ছবি: প্রত্যয়ভাস্বর জানা
গোরাবাবুর বাজার থেকে যে-রাস্তাটা মধু সান্যাল রোডের দিকে চলে গিয়েছে, সেখানে আর মিনিট সাতেক হাঁটলেই দিব্যসুন্দরের বাড়ি। প্রতি রবিবার আড্ডার আসর বসে তাঁর বাড়িতে। এই আড্ডার অন্যতম সদস্য নলিনাক্ষ মৈত্রের বিশেষত্ব, এই দশ বছরে আজ পর্যন্ত একটা রোববারও অনুপস্থিত হননি তিনি। বাকিরা মোটামুটি নিয়মিত হলেও মাঝে-মাঝে যে গরহাজির হন না তা নয়। কিন্তু নলিনাক্ষর রেকর্ড ছুঁতে পারেননি কেউই। ঝড়-বৃষ্টিতে এক হাঁটু জল জমে গিয়েছে রাস্তায়, তিনি ঠিক জল ভেঙে হাজির দিব্যসুন্দরের বাড়ি। সে দিনটা স্বাভাবিক ভাবেই সুষীমমুকুল আর চন্দ্রকান্ত আসতে পারেননি। কিন্তু তাতে কী? দিব্যসুন্দর তো আছেন।
“এ রকম আড্ডা-নিবেদিতপ্রাণ মানুষটি যদি পর পর চারটে রবিবার অনুপস্থিত থাকেন, তখন চিন্তা হয় বইকি,” দিব্যসুন্দর বললেন।
“আর সব চেয়ে আশ্চর্য হল, ও তো ফোনও ধরছে না,” চন্দ্রকান্ত বেশ চিন্তিত।
“হ্যাঁ, অনেক বার ফোন করেছি। প্রতিবারই রিং বেজে বেজে থেমে গিয়েছে,” সুষীমমুকুল পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বার করে দিব্যসুন্দরের দিকে এগিয়ে দিলেন।
পরদিন সন্ধে ছ’টা নাগাদ দুটো রিকশা চেপে তিন জন পৌঁছে গেলেন নলিনাক্ষর বাড়ি।
নলিনাক্ষর বাড়ি পৌঁছে দিব্যসুন্দর কলিং বেল টিপলেন।
কেউ দরজা খুলল না।
বারবার কলিং বেল টিপলেন দিব্যসুন্দর। কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ নেই। চিৎকার করে ডাকলেন, তিন জনই। কিছু লাভ হল না।
“পাশের জানলাটায় কোনও শিক নেই, ভেঙে ফেলব?” চন্দ্রকান্ত জিজ্ঞাসু ভঙ্গিতে তাকালেন দুজনের দিকে।
“তা ছাড়া আর উপায় কী?” দিব্যসুন্দর বললেন।
বেশ জোরে দু’-তিন বার ধাক্কা দিতেই ছিটকিনি সমেত জানলাটা উপড়ে গিয়ে খুলে গেল। ভিতরে চোখ রাখলেন চন্দ্রকান্ত, “কেউ নেই ভিতরে।”
বাগানে কয়েকটা থানইট পড়ে ছিল। সেগুলো একটার উপর একটা দিয়ে, তার উপরে উঠে একে-একে তিন জনই ঢুকলেন বাড়ির ভিতরে। ফাঁকা ঘরে খাট, তার উপর কয়েকটা বই। একেবারে কোণের দিকে একটা আলমারি, তাতে ঠাসা বই। আলমারির মাথাতেও অনেক বই রাখা রয়েছে। টেবিলে একটা কাপ, তাতে আধ কাপ চা রয়েছে। ঘরের দরজাটা ভিতর থেকে বন্ধ, ছিটকিনি আটকানো।
“আরে, এ কী!” চিৎকার করে উঠলেন দিব্যসুন্দর। খাটের এক পাশে দাঁড়িয়ে তিনি।
