Telescope captures radio signal emitted almost 9 billion years ago dgtl
Radio Signal in Space
পৃথিবীর চেয়েও বুড়ো! ৯০০ কোটি বছর আগের রহস্যময় রেডিয়ো সঙ্কেত পেলেন বিজ্ঞানীরা
প্রায় ৪৫৪ কোটি বছর আগে মহাকাশে অন্য গ্রহ, নক্ষত্রের মাঝে পৃথিবীরও পথ চলা শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে সেখানে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। ব্রহ্মাণ্ডের ইতিহাস অবশ্য আরও পুরনো।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:১৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সূর্য থেকে ছিটকে বেরিয়ে এসেছিল একটি আগুনের গোলা। কালক্রমে তা ঠান্ডা হয়ে উপরিপৃষ্ঠে তৈরি হয়েছে মাটির আস্তরণ আর জল। পৃথিবী সৃষ্টির এই তত্ত্বেই সায় দেন সিংহভাগ বিজ্ঞানী।
০২১৫
প্রায় ৪৫৪ কোটি বছর আগে মহাকাশে অন্য গ্রহ, নক্ষত্রের মাঝে পৃথিবীরও পথ চলা শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে সেখানে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। গজিয়েছে গাছপালা। বিবর্তনের স্রোতে ভেসে এসেছে মানুষ।
০৩১৫
৪৫৪ কোটি বছর বয়স, তবু বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নিরিখে পৃথিবীকে ‘শিশু’ই বলা যায়। ব্রহ্মাণ্ডের ইতিহাস আরও অনেক পুরনো। সেই সুদূর অতীত থেকে একটি রেডিয়ো তরঙ্গ সম্প্রতি ভেসে এসেছে পৃথিবীতে।
০৪১৫
ভারতের একটি টেলিস্কোপে রেডিয়ো সঙ্কেতটি ধরা পড়েছে। জায়ান্ট মিটারওয়েভ রেডিয়ো টেলিস্কোপে চোখ মেলে যেন অতীত দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ ওই রেডিয়ো সঙ্কেত নিজের সঙ্গে নিজের সময়কেও বয়ে এনেছে।
০৫১৫
ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের গবেষকেরা ভেসে আসা রেডিয়ো সঙ্কেতটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁদের দাবি, ৮৮০ কোটি বছর আগে ‘এসডিএসএসজেও৮২৬+৫৬৩০’ নামের গ্যালাক্সি থেকে ওই তরঙ্গের উৎপত্তি।
০৬১৫
পৃথিবী থেকে বহু বহু দূরে অবস্থিত ওই নক্ষত্রপুঞ্জ। এত দূর থেকে এর আগে কখনও পৃথিবী কোনও রেডিয়ো সঙ্কেত পায়নি। এর মাধ্যমে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অতীত চাক্ষুষ করতে পারবেন বিজ্ঞানীরা।
০৭১৫
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবী পর্যন্ত পৌঁছতে এই রেডিয়ো সঙ্কেতের প্রায় ৯০০ কোটি বছর সময় লেগেছে, কারণ পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব প্রায় ৯০০ কোটি আলোকবর্ষ। এই পথ পেরিয়ে সঙ্কেত বয়ে এনেছে আলোর রশ্মি।
০৮১৫
রেডিয়ো সঙ্কেতটি ধরতে অনন্য একটি তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করা হয়েছিল। যার নাম ‘২১ সেন্টিমিটার লাইন’ বা ‘হাইড্রোজেন লাইন’। নিরপেক্ষ হাইড্রোজেন পরমাণুর মাধ্যমে এই তরঙ্গদৈর্ঘ্য তৈরি করা হয়।
০৯১৫
ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির গবেষক অর্ণব চক্রবর্তী জানান, এই রেডিয়ো তরঙ্গ যখন নির্গত হয়েছিল, তখন ব্রহ্মাণ্ডের বয়স ছিল ৪৯০ কোটি বছর। তখনও পৃথিবীর সৃষ্টিই হয়নি। এর মাধ্যমে যেন ৯০০ কোটি বছর আগের সময়কেই ফিরে দেখছি।’’
১০১৫
অর্ণব আরও বলেন, ‘‘গ্যালাক্সি থেকে বিভিন্ন ধরনের রেডিয়ো সঙ্কেত নিঃসৃত হয়। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর নিকটবর্তী গ্যালাক্সি থেকে আসা সঙ্কেতই পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ মিলেছে। এই সঙ্কেতের মাধ্যমে দূরের গ্যালাক্সি এবং অতীত সময়ের সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে।’’
১১১৫
কী দেখা গিয়েছে এই সঙ্কেতের মাধ্যমে? গবেষকেরা এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর চেয়েও বুড়ো এই রেডিয়ো সঙ্কেত থেকে বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছেন। যা তাঁদের বিস্ময় আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
১২১৫
‘এসডিএসএসজেও৮২৬+৫৬৩০’ গ্যালাক্সিতে হাইড্রোজেন গ্যাসের উপস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ওই নক্ষত্রপুঞ্জের হাইড্রোজেন গ্যাসের পারমাণবিক ভর পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান সব নক্ষত্রের হাইড্রোজেনের পারমাণবিক ভরের প্রায় দ্বিগুণ।
১৩১৫
কোনও গ্যালাক্সিতে নক্ষত্রের সৃষ্টির জন্য প্রাথমিক ভাবে জ্বালানির জোগান দেয় এই হাইড্রোজেন। অর্থাৎ, সুদূর অতীতে সুদূর সেই গ্যালাক্সিতে আমাদের আকাশগঙ্গা তো বটেই, বিজ্ঞানীদের চেনা যে কোনও গ্যালাক্সির চেয়ে নক্ষত্রের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল।
১৪১৫
কী ভাবে রেডিয়ো তরঙ্গে অতীত দেখা সম্ভব হয়? বিজ্ঞানীরা জানান, যে দূরত্ব থেকে সঙ্কেতটি ভেসে এসেছে সেই দূরত্ব অতিক্রম করতেই তার সময় লেগেছে প্রায় ৯০০ কোটি বছর। সেই কারণে ওই সময়ে ওই গ্যালাক্সিতে যা ঘটছিল, তা ধরা রয়ে গিয়েছে সঙ্কেতে।
১৫১৫
এই রেডিয়ো সঙ্কেতের মাধ্যমে ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি, বিবর্তন সম্পর্কেও ধারণা লাভ করা সম্ভব বলে আশা বিজ্ঞানীদের। এখনও পর্যন্ত ব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা যা যা জানতে পেরেছেন, তা অতি সামান্য। আরও তথ্য এই সঙ্কেতের মাধ্যমে লাভ করা যেতে পারে। সেই চেষ্টা চলছে।