Urfi Javed Reacts after being criticised her topless video on Diwali dgtl
Urfi Javed
‘নারীশরীর কখনওই যৌনসামগ্রী নয়’, অনাবৃত ঊর্ধ্বাঙ্গের ছবি নিয়ে নিন্দকদের আক্রমণ উরফির
তাঁর পরনে ছিল লম্বা লালচে রঙের স্কার্ট। অনাবৃত ঊর্ধ্বাঙ্গ। এক হাতে রয়েছে লাড্ডু। আর অন্য হাত দিয়ে বক্ষযুগল ঢেকেছেন তিনি। উরফির এই অবতার নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২২ ১১:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
তিনি বরাবরই সাহসী। বলা ভালো, ‘দুঃসাহসী’। তাঁর ছিপছিপে চেহারার গড়নে অধিংকাশ সময়ই স্বল্পবসনে দেখা যায় তাঁকে। আবার এমন এমন ধরনের সব পোশাকে তিনি নিজের শরীর ঢাকেন, যা দেখে চোখ কপালে ওঠে কারও কারও! কখনও আবার হাত দিয়েই বক্ষযুগল ঢেকে ক্যামেরার সামনে নিজেকে ধরা দেন। ‘লজ্জা নারীর ভূষণ’— এই কথাটিকে কবেই ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁকে নিয়ে যতই নিন্দা-মন্দ হোক না কেন, তার যে ধার ধারেন না তিনি, তা আবার বুঝিয়ে দিলেন বলিপাড়ার ‘হটগার্ল’ উরফি জাভেদ।
০২২০
তাঁর পরনে ছিল লম্বা লালচে রঙের স্কার্ট। অনাবৃত ঊর্ধাঙ্গ। এক হাতে রয়েছে লাড্ডু। আর অন্য হাত দিয়ে বক্ষযুগল ঢেকেছেন তিনি। এমন অবতারেই ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উরফি। ভিডিয়োতে হাতে রাখা লাড্ডুতে কামড় দিতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পরই বিতর্ক দানা বাঁধে।
০৩২০
অভিনেত্রীর এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায় সমাজমাধ্যমে। এ নিয়ে উরফিকে একহাত নেন নেটিজেনদের একাংশ। কেউ কেউ উরফিকে বলেন, ‘‘মহিলার শরীর ঈশ্বরের উপহার। তাই এ ভাবে নগ্ন হয়ে সকলকে দেখাতে পারেন না আপনি।’’
০৪২০
উরফির নিন্দা করে কেউ আবার লিখেছেন, ‘‘নিজেকে আর নামিয়ো না। ন্যূনতম সম্মান তো বজায় রাখো।’’ এক জনের অভিমত, ‘‘এতে ভগবানকে অশ্রদ্ধা করা হয়।’’
০৫২০
আলোর উৎসবের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তাঁর এই সাহসী ভিডিয়ো ঘিরে সমাজমাধ্যম তোলপাড় হতেই আসরে নামেন স্বয়ং উরফি। এত কটাক্ষ, আক্রমণেও তিনি যে নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন, সেই বার্তাই দিয়েছেন সমাজমাধ্যমে তুফান তোলা এই কন্যা।
০৬২০
মা কালীর ছবি পোস্ট করেছেন উরফি। তার পর নিন্দকদের বিঁধে তিনি লিখেছেন, ‘‘যাঁরা বলছেন, আমি ভারতীয় সংস্কৃতি ধ্বংস করছি, তাঁদের বলছি আগে জানুন ভাল করে যে ভারতীয় সংস্কৃতিতে নারীশরীরকে কখনই যৌনসামগ্রী হিসাবে তুলে ধরা হয়নি।’’
০৭২০
এই প্রসঙ্গে উরফি আরও লিখেছেন, ‘‘মুঘলদের আক্রমণের পর থেকেই নারীশরীর ঢাকতে বলা হয়। আমরা নারীদের পূজারি। নারীদের সম্মান করা উচিত।’’ নিন্দকদের কটাক্ষ করে উরফি এ-ও জানিয়েছেন যে, যাঁরা শিখতে চান, তাঁদের এ সব শেখাতেও পারেন তিনি।
০৮২০
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক বার ‘খুল্লমখুল্লা’ ভাবে প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছে উরফিকে। তখনও তাঁকে সমালোচনা, কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু দমে যাননি উরফি। বরং যত দিন যাচ্ছে, ততই মুক্তমনা ভাবে নিজেকে মেলে ধরছেন।
০৯২০
এই ভিডিয়ো ঘিরে তোলপাড় হওয়ার ঠিক আগে উরফির আরও একটি ছবি ঝড় তুলেছিল সমাজমাধ্যমে। ঊর্ধাঙ্গে ফুসফুসের নকশা পরে বক্ষযুগল আড়াল করেছিলেন উরফি। শরীরের নিম্নাংশে পরনে ছিল ট্রাউজার্স।
১০২০
হলিউড তারকা বেলা হাদিদ এই ধরনের পোশাক পরেছিলেন। তাঁরই সেই পোশাকের আদলে সেজেছিলেন উরফি। তবে লজ্জা নিবারণের জন্য তারের তৈরি ওই ফুসফুসের নকশা যথেষ্ট ছিল না। বক্ষযুগল বোঝা যাচ্ছিল।
১১২০
উরফির এই অবতার নিয়েও তুমুল সমালোচনা চলে সমাজমাধ্যমে। তবে সে বারও নিন্দকদের পাত্তা দেননি। স্বমহিমায় ওই পোশাক পরে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
১২২০
উরফি জাভেদের ফ্যাশন বরাবরই ব্যতিক্রমী। কখনও ঝিনুক দিয়ে শরীর ঢাকেন। আবার কখনও আলো দিয়ে। আবার এমন ধরনের সব পোশাকে নিজেকে মেলে ধরেন, যা বোধ হয় কেউ কল্পনাও করতে পারেন না, যে এ ভাবেও সাজা যায়!
১৩২০
বলিপাড়ার পয়লা নম্বর নায়িকা নন উরফি। টেলি দুনিয়াতেও এখনও পর্যন্ত অভিনেত্রী হিসাবে সে ভাবে ছাপ ফেলতে পারেননি তিনি, কিন্তু তা সত্ত্বেও উরফির জনপ্রিয়তা যে কোনও তারকার কাছে ঈর্ষণীয়। বাড়ির বাইরে পা রাখলেই উরফিকে যে ভাবে ঘিরে থাকেন ফটোশিকারীরা, সেই জনপ্রিয়তা বলিউডের তাবড় তাবড় খ্যাতনামীদের থেকে কোনও অংশে কম নয়।
১৪২০
গত ১৫ অক্টোবর ২৫ বছরে পা দিয়েছেন উরফি। জন্মদিনেও লাস্যময়ী সাজে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তাঁর পরনে ছিল সোনালি রঙের টপ। ইয়া বড় মাপের একটা কেকের সামনে হাসিমুখে ছবি তুলেছিলেন উরফি। গলায় ছিল লকেট। চোখেমুখে তাঁর এক মায়াবী লাবণ্য ধরা পড়েছিল।
১৫২০
সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনার পর পা রেখেছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের দুনিয়ায়। পরে হাতেখড়ি হয় অভিনয়ে। ‘বড়ে মিয়াঁ কি দুলহেনিয়া’, ‘সাত ফেরো কি হেরাফেরি’, ‘বেপান্না’, ‘মেরি দুর্গা’, ‘কসৌটি জিন্দেগি কি’, ‘ইয়ে রিস্তা ক্যয়া কহেলতা হ্যায়’-এর মতো ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
১৬২০
তবে উরফির জনপ্রিয়তা তরতর করে বাড়তে থাকে ২০২১ সালে ‘বিগ বস ওটিটি’ রিয়্যালিটি শোয়ের হাত ধরে। আশ্চর্যের বিষয়, ওই শোয়ে তেমন ভাবে ছাপ ফেলতে পারেননি। শোয়ের শুরুতেই ছিটকে গিয়েছিলেন উরফি।
১৭২০
কিন্তু তার পর থেকেই সমাজমাধ্যমে তাঁর একের পর এক সাহসী ছবিতে এমন ভাবে মজলেন নেটিজেনরা যে, উরফির থেকে চোখ সরাতে পারলেন না কেউ।
১৮২০
উরফির প্রেমকাহিনি নিয়েও বিস্তর চর্চা চলেছে। এক সময় চুটিয়ে প্রেম করতেন উরফি ও পারস কালনাওয়াত। কিন্তু অল্প দিনের ব্যবধানেই তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে সৌজন্যবোধ অটুট রয়েছে বলে জানিয়েছেন দু’জনে।
১৯২০
তাঁর বেশভূষা নিয়ে এক বার এক সাক্ষাৎকারে হাসতে হাসতে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘‘লোকে তো চায় আমি পোশাক না পরি, তাই বলে আমি কি বেআব্রু হয়ে যাব?’’
২০২০
তবে যে যা-ই বলুক, মন্দ কথা শোনার পাত্রী নন উরফি। আর তাই তো এ বারও যখন তাঁর প্রায় নিরাবরণ অবতার নিয়ে নিন্দার ঝড় বয়ে গেল, তখনও যেমন প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন, তেমনই এ-ও বার্তা দিলেন, ‘উরফি আছেন উরফিতেই’।