সেখানে দেওয়ালে ঠেসান দিয়ে বসে আছেন নলিনাক্ষ। চোখ বোজা, দেহ নিস্পন্দ। চন্দ্রকান্ত নলিনাক্ষর পাল্স দেখলেন, নাসারন্ধ্রে আঙুলের স্পর্শে বোঝার চেষ্টা করলেন, নাঃ, বেঁচে নেই নলিনাক্ষ।
“হায় ভগবান! ও মারা গেছে!” চন্দ্রকান্তর গলা দিয়ে হাহাকার বেরিয়ে এল।
“দেহ এখনও ঠান্ডা হয়ে যায়নি, তার মানে বেশি ক্ষণ আগে মারা যায়নি,” মৃত নলিনাক্ষর গায়ে হাত দিয়ে বললেন দিব্যসুন্দর।
চিত্রার্পিতের মতো দাঁড়িয়ে রইলেন তিন বন্ধু— বিবশ, অসহায়, আতঙ্কিত।
চন্দ্রকান্ত বললেন, “পুলিশে খবর দিতে হবে।”
“খাটের উপর রাখা বইগুলোর পাশে একটা ডায়েরি। দেখেছ? খোলা। পাশে পেন রয়েছে। মনে হচ্ছে যেন লিখতে লিখতে উঠে গিয়েছে,” সুষীমমুকুল এগিয়ে গিয়ে ডায়েরিটা হাতে নিলেন।
বেশ বড়সড় ডায়েরিটা। সুষীমমুকুল পাতা ওল্টাতে লাগলেন। তার পর একটা জায়গায় গিয়ে চোখ আটকে গেল তাঁর।
“আচ্ছা, এই জায়গাটা একটু পড়ো তো?” সুষীমমুকুল বললেন দিব্যসুন্দর আর চন্দ্রকান্তকে।
দুজনে ঝুঁকে পড়লেন ডায়েরিটার উপর। তারিখ আর সময় দিয়ে লেখা। উল্টেপাল্টে দেখা গেল, ১০ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ডায়েরি লেখা হয়েছে।
“চার এপ্রিল! আজই তো চার এপ্রিল!” দিব্যসুন্দর চেঁচিয়ে উঠলেন।
দিব্যসুন্দরের হাতে ডায়েরিটা দিয়ে সুষীমমুকুল বললেন, “এটা পড়ো তো। আমি চশমা আনিনি।”
“নলিনাক্ষ ডায়েরি লেখা শুরু করেছিল বলে তো জানতাম না! আর আজকের তারিখে ডায়েরি লিখেছে মানে একটু আগেও ও এখানে ছিল!” দিব্যসুন্দর বললেন।
“অদ্ভুত ব্যাপার তো!” চন্দ্রকান্ত বিস্মিত।
“হ্যাঁ, অদ্ভুত তো বটেই। যাক গে, আমি ১০ মার্চ থেকে পড়ছি। কী লিখেছে দেখা যাক,” দিব্যসুন্দর বললেন।
১০ মার্চ শনিবার, রাত এগারোটা
কেউ জানে না, প্রায় মাস তিনেক হয়ে গেল আমি স্পিরিট ওয়ার্ল্ড নিয়ে গবেষণা শুরু করেছি। এক দিন কাকতালীয় ভাবেই পরিচয় হল তন্ত্রসাধক সদানন্দ ভট্টাচার্যের সঙ্গে। পরিচয় করিয়ে দিল আমার অফিসের এক সহকর্মী, নিত্যরঞ্জন সমাদ্দার। ওদের পরিবারের গুরুদেব উনি।
