Thailand farmer kills more than hundred critically endangered Crocodile after Typhoon Yagi hit dgtl
Siamese Crocodile
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে মারা হল ১২৫টি বিপন্ন কুমিরকে! ‘জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্ত’ নিয়ে ভেঙে পড়লেন চাষি
৩৭ বছর বয়সি ওই কুমির চাষি ন্যাথাপাক খুমকাদের দাবি, কুমিরগুলিকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত তাঁর জীবনে নেওয়া সব থেকে কঠিন সিদ্ধান্ত। তা হলে কেন এমন বিপন্ন প্রজাতির কুমিরগুলিকে মেরে ফেললেন ন্যাথাপাক?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি ভারতের প্রতিবেশী মায়ানমারে প্রবল বেগে আছড়ে পড়ে টাইফুন ইয়াগি। শুধু মায়ানমার নয়, এই টাইফুনের প্রভাব পড়ে ভিয়েতনাম, লাওস থেকে শুরু করে হাইনান এবং ফিলিপিন্সেও। ক্ষতির মুখে পড়েছে তাইল্যান্ডও।
০২১৫
সেই দুর্যোগে একটি কুমির সংরক্ষণ কেন্দ্র মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ার পরে বিপন্ন প্রজাতির ১০০টিরও বেশি সিয়াম কুমিরকে মেরে ফেলেন তাইল্যান্ডের একজন কুমির চাষি।
০৩১৫
৩৭ বছর বয়সি ওই কুমির চাষি ন্যাথাপাক খুমকাদের দাবি, কুমিরগুলিকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত তাঁর জীবনে নেওয়া সব থেকে কঠিন সিদ্ধান্ত। তা হলে কেন এমন বিপন্ন প্রজাতির কুমিরগুলিকে মেরে ফেললেন ন্যাথাপাক?
০৪১৫
ন্যাথাপাক তাইল্যান্ডের খ্যতনামী কুমিরচাষি। তিনি বেশি পরিচিত ‘ক্রোকোডাইল এক্স’ নামে। তাইল্যান্ডে একটি কুমির সংরক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে তাঁর।
০৫১৫
কিন্তু ইয়াগি আছড়ে পড়ার পরে ন্যাথাপাকের ওই সংরক্ষণ কেন্দ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। ক্ষয়ে যেতে থাকে সংরক্ষণ কেন্দ্রের দেওয়াল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, জলের স্রোতে ১০০টিরও বেশি কুমির ওই সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে যে কোনও সময় বেরিয়ে লোকালয়ে পৌঁছে যেতে পারত।
০৬১৫
ন্যাথাপাক জানিয়েছেন, তাঁর সংরক্ষণ কেন্দ্রে যে সিয়াম কুমিরগুলি ছিল, তার এক-একটির দৈর্ঘ্য ১৩ ফুট পর্যন্ত। হিংস্র এই প্রাণীগুলি যদি লোকালয়ে পৌঁছে যেত, তা হলে প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি হত। অনেকের প্রাণহানিও হতে পারত।
০৭১৫
তাই আর দেরি করেননি ন্যাথাপাক। সংরক্ষণ কেন্দ্রের পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে যেতেই ওই কুমিরগুলিকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে ন্যাথাপাক বলেন, ‘‘কুমিরগুলিকে মেরে ফেলার জন্য আমাকে আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।’’
০৮১৫
ন্যাথাপাক আরও বলেন, ‘‘আমি এবং আমার পরিবার আলোচনা করেছিলাম যে যদি সংরক্ষণকেন্দ্রের দেওয়াল জলের চাপে ভেঙে পড়ে, তা হলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। অনেককে প্রাণও হারাতে হতে পারে।”
০৯১৫
সেই কারণে ২২ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ, ইয়াগি আছড়ে পড়ার পরে ১২৫টি কুমিরকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন ন্যাথাপাক। এক দিনেরও কম সময়ে কুমিরগুলিকে মেরে ফেলেন তিনি।
১০১৫
কুমিরচাষি ন্যাথাপাক জানিয়েছেন, তিনি ২৪ ঘন্টারও কম সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে মেরে ফেলেন কুমিরগুলিকে। তাঁর এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন ল্যামফুনের মৎস্য বিভাগের প্রধান পর্ণথিপ নুয়ালানং। ন্যাথাপাক যা করেছেন, তা ‘সাহসী এবং দায়িত্বশীল’ পদক্ষেপ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। নুয়ালানং জানিয়েছেন, প্রাপ্তবয়স্ক কুমিরগুলি যদি লোকালয়ে পৌঁছত তা হলে অনেক ক্ষতি হতে পারত।
১১১৫
মৃত কুমিরগুলির মধ্যে একটির নাম ছিল আই হার্ন। সেটিই ছিল ন্যাথাপাকের সংরক্ষণকেন্দ্রের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ কুমির এবং বাকি কুমিরদের নেতা। বিশাল আকার এবং প্রজনন ক্ষমতার জন্য সুনাম ছিল আই হার্নের।
১২১৫
ন্যাথাপাকের কুমির সংরক্ষণকেন্দ্রটি রয়েছে উত্তর তাইল্যান্ডে। প্রায় ১৭ বছর ধরে তিনি ওই সংরক্ষণ কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ করেন। এর আগে কোনও দিনই সংরক্ষণকেন্দ্রটি এ রকম ক্ষতির মুখে পড়েনি।
১৩১৫
উল্লেখ্য, সিয়াম প্রজাতির কুমির গুরুতর ভাবে বিপন্ন। তাইল্যান্ডে সাধারণত কুমিরগুলির প্রজনন করা হয়। পরে চড়া দামে বিক্রিও করা হয়। বাণিজ্যিক মূল্য থাকা সত্ত্বেও, চোরাশিকারিদের কারণে এই প্রজাতির কুমিরের সংখ্যা ব্যাপক ভাবে কমেছে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, মাত্র কয়েকশো কুমিরই আর তাইল্যান্ডে রয়েছে।
১৪১৫
তাইল্যান্ডে কুমির চাষ একটি লাভজনক শিল্প। এই শিল্প থেকে বছরে আনুমানিক ১৮ হাজার কোটি আয় হয় সে দেশের।
১৫১৫
প্রসঙ্গত, অগস্টের শেষে ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত হয় গুজরাতের জনজীবন। বৃষ্টির জেরে গুজরাতে বিশ্বামিত্রি-সহ বেশ কয়েকটি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। নদীর জল ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। পাশাপাশি বিশ্বামিত্রি নদী থেকে একাধিক কুমিরও ঢুকে পড়ে। তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতির আগেই সেগুলিকে উদ্ধার করা হয়।