Sreela majumdar died after long battle against cancer dgtl
Sreela Majumdar
‘একদিন প্রতিদিন’ ছবিতে প্রথমে নিতেই চাননি মৃণাল! শ্রীলা ছিলেন নাছোড়
গত বছরের নভেম্বরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় শ্রীলার। তাঁর ছেলে সোহেল আব্দি পড়াশোনার সূত্রে লন্ডনে থাকেন। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। শ্রীলার চিকিৎসকই তাঁকে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই থেকে তিনি কলকাতাতেই রয়েছেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:২০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
প্রায় সাড়ে তিন বছর ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়েছেন। অথচ কাউকে এতটুকু বুঝতে দেননি। চালিয়ে গিয়েছেন নিজের অভিনয়। নিজের কাজ। সেই কাজেই ইতি পড়ল। লড়াইয়েও। শনিবার বিকেলে চলে গেলেন শ্রীলা মজুমদার। বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
০২১৫
ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে ভুগছিলেন শ্রীলা। চিকিৎসা চলছিল। গত ১৩ থেকে ২০ জানুয়ারি টাটা মেডিক্যাল ক্যানসার সেন্টারে ভর্তি ছিলেন। তার পর অভিনেত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন শ্রীলার স্বামী এসএনএম আব্দি।
০৩১৫
গত বছরের নভেম্বরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় শ্রীলার। তাঁর ছেলে সোহেল আব্দি পড়াশোনার সূত্রে লন্ডনে থাকেন। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। শ্রীলার চিকিৎসকই তাঁকে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই থেকে তিনি কলকাতাতেই রয়েছেন।
০৪১৫
শ্রীলার মৃত্যুতে শোকের ছায়া বাংলা ছবির জগতে। শোকপ্রকাশ করেছেন বিশিষ্টেরা। সমাজমাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘শ্রীলা বিশিষ্ট এবং দক্ষ অভিনেত্রী ছিলেন, যিনি বহু ভারতীয় ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।’’
০৫১৫
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত ‘পালান’ সিনেমায় শেষ বার শ্রীলাকে পর্দায় দেখা গিয়েছিল। তবে পর্দার বাইরে শেষ বার তাঁকে দেখা যায় গত বছর আলিপুর জেল মিউজ়িয়ামে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে।
০৬১৫
মৃণাল সেনের হাত ধরেই ছবির জগতে এসেছিলেন শ্রীলা। প্রথম ছবি ‘পরশুরাম’। তবে প্রথম মুক্তি পাওয়া ছবি ‘একদিন প্রতিদিন’। ওই ছবিতেই নজর কেড়েছিলেন তিনি।
০৭১৫
‘পরশুরাম’ ছবির জন্য নতুন মুখ খুঁজছিলেন মৃণাল। স্ত্রী গীতা সেনকে সেই ভার দিয়েছিলেন তিনি। তার আগে থেকেই রেডিয়োতে নাটক করতেন শ্রীলা। ‘আত্মজা’ নামে একটি নাটক শুনেই শ্রীলাকে পছন্দ হয়ে যায় গীতার। রেডিয়োতে সেই নাটকে পরিচালক ছিলেন জগন্নাথ বসু।
০৮১৫
মৃণাল সরাসরি শ্রীলাকে ফোন করেন। তার পর ছবির জন্য বাছাই করেন। মৃণালকে তখন চিনতেন না শ্রীলা। সে কথা নিজেই একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। নাটকের মহলা কক্ষে এসেছিলেন মৃণাল। ভুরুর দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠেছিলেন।
০৯১৫
কেন, সে কথাও জানিয়েছিলেন শ্রীলাই। মৃণাল বলেছিলেন, তিনি তরুণ হলে কিছুতেই তাঁর প্রেমে পড়তেন না। কারণ তিনি ভুরু প্লাক করেন। শ্রীলা জানান, ‘পরশুরাম’ ছবিতে যে চরিত্রের জন্য শ্রীলাকে ভাবা হয়েছিল, তা একেবারেই সাদামাঠা। মেকআপ থাকবে না।
১০১৫
‘পরশুরাম’ ছবির শুটিং শেষ হয়। পাশাপাশি, নাটকেও অভিনয় করছিলেন শ্রীলা। অতীতে সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘নহবত’ নাটকে শ্রীলার অভিনয় নজর কেড়েছিল।
১১১৫
তার পরেই শুরু হয় ‘একদিন প্রতিদিন’ ছবির শুটিং। শ্রীলা সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, মৃণাল ডেকে বলেছিলেন, তাঁকে ছবিতে নেবেন না। তাঁর কোনও পরিচিত মেয়ে জানা থাকলে যেন জানান। কারণ, ছবির ওই চরিত্রের জন্য ফর্সা কোনও অভিনেত্রী প্রয়োজন।
১২১৫
শ্রীলা ছিলেন নাছোড়। নিজেই জানিয়েছিলেন, তার পর যত বার দেখা হয়েছিল পরিচালকের সঙ্গে, তিনি বলে গিয়েছিলেন ‘ওই রোলটা আমার চাই।’ শেষ পর্যন্ত শ্রীলাই পেয়েছিলেন সেই চরিত্র। বাকিটা ইতিহাস। মৃণাল পরিচালিত ‘খারিজ’-এও অভিনয় করেছিলেন তিনি।
১৩১৫
বেশ কিছু মূলধারার ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন শ্রীলা। সেই ছবি মনেও ধরেছিল দর্শকদের। অঞ্জন চৌধুরীর ‘পূজা’, হরনাথ চক্রবর্তীর ‘প্রতিবাদ’ তাঁকে গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিল।
১৪১৫
শ্রীলা কাজ করেছেন হিন্দি ছবিতেও। শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় ‘আরহণ’, ‘মান্ডির’ মতো ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চোখের বালি’ সিনেমায় ঐশ্বর্য রাই বচ্চন অভিনীত বিনোদিনী চরিত্রে নেপথ্যকণ্ঠও দিয়েছিলেন।
১৫১৫
শ্রীলার শেষ ছবি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় অভিনীত ‘পালান’। পরিচালক কৌশিক নিজেই জানিয়েছেন, শ্রীলা যে অসুস্থ, তা তাঁরা বুঝতেই পারেননি। কারণ, কখনও তিনি কাউকে বুঝতে দেননি। শরীরে মারণরোগ নিয়ে নীরবে নিজের কাজটা করে গিয়েছেন। তার পর নীরবে হঠাৎই চলেও গেলেন।