এক দিন নিত্যরঞ্জনের বাড়ি গেলাম। পরিচয় হল সদানন্দ ভট্টাচার্যের সঙ্গে। সদানন্দের বয়স বেশি নয়, চল্লিশ-বিয়াল্লিশের মতো। দেখলে মনেই হবে না উনি তন্ত্রসাধনা করেন। একেবারে সাদামাটা চেহারা। কোনও বিশেষত্ব নেই। অনেক ক্ষণ ধরে কথা হল ওঁর সঙ্গে। প্রেতজগৎ সম্বন্ধে আমার আগ্রহের কথা জেনে উনি আমাকে একটা অদ্ভুত উপায়ের কথা জানালেন। বললেন, আমাদের কপালে, দুই ভ্রুর ঠিক মাঝখানে রয়েছে পাইনিয়াল গ্ল্যান্ড। সাধনার ভাষায় আজ্ঞাচক্র— মানুষের দেহের ছ’টা চক্রের একটা চক্র। এটাকে থার্ড আই বা তৃতীয় নয়নও বলা যায়। এই পাইনিয়াল গ্ল্যান্ডকে যদি অ্যাক্টিভ করে তোলা যায়, তা হলে স্পিরিট ওয়ার্ল্ড সম্বন্ধে জানার রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যায়। কী ভাবে অ্যাক্টিভ করতে হবে পাইনিয়াল গ্ল্যান্ডকে? সেটাও শিখিয়ে দিলেন তিনি। মেডিটেশনে বসে চোখ বন্ধ করে দু’চোখের ঠিক মাঝখানে কঠোর মনঃসংযোগ করতে হবে। প্রতিদিন। সেই সঙ্গে কল্পনা করতে হবে বাইরে থেকে বিপুল এনার্জি প্রবেশ করছে আমার আজ্ঞাচক্রে, অর্থাৎ তৃতীয় নয়নে। নিয়মিত রাতে অন্তত এক ঘণ্টা ধরে এটা করতে হবে। এ ছাড়া বিশেষ পদ্ধতিতে কয়েকটা অদ্ভুত শব্দ একটানা উচ্চারণ করতে শেখালেন, যে গুলো উনি কঠোর ভাবে গোপন রাখতেও বললেন। ঠিক মতো মনঃসংযোগ করতে পারলে আর তার সঙ্গে ঠিক-ঠিক ওই শব্দগুলো উচ্চারণ করতে পারলে কিছু দিনের মধ্যেই পাইনিয়াল গ্ল্যান্ড অ্যাক্টিভ হয়ে উঠবে। আর তখন নানা অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটতে থাকবে। চোখের সামনে মৃত মানুষজনকে দেখা যাবে। সেই সব দৃশ্য সকলে সহ্য করতে পারে না। ভয় পেয়ে যায়। তাই উনি সকলকে শেখান না এই পদ্ধতি। শুধু আমার প্রচণ্ড আগ্রহ দেখে আমাকে বিশদে ব্যাখ্যা করলেন সব কিছু।
এর পর থেকে ওঁর কাছে বেশ কয়েক বার যাই আমি। ভাল ভাবে আয়ত্ব করে নিই বিষয়টা। এবং নিয়মিত অভ্যেস করতে থাকি। এক ঘণ্টার বদলে চার ঘণ্টা করে। ভোরে, দুপুরে, সন্ধেয় আর রাতে।
১ এপ্রিল রবিবার, রাত দেড়টা
প্রায় মাসখানেক ধরে আজ্ঞাচক্র অ্যাক্টিভেট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আজ একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। বলতে গেলে যা খুঁজছিলাম, আশ্চর্যজনক ভাবে তা পেয়ে গেলাম। রাতের খাওয়া সেরে নিয়েছি। বিছানায় বসে আজ্ঞাচক্রে মনঃসংযোগ করছি, কিছু ক্ষণ পরই আমার কপাল ব্যথা করতে শুরু করল। তার পর মনে হল, কিছু একটা দুই ভুরুর মাঝখানে হেঁটে বেড়াচ্ছে। উনি বলে দিয়েছিলেন পাইনিয়াল গ্ল্যান্ড সক্রিয় হলে