
* ধূলি নয় স্যর, বুলি চাই! অ্যাডভাইস। ‘বিয়িং হিউম্যান’ লেখা মাদুলি ভি লাগবে! মেজর ঘাপলা করেছি। আমার মালীটা ঘাস এবড়েখেবড়ো ছাঁটছিল বলে এক দিন ওকে গুলি করে মেরে দিয়েছি। ওর বউটা গার্ডেনেই চালাঘরে থাকে। চেঁচাচ্ছিল। গুলি করলাম। বাচ্চাটা বারো-তেরো বছরের। যথেষ্ট পেছনপাকা, সাক্ষী দিতে পারে। তাকেও মারতে হল। একই লজিকে পাশের ঘরের মেথর, বউ, দুটো বাচ্চা, তার পাশের ঘরের রাঁধুনি, বউ, দুটো বাচ্চা ঢিচক্যাঁও। মাত্তর এগারোটা গরিবকে মার্ডার করেছি বলে শালা পুলিশ আমায় এখন জেলে দিতে চাইছে!
* সাবাস! তুই তো একটা ফুটবল টিমকে কোতল করে দিয়েছিস রে! তা, খারাপ হাতের লেখায় এগারোটা সুইসাইড নোট তৈরি করতে পারলি না— অবৈধ প্রেমের চক্করে এরা
মাস-সুইসাইড করেছে!
* গাড়লগুলো তো নিরক্ষর! লিখবে কী করে?
* অ। তা হলে বাড়ির ডোবারম্যানটাকে ভুজুংভাজুং দিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দে, ও স্বীকার করুক, বন্দুক নিয়ে খেলতে খেলতে কেলো করে ফেলেছে।
* সেও চেষ্টা দিয়েছিলাম স্যর, কিন্তু ব্যাটা কিছুতেই কথা বলতে পারছে না।
* তা হলে তো টাফ আছে। মার্ডারগুলোর পর থেকে দানধ্যান করছিস তো?
* সে আর বলতে! এই গরমে তিনশো কম্বল বিলিয়েছি। সর্বহারাগুলোর কী চিল্লানি! বলে নেবে না! গুন্ডা দিয়ে জড়িয়ে দিলাম! এমনকী নতুন যে মালী রেখেছি, ডেলি পেছনে দু-চারটে লাথ মারার বাইরে টর্চার অবধি করি না।
* উঁহু উঁহু, টর্চারটা ছাড়িস না! ওটা ইম্পর্ট্যান্ট। একটা হাত দানের জন্যে, আর একটা হাত থাপ্পড়ের জন্যে অলওয়েজ খোলা রাখবি। নইলে আঁতেলদের মতো ভেড়ুয়া হয়ে জীবন কাটাতে হবে। ওতে ‘মাচো’ ইয়েটা চলে যায়।
* ধুস, আপনার কাছ থেকে সে টিপ্সও শিখিনি কি? বউ, সেক্রেটারি, রক্ষিতা তিন জনকেই বেধড়ক পেটাই। তা ছাড়া বেস্পতিবার-বেস্পতিবার বিছুটি তো আছেই।
* ছিঃ, লক্ষ্মীবারে মা-লক্ষ্মীদের মারতে নেই। কী রে দারোয়ান, কিছু বলবি?
* দেশমুখ, ঠাকরে আর খান-ফ্যামিলি থেকে কান্নার জ্যারিকেন এসেছে। কালকে সবাই একশো তিরাশি লিটার করে আঁসু ফেলেছে আপনার জন্যে।
* দ্যাখ আবার অন্য কিছু মিশিয়ে কোয়ান্টিটি বাড়িয়ে দিয়েছে কি না। ‘পিকু’র সাকসেসের পর লোকে হয়তো ইউরিনেও আলাদা ইন্টারেস্ট পাচ্ছে!
* শো-বিজনেসে বহুত পারভার্শন, না?
* কত্ত! কেউ কেউ তো সারা ক্ষণ জামা গায়ে দিয়ে অ্যাক্টিং করে!
* ইস্স্! স্যর, আপনার পিঠের এখানটা অ্যাত্ত বড় কড়া পড়ে গেল কী করে?
* কী করে আবার? বলিউডের তাবৎ কেঁদো ক্যান্ডিডেট পাঞ্জা রেখে সান্ত্বনা দিয়েছে। তবে প্পুরো নোট রাখছি! যে শালা প্রেজেন্ট প্লিজ থেকে বাদ যাবে, সে এক হপ্তায় সিনেমার সান্সা থেকে সড়াৎ পিছলে সিরিয়ালের চাকর।
* চাকরের লিপ-এ হিরোইনকে মাস্কা লাগানো গানটা আমায় দিবি তো ইয়ার?
* আরে আয় ভাই! একে চেনো তো? ইন্ডিয়ার বেস্ট সিংগার। একটু সাইডলাইনে ছিল, কিন্তু এখন এক কোটেশনে ক্যান্টার! বাঙালি তো রে বাবা! কেলেংকারি কালচার্ড!
* দাদা, একটা সরল পাজ্ল বলে দিন! রাস্তায় শুয়ে থাকা পাবলিক যদি কুত্তা হয়, বাগানে মাটি-কোপানো ওয়ার্থলেস তবে কী?
* কিলবিলে কেঁচো! তবে এই পুরো নিকিরি আর খেটে-খাওয়া জাতটাকে এক কথায় বলে উইপোকা। দেশটাকে কুরে কুরে ফোঁপরা করছে!
* উই-কে আন্ডারএস্টিমেট করবেন না! কনস্টিটিউশন শুরুই হচ্ছে, ‘উই দ্য পিপ্ল অব ইন্ডিয়া..’!
* হাহাহা! এই ক্লাউনটাকে সদ্য রিক্রুট করেছি। ডাক্তার বলল, মাঝে মাঝে অট্ট হাসলে কোষ্ঠ সাফ হয়। ওটা আবার কীসের আওয়াজ হচ্ছে?
* গেটের সামনে হোমলেস-রা স্লোগান তুলছে। ফুটপাতে শুতে আনসেফ লাগছে, সাতমহলা বাড়ি চাই। সঙ্গে কাটপিসের হকার, পানবিড়ির দোকানি, মুচি, ভিখিরি। চারাগাছ অ্যাসোসিয়েশনও এসছে। ফুটপাতে গাছ লাগানোর ইয়ে চলছে কিনা।
* তা আমাদের এমপ্লয় করা গরিবগুলো কই? যারা বলবে, আমি ওদের ফি ভোরবেলা ফুটপাত থেকে আদুরে ঠোনা মেরে ঘুম ভাঙিয়ে হাতে টুথব্রাশ তুলে দিই?
* এদের হাঁউমাউ দেখে পালিয়েছে, কয়েকটা আবার বক্তিমে শুনে ওদের দলে ভিড়ে লাফাচ্ছে! আপনার ব্রাশ দিয়ে দাদ চুলকোচ্ছে।
* কিড়ে-মকোড়ে শালা!
* তাই তো বলছি। কুট্টি পোকা়রা ডেঞ্জারাস। কোথায় ঢুকে কামড়ে দেয়! ন্যাংটার নেই আইটেম নাম্বারের ভয়, জানেন তো?
* এনএফডিসি-র আর্ট ফিলিমের মতো কথা বলিস না তো! আমি যে কমোড-টায় ইয়ে করি, সেটার রেডিয়াস অ্যান্টিসিপেট করতেই তোর ওই পোকাতারিয়েত-দের ব্রেন বার্স্ট!
* আরে এই সাব-হিউম্যানগুলোকে সাপোর্ট করার একটা ফ্যাশন এসেছে! ‘ডি-ক্লাস্ড ডি-ক্লাস্ড’ খেলা! সে দিন একটা টিভি-অ্যাংকর আমায় কথাই বলতে দিল না, শুধু কাঁইকাঁই বকুনি! ছি! নিজে এক জন বাঙালি হয়ে বাঙালিকে...
