The hindi television actress Shikha Swaroop is vanished from industry dgtl
Shikha Swaroop
রূপের সুবাদে শুধু রানির চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব! তিতিবিরক্ত হয়ে ইন্ডাস্ট্রি ছাড়েন নায়িকা
নব্বইয়ের দশকে ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রীদের তালিকায় নাম ছিল শিখা স্বরূপের। দীর্ঘাঙ্গী হওয়ায় বলিপাড়ায় তাঁকে নিয়ে কম চর্চা হত না।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ১৭:১৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
পিস্তল চালানোয় পটু, ব্যাডমিন্টন খেলাতেও নিজের হাত পাকিয়েছিলেন। কেরিয়ারে এগোনোর জন্য বহু পথ খোলা থাকলেও বেছে নিয়েছিলেন অভিনয়কে। কিন্তু অভিনয়জগতে এলেও খুব বেশি দিন ইন্ডাস্ট্রিতে থাকতে পারেননি তিনি। বলিপাড়ার প্রতি এক রকম বিরক্ত হয়ে আলোর রোশনাইয়ের আড়ালে চলে যান শিখা স্বরূপ।
০২২০
১৯৬৮ সালের ২৩ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে জন্ম শিখার। দিল্লিতেই স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যাডমিন্টনেও দক্ষ ছিলেন তিনি।
০৩২০
জাতীয় স্তরেও ব্যাডমিন্টন খেলেছেন শিখা। পিস্তলও ভাল চালাতে পারতেন তিনি। পিস্তল শুটিংয়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে জিতেওছেন তিনি।
০৪২০
কলেজে পড়ার সময় মডেলিংয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মায় শিখার। তখনই ভারতের একটি জনপ্রিয় প্রতিযোগিতার খোঁজ পান তিনি।১৯৮৮ সালে সেই প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়ে বিজয়ীর মুকুট জেতেন শিখা।
০৫২০
কিন্তু প্রতিযোগিতায় জেতার পর মুকুটটি পর পর দু’বছর শিখার কাছে ছিল। কারণ দু’বছর ধরে কোনও সংস্থা এই প্রতিযোগিতায় অর্থ বিনিয়োগ করতে রাজি ছিলেন না। ১৯৯১ সালে আবার প্রতিযোগিতা হওয়ায় শিখা সেই মুকুটটি পরবর্তী বিজয়ীর মাথায় পরিয়ে দেন।
০৬২০
প্রতিযোগিতায় জেতার পর শিখা দ্রুত সাফল্যের সিড়িতে চড়তে থাকেন। মডেলিংয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিতে সই করেন শিখা।
০৭২০
দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে দেশ-বিদেশ জুড়ে ৪০০টি ফ্যাশন শোয়ে কাজ করে ফেলেছিলেন শিখা। নামী সংস্থার প্রচারের জন্য বহু বিজ্ঞাপনে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
০৮২০
নব্বইয়ের দশকে বড় পর্দাতেও অভিনয় করতে দেখা যায় শিখাকে। ‘তেহলকা’, ‘পুলিশওয়ালা গুন্ডা’, ‘নাগ মণি’, ‘কায়দা কানুন’, ‘প্যার হুয়া চোরি চোরি’ প্রভৃতি ছবিতে কাজ করতে দেখা গিয়েছে শিখাকে। তাঁর কেরিয়ারে মোট ১১টি ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
০৯২০
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, ‘তেহলকা’ ছবির শুটিংয়ের সময় জাভেদ জাফ্রির সঙ্গে আংটিবদল করেছিলেন শিখা। কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত পৌঁছয়নি।
১০২০
নব্বইয়ের দশকে ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রীদের তালিকায় নাম ছিল শিখার। দীর্ঘাঙ্গী হওয়ায় বলিপাড়ায় তাঁকে নিয়ে কম চর্চা হত না। বড় পর্দায় কাজ চলাকালীন টেলিভিশনে একটি ধারাবাহিকে অভিনয়ের প্রস্তাব পান শিখা।
১১২০
নীরজা গুলেরির পরিচালনায় কাজ শুরু হয় ‘চন্দ্রকান্তা’ ধারাবাহিকের। এই ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলেন পঙ্কজ ধীর, শাহবাজ খান, মুকেশ খন্না, ইরফান খানের মতো তারকারা। চন্দ্রকান্তা চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মনে আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছিলেন শিখা।
১২২০
‘চন্দ্রকান্তা’ ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য দর্শকের এত পছন্দ হয়েছিল যে খুব কম সময়ের মধ্যেই এই ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁয়ে যায়। ধারাবাহিকের বিজ্ঞাপন থেকেই চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ৪০ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছিলেন বলে জানা যায়।
১৩২০
কিন্তু ‘চন্দ্রকান্তা’ ধারাবাহিকের সাফল্য অনেকের হিংসার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দু’বছর চলার পর হঠাৎ ধারাবাহিকটি বন্ধ হয়ে যায়। চ্যানেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় যে, এই ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য নাকি গোলমেলে। গল্পের গরু নাকি গাছে চড়ানোর মতো অবস্থা। তাই ধারাবাহিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১৪২০
অধিকাংশের দাবি, শেষের দিকে ‘চন্দ্রকান্তা’ ধারাবাহিকের সেটে আগুন ধরে যায়। আগুনে শিখার পোশাক, গয়নাগাটিও পুড়ে যায়। এর ফলে নাকি ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যেরও ক্ষতি হয়। ‘চন্দ্রকান্তা’ ধারাবাহিকের পরিবর্তে একই সময়ে ‘শ্রীকৃষ্ণ’ ধারাবাহিকটি শুরু হয়।
১৫২০
চন্দ্রকান্তা চরিত্রে অভিনয় করে শিখা এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন যে, ছবি নির্মাতা থেকে শুরু করে ধারাবাহিক নির্মাতারা শিখাকে রানি বা রাজকুমারীর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব দিতে থাকেন। চিত্রনাট্য ভিন্ন হলেও চরিত্রের আদলে কোনও পরিবর্তন থাকত না।
১৬২০
একই ধরনের প্রস্তাব পেতে থাকার কারণে বিরক্ত হয়ে পড়েন শিখা। সব প্রস্তাব একসঙ্গে খারিজ করে দেন তিনি। বিরক্ত হয়ে ইন্ডাস্ট্রি থেকেই সরে যান তিনি। মাঝে শারীরিক অসুস্থতাতেও ভুগেছিলেন শিখা।
১৭২০
১৯৯২ সালে শিল্পপতি রাজীব লালের সঙ্গে গাঁটছ়ড়া বাঁধেন শিখা। কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কানাঘুষো শোনা যায় যে, বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় দু’জনের।
১৮২০
২০১১ সালে অবশ্য চন্দ্রকান্তা চরিত্রের উপর ভিত্তি করে একটি ধারাবাহিক নির্মাণ করেছিলেন সুনীল অগ্নিহোত্রী। ‘কাহানি চন্দ্রকান্তা কি’ ধারাবাহিকে মুখ্যচরিত্রে শিখাকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে।
১৯২০
শিখাকে আবার ছোট পর্দায় চন্দ্রকান্তা চরিত্রে অভিনয় করতে দেখে দর্শক অভিনেত্রীর কাজ দেখার জন্য আগ্রহী হয়ে পড়ে। পরবর্তী কালে ‘রামায়ণ’ ধারাবাহিকে কৈকেয়ীর চরিত্রে অভিনয় করেন শিখা।
২০২০
ছোট পর্দায় ফিরে আসার পর আবার রানির চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে শুরু করলে আবার ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শিখা। জামাকাপড় বিক্রির নিজস্ব সংস্থা তৈরি করেন তিনি। বর্তমানে সংস্থার যাবতীয় কাজকর্ম নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন শিখা।