Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

পাম্প হাউস

আজ আগুন লেগেছে লোহা পোদ্দারের মাথায়। শালা, বলে ঢুকতে দেবে না! মাজাকি হচ্ছে! পাম্প হাউসটা কি তোর বাপের সম্পত্তি? করিস তো দু’পয়সার চাকরি! তাতে অত তেলের কী আছে? চুরি করবে আবার বড় বড় কথা! আজ ওই নলেনের এক দিন কি ওর এক দিন!

স্মরণজিৎ চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

আজ আগুন লেগেছে লোহা পোদ্দারের মাথায়। শালা, বলে ঢুকতে দেবে না! মাজাকি হচ্ছে! পাম্প হাউসটা কি তোর বাপের সম্পত্তি? করিস তো দু’পয়সার চাকরি! তাতে অত তেলের কী আছে? চুরি করবে আবার বড় বড় কথা! আজ ওই নলেনের এক দিন কি ওর এক দিন!

নলেন গুঁই যে এমন ওকে দেখে, প্রথমে কিন্তু বুঝতে পারেনি লোহা। প্রতি দিন বহু লোক কাজের আর্জি নিয়ে আসে ওর কাছে। নলেন গুঁই এসেছিল লোহার দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের চিঠি নিয়ে। বছর পঁচিশের রোগা-ভোগা নলেনকে দেখে একটু মায়াই হয়েছিল লোহার। এমনিতে লোহার কিন্তু অত দয়া-মায়া নেই। ও জানে ও-সব কোনও কাজের জিনিস নয়। ও-সব থাকলে জীবনে এগনো যায় না। এই যে আজ ও কেশবপুরের এমএলএ, সেটা কি আর দয়া-মায়ার মতো আগাছা মনের মধ্যে পুষে রাখলে হত!

ওর বাবা বলাই পোদ্দারের তো দয়ার শরীর ছিল, তাতে কোন সুবিধেটা হয়েছিল শুনি! সারা জীবন প্রাইমারি স্কুলের কেরানিগিরি করে শেষে লোকাল ট্রেনে এক জনের পকেট থেকে পড়ে যাওয়া মানিব্যাগ ফেরত দিতে গিয়ে পকেটমারের বদনাম নিয়ে মার খেল! সেই অপমান নিতে না পেরে লোকটা এক সপ্তাহের মধ্যে মরেই গেল!

সারা জীবন চেনা, অর্ধেক-চেনা সবার দায়ে দফায় যে লোকটা হাসপাতাল-শ্মশান করে বেড়ালো, তার শ্রাদ্ধের খরচ তুলতে নাকের জলে চোখের জলে হয়ে গিয়েছিল লোহা। মা কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, ‘কাউকে কোনও দিন সাহায্য করবি না লোহা। মানুষ বেইমান হয়। দরকারে তারা পায়ে ধরে আর দরকার ফুরিয়ে গেলে মাথায় লাথি মারে!’

কথাটা যে হাড়ে হাড়ে সত্যি, সেটা অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছে লোহা। তাই জীবন ওর বাবার সঙ্গে যা করেছে, ও সেটা কড়ায়-গন্ডায় জীবনকে ফিরিয়ে দিয়েছে!

তবে লোহার কি কোনও দিন কারও জন্য মন কাঁদেনি? কেঁদেছে! বাপের রক্ত যাবে কোথায়! কিন্তু মনের ভেতরের বলাই পোদ্দারকে ও রক্তের তলায় ডুবিয়ে মেরেছে! তাই হরেন চক্কোত্তি, নিমাই দাস, কাজল বিশ্বাসের মতো নেতারা কেউ দাঁড়াতেই পারেনি ওর সামনে।

কিন্তু নলেনকে দেখে ওর যে কেন মনটা নরম হয়ে গেল কে জানে! পাম্প অপারেটরের কাজটা ওকে দিয়েই দিল! এই বাজারে সরকারি চাকরি বলে কথা! অনেকের চোখ টাটিয়েছিল, কিন্তু লোহাকে সামনে এসে কেউ কিছু বলবে এমন হিম্মত কারও নেই! শুধু নলেন কাজে যোগ দেওয়ার পরে বিশু দু’-এক বার আমতা আমতা করে বলেছিল, ‘দাদা, নলেন খুব একটা সুবিধের ছেলে নয় কিন্তু! ওর নামে নানান অভিযোগ শোনা যাচ্ছে! এতে আপনার নামটাই খারাপ হচ্ছে!’

কেশবপুর বড় জায়গা। মোট পাঁচটা পাম্প হাউস আছে। তার একটায় কাজ করে নলেন। ওখানেই থাকে। মাটিতে বিছানা করে শোয়। দিনে দু’বার পাম্প চালাতে হয় ওকে। বাকি সময় খুব কিছু কাজ থাকে না। এখন লোহা জীবনের যে জায়গায় পৌঁছেছে, সেখানে এমন একটা মানুষকে নিয়ে কথা শুনতে হবে কেন! কিন্তু শুনতে হচ্ছে! গত চার মাস কাজ করছে নলেন, তার মধ্যে প্রতি সপ্তাহে কিছু না কিছু নালিশ আসেই ওর নামে! এই পাম্প চালাতে দেরি করেছে! ওই কেষ্টর দোকানে চা খেয়ে পয়সা দেয়নি! রাজেনবাবুর ফলের বাগান থেকে পেয়ারা, বাতাবিলেবু চুরি করে বস্তির বাচ্চাদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছে! ইত্যাদি ইত্যাদি।

এক বার নলেনকে ডেকে বকেওছিল লোহা। বলেছিল, আর নালিশ এলে গলাধাক্কা দিয়ে কাজ থেকে বের করে দেবে। কিন্তু সেটা তো কথার কথা!

কিন্তু আজ অভিযোগটা গুরুতর। এমনিতেই গত তিন দিন মাথার ঠিক নেই লোহার। এক দিকে পাঁচশো আর হাজার টাকার নোট বাতিল হওয়ায় ওকে নিজের টাকা নিয়ে নানান ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে! অন্য দিকে রাজা এমন এক কাণ্ড করেছে! মা-মরা ছেলেটাকে নিয়ে লোহার চিন্তার শেষ নেই। সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে রাজা। কলকাতায় থাকে। ছুটি-ছাটাতে বাড়িতে আসে। এ বারও এসেছে বড়দিনের ছুটিতে। আর এসেই বিপত্তি!

গত মাসে রাজাকে নতুন একটা গাড়ি কিনে দিয়েছে লোহা। কিন্তু তখন তো আর বুঝতে পারেনি যে সেটাকে চালাতে গিয়ে ছেলেটা এমন অ্যাক্সিডেন্ট করে বসবে! তবে দোষ তো রাজার নয়। দোষ ওই কুকুরটার। ঠিক ওই সময় তোর কী দরকার রাস্তা পার করার!

বাচ্চা নিয়ে মা কুকুরটা রাস্তা পার করছিল। রাজা বাঁচাতে গিয়েছিল কুকুরগুলোকে। ব্যস, কাঁচা হাত, গাড়ির টাল সামলাতে পারেনি। রাস্তার পাশের বড় ল্যাম্পপোস্টটায় সোজা গিয়ে ধাক্কা মেরেছে। গাড়িটা ডান দিকটা পুরো দুমড়ে গেছে। কিন্তু শুধু সেটা হলে তো আর চিন্তা ছিল না! অ্যাক্সিডেন্টের ফলে বুকের দুটো পাঁজর ভেঙেছে রাজার। সঙ্গে ডান পায়ের গোড়ালি। যা-তা অবস্থা! কুকুরটাকে যদিও বাঁচাতে পারেনি রাজা। গাড়ির চাকার তলায় মা কুকুরটার সঙ্গে তিনটে পুঁচকি কুকুরও পিষে গেছে। আর এর জন্য রাজা এত কষ্ট পাচ্ছে যে বলার নয়।

ছেলেটাকে দেখলে অবাক লাগে লোহার! আরে কোথায় নিজের কষ্ট দেখবে, না রাস্তার কুকুর মারা গেছে সেই নিয়ে কাঁদছে! বাবার রক্ত কি তবে ছেলেটার মধ্যে ফিরে এল! খুবই চিন্তার ব্যাপার!

তবে দ্রুত ব্যবস্থাও নিয়েছে লোহা। স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটির কাউন্সিলার নান্টু হালদারকে বলেছে রাস্তার কুকুর ধরতে। যত্রতত্র এগুলো ঘুরে বেড়াবে! যাকে-তাকে কামড়াবে! দুর্ঘটনা ঘটাবে! এ হয় নাকি? গত পরশু সকালে অ্যাক্সিডেন্টটা হয়েছিল আর দুপুর থেকেই নান্টু হালদার তার কাজ শুরু করে দিয়েছে। যত রাস্তার কুকুর, সব ক’টাকে ধরপাকড় শুরু হয়ে গেছে।

এ দিকে পার্টির মধ্যেও তো ওর শত্রুর অভাব নেই! একটা টেন্ডারে লোহা নাকি নিজের পেটোয়া লোককে কাজ পাইয়ে দিয়েছে! সেই নিয়ে কেউ পার্টি হাইকম্যান্ডের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বসে আছে! আসছে সপ্তাহে এই নিয়ে হাইকম্যান্ড ডেকে পাঠিয়েছেন ওকে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ওর জন্য নাকি পার্টির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। শুনলেই গা-পিত্তি জ্বলে লোহার। ভোটের সময় মনে থাকে না? যে ব্যবসায়ীরা টাকা দেয় পার্টি ফান্ডে, তারা ফেভার চাইবে না?

আর এই সব ঝামেলার মধ্যে কোথাকার কে নলেন গুড় না নলেন গুঁই, সেই ব্যাটা বলে কিনা পাম্প হাউসে ঢুকতে দেবে না! অতগুলো টাকা হাতিয়ে আবার রোয়াব! আজ ওর এক দিন কী লোহা পোদ্দারের এক দিন।

বিশু বলল, ‘দাদা আপনি না এলেও চলত! এই সব পাতি কাজে কেন আপনি মাথা গলাচ্ছেন?’

লোহা সামনের সিট থেকে পেছনে ফিরে বলল, ‘সব কাজ তোদের দিয়ে হলে ব্যাপারটা কি এই জায়গায় পৌঁছত?’

বিশু সারা ক্ষণ লোহার সঙ্গেই থাকে। ওর মেজাজ-মর্জি ভালই বোঝে। আজ লোহার মুখ-চোখ দেখে বুঝেছে, বেশি কথা বলতে গেলে কপালে দুঃখ আছে।

‘টাকার ব্যাগটা কোথায় পাওয়া গেছে বললি?’ লোহা সামনের দিকে তাকিয়েই প্রশ্নটা করল।

‘গোল মাঠের সামনে। তাড়া-তাড়া পাঁচশো আর হাজার টাকার নোট লোহাদা! কেউ গতি করতে না পেরে সাতসকালে রেখে গিয়েছিল ব্যাগটা। মাঠের থেকে একটু দূরেই তো কেষ্টদার দোকান। ও-ই দেখেছে নলেনকে। প্রথমে তো বুঝতে পারেনি যে কী করছে মালটা! ও দিকটা তো সকালের দিকে ফাঁকাই থাকে! কেষ্টদা দেখে যে নলেন রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে থমকে দাঁড়িয়েছিল ব্যাগটা দেখে। তার পর ব্যাগটা খুলে এক খাবলা মেরে কিছু নিয়ে দৌড় মেরেছিল। কেষ্টদার সন্দেহ হয়েছিল গোটা ব্যাপারটা দেখে। উঠে গিয়ে দেখেছিল ব্যাগটা। ভর্তি টাকা! আর তখন বুঝেছিল নলেন কী নিয়ে পালিয়েছে! কেষ্টদা আমায় ফোন করেছিল সঙ্গে সঙ্গে!’ বিশু দম নিয়ে বলল, ‘আমি লোকজন নিয়ে গিয়েছিলাম পাম্প হাউসে। দেখি কী, পাম্প হাউসের জানলায় ব্যাটা কাগজ সেঁটে রেখেছে। বাইরে থেকে কিছু বোঝার উপায় নেই ভেতরে কী হচ্ছে, কী আছে! আমরা ঢুকতে গিয়েছি, ব্যাটা বলে ঢুকতে দেবে না! সরকারি জায়গায় নাকি আমাদের ঢোকা নিষেধ! বগা তো তখনই মারতে গিয়েছিল! কিন্তু আমি দাদা বারণ করি। আপনাকে না জানিয়ে আমি কিছু করতে চাইনি! আসলে অতগুলো টাকা! এমনিতেই লোকে বলে, ও নাকি আপনার লোক! আপনার নাম ভাঙিয়ে দোকান থেকে বাকিতে জিনিস নেয়। দাম দিতে চায় না। সেখানে কেষ্টদাকে তো চেনেন! দু’ধামা মুড়ি খেয়ে হজম করে দিতে পারে কিন্তু একটা কথা পেটে থাকে না! ব্যাগটা আমি থানায় জমা করব বলে নিয়ে এসেছি। কিন্তু নলেন যে ক’টা বান্ডিল নিয়ে গেছে সেটাও তো ফেরত পাওয়া দরকার! না হলে...’

‘একটা কথা কত বার বলবি তুই?’ লোহা বিরক্ত হল, ‘তখন থেকে বকবক করে যাচ্ছিস! যা জিজ্ঞেস করছি সেটুকুই বল। শালা দেখব মালটার কত তেল বেড়েছে! কাউকে হেল্প করলে সে এ ভাবেই বাঁশ দেয়!’

পাম্প হাউসের সামনে গিয়ে বড় এসইউভি-টা শব্দ করে ব্রেক কষে দাঁড়াল। বাকিদের মতো লোহা নিজেও দরজা খুলে প্রায় লাফিয়ে নামল গাড়ি থেকে। আগুনটা যেন মাত্রা ছাড়িয়ে জ্বলতে শুরু করেছে এখন!

‘নলেন, এই নলেন,’ বিশু পাম্প হাউসের বন্ধ দরজার সামনে গিয়ে দুমদুম করে দরজা পিটতে লাগল, ‘দরজা খোল শালা। দেখ কে এসেছে! খোল দরজা!’

ঘরের ভেতর থেকে সামান্য সময় নিয়ে দরজাটা খুলে অর্ধেক উঁকি দিল নলেন। সেই রোগা ভিতু চেহারা। অনিশ্চিত চাহনি। আর শীতেও খালি গা!

নলেন বিশুকে দেখেই বলল, ‘আরে আবার এসেছ! বললাম না, গরমেন্টের জায়গা! এ ভাবে হুটহাট ঢুকবে না! পারমিশান লাগবে!’

‘তবে রে জানোয়ার!’ লোহা আর নিজেকে সামলাতে পারল না। সামনে এগিয়ে এল, ‘আমায় শালা তুই পারমিশান দেখাচ্ছিস! মার শুয়োরটাকে।’

লোহার মুখের কথা খসার সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ল বিশুদের দলটা। বিশু লাথি মেরে দরজাটা খুলে ঘরে ঢুকে পড়ল। পাঁচ-ছ’জনের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল নলেন।

ঘরের ভেতরটা আবছায়া, ধুলোটে। মেঝেতে জল থইথই! জানলায় কাগজ লাগিয়ে রাখার জন্য বন্ধ হাওয়ায় ঘরের মধ্যে কেমন বোঁটকা গন্ধ! লোহা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে না কিছু! ও তাকাল নলেনের দিকে। মার খেয়ে গোঙাচ্ছে ছেলেটা।

বিশু চিৎকার করে বলল, ‘কোথায় রেখেছিস টাকা? কত টাকা সরিয়েছিস হারামজাদা? বল শালা, না হলে পুঁতে...’

এক জন গিয়ে এক ধাক্কায় একটা জানলা খুলে দিল এ বার। ঝাঁপিয়ে পড়া আলোয় ঠিক তখনই আওয়াজটা শুনতে পেল লোহা! কুঁইকুঁই করে কে একটা ডাকছে!

শব্দ ঠাহর করে মুখ ফেরাল লোহা। দেখল, একটা ছোট্ট কুকুরছানা! কয়েক দিন মাত্র বয়স হবে। ঘরের কোনার যেখানটা শুকনো, সেখানে শোয়ানো আছে।

কুকুর! লোহা সামান্য এগিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল। এটা কী দেখছে ও!

কুকুরটার গায়ে একটা পাতলা শার্ট ঢাকা দেওয়া। আর ছোট্ট শরীরের তলা দিয়ে উঁকি মারছে কিছু পাঁচশো আর হাজার টাকার নোট! কুকুরটাকে নোটের ওপর শুইয়ে রাখা হয়েছে!

মাটিতে পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে নলেন বলল, ‘স্যর, পাম্পের গ্ল্যান্ড লিক করে মাটিতে জল ভরে গেছে! আমার সব জামাকাপড় ভিজে গেছে। ও দুধের শিশু স্যর। মা-টা সে দিন মারা গেছে গাড়ি চাপা পড়ে। তার ওপর সব কুকুরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে মিনসিপালিটির লোকজন। ওকে কুড়িয়ে না-আনলে এই ঠান্ডায় বাঁচত না! সকালবেলা নিজের জামা দিয়ে ওকে জড়িয়ে রেখে বেরিয়েছিলাম গরম কিছু জোগাড় করতে। কোথাও পেলাম না কিছু। তার পর দেখি বাতিল টাকার ব্যাগ কেউ ফেলে গেছে। ভাবলাম, এ সব তো আর কাজে লাগবে না! তা ছাড়া মোটা দামি কাগজ! ভাল ওম হবে। তাই ক’টা নিয়ে এসেছি। স্যর আমি কাউকে ঢুকতে দিইনি এই ঘরে, কারণ ওর কথা জানলেই তো ওকে ধরে নিয়ে যাবে সবাই। ওর তো কেউ নেই! আমি চোর নই স্যর! সত্যি বলছি...’

‘চোপ শালা, গল্প দিচ্ছিস? আজ তোকে...’ বিশু চেঁচাচ্ছে। কী সব বলছে! কুকুর ছানাটা কুঁইকুঁই করছে। কিন্তু কিছুই কানে ঢুকছে না লোহার। বরং ওর ভেতরটা কাঁপছে থিরথির করে। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে। জলের মধ্যে শুয়ে অন্যের জন্য মার খেয়ে গোঙাচ্ছে যে মানুষটা, লোহা দেখছে সে মোটেই নলেন গুঁই নয়, সে বলাই পোদ্দার!

বহু বছর আগে, রক্তের মধ্যে ডুবিয়ে যাকে মেরে ফেলেছে ভেবে নিশ্চিন্ত হয়েছিল, আজ সেই মানুষটাই বুকের ভেতরে যেন উঠে দাঁড়াচ্ছে আবার!

‘জানোয়ার, তোর বাপের টাকা? আজ শালা তোকে...’ বিশু পড়ে থাকা একটা লাঠি তুলল।

লোহা ভূতে পাওয়া মানুষের মতো এক বার ছেঁড়াখোঁড়া নলেনকে দেখল, তার পর আচমকা ঘুরে গিয়ে কষিয়ে থাপ্পড় মারল বিশুর গালে! •

অন্য বিষয়গুলি:

Short story
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy