Will Smith: অস্কারমঞ্চে চড় মারাই নয়, মাদকাসক্তি এবং তন্ত্রনির্ভর যৌনাচার নিয়েও বিতর্কে জড়ান উইল
এই প্রথম নয়। এর আগেও বহু বার বিতর্কে জড়িয়েছেন উইল।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২২ ১৩:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
এক চড়েই অস্কারের মঞ্চ কাঁপিয়ে দিয়েছেন উইল স্মিথ। তার অভিঘাত সামলে ওঠার আগেই আবারও মঞ্চে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এ বার অবশ্য ‘কিং রিচার্ড’ ছবিতে সেরা অভিনেতার পুরস্কার নিতে মঞ্চে উঠেছেন উইল। বিজেতার ভাষণে কান্নাভেজা গলায় বলেছেন, ‘‘আশা করি আমাকে আবার আমন্ত্রণ জানাবে অ্যাকাডেমি।’’ তবে এত সহজে কি এ বিতর্ক ধামাচাপা পড়বে?
০২১৬
সোমবার অস্কারমঞ্চে স্ত্রী জেডা পিঙ্কেট স্মিথকে পরোক্ষে কটাক্ষ করেন এ বারের অস্কার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সঞ্চালক তথা কমেডিয়ান ক্রিস রক। বলেছেন, ‘‘জি আই জেন-এর সিক্যুয়েলের অপেক্ষায় রয়েছি।’’ সে মন্তব্যে দৃশ্যতই অখুশি হয়েছেন জেডা। তার পরই সটান মঞ্চে উঠে উইলের চড় পড়েছে ক্রিসের গালে। ব্যাপারটা যে সাজানো নয়, তা বোঝা গিয়েছে উইলের পাল্টা মন্তব্যে। নিজের আসনে বসে ক্রিসের উদ্দেশে চিৎকার করে উঠেছেন উইল, ‘‘তোমার (নোংরা) কথা থেকে আমার স্ত্রীকে দূরে রাখো!’’
০৩১৬
ক্রিস রকের সঙ্গে উইল স্মিথের ঝামেলা মেটাতে পরিবারের মতো পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন পাফ ড্যাডি। হলিউডের সংবাদমাধ্যমের দাবি, অস্কারমঞ্চ কাঁপানো ওই চড়ের অভিঘাতে উইলও কম ভেঙে পড়েননি। বিজ্ঞাপনী বিরতির সময় তাঁকে সামলাতে উঠে আসেন ডেনজেল ওয়াশিংটন এবং টেলর পেরিরা।
০৪১৬
জেডাকে নিয়ে ক্রিসের চটুল মন্তব্যেই ক্ষেপে ওঠেন উইল। ‘জি আই জেন’ ছবির নায়িকা ডেমি মুরের আদলে ছোট করে ছাঁটা চুলের জেডাকে নিয়ে ক্রিসের রসিকতা যে সহ্য করতে পারেননি, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন উইল। অ্যালোপেসিয়া-য় ভোগা জেডাকে নিয়ে মন্তব্যের পাল্টা হিসাবে চড় কষিয়েছেন ক্রিসকে।
০৫১৬
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও বহু বার বিতর্কে জড়িয়েছেন উইল। সে সময় অবশ্য বিতর্কের অনুঘটক হিসাবে ক্রিসের মতো কোনও কমেডিয়ানের মন্তব্যের প্রয়োজন ছিল না।
০৬১৬
গত বছরই ক্রিসের আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়েছে। ‘উইল’ নামে সে আত্মকথায় উইলের সঙ্গে কলম ধরছেন মার্ক ম্যানসনও। তাতেই নিজের জীবনের অজানা বহু কথায় বিতর্কে জড়িয়েছেন উইল।
০৭১৬
জেডার সঙ্গে প্রায় ২৪ বছরের সম্পর্ক থেকে শুরু করে ছেলে জেডেন স্মিথের সম্পর্কে উইল নানা অজানা কথা জানিয়েছেন আত্মজীবনীতে। নিজের মানসিক অবস্থার বিষয়ে অকপটে জানিয়েছেন, কিশোর বয়সে আত্মহত্যার করার কথা ভাবতেন।
০৮১৬
৫৩ বছরের অভিনেতার জীবনে খ্যাতি এসেছিল কম বয়সেই। ‘দ্য ফ্রেশ প্রিন্স অব বেল এয়ার’-এর মতো সিটকমে অভিনয়ের আগে হিপ হপ মিউজিকে মন দিয়েছিলেন ডিজে জ্যাজি জেফের সঙ্গে। কম বয়সেই দেখেছেন, বাবার হাতে হেনস্থার শিকার মা। পরিবার ছেড়ে মায়ের চলে যাওয়ায় তিনি যে ভেঙে পড়েছিলেন, তা-ও স্বীকার করেছেন উইল। জানিয়েছেন, পরিবারের এই সঙ্কটে আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন। সে সময় তাঁর বয়স ১৩।
০৯১৬
আত্মজীবনীতে উইল স্বীকার করেছেন, ১৯৯৩ সালে ‘সিক্স ডিগ্রিজ অব সেপারেশন’ ছবিতে কাজ করার সময় স্টকওয়ার্ড চ্যানিংয়ের উপর টান জন্মেছে। সে সময় প্রথম স্ত্রী শেরি জ্যাম্পিনোর সঙ্গে চুটিয়ে ঘর করছেন উইল।
১০১৬
যে জেডাকে ঘিরে মন্তব্যের পর ক্রিসের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন উইল, তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ ছিল না। ২০১৬ সালে আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন। এমনকি, আত্মজীবনীর পাতায় স্ত্রীর সঙ্গে টুপাক শাকুরকে নিয়ে তাঁর বিশ্বাসহীনতার কথাও জানিয়েছেন।
১১১৬
আমেরিকান র্যাপার টুপাকের সঙ্গে জেডার ঘনিষ্ঠতা যে মেনে নিতে পারেননি, তা-ও স্বীকার করেছেন উইল। যদিও টুপাক এবং জেডা একসঙ্গে বড় হওয়ায় তাঁদের ঘনিষ্ঠতা যে স্বাভাবিক, তা জানিয়েছেন উইল। টুপাকের খ্যাতির কথা উল্লেখ করে উইল বলেছিলেন, ‘‘আমাদের সম্পর্কের গোড়ায় সব সময় মনে হত তাঁদের কথা। ও ছিল প্যাক। আর আমি তো আমিই।’’
১২১৬
নিজের মতো ছেলে জেডেনও কম বয়সে পা রেখেছেন হলিউডে। তবে ছেলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও যে সহজ ছিল না, তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন উইল। ১৫ বছর বয়সে মা-বাবার শাসনমুক্ত হতে চেয়েছিলেন জেডেন।
১৩১৬
২০১৩ সালে ‘আফটার আর্থ’ ছবিতে জেডেনের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল উইলকে। বাবা-ছেলের জুটির বহু প্রতীক্ষিত সে ছবি অবশ্য বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। সমালোচকেরা অখুশি ছিলেন বলে সাফ জানিয়েছিলেন। উইল জানিয়েছেন, এক দিকে বক্স অফিসে ব্যর্থতা। অন্য দিকে, ছেলের আলাদা হওয়ার অনুরোধে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
১৪১৬
উইলের জীবনে আরও বহু কাণ্ডে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ২০১১ সালে শোনা গিয়েছিল, জেডার সঙ্গে আলাদা থাকতে শুরু করেছেন উইল। সে সময় মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। সেই সঙ্গে তন্ত্রনির্ভর যৌনাচারেও লিপ্ত হতে শুরু করেছিলেন। এ সবই জানিয়েছেন আত্মকথায়।
১৫১৬
হলিউডের অন্যতম সুখী দম্পতি বলে পরিচিত উইল এবং জেডা। তবে ২০১১ সালে তিনি যে মাদকে আচ্ছন্ন থাকতেন, তা জানিয়েছেন আত্মজীবনীতে। দু’বছরে চোদ্দো বার সেই কড়া মাদক নিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমনকি, যৌনচারের জন্য এক তান্ত্রিক সেক্স বিশেষজ্ঞের কাছেও নাকি গিয়েছিলেন।
১৬১৬
এখানেই বিতর্ক থামেনি। গত বছর উইল বলে বসেন, নিজেদের সম্পর্কে খুবই খোলামেলা তাঁরা। এমনকি, বিবাহিত অবস্থায় থাকাকালীন দু’জনেই অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন। বিয়ে মানেই যে জেলখানায় থাকা নয়, তা-ও বলেছিলেন উইল। এমনকি, তাঁদের দু’জনেই নাকি ইচ্ছে ছিল একটি হারেম রাখার। নিজের হারেমে হ্যালি বেরি এবং মিস্টি কোপল্যান্ডের মতো অভিনেতাদের রাখারও তাঁর স্বপ্ন বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন উইল।