* না না, বেঙ্গলিরা পাঁইপাঁই প্রোগ্রেসিভ! ওরা কবে থেকে ফুটপাতের লোকের এগেনস্টে! স্টোনম্যান মনে নেই?
* গরিবগুলোর বিরুদ্ধে এই ক্রুসেড লড়তে গিয়েই তো বাঙালির হিরের টুকরোরা আজ জেলের মেঝেয় ন্যাতার মতো লুটোচ্ছে! কোটিপতি ফিলিম-প্রোডিউসার, গায়ে-গন্ধ পকেটমারের সঙ্গে এক কাতারে লপ্সি খাচ্ছে!
* এটা একটা সিস্টেম! ছোঃ! সমাজের মাথা আর সমাজের পাছার একই ট্রিটমেন্ট!
* শুধু তা-ই নয়, লার্নেড জার্নালিস্ট, কোটেশন মেরে মেরে হাততালি কুড়োতে জানে, আর এক জন খুব বড় পলিটিশিয়ান, সে-ও দানধ্যানে এত ব্যস্ত ছিল যে কোত্থেকে দানের টাকা আসছে ঠিক খেয়াল রাখতে পারেনি... অবশ্য একটু টলমলেও থাকত...
* আরে, সে তো থাকতেই হবে। গ্রেটদের যা উথলাপাথলা স্ট্রেস... সে দিন ঘুমোচ্ছি, হঠাৎ নাইটমেয়ার এল: ভুঁড়ি হয়ে গেছে!
* ইঁইঁ! বলবেন না! হোল ইন্ডিয়া উপোসে বসে যাবে! বলিউড যদি নিভে যায়, সব্বাই নেপালে গিয়ে বলবে, ধরিত্রী ১১.৭ রিখটারে চৌচির হ, এন্ট্রি নেব!
* নেপালের কথায় মনে পড়ে গেল। ওখানে যেন কত টন চাল পাঠালাম? না কি শেষ অবধি পাঠাইনি? তা হলে কি ফেভিকল পাঠালাম? মাটি জুড়ে দেওয়ার জন্যে?
* এই যে আপনার বাঁ হাত জানে না, ডান হাত কী দান করেছে, এটাকেই আমরা বলছি ‘ডিসওরিয়েন্টেড ফিলান্থ্রোপি’ বা ‘হরিশ্চন্দ্র সিম্পটম’।
* ইনি বহুত পণ্ডিত। ভাল টাকায় সভায় রাখছি। ইনি কন্টিনিউ শক্ত শক্ত কথা বলে লোককে বোঝাবেন, আমি মহাপুরুষ।
* নিন্দুকে বলছে, উনি বাজে কাজ ঢাকা দেওয়ার জন্যে ভাল কাজ করছেন। আমরা বলছি, সো হোয়াট? আল্টিমেটলি ভাল কাজ হল কি না, সেটাই তো আসল। দুটো লোককে মেরে কেউ যদি দু’লাখ লোককে বাঁচায়, সমাজের হ্যাপি এন্ডিং!
* এগজ্যাক্টলি! বাল্মীকি অমন কাব্য লেখার পর কেউ যদি রত্নাকর-লাইফের ক্রাইমের জন্যে কোমরে দড়ি দিয়ে নিয়ে যায়, জাস্টিস?
* জানেন, ভাল কাজ করতে করতে ওঁর এমন হ্যাবিট দাঁড়িয়ে গেছে, ক্রাইসিস দেখলেই অটোমেটিক রিফ্লেক্স: আমি কী পাঠাব। আইপিএল-এ লাস্ট ওভারে রান কম পড়লে আমাকে বলেন, পাঠিয়ে দিন না!