এমনটা হবেই। তবে কি সেটাই হয়েছে? চোখ খুললাম। হঠাৎ কী রকম একটা অনুভূতি হল আমার। মনে হল ঘরে আমি একা নই, আরও কেউ রয়েছে, কেউ যেন আমাকে লক্ষ করছে। চারপাশে চোখ বোলাতে লাগলাম। নাঃ, সব কিছু তো ঠিকঠাকই আছে। মনেরই ভুল আমার। আবার চোখ বুজে মনঃসংযোগ করলাম। কিন্তু কী রকম একটা অস্বস্তি হতে শুরু করল। মিনিট পাঁচেক পরে আবার চোখ খুললাম। আর সঙ্গে-সঙ্গে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম। দেখলাম একটা লোক, বয়স বছর পঁয়তাল্লিশ, উচ্চতা খুব-একটা নয়, খুব বেশি হলে ফুট পাঁচেক হবে, ফরসা, দাড়ি-গোঁফ কামানো, প্যান্ট-জামা পরা। বেশ ধোপদুরস্ত হয়ে ঘরের বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে! এ কে? এ এখানে ঢুকলই বা কী করে? আমার ঘরের দরজা-জানলা তো সব ভিতর থেকে বন্ধ! লোকটা ধীরে ধীরে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। সে হাসিমুখে আমার ঠিক সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল, তার পর বলল, “আমাকে আপনি চিনবেন না, আমার নাম সবুজ সেন...”
“আরে, কে আপনি? কী করে ঢুকলেন ঘরের ভিতর?”
লোকটা বলে উঠল, “আপনি এত দিন ধরে যাদের খুঁজে আসছেন, আমি তাদেরই এক জন।”
“তার মানে?” আমি চেঁচিয়ে উঠলাম।
“মানে, আমি মানুষ নই আপনার মতো। পাঁচ বছর আগে মারা গিয়েছি,” লোকটা হাসল, “এক দিন হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম, পিছন থেকে একটা লরি এসে সোজা চাপা দিয়ে দিল।”
এ বার বুঝতে পারলাম, পাইনিয়াল গ্ল্যান্ড সক্রিয় হওয়া মাত্র স্পিরিট ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে আমার।
আমি তো এটাই চাইছিলাম, সত্যিই যদি প্রেতাত্মার অস্তিত্ব থাকে, তা হলে তার একেবারে সামনাসামনি হওয়া।
বললাম, “দেখুন, আপনি আমাদের জগতে এসেছেন। কিন্তু আমাকে যদি আপনাদের জগতে নিয়ে যেতে পারেন, তবেই মেনে নেব আপনি সত্যিই একজন অশরীরী।”
লোকটা হাসল। আমি কতটা মূর্খ সেটা ভেবেই হাসল বোধহয়। কারণ, তার পরই বলল, “সে যেতেই পারেন, কিন্তু তার জন্য তো আপনাকে মারা যেতে হবে। জীবিত কোনও মানুষ ওখানে যেতে পারে না।”
আমি থতমত খেয়ে গেলাম। মুখ দিয়ে আর কথা বেরোল না।
লোকটা মুখ চেপে একটা অদ্ভুত হাসি হাসল। ব্যঙ্গের হাসি বলে মনে হল আমার। তার পর বলল, “কী, এ বার ইচ্ছে করছে যেতে?”
বললাম, “আমাকে ভাবতে হবে।”
সবুজ বলল, “এ বার আমি আসি। আবার এক দিন আসব। তত দিন আপনি ভাবুন।”
“কবে আসবেন?” জিজ্ঞেস করলাম।
“যে কোনও দিন চলে আসব। এ রকম সময়। রাতে।
সবুজ সেন চলে গেলেন। আমি বসে রইলাম চুপচাপ। সারা রাত আর ঘুম এল না।
এর পর একেবারে ডায়েরি লেখা হয়েছে ৪ এপ্রিলে, যে দিন নলিনাক্ষকে শেষ বার দেখেছিল তাঁর কাজের লোক বীরেন।
৪ এপ্রিল বুধবার, বিকেল পাঁচটা দশ
আজ আবার এসেছে সবুজ সেন। কথা রেখেছে। ওকে বসিয়ে রেখে ডায়েরি লিখছি। এই ক’দিন বাড়ি থেকে বেরোইনি একেবারে। এই ঘর থেকেও নয়। কারণ, হঠাৎ করে যদি ও চলে আসে! একদম বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পারলাম, প্রেতজগৎ সত্যিই আছে। ভাল করে ভেবে দেখলাম, আমার কোনও পিছুটান নেই। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরে এ জগতের জন্য আমার কনট্রিবিউশন কী থাকবে? যত দিন চাকরি থাকবে, অর্থ থাকবে, তত দিন কিছু মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে। তার পর আর কোনও গুরুত্ব থাকবে না আমার। আমার সততা, আমার মূল্যবোধ, বিবেক, আদর্শ— কোনও কিছুরই মূল্য থাকবে না আর। গুরুত্ব থাকবে তাদেরই, যারা সমাজের সব ক্ষেত্রে নির্লজ্জ অভিনেতা, অসৎ, বিবেকহীন, মূল্যবোধহীন— পাড়া-প্রতিবেশী, পরিচিতজন, আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে... এ রকম কত মানুষকে অহরহ চোখের সামনে দেখছি। এই সব মানুষের মধ্যে আমার আর থাকার কোনও ইচ্ছেই নেই। আমার কনশাস মাইন্ড আমাকে বলছে, নিত্যপ্রবাহমান কালের স্রোতে একটা-একটা করে বছর চলে যাবে। আর প্রতি বারই ব্যর্থ বছর বিদায় নেবে আমার হৃদয়ের যাবতীয় নৈরাশ্য সঙ্গে নিয়ে। হৃদয়ের যত আশা-আকাঙ্ক্ষা সব একে-একে শুকিয়ে যাবে। এই বয়সে নতুন করে আশার বীজ বোনার আর ইচ্ছে থাকবে? থাকবে না। বেলা বাড়ার মতো এই জীবন তো ক্রমশ নিঃশেষিত হয়ে আসছে। বুঝলাম, মৃত্যু যেন এক বায়ুহীন অন্ধকার রাতের রূপ ধরে আসছে, যে রাতের দরজা খুলে গিয়ে কোনও দিনই ভোরের আলো ফুটে উঠবে না। সবুজ সেন আমার চোখ খুলে দিয়েছে। পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটা আর উচিত নয় আমার।
আমার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সব পাবে আমার পরিচারক বীরেন, সেই মতো কয়েক দিন আগে আমি একটা উইল করে রেখেছি। উইল রয়েছে এই ঘরেই আমার খাটের তোশকের নীচে।
সবুজকে আমার ইচ্ছের কথা জানালাম। সে বলল, “তা হলে আপনি প্রস্তুত হন। একটু পরে আবার আসছি। আমি কী বলছি, বুঝতে পেরেছেন তো?”
আমি বললাম, “পেরেছি। খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিচ্ছি।”
সবুজ চলে গেল। একটু পরেই আসবে। শেষ মুহূর্তের ডায়েরিও লিখে রাখলাম। বুঝতে পারছি, আমার আড্ডার বন্ধুরাও প্রতি রবিবার অপেক্ষা করে আছে আমার জন্য। যাই হোক, এ বার যাব অন্য জগতে, সেখানে নতুন জীবন শুরু হবে আমার। আমার মৃত বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, চেনাজানা প্রিয় মানুষদের খুঁজে বার করব। মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে হবে এখন আমাকে।
এর পর আর কিছু লেখা নেই। পরপর পাতা উলটে একদম শেষ পাতা অবধি চলে গেলেন দিব্যসুন্দর। নাঃ, বাকি পাতাগুলো একেবারে ফাঁকা।
দিব্যসুন্দরের হাতে ধরা রয়েছে খোলা ডায়েরি। তিনি বিস্ময়বিহ্বল চোখে তাকিয়ে আছেন চন্দ্রকান্ত আর সুষীমমুকুলের দিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy