গত ১০ বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে উঠেছে ‘বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু’ শিবের মূর্তি। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিশ্বাস স্বরূপম’।
সংবাদ সংস্থা
জয়পুরশেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ১৪:২০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
এক পায়ের উপর আরেক পা রেখে বসে রয়েছেন দেবাদিদেব মহাদেব। পাশে রাখা রয়েছে ত্রিশূল। এমন ভাবে বসে রয়েছেন, যেন ত্রিনয়ন দিয়ে গোটা জগৎসংসার দেখছেন। এমনই এক শিবের মূর্তি বসানো হয়েছে এ দেশে। যার সৌজন্যে ভারতের পর্যটন মানচিত্রে নতুন পালক জুড়ল।
০২২০
এর আগে, দেশবাসী এমন উঁচু মূর্তি দেখেছেন গুজরাতে। সে রাজ্যের কেড়ওয়াড়িতে নর্মদা নদীর তীরে সর্দার পটেলের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। ২০১৮ সালে যার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’। সেই মূর্তির সঙ্গেই তুলনা টানা হচ্ছে রাজস্থানের শিবমূর্তির।
০৩২০
সর্দার পটেলের মূর্তির থেকে তুলনামূলক ভাবে ছোট রাজস্থানের এই শিবমূর্তি। সর্দার পটেলের মূর্তির উচ্চতা ১৮২ মিটার (৫৯৭ ফুট)। আর শিবমূর্তির উচ্চতা ৩৭৯ ফুট।
০৪২০
গত ১০ বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে উঠেছে ‘বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু’ শিবের মূর্তি। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিশ্বাস স্বরূপম’।
০৫২০
২৯ অক্টোবর এই শিবমূর্তির উদ্বোধন করা হয়েছে। তার পর ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ওই এলাকায় নানা সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হবে।
০৬২০
বিশ্বের সবচেয়ে এই উঁচু শিবমূর্তির নানা বিশেষত্ব রয়েছে। ঝড়-জলেও ক্ষতি হবে না মহাদেবের মূর্তির। এমনকি, ২০ কিমি দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যাবে শিবমূর্তি।
০৭২০
এই বিশালাকার শিবমূর্তিটি চাক্ষুষ দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে রাজস্থানের রাজসমন্দ জেলার নাথদ্বারা শহরে। উদয়পুর থেকে যার দূরত্ব ৪৫ কিমি।
০৮২০
এই বিশালাকার শিবমূর্তি তৈরি করেছে ‘টাট পদম সংস্থান’ নামে একটি সংগঠন।
০৯২০
৫১ বিঘা জমিতে পাহাড়ি ঢিপির উপর মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে।
১০২০
রাতেও স্পষ্ট ভাবে দেখা যাবে মূর্তিটি। এ জন্য বিশেষ আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, এই মূর্তি তৈরিতে খরচ হয়েছে ১০০ কোটিরও বেশি টাকা।
১১২০
২০১২ সালের অগস্ট মাসে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের উপস্থিতিতে মূর্তিটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। ১০ বছরেরও বেশি সময় পর মূর্তি তৈরির কাজ শেষ হল।
১২২০
মূর্তিটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা ২৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অক্ষত থাকবে, এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
১৩২০
শুধু তাই নয়, প্রকৃতির রোষও মূর্তিটির গায়ে আঁচড় কাটতে পারবে না। দাবি করা হয়েছে, ঘণ্টায় ২৫০ কিমি বেগে যদি ঝড়ও হয়, তা হলেও কোনও ক্ষতি হবে না শিবমূর্তির।
১৪২০
মূর্তিটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় তিন হাজার টন লোহা, ইস্পাত। এ ছাড়াও আড়াই কিউবিক টন কংক্রিট ব্যবহার করা হয়েছে।
১৫২০
তামাটে রঙের মূর্তির গায়ে জিঙ্কের প্রলেপ দেওয়া রয়েছে। যার ফলে প্রবল বৃষ্টি ও প্রখর রোদের তাপেও ক্ষতি হবে না মূর্তির।
১৬২০
বিশাল এলাকা জুড়ে মূর্তিটি রয়েছে। মূর্তিটি যেখানে রয়েছে, সেখানে একেবারে কাছে পৌঁছতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এ জন্য সিঁড়ির পাশাপাশি রয়েছে লিফটের ব্যবস্থাও। ভিতরে যাওয়ার জন্য চারটি লিফট ও তিনটি সিঁড়ি রয়েছে।
১৭২০
সংস্থান ট্রাস্টি ও মিরাজ গ্রুপের চেয়ারম্যান মদন পালিওয়াল বলেছেন, ‘‘শিবের এই অসাধারণ মূর্তিটি পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাবে।’’
১৮২০
শনিবার মূর্তিটি উদ্বোধন করেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। সঙ্গে ছিলেন গুজরাতের ধর্মগুরু মোরারি বাপু।
১৯২০
মূর্তি সংলগ্ন এলাকায় পর্যটকদের জন্য একাধিক ব্যবস্থা থাকছে। বিনোদনের হাজারো রসদ যেমন থাকছে, তেমনই থাকছে রেস্তরাঁ, ক্যাফে।
২০২০
অস্ট্রেলিয়ায় মূর্তিটির ‘উইন্ড টানেল টেস্ট’ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু শিবমূর্তির ছবি ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা দেখে মূর্তি দর্শনের জন্য ইচ্ছাপ্রকাশও করেছেন অনেকে। এখন দেখার, গুজরাতে নর্দমার তীরে সর্দার পটেলের মূর্তির পর এই মূর্তি কত পর্যটক টানতে পারে।