* আরে, দাদাকে আলাদা করে দান করতে হবে! এন্টারটেনমেন্টটা বিলোচ্ছেন, সে সার্ভিসটা ইনাফ নয়? যদি ডেলি কা ডেলি এতগুলো লোককে ভুলিয়ে, মজিয়ে, ক্যাথার্সিয়ে না রাখতেন, এরা তো বোর হয়ে, বিরক্ত হয়ে খুনখারাবি করত, রেপ-টেপ করত!
* তবে? কোথায় রাষ্ট্র ওঁকে রোববার সকালে আপসে হরিণের মাংস ভেট পাঠাবে, তা না, কোথাকার একটা হরিণ মারা নিয়ে উলটে হ্যারাস করছে! তাও যদি ফর্সা হত! তা না, কেলটে হরিণ!
* বল দিকিনি! আমার মনে বড্ড ভায়োলিন বেজেছে। নেচারের ফান্ডামেন্টাল আইন: সবলরা মারবে, দুর্বলরা মার খাবে। তাতে যদি এত আপত্তি, যা না, বাঘকে বারণ কর, হরিণ মারবি না! ডিসকভারি চ্যানেল ব্যান করে দে!
* আগেকার রাজারাজড়ারা, যাঁরা ভারতের অ্যারিস্টোক্র্যাট ঠাকুদ্দা, বৈঠকখানায় হরিণের মাথা না সাজালে ইন্টিরিয়র ডেকরেটরের গর্দান নিতেন! এখন? ফড়িং মারলেও চিৎকার। এগুলো আসলে ওয়েস্টার্ন ন্যাকামি। মানুষের চেয়ে জানোয়ারদের ভ্যালু করো। মাইরি! কোন দিন বলবে, চিকেনে চিলি দিয়ো না! মুরগির ঝাঁঝ লাগবে!
* স্যর, এখানে একটা ছোট কথা আছে। এখন ওই হরিণগুলো প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, তাই...
* সে তো ডোডো-ও শেষ হয়ে গেছে। তাতাই ছাড়া কারও ক্ষতি হয়েছে? এ তো বিবর্তনের বেসিক নিয়ম: সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট! যে পারবে না, ফুটে যাবে। ওই হরিণটা খালি-গায়ে নাচলে বেশি সিটি পড়বে, না আমি খালি-গায়ে নাচলে? আমি। তাইলে আমি থাকব, হরিণ মরবে। সিম্পল।
* এই জন্তু-দরদ ধাস্টামির একটা সাংঘাতিক অন্য দিক আছে। ‘স্লো-পয়জনিং অব এলিট হ্যাপিনেস আন্ডার দ্য সিমুলাক্রাম অব সোশাল অ্যাওয়েকেনিং’। এগুলো আর কিচ্ছু নয়, হ্যাপি মানুষকে গিল্টি ফিল করানোর চক্রান্ত। ফার-কোট পোরো না, হান্ট কোরো না, আমিষ খেয়ো না। কাঁড়ি কাঁড়ি পয়সা থাকুক, তুমি শুধু কাঁচকলা–ভাতে দিয়ে মজা-করতে-না-পারা’র বিলাপ মেখে, গিলে খাও।
* হিংসে, হিংসে, গোটাটা হ্যাভ’দের ওপর হ্যাভ-নট’দের টেরিফিক হিংসে। এটার বিরুদ্ধে বই লেখা উচিত। দাস ক্যাপিটালের উলটো, প্রভু ক্যাপিটাল।
* স্যর, গাড়ি-কোম্পানির ফড়ে এসেছে। বলছে অ্যাড-এর শেষে আপনি শুধু বলবেন, ‘এ গাড়ি এমন সেফ, আমি অবধি কাউকে চাপা দিই না!’
* মেরে তাড়া! ওটা কী? আদালতের শমন?
* না না, প্রোডিউসার্স গিল্ড থেকে সই করার জন্য দিয়ে গেল। আপনার আগামী দু’বছর কোনও ফিল্মে গাড়ি চালানোর সিন থাকবে না। শুধু হেলিকপ্টার-ফপ্টার চালাবেন।
* কী হচ্ছে বল তো? একটা ব্যাড ভাইব গজাচ্ছে কোত্থেকে?
* ফেসবুক-টুইটারে আপনাকে টার্গেট পেয়ে মিনি-বিপ্লব চলছে না! ভালগার সব পোস্ট!
* আরে ছাড়! ফেসবুকের হুপুই হল আইসিইউ-এর রোগী। বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে টেঁসে যাবেই।
* তবে একটা কে পোস্ট করেছে, কালো হরিণটাই আসলে গাড়ি চালাচ্ছিল, তাই আপনি রেগে গিয়ে তাকে মেরেছেন।
* এটা তো গ্রেট আইডিয়া! উকিলকে ফোন লাগাব?
* আরে না না, স্যর, এটা চুটকি।
* কেন? ট্রেনিং দিলে হরিণ গাড়ি চালাতে পারবে না?
* আহা, সে তো ট্রেনিং দিলে বন্দুকও চালাতে পারবে, আপনি সেল্ফ-ডিফেন্সের লাইনটায় খেলুন না, কিন্তু এরা মেনলি যেটা লিখছে, আপনার বিবেক কোথায়?
* বিবেক! ওর কেরিয়ার তো টোটাল ডেস্ট্রয় করে দিয়েছি! কারও ওকে নেওয়ার সাহস নেই! এই চান্সটা নিয়ে ও আবার সিনে আসছে!
* না না, এ আলাদা। মানে, ফেসবুকাররা বলছে, যারা চাপা পড়ল, তাদের দেখতে তো আপনি হাসপাতালেও গেলেন না।
* যাব কী রে! যদি টাচ করে দিত! ওদের তো তখন রক্ত বেরচ্ছে! ওয়াক!
* আসলে এটা হল ‘গ্লোরি অব ডেথ’, ‘গ্লোরি অব ফেলিয়োর’। মৃত্যু এ দেশে বিরাট ক্রেডিট! ন্যালাগুলো বেকায়দায় ঘুমোবে, গাড়ি এলে সরে যেতে পারবে না, ফিটনেস নেই, কিন্তু মরে গেলেই পাতাখোরও হয়ে যাবে সুপ্রিম শহিদ। যব তক সুরজ চাঁদ রহেগা। পুুরো লজিকটা মুহূর্তে বাঁচন্তি-র বিপক্ষে চলে যাবে।
* তবে আসলি বাত, জিতছি তো আমরাই। এই তো ললিতা দশ সেকেন্ডে বেকসুর খালাস।
* ইফ ললিতা কাম্স, ক্যান B-শাখা বি ফার বিহাইন্ড? মানে বড়কা বড়কা খেলুড়ের বি-গ্রেড ব্রাঞ্চ বলছি আর কী। লিঙ্গরাজা না কী, সেও তো জামিন পেয়েছে।
* সবাই পাবে বাবা! দাদার দেখানো পথে দেশ লং মার্চ করবে। গরিবদের পাঁজরা যে ধামসাবে, সে-ই ড্যাং ড্যাং করে ম্যাপের মাথায় চড়ে নাচবে। আর সেটাই তো উচিত! কারণ সে তো দেশের সবচেয়ে জরুরি উপকারটা করছে। ঝড়তি পপুলেশন কন্ট্রোল!
* আসলে ভোটব্যাংক! গরিবরা মেজরিটি, তাই কারও গলা খাঁকরে বলার সাহস নেই, ‘গরিব হটাও, দেশ বচাও’। শুধু একটা
হ্রস্ব-ই-কার ডিলিট করে স্যর যে কান্ট্রিকে কোন হাইটে নিয়ে গেলেন! ইট মাইট বি আ স্মল মার্ডার ফর ইউ স্যর, বাট ইট’স আ জায়ান্ট লিপ ফর ইন্ডিয়া!
* তার চেয়েও ইম্পর্ট্যান্ট, এই বড় বড় লোকদের ছেড়ে দেওয়ায় একটা খুব জরুরি সত্য দৃঢ় প্রতিষ্ঠা পেল: ‘সবাই সমান’ নয়, হতে পারে না। বার বার আওড়ালেই একটা বোকা-বোকা কথা কম্যান্ডমেন্ট হয়ে যায় না। ও-পাড়ার চ্যাংড়া পল্টু আর অমর্ত্য সেনের লাইফের ভ্যালু এক? রামু মুদি আর প্রাইম মিনিস্টার সমান? তা হলে রামু কাল থেকে টাকে লাল আলো লাগিয়ে আর পেটে সাইরেন ফিট করে চলুক!
* আরে ভাই, যারা এ-সব সাম্য-মার্কা বাকতাল্লা মারছে, তারা কি বাড়ির ঝি’র সঙ্গে এক টেবিলে বসে ভাত খায়? এটা তো প্লেন বাস্তবজ্ঞান: এক এক জনের এক এক রকম অধিকার। একটা সাধারণ হিট-অ্যান্ড-রান কালপ্রিটের যা অধিকার, দেশের হায়েস্ট-পেড অভিনেতার অধিকার তার চেয়ে বেশি নয়? কাম অন!
* কিন্তু... যে অন্যের চেয়ে বড়, তার দায়িত্বও কি বড় নয়?
* উঁহু, বরং তার দায়িত্বহীনতার অধিকার বড়। তার স্বেচ্ছাচারের অধিকার বড়। যা-খুশি করে পার পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বড়। নেপোলিয়ন লোক মারলে তাঁকে কি খুনি বলা হত? দস্তয়েভস্কি ‘ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট’-এ স্ট্রেট এই উপদেশ দিয়ে গেছেন।
* উয়ো লোককে ডাকুন। পরের ফিল্মে আমার বাবার পার্ট করবেন।
* সে... ইয়ে... একটু দেরি হয়ে গেছে। আমরা বলছি প্র্যাগম্যাটিকালি দেখুন, দু-একটা ছুটকো খুন করার অধিকার অত বড় মানুষটার আছেই। যেমন যাঁরা এত বিটকেল চেঁচাচ্ছেন, তাঁরা প্রতি বছর ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার অন্যায়টাকে অধিকারের মধ্যেই ধরেন।
* আমি তো বলব, শাপে বর হয়েছে। অ্যাদ্দিন ছিলেন শুধু ফিল্মস্টার, এখন ভারতের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে আইকন। ওঁকে ভাল করে দেখার জন্য আইনের দেবী চোখ থেকে পট্টি সরিয়ে উঁকি মারছেন, একটু একচোখো টাইপের দেখাচ্ছে। দাঁড়িপাল্লাও হেলে গেছে।
* রিয়েলি? লেডিটার ফিগার কেমন? ওর সঙ্গে সেল্ফি তুলে পোস্ট করলে মস্তি আছে?
* আরে সবাই তো মস্তি পাচ্ছে স্যর, আমার কী হবে? নোংরা মালী-ফালিকে খুন করে শেষে ঘানি টানব?
* ধুর বোকা, তোর প্রবলেমটা তো বোম্বাস্টিক বেঙ্গল-ই ইন্টেলেকচুয়াল সিনেমায় সল্ভ করে দিয়েছে! তুই বলে দে: মালীর ওপর রাগ করে বাগানের গাছগুলো গুলি চালিয়েছে, কেয়ারলেস মিসটেকে এক্সট্রা দশটাকে কোতল করেছে।
* গাছ! কী বলছেন স্যর! সে গুলি করতে পারে!
* বাঃ! ডবকা নায়িকাকে দেখে গাছের তেড়ে অর্গ্যাজ্ম হচ্ছে, আর খার খেয়ে সে চাড্ডি গুলি করতে পারে না? তুই থিয়োরিটা বাজারে ছেড়ে দ্যাখ না, কী ক্ল্যাপ! তাপ্পর আইনের গরু ক্যায়সে ফিল্মে চড়ে, আমি বুঝে নিচ্ছি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy