US president Joe Biden says they do not support independence of Taiwan dgtl
US China Taiwan Relationship
কুর্সিতে চিনবিরোধী শাসক, তবু ‘উল্টো সুর’ বাইডেনের! তাইওয়ানের পাশ থেকে কি সরে যাচ্ছে আমেরিকা?
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)-র নেতা লাই চিং তে। তৃতীয় বারের জন্য তাইওয়ানে তাঁর দল ক্ষমতায় এসেছে। এই ফল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আমেরিকা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)-র নেতা লাই চিং তে। তৃতীয় বারের জন্য তাইওয়ানে তাঁর দল ক্ষমতায় এসেছে।
০২২০
‘কট্টর চিন-বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত লাই চিং তে। ফলে তাইওয়ানের এই নির্বাচনকে ঘিরে দীর্ঘ দিন ধরেই বিপরীত প্রচারে নেমেছিল চিন। অভিযোগ, ভোটারদের নানা ভাবে ভয় দেখানো হচ্ছিল।
০৩২০
ডিপিপি যাতে তাইওয়ানের নির্বাচনে কোনও ভাবেই না জিততে পারে, সেই চেষ্টা করেছিল চিন। রীতিমতো হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল তাইওয়ানের বাসিন্দাদের। কিন্তু তাতে ফল হয়নি।
০৪২০
বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তাইওয়ানে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছেন লাই চিং তে। নির্বাচনের এই ফলাফল চিন-তাইওয়ান বিতর্ক এবং আমেরিকা-চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
০৫২০
বেজিং বরাবরই মনে করে, তাইওয়ান আদতে চিনের অংশ। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সরকারের আমলেও সেই নীতিতে অটল রয়েছে তারা। তবে তাইওয়ান সেই দাবি বরাবর অস্বীকার করে এসেছে।
০৬২০
চিনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে প্রথম থেকেই তাইওয়ানের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। মূলত আমেরিকা এবং পশ্চিমি দুনিয়ার আর্থিক ও সামরিক সাহায্যে এখনও টিকে আছে ‘পৃথক’ তাইওয়ান। কিন্তু এ বার সেই সমীকরণ বদলের ইঙ্গিত মিলছে।
০৭২০
লাই চিং তে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার পর মনে করা হয়েছিল, আমেরিকা তাইওয়ানের ‘সরকার’কে পূর্ণ সমর্থন জানাবে। কিন্তু আদতে তা হয়নি।
০৮২০
সরকারি ভাবে আমেরিকা অবশ্য কোনও দিনই তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে স্বীকার করেনি। স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসাবে তাকে মেনেও নেয়নি। তবে প্রকাশ্যে জোর দিয়ে সে কথা কখনও বলতেও শোনা যায়নি আমেরিকার কোনও প্রেসিডেন্টকে।
০৯২০
আমেরিকা বরাবরই তাইওয়ানের স্বার্থরক্ষার কথা বলে এসেছে। চিনের বিরুদ্ধে দ্বন্দ্বে তাইওয়ানকে সৈন্য, অর্থ দিয়ে সাহায্যও করেছে ওয়াশিংটন। তবে জো বাইডেনের মুখে এ বার যেন শোনা গেল ‘উল্টো সুর’।
১০২০
তাইওয়ান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বাইডেনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি না।’’
১১২০
সরকারি ভাবে সমর্থন না করলেও এ কথা আগে কখনও আমেরিকার কোনও প্রেসিডেন্ট মুখ ফুটে বলেননি। বরং তাঁদের আচরণ তাইওয়ানের পক্ষে সমর্থনই ব্যক্ত করেছে বার বার।
১২২০
বাইডেনের নতুন উক্তি তাই আন্তর্জাতিক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। তবে কি তাইওয়ানের পাশ থেকে সরে যাচ্ছে আমেরিকা? তাইওয়ান প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের বিদেশনীতি কি বদলে যাচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন।
১৩২০
তাইওয়ানে আমেরিকার সামরিক এবং আর্থিক সাহায্যকে কোনও দিনই ভাল চোখে দেখেনি বেজিং। তারা অনবরত এই দ্বীপে সামরিক সক্রিয়তা বজায় রেখেছে। বেজিংয়ের সন্দেহ ছিল, চিনবিরোধী লাই চিং তে তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে তাইওয়ানকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করবেন। আর তাঁরা চিনের বশ্যতা মানবেন না।
১৪২০
লাই চিং তে যদি তা করতে চান, তবে আমেরিকা হয়তো তাইওয়ানের পাশে থাকবে না। বাইডেনের মন্তব্য থেকে তেমন ইঙ্গিতই মিলেছে। কিন্তু আমেরিকা কেন এই অবস্থান গ্রহণ করছে, তা তর্কসাপেক্ষ।
১৫২০
অনেকের মতে, চিনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি করতে চাইছেন না বাইডেন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর তাঁর মন্তব্যে যেন বেজিংকে আশ্বস্ত করার প্রচ্ছন্ন বার্তা রয়েছে।
১৬২০
তাইওয়ানের নির্বাচনের কয়েক দিন আগে ওয়াশিংটনের তরফে বলা হয়েছিল, কোনও দেশের নির্বাচনেই অন্য দেশের ‘হস্তক্ষেপ’ প্রত্যাশিত নয়। নাম না করলেও অনেকে মনে করছেন, তাইওয়ান প্রসঙ্গেই ওয়াশিংটনের এই বিবৃতি।
১৭২০
লাই চিং তে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর অবশ্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে আমেরিকা। তাদের বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘‘আমেরিকা লাই চিং তে এবং তাইওয়ানের বাকি সব ক’টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করতে, সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।’’
১৮২০
গত নভেম্বরে ক্যালিফর্নিয়া শীর্ষ সম্মেলনে চিনের প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন বাইডেন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত মতানৈক্য নিয়ে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে কথাও হয়েছে।
১৯২০
এই সব ঘটনাই আমেরিকা এবং চিনের সম্পর্কে সামান্য হলেও নমনীয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাইওয়ান ইস্যুতে যা বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।
২০২০
আগামী দিনে তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে আমেরিকা এবং চিনের সম্পর্কের সমীকরণ কোন দিকে এগোয়, সেটাই এখন দেখার। আন্তর্জাতিক মহলও সে দিকে নজর রেখেছে।