নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপকের কথায়, ‘‘বুদ্ধদেববাবুর এইচ ইনডেক্স পয়েন্ট নয়। আই-তেন ইনডেক্সও নয়। অ্যাকাডেমিক্সের দিক দিয়ে যা খুবই দুর্বল। বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দিন ধরেই উপাচার্যহীন। আমাদের সত্যিই এক জন অভিভাবকের দরকার ছিল। কিন্তু এমন এক জনকে নিয়োগ না করা হলেই ভাল হত বলে মনে হয়। কারণ, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে যাঁরাই ওই পদে বসেছেন, সেই ভাবে দেখলে তাঁরা সকলেই অনেক এগিয়ে।’’
বুদ্ধদেবকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করার পক্ষেও যুক্তি রয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তাঁদের মত, এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এক জন কঠোর প্রশাসকের দরকার বিশ্ববিদ্যালয়।
বুদ্ধদেব বলেন, ‘‘কোথায় কোথায় দুর্বলতা আছে দেখতে হবে। সব জায়গাতেই উন্নতির পরিসর থাকে।’’ তাঁর মত, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিনটি স্তম্ভ রয়েছে— প্রশাসন, ফ্যাকাল্টি (বিভিন্ন বিভাগ) এবং পড়ুয়ারা। তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য প্রতিটি স্তম্ভেই সমান জোর দিতে হবে। এর মধ্যে একটি স্তম্ভ নড়ে গেলেই বিপদ। উন্নতির জন্য প্রতিটি স্তম্ভকে দায়িত্ব নিতে হবে। রিসোর্স ইউটিলাইজেশন অত্যন্ত জরুরি।’’
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার আবহে বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে কেন সিসি ক্যামেরা নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার প্রেক্ষিতে বুদ্ধদেব বলেছেন, ‘‘আলাদা করে সিসিটিভি নিয়ে ভেবে লাভ নেই। সিকিউরিটি (নিরাপত্তা)-র বিষয়টি ভাল করে দেখতে হবে। সিসিটিভি তো প্রযুক্তি মাত্র। পরিবর্তে আরও অনেক ব্যবস্থা আছে। দেখতে হবে কোনটা করলে আমাদের সুস্থ মানের চিন্তাভাবনা ব্যাহত হবে না এবং সিকিউরিটিও বজায় থাকবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, রাজ্যপালের কাছে অমিতাভের নামে ‘নালিশ’ করেছিলেন বুদ্ধদেব-সহ কয়েক জন শিক্ষক। অমিতাভের ইস্তফার পর বুদ্ধদেব বলেছিলেন, ‘‘কাউকে না জানিয়েই অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন অমিতাভবাবু। আচার্যকে আমরা সে কথাই জানিয়েছিলাম।’’ সেই বুদ্ধদেবকেই এ বার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসানো হল।
বুদ্ধদেবের নিয়োগকে ‘রাজনৈতিক নিয়োগ’ বলে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের পথ অনুসরণ করে বিজেপিকে খুশি করার বর্তমান রাজ্যপাল সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন। যে ভাবে উনি স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে উপাচার্যহীন করে দিচ্ছেন, তারই খেসারত দিতে হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে।’’
পাল্টা বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের যা অবস্থা, তাতে উপাচার্যের প্রয়োজন ছিল। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের রাজ্যপালের উপর আস্থা আছে। তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলার কোনও নৈতিক কিংবা রাজনৈতিক অধিকার তৃণমূলের নেই। কারণ, তারা গোটা শিক্ষাব্যবস্থাটাকেই জেলে পাঠিয়ে দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy