পুরুষ না স্ত্রী! তিন যৌনকর্মীকে খুন করে ২৪ বছর পর ধরা পড়েন এই সিরিয়াল কিলার
১৯৯০ সালের ঘটনা। আমেরিকার বাসিন্দা ডগলাস ওরফে ডোনা পেরি ওয়াশিংটনের স্পোকেন নদীর ধারে তিন জন যৌনকর্মীকে খুন করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:১১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
১০ বছর আগেকার ঘটনা। গোলাবারুদ, বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগে জেল হয় আমেরিকার বাসিন্দা ডোনা পেরির। মামলা চলাকালীন প্রমাণ হিসাবে ডোনার আঙুলের ছাপও ন্যাশনাল ডেটাবেসে সংগ্রহ করে রাখা হয়। আর তখনই আরও এক রহস্যের জট খুলতে শুরু করে।
০২১৭
১৯৯০ সালে ওয়াশিংটনের স্পোকেন নদীর ধার থেকে উদ্ধার করা হয় তিন মহিলার মৃতদেহ। সকলেই নগ্ন অথবা অর্ধনগ্ন অবস্থায় ছিলেন। কারও যৌনাঙ্গ শরীরের বাইরে থেকে বেরিয়ে আছে, কারও শরীরে রয়েছে অসংখ্য কাটা চিহ্নের দাগ। কিন্তু একটা বিষয়ে মিল রয়েছে। তিন জনের দেহেই ছিল গুলির ক্ষতচিহ্ন।
০৩১৭
গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকেরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, নিহতদের সকলেই যৌনপেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। খুন করার পদ্ধতি একই রকম দেখে গোয়েন্দারা ধারণা করেন, এর পিছনে কোনও সিরিয়াল কিলারের হাত রয়েছে।
০৪১৭
১৯৯০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ইয়োলান্ডা এ স্যাপ নামের এক যৌনকর্মীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ইয়োলান্ডার বয়স ছিল ২৬ বছর। এই ঘটনার ঠিক এক মাস পর স্পোকেন নদীর ধার থেকে উদ্ধার হয় ৩৪ বছর বয়সি নিকি আই লোয়ের মৃতদেহ।
০৫১৭
মার্চের পর মে মাসে উদ্ধার হয় আরও এক যৌনকর্মীর মৃতদেহ। তদন্তে জানা যায়, তাঁর নাম ক্যাথলিন এ ব্রিসবইস। ৩৮ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
০৬১৭
পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রথমে সন্দেহ হয় এই তিনটি খুন বোধ হয় রবার্ট এল ইয়েটস নামে এক সিরিয়াল কিলারের। সেই সময় ১১ জন মহিলার খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল রবার্টের নাম।
০৭১৭
পরে জানা যায়, ওই তিন মহিলার সঙ্গেই প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন আমেরিকার বাসিন্দা ডগলাস পেরি। যৌনকর্মীরা যেখানে থাকতেন, সেই এলাকার আশেপাশেই ঘোরাঘুরি করতেন ডগলাস।
০৮১৭
ডেটে যাওয়ার প্রলোভনে পা দিয়ে তিন জনেই ডগলাসের সঙ্গে বেরিয়ে পড়তেন। কিন্তু তাঁরা জানতেন না, কিছু সময় পর তাঁদের সঙ্গে কী কী ঘটতে চলেছে!
০৯১৭
ডগলাসের নাম প্রকাশ্যে আসায় পুলিশ তাঁকে খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় খোঁজ করলেও ডগলাসকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
১০১৭
তদন্ত করে পুলিশ দেখে, ১৯৮৮ সালে একটি পাইপ বোমা, ৪৯টি বন্দুক এবং ২০ হাজার বুলেট রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল ডগলাসকে।
১১১৭
১৯৯০ সালের শেষের দিকে একটি বন্দুক এবং ছুরি নিয়ে যৌনপল্লিতে ঘুরতে দেখা যায় ডগলাসকে। কিন্তু তার পরেই উধাও হয়ে যান তিনি।
১২১৭
কিন্তু ২০১২ সালে গোলাবারুদ রাখার অভিযোগে যাঁকে গ্রেফতার করা হয়, তিনি তো ডোনা পেরি। তা হলে ডগলাস পেরির সঙ্গে ডোনার ডিএনএ মিলল কী করে? পুলিশ যে অপরাধীকে খুঁজছে তিনি পুরুষ। কিন্তু ডোনা তো মহিলা।
১৩১৭
জেলে থাকাকালীন আর এক বন্দিকে ডোনা জানান, ১৯৯০ সালে তিন জন যৌনকর্মীকে তিনিই খুন করেছেন। তার পরের বছর তাইল্যান্ডে গিয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করিয়েছেন।
১৪১৭
তিনি জানান, যৌনকর্মীদের দেখলেই তার রাগ হত। মানসিক ভাবে মহিলা এবং শারীরিক ভাবে পুরুষ হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই তিনি সন্তানধারণে সক্ষম ছিলেন না। কিন্তু সন্তানধারণে সক্ষম ছিলেন ওই যৌনকর্মীরা। এটা ভেবেই নাকি রাগ হত ডগলাসের।
১৫১৭
আসল খুনিকে খুঁজে পাওয়ার পর ২০১৪ সালে আবার মামলা শুরু হয়। তিন বছর পর তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। এমনকি, এই সময়ে প্যারোলের অনুমতিও দেওয়া হয়নি ডগলাস ওরফে ডোনাকে।
১৬১৭
বর্তমানে এই সিরিয়াল কিলারকে ওয়াশিংটনের গিগ হার্বারের একটি মহিলা সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে।
১৭১৭
কিন্তু নিকির (ডগলাসের হাতে খুন হওয়া এক যৌনকর্মী) পরিবারের সকলে এতই ভয় পেয়েছিলেন যে, ডোনাকে যেন পুরুষ সংশোধানাগারে রাখা হয়, তার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাঁদের ধারণা ছিল, মহিলাদের সঙ্গে থাকলে ডোনা ওই মহিলা বন্দিদেরও ক্ষতি করতে পারেন।