Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

সরাসরি সম্প্রচার

চেনাই যাচ্ছে না। গলা থেকে মাথার উপরের অংশটা দলা পাকিয়ে গিয়েছে। আটত্রিশ বছরের জীবনে নিজেকে অনেক বার অনেক ভাবে দেখেছে সমীপ।

ছবি: দীপঙ্কর ভৌমিক

ছবি: দীপঙ্কর ভৌমিক

প্রসেনজিৎ সিংহ
ছোটগল্প শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ২৩:৫৮
Share: Save:

চেনাই যাচ্ছে না। গলা থেকে মাথার উপরের অংশটা দলা পাকিয়ে গিয়েছে। আটত্রিশ বছরের জীবনে নিজেকে অনেক বার অনেক ভাবে দেখেছে সমীপ। আয়নায়, সেলফিতে, বিয়েবাড়ির ভিডিয়োতে। কিন্তু রাস্তায় যে দেহটা পড়ে রয়েছে, তার মুখের সঙ্গে কোনওটারই মিল নেই।

কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঘটল ব্যাপারটা। লরিচালকের কিছু করার ছিল না। উল্টো দিকের হু-হু করে ছুটে আসা প্রাইভেট কার থেকে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে বুঝতেই পারেনি, কখন পিছনের লরিটা ওর একেবারে পাশে চলে এসেছে। টাল সামলাতে না পেরে সাইকেল-সমেত ওটারই পিছনের চাকায়…

সন্ধেবেলা। লোকজন জড়ো হতে কিছুটা সময় লাগল। বেগতিক বুঝে লরিটা হাওয়া। মনে হয় না আর ওটার নাগাল পাওয়া যাবে। এই ব্যস্ত রাস্তায় কে কার খবর রাখে! পুলিশ দলাপাকানো দেহটাকে মর্গে পাঠিয়েছিল। একটা রুটিন ইনভেস্টিগেশন। দেহটার বুকপকেটের মোবাইল থেকে বাড়িতে খবরটাও দিয়েছিল ওরাই।

এমন দুর্ঘটনায় প্রতিদিন মানুষ মরছে। সফল, ব্যর্থ কিংবা গড়পড়তা জীবনের সম্ভাবনা ঊহ্য রেখে থেমে যাচ্ছে কারও কারও পথ চলা। অবশ্য যারা ইচ্ছে করেই জীবনে দাঁড়ি টেনে দেয়, তাদের কথা আলাদা। বেঁচে থাকাটা তাদের কাছে হয়তো অনাবশ্যক ভারী হয়ে ওঠে। আর্থিক অনটনের ওপর যখন শাকের আঁটির মতো দুরারোগ্য ব্যাধি নেমে আসে… তখন মনে হয়, ধুস! বোঝা নামিয়ে তখন স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ায় তারা। নিজে রেহাই পায়। তাকে ঘিরে থাকা লোকজনেরও এক ধরনের স্বস্তি। বাস্তব এটাই। তা ছাড়াও অল্পবয়সে প্রেমে ধাক্কা, বেশি বয়সে দেনার দায়, ব্যর্থতা, সামাজিক চাপ, লজ্জা— এমন কতশত কারণ। সমীপ অনেক বার ভেবেছে, আত্মহত্যা যে করে, সত্যিই কি সে স্বস্তি পায়? মৃত্যুর পর অস্তিত্বহীন একটা সত্তার আবার স্বস্তি-অস্বস্তি কী! যদি থাকেও, তা হলে সেটা অনুভব করে কে?

পর দিন অফিসে খবরটা পৌঁছল একটু দেরি করেই। প্রতিবেশী তিমিরবাবুর শালা ওদের অফিসেই কাজ করে। বাচ্চা ছেলে। ও-ই অনুরঞ্জনবাবুকে জানিয়েছিল। সমীপের বস। তবে বেসরকারি অফিসে এ সবের তেমন মূল্য নেই। কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হলে বোধহয় একটু বিরক্ত হত ম্যানেজমেন্ট। নিয়মকানুন অনুযায়ী অনেকগুলো টাকাপয়সা গলে যেত। এ ক্ষেত্রে ঝামেলা কম। শুধু ঘটা করে বড়সাহেব একটা দামি ‘রিথ’ অর্ডার দিলেন।

অফিসে সমীপের ঘনিষ্ঠ হিসাবে সবাই অন্বয়কে চেনে। কাজেই ওর ওপরেই ভার পড়ল অফিসের তরফে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর। বারীন অবশ্য ওর সঙ্গে যাবে বলল। বারীনের স্ত্রীর অপারেশনের সময় সমীপ খুব সাহায্য করেছিল। খানিকটা সে কারণেই সমীপের সঙ্গে তেমন হৃদ্যতা না থাকলেও খবরটা শোনা ইস্তক মনটা ভারী হয়ে উঠেছিল বারীনের। আর নিরুপম? ও যেন বেশি যত্ন করেই রিথের সঙ্গে আটকানোর জন্য এক টুকরো শোকবার্তার প্রিন্টআউট বার করে দিল। ভিতরের হাঁপ-ছাড়া ভাবটা তো প্রকাশ করা যায় না, মুখটা গম্ভীর রাখতে হল। ওর রাস্তা ক্লিয়ার। অ্যাপ্রাইজ়ালের সময় তো এসেই গেল। সমীপ থাকলে ওর প্রমোশনটা হওয়া মুশকিল ছিল।

খবর হাওয়ায় ছড়ায়। বেলার দিকে পাড়ার বরেনের দোকানে ভিড় থাকে না। সামনের টুলটায় মিত্তিরমশায় বসেছিলেন অন্য দিনের মতোই। একঘেয়েমি কাটাতে দিনের খানিকটা সময় বরেনের দোকানে বসে থাকেন। খরিদ্দার কিংবা সামনের রাস্তা দিয়ে চলে যাওয়া লোকজনের সঙ্গে যেচে পড়ে কথা বলেন। বিশেষত পাড়ার মেয়ে-বৌদের সঙ্গে। আজ পরিচিত জায়গায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার আগেই বরেন তাঁকে খবরটা দিল।

‘‘শুনেছেন জ্যাঠামশায়, সমীপটা মরে গেল। অ্যাক্সিডেন্ট। মাথাটা পুরো ইয়ে হয়ে গেছে নাকি। গতকালও তো আমার দোকান থেকে গোবিন্দভোগ চাল নিয়ে গেল। বলল, নতুন গুড়ের পায়েস করবে বৌমা।’’

‘‘শুনেছি। জলজ্যান্ত ছেলেটা! জীবনটা এ রকমই, বুঝলে হে। বৌটা তো একেবারে বাচ্চা। একটা মেয়ে আছে না ওদের?’’

‘‘হ্যাঁ জ্যাঠামশায়। শুধু কি মেয়ে? মাথার ওপর অসুস্থ বাবা-মাও। অবস্থাটা ভাবুন। আমার কাছেও তো অনেকগুলো টাকা বাকি আছে। বলত, লিখে রাখুন বরেনদা। অবশ্য মাসের প্রথমে মিটিয়ে দিত। এ মাসেরটা তো পুরোটাই…’’

‘‘চাকরি তো খারাপ করত না। ফ্ল্যাটটা ভালই কিনেছিল।’’

‘‘হ্যাঁ। খু-উ-ব ভাল। আমি যাইনি। তবে আমাদের চানু, ওই যে ইলেকট্রিকের কাজ করে, ও বলছিল, হেব্বি সব ফিটিংস লাগিয়েছে নাকি।’’

নতুন ফ্ল্যাটে ঢোকার আগে সে সময়টায় একটু টানাটানির মধ্যেই পড়েছিল সমীপ। জমা টাকা প্রায় সবটাই ফ্ল্যাটে ঢুকে গিয়েছিল। তা ছাড়া, ফ্ল্যাট কিনলে তার আনুষঙ্গিক খরচও আছে। মানানসই কিছু ফার্নিচার, বাথরুম আর কিচেনের রকমারি ফিটিংস— এ সবের আজকাল যা দাম! একার রোজগার। এখন তো আবার ইএমআই’য়ের ঝক্কি। সহকর্মী সুহৃদদা বলেছিল, প্রথম প্রথম ইএমআই গায়ে লাগে। পরে সয়ে যায়। সে পর তো আর দেখা হল না সমীপের।

ভালই হল। লোনটা আর শোধ করতে হবে না। ওর সঙ্গে যে বাড়তি টাকা গুনতে হত বিমার জন্য, সেটাই শাপে বর হবে। রিমলিকে আর ইএমআই দিতে হবে না। মালিকানার পাকা কাগজপত্রও হাতে চলে আসবে। অবশ্য সমীপের আর ভোগ হল না, এই যা।

সোমেশ্বরবাবুর আলঝাইমার্স। নিজের ছেলেকেও আর চিনতে পারেন না। কখন দরজা খুলে বেরিয়ে যাবেন ঠিক নেই। সমীপের নতুন ফ্ল্যাট থেকে বেশ কিছুটা দূরে ওদের পুরনো বাড়ি। ভিতর থেকেই সর্বক্ষণ তালা দিয়ে রাখেন সুলেখা। চাবি তার আঁচলে। খবরটা আসা ইস্তক বিছানা নিয়েছেন সেই সুলেখা। সমীপ তাঁদের একমাত্র সন্তান। রিমলি বাচ্চাটাকে নিয়ে তত ক্ষণে এ বাড়িতে।

সুলেখাই বলতে গেলে দেখেশুনে বাঁচিয়ে রেখেছেন সোমেশ্বরকে। স্বামীর পেনশনটা রয়েছে, ওটাই ভরসা। সংসার খরচের জন্য ছেলের কাছে হাত পাততে হয় না। তবে অসুখবিসুখে চিকিৎসার খরচ জোগায় সমীপই। সোমেশ্বর নাহয় সাংসারিক হিসেবনিকেশের ঊর্ধ্বে। কিন্তু সুলেখা তো নন। সমীপের কাছে তার প্রত্যাশা ছিল কিছু বেশি। একটা গাড়ি আর এক বার প্লেনে করে আন্দামান— সে শখ পূর্ণ হল না। সন্তান হারানোর চেয়ে বড় শোক হয় না। তবু শোক আর পূরণ-না-হওয়া প্রত্যাশার গণ্ডি ছাপিয়ে একটা আতঙ্কও তাকে পেয়ে বসল। তিনি নিজেও অসুস্থ। এর পর সোমেশ্বর চলে গেলে তাঁর কী হবে?

রিমলি অবশ্য ভীষণ শক্ত মনের মেয়ে। আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখাটা ওদের পারিবারিক শিক্ষার অঙ্গ। বাপের বাড়ির সঙ্গে সম্পর্কটা আলগা হয়ে এলেও শিক্ষাটা রয়ে গিয়েছে। পুরনোপন্থী বাবা ওর আর সমীপের পালিয়ে বিয়ে মেনে নেননি। মা বেঁচে থাকলে হয়তো অন্য রকম হতে পারত। অবশ্য রিমলিও নিজে অনড় ছিল। এখন মোটের ওপর অসুখী সে নয়। তবে চারপাশের লোকজন, ওর ছোটবেলার বন্ধুবান্ধবীদের গাড়ি-বাড়ি-বিদেশভ্রমণ কিংবা দামি রেস্তরাঁয় খাওয়াদাওয়ার পোস্টগুলো যখন ফেসবুকে দেখে, তখন এক ধরনের কষ্ট তার গলা টিপে ধরে। এমন গড়পড়তা জীবনের স্বপ্নই কি সে দেখেছিল?

সমীপ নেই। একগাদা কাজ ফেলে পালাল লোকটা। সবচেয়ে কঠিন হল বাচ্চাটাকে বড় করা। শ্বশুর-শাশুড়িকেও সে ফেলে দিতে পারবে না। সে শিক্ষায় ও বড় হয়নি। অথচ নিজের চাকরিবাকরি নেই। দাঁতে দাঁত চেপে শাশুড়িকে সান্ত্বনা দেয়। উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলা, বিশেষ করে চিরব্রতদার সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় সমীপের শেষকৃত্য নিয়ে পরামর্শটাও করতে হচ্ছে তাকেই।

চিরব্রত সমীপের অভিন্নহৃদয় বন্ধু। সমীপের আকস্মিক এই চলে যাওয়াটা ভিতর থেকে তাকে পেড়ে ফেলার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু আঘাতটা ভাল করে উপলব্ধি করার আগেই তাকে কাজে লেগে পড়তে হয়েছে। খবরটা পেয়েই চলে এসেছিল ও।

শ্মশানগুলো এখন বড্ড যান্ত্রিক। কংক্রিটের এই পরিবেশে কান্নার আওয়াজ আছে। অথচ কোথাও যেন হাহাকার নেই। ঝামেলামুক্তির অতি সভ্য লেনদেনে পরিচ্ছন্ন। চুল্লিতে দেহটা ঢুকে যাওয়ার পর এখন মিনিট চল্লিশের অপেক্ষা।

শ্মশানে আসা লোকজন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসেছিল। গঙ্গার ধারে বেঞ্চে শরীরটা এলিয়ে দিয়ে একটা সিগারেট ধরাল চির। ওর মনে হচ্ছিল, জীবনের অনেকগুলো সত্য সমীপের সঙ্গেই ছাই হয়ে গেল। গোপন, একান্ত গোপন। যে কথাগুলো সমীপ ছাড়া আর কাউকেই কোনও দিন বলতে পারেনি ও। নিজের বৌকেও না। সেই ছেলেবেলা থেকে….। ওদের বাড়ির চিলেকোঠা থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে ভট্টাচার্যবাড়ির বাথরুমে তুতুলদির স্নান দেখা, উচ্চমাধ্যমিকে ব্যাপক টুকলি করেও ধরা না পড়া, অফিসে কোনও দিন ঘুষ না খেয়েও শুধু এক বার বিশাল অঙ্কের টাকার লোভে পদস্খলনের কথা সমীপ ছাড়া আর কে-ই বা জানে! সমীপের বুদ্ধিতেই সে যাত্রা রক্ষা হয়েছিল।

সে দিন রাতে সুস্মেলী ফোন করল। নইলে খবরটা ওর জানার কথা নয়। রিমলি ধরল। সমীপের মোবাইল তখন পুলিশের হাত ঘুরে রিমলির কাছে। প্রথমটায় সুস্মেলী যেমন করে, আদুরে গলায় বলল, ‘‘কী করা হচ্ছে শুনি?’’ উল্টো দিকে রিমলির চাঁছাছোলা গলার ‘‘কে বলছেন,’’ শুনে ভয়ে হৃৎপিণ্ডটাই গলায় উঠে এসেছিল সুস্মেলীর। তার পর শিরদাঁড়াটা কেমন অবশ হয়ে এসেছিল খবরটা শুনে। মানুষটা নেই! ফোন কেটে দিয়ে খানিক ক্ষণ চুপ করে বসেছিল। ও ঘরে স্বামী নিখিলেশ মন দিয়ে খবর শুনছে, সামনে গ্লাসে পানীয়। এ সময়টা একটা ঘোরের মধ্যে থাকে ও। থাকতে ভালবাসে। ছেলেপুলে নেই ওদের। সম্পর্কের শুকনো চরার দু’পাশে অসেতুসম্ভব দূরত্বে দুজনেই নিজেদের জগতে মশগুল। শুধু প্রয়োজনভিত্তিক লেনদেনের কাঠামোয় দাঁড়িয়ে রয়েছে সম্পর্কের পত্রপুষ্পহীন গাছটা।

বিশ্বাস নামে কাণ্ডটা, কিংবা সহমর্মিতা আর ভালবাসার মতো দাম্পত্যের অন্য ডালপালাগুলো খসে গিয়েছে বহু দিন হল।

সুস্মেলীর সঙ্গে পরকীয়ার ব্যাপারটা যে এত দিন রিমলি জানতে পারেনি, সে কতকটা সমীপের চরম সাবধানতার জন্য। তবে রিমলি বুদ্ধিমতী। আর অসম্ভব ঠান্ডা মাথার মেয়ে। আজ মিনিটখানেকের কথোপকথনে ওর কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, এত দিন ওকে কী ভাবে ঠকাচ্ছিল সমীপ।

সমীপের মৃত্যু অনেকগুলো বন্ধ দরজার আগল খুলে দিয়েছে। পিলপিল করে বেরিয়ে আসছে বীভৎস সব পোকামাকড়। আর তারাই কুরে কুরে খাচ্ছে সমীপ নামে লোকটার ঢেকেঢুকে রাখা মিতভাষী নিপাট একটা ব্যক্তিত্বকে।

একটা ভীষণ অস্বস্তি শুরু হয়ে গেল সমস্ত শরীর জুড়ে। কদাকার পোকাগুলো তাদের কুশ্রী শরীর নিয়ে ফালাফালা করে ফেলছে তার সমস্ত সত্তাকে। গলে গলে পড়া অংশগুলো একতাল কালো পাঁকের মতো নেমে আসছে তার শরীর দিয়ে। ঠিক সেই মুহূর্তে মনে হল, চারপাশে অনেকগুলো জুলজুলে চোখ ঘৃণা, অপমান আর অসম্মান ছুড়ে দিচ্ছে তার দিকে। প্রবল অস্থিরতা, ছটফটানিতে ঘেমেনেয়ে উঠেছে সে, অথচ যেন কিচ্ছু করার উপায় নেই তার। কে যেন অদৃশ্য বাঁধনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে।

মুক্তি পেল একটা দীর্ঘশ্বাসে।

চোখ খুলে স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগল সমীপের। একান্ত পরিচিত বিছানাতেই নিজেকে আবিষ্কার করে নির্ভার লাগে। স্বপ্নে নিজেরই মৃত্যুর সরাসরি সম্প্রচার দেখতে দেখতে কাঠ হয়ে আসা নিরক্ত শরীরের ধমনীতে ফের যেন টের পেল রক্তের উচ্ছ্বাস। শরীর জুড়ে অদ্ভুত স্বস্তি। জানলার গ্রিল ছুঁয়ে পায়রার বুকের মতো নরম রোদ্দুর বলে দিচ্ছিল সমীপকে, সব আগের মতো রয়েছে। রিমলি, ওদের বাচ্চা, সুস্মেলী, বাবা-মা— সবাই। এমনকি, গোপন সত্যগুলোও। আহ, কী আরাম! কী নিশ্চিন্তি! কী ভরপুর এই বেঁচে থাকা!

আরামে ঘুমিয়ে পড়ে সে।

ভোরের নরম বিছানায় আরও অনেক ক্ষণ লেপ্টে পড়ে ছিল সমীপ। অনেক ডাকাডাকিতেও উঠছে না দেখে রিমলিই ফোন করে পাড়ার ডাক্তার সুবিমল মিত্রকে। দেখেশুনে সুবিমল বললেন, ‘‘ঘুমের মধ্যেই ম্যাসিভ অ্যাটাক…’’

নিজের কাছে নিরাবরণ হতে হতে হঠাৎ যে স্বস্তিটা সমীপ অর্জন করেছিল, ওর স্মিত মুখে সেটা তখনও লেগে রয়েছে এক টুকরো রোদ্দুরের মতো।

অন্য বিষয়গুলি:

Prasenjit Sinha Short Story
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy