Hashtag sign: জন্ম রসায়নাগারে, ‘#’-এর আসল নাম নাকি ‘হ্যাশট্যাগ’ নয়!
রসায়নাগারের গবেষক এবং বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সঙ্গীতশিল্পী পর্যন্ত সকলেই এই বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করেছেন। ক্ষেত্র বিশেষে বদলেছে নামও।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২২ ১৭:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘লাল সিংহ চড্ডা’। এই ছবিকে ঘিরে চলছে বহু বিতর্ক। ভারতীয় দর্শকের অনেকেই সিনেমাটি ‘বয়কট’ করেছেন। নেটমাধ্যমে বয়কট-বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। ‘#বয়কটলালসিংহচড্ডা’ ব্যবহার করেই বার্তা দিচ্ছেন দর্শকের অনেকাংশ।
০২১৮
নেটমাধ্যমে কোনও কিছু জনসমক্ষে নিয়ে আসতে হলে নির্দিষ্ট কয়েকটি ইংরেজি শব্দ (স্পেস ব্যবহার না করে) পাশাপাশি লেখা হয়। আর তার সামনে বসানো হয় ‘হ্যাশট্যাগ’ (#) চিহ্ন। যে হ্যাশট্যাগযুক্ত শব্দের ব্যবহার যত বেশি, তার জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি।
০৩১৮
এই চিহ্নের ব্যবহার শুধু মাত্র নেটমাধ্যমেই হয় না, কোনও মিছিলে বার্তা দিতে চাইলেও হোর্ডিং-এর উপর এই বিশেষ চিহ্নযুক্ত শব্দগুলি লেখা হয়।
০৪১৮
কিন্তু এই বহুল প্রচলিত চিহ্নের অর্থ কী? কী কারণেই বা এই চিহ্নের উৎপত্তি? ডিজিটাল মাধ্যমের যুগে নয়, বরং হ্যাশট্যাগ চিহ্নের ব্যবহার শুরু হয়েছে ৬০-এর দশক থেকে। অবশ্য তখন কোনও বিষয় নিয়ে ‘ট্রেন্ড’ বজায় রাখার জন্য এর ব্যবহার হত না।
০৫১৮
রসায়নাগারের গবেষক এবং বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সঙ্গীতশিল্পী পর্যন্ত সকলেই এই বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করেছেন। তবে, বিভিন্ন উদ্দেশে এর ব্যবহার হত। ক্ষেত্র পরিবর্তনে এর নামেও বদল এসেছে।
০৬১৮
এই চিহ্নের উৎপত্তি হয়েছিল ওজন মাপার একক ‘পাউন্ড’ থেকে। ইংরেজি অক্ষরে এই একককে কাগজেকলমে বোঝানোর জন্য ‘এলবি’ লেখা হত। লাতিন শব্দ ‘লিব্রী পন্ডো’, যার আক্ষরিক অর্থ পাউন্ডে ওজন পরিমাপ করা।
০৭১৮
‘এল’ ও ‘বি’ ইংরেজি দু’টি বর্ণের উপরের দিকে একটি সরলরেখা টেনে নতুন ধরনের চিহ্ন তৈরি করা হয়। নামকরণ করা হয় ‘পাউন্ড সাইন’।
০৮১৮
কিন্তু হ্যাশট্যাগের পরে কখনও কখনও সংখ্যাও লেখা হত। সেক্ষেত্রে অনেকেই বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে তুলনা করে ফেলতেন। সেখানেই দেখা দিল সমস্যা। ফলে চিহ্ন-সহ নামেও বদল আনা হয়।
০৯১৮
১৯১০ সাল নাগাদ সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত সেনারা যে ধরনের জ্যাকেট পরিধান করতেন, তার উপর একটি বিশেষ ধরনের স্ট্রাইপ থাকত যা ‘হ্যাশ’ নামে পরিচিত। অনেকের ধারণা, এই স্ট্রাইপের নাম থেকেই ‘#’ চিহ্নের নামকরণ করা হয় ‘হ্যাশ’।
১০১৮
১৯৮০ সাল থেকে ‘হ্যাশ’ শব্দের মাধ্যমে এই চিহ্নটি পরিচিতি লাভ করে। এখন যদিও এই নামের রূপান্তরকরণ হয়ে ‘হ্যাশট্যাগ’ হয়েছে।
১১১৮
তবে, এই চিহ্নের অন্য একটি নামও রয়েছে— ‘অক্টোথর্প’। এই নামকরণের ইতিহাস জানলে রীতিমতো অবাক হতে হয়। বেল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা যখন টেলিফোনের কি প্যাড তৈরি করছিলেন, তখন কি প্যাডের একটি ডায়াল বাটনের উপর এই চিহ্নটি রাখেন।
১২১৮
এই বাটনের মাধ্যমে তাঁরা টেলিফোন অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কিন্তু চিহ্নটি ব্যবহার করলেও তার কোনও নাম ছিল না। তাঁদের ধারণা ছিল, এই চিহ্নের যেহেতু আটটি প্রান্ত রয়েছে তাই ‘অক্টো’ দিয়ে এই চিহ্নের নামকরণ করা উচিত।
১৩১৮
কিন্তু পুরো নাম কী হবে তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না কেউই। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বেল ল্যাবরেটরির এক সহকর্মী ডন ম্যাকফার্সন অলিম্পিয়ান জিম থর্পের নামানুসারে এই চিহ্নের নাম রাখা হয় ‘অক্টোথর্প’।
১৪১৮
যদিও রসায়নাগারের অন্য এক সহকর্মী এই ঘটনাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘থর্প’ শব্দটির অর্থ ‘খোলা মাঠ বা খামার’। ‘অক্টোথর্প’ বলতে ‘আটটি মাঠ’কেই বোঝানো হয়েছে।
১৫১৮
সঙ্গীতশিল্পীরাও এই চিহ্নের ব্যবহার করে থাকেন। সঙ্গীত পরিবেশন করার সময় নীচু টোন থেকে তার উপরের টোনে যেতে এই সংকেতের ব্যবহার করা হয়।
১৬১৮
এমনকি, লেখার সময় দু’টি বাক্যের মধ্যে দূরত্ব (স্পেস) বোঝাতে এই ‘#’ চিহ্নের ব্যবহার করেন এডিটরেরা।
১৭১৮
কম্পিউটারে কোনও নির্দেশ নয়, বরং কোনও মন্তব্য বোঝানোর জন্য এই চিহ্নটি বিশেষ কোড হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
১৮১৮
তবে অদূর ভবিষ্যতে ক্ষেত্রবিশেষে আবার এই চিহ্নের নাম বদল হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।