কিছু দিন আগে ভারতীয় লোকসভা সাংসদ মহুয়া মৈত্রের হাতেও দেখা গিয়েছিল এই সংস্থার ব্যাগ। আবার ব্রিটেনের রাজপরিবারের দুই ফ্যাশনদুরস্ত বৌমা কেট মিডলটন এবং মেগান মর্কেলকেও প্রায়ই ব্যবহার করতে দেখা যায় বার্নার্ডের সংস্থার তৈরি বিলাসদ্রব্য। এমনকি, বাদ যাননি ডায়নাও। তাঁর হাতেও বহু বার দেখা গিয়েছে এই সংস্থার ব্যাগ।
এ তো গেল জনপ্রিয়তার কথা। বার্নার্ডের নেতৃত্বে লুই ভিতোঁর সাম্রাজ্যও ছড়িয়েছে বহু দূর। আন্তর্জাতিক স্তরের নামীদামি বহু ফ্যাশন ব্র্যান্ডের দখল নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ক্রিশ্চিয়ান ডায়র, ফেন্দি, জিঁভসি, মার্ক জেকবস, স্টেলা, ম্যাককার্টনি, ট্যাগ হোইয়র, বুলগরি, টিফনি অ্যান্ড কো-র মতো সংস্থা রয়েছে। এমন মোট ৭৫টি সংস্থার মালিকানা এখন বার্নার্ডের হাতে। তবে কোনওটিই বার্নার্ড নিজের হাতে গড়ে তোলেননি। শুধুই দখল করেছেন।
১৯৪৯ সালের ৫ মার্চ ফ্রান্সের রুবঁ-এ জন্ম বার্নার্ডের। এলনের মতোই তিনিও ধনী পরিবারেরই সন্তান। মা ছিলেন ব্যবসায়ী পরিবারের কন্যা এবং শৌখিনী। বাবা সেই ব্যবসাই পেয়েছিলেন বিবাহসূত্রে যৌতুক হিসাবে। ফেরেট স্যাভিনেল নামে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাই ছিল বার্নার্ডের পারিবারিক ব্যবসা। তিনিও ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে সেই ব্যবসাতেই যোগ দেন।
বহুজাতিক বস্ত্র প্রতিষ্ঠান হলেও তখন বুজ্যাঁকের মালিকানায় ছিল জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘ক্রিশ্চিয়ান ডায়র’। বার্নার্ড-ঘনিষ্ঠরা বলেন, ডায়রের জন্যই বুজ্যাঁক কিনেছিলেন বার্নার্ড। কারণ বার্নার্ডের মায়ের পছন্দের ব্র্যান্ড ছিল ডায়র। কারণ বুজ্যাঁক তাঁর হাতে আসার পরই তিনি একসঙ্গে প্রায় ৯০০০ কর্মীকে কাজ থেকে বিদায় দেন। ডায়র এবং একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ছাড়া বুজ্যাঁকের যাবতীয় সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। সেই সময়েই শিল্পমহলে টার্মিনেটর শিরোপা পান বার্নার্ড। তবে দু’বছরের মধ্যেই লাভের মুখ দেখতে শুরু করে ডায়র।
এর পর কোম্পানির দখল নেওয়াটা এক রকম নেশার মতোই হয়ে দাঁড়ায় বার্নার্ডের। এখন যে লুই ভিতোঁর প্রধান তিনি, সেই সংস্থাটিকেও তাঁর চতুর বুদ্ধিতে দখল করেছিলেন বার্নার্ড। মোয়েথ এনেসি লুই ভিতোঁ এখন একটি সংস্থা হলেও তখন ছিল আদতে দু’টি সংস্থা— লুই ভিতোঁ এবং মোয়েথ এনেসি। দুই সংস্থার প্রধানের সঙ্গে কথা বলে একটি বিলাসদ্রব্যের বড় ব্র্যান্ড তৈরির করার পরিকল্পনা করেন বার্নার্ড। তখন লুই ভিতোঁর প্রধান ছিলেন হেনরি রিক্যামিয়ার।
‘ধূর্ত’ বার্নার্ডের পরিচিতি এই সময়েই ছড়িয়ে পড়ে শিল্পমহলে। বার্নার্ড কোনও সংস্থার শেয়ার কিনতে শুরু করেছেন মানে সেই সংস্থা বুঝে যেত, দখল খুব দূরে নেই। এ ভাবে একের পর এক ব্র্যান্ডের দখল নেওয়া বার্নার্ড ধাক্কা খান জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ‘গুচি’ কিনতে গিয়ে। শুরুতেই সতর্ক হয়ে বার্নার্ডকে রুখে দেয় গুচি। যদিও সহজে ছাড়েননি বার্নার্ডও। ফলে আইনি লড়াই শুরু হয়। শেষে কোর্টের নির্দেশে হাল ছাড়তে হয় বার্নার্ডকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy