Hanuma Vihari's mother Vijayalakshmi stood fast to fulfil her son's derams dgtl
india
ভবিষ্যতের সম্বল দিয়ে ছেলের জন্য পিচ বানান, জামাকাপড় বিক্রি করে হনুমার স্বপ্ন পূর্ণ করেন মা
স্বামী সত্যনারায়ণের মৃত্যুর পরে তাঁর অফিস থেকে বেশ কিছু টাকা পেয়েছিলেন তিনি। ভবিষ্যতের চিন্তা না করে সেটা দিয়ে ছেলেকে ক্রিকেট অনুশীলনের পিচ তৈরি করিয়ে দিয়েছিলেন দূরদর্শী বিজয়লক্ষ্মী।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আইপিএল-এ ভাল পারফরম্যান্সের সুবাদে সুযোগ পেয়েছিলেন জাতীয় দলে। টেস্ট অভিষেক হয়েছে আড়াই বছর আগে। জাতীয় দলের তরুণ তুর্কিদের মধ্যে অন্যতম হনুমা বিহারীর প্রতিরোধের সাক্ষী থাকল সিডনির মাঠ।
০২১৬
পুরো নাম গড়ে হনুমা বিহারী। জন্ম ১৯৯৩ সালের ১৩ অক্টোবর, অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়ায়। তাঁর বাবা ছিলেন সাধারণ চাকুরে। মা, গৃহবধূ। মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবা সত্যনারায়ণকে হারান হনুমা বিহারী। সংসারের হাল ধরতে কাজ শুরু করেন মা।
০৩১৬
হায়দরাবাদে মেয়েদের একটি জামাকাপড়ের দোকান চালান তাঁর মা বিজয়লক্ষ্মী। তাঁর একক লড়াইয়ে বিহারীর ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। যে ক্রিকেটখেলা তিনি শুরু করেছিলেন ৪ বছর বয়সে।
০৪১৬
ছোট থেকেই তাঁর ক্রিকেট খেলার দক্ষতা মুগ্ধ করত। অল্প বয়সেই ছেলের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন হনুমার বাবা। তাঁর অকালপ্রয়াণে যাতে ছেলের ক্রিকেট বিঘ্নিত না হয়, সতর্ক খেয়াল রেখেছিলেন বিজয়লক্ষ্মী।
০৫১৬
স্বামী সত্যনারায়ণের মৃত্যুর পরে তাঁর অফিস থেকে বেশ কিছু টাকা পেয়েছিলেন তিনি। ভবিষ্যতের চিন্তা না করে সেটা দিয়ে ছেলেকে ক্রিকেট অনুশীলনের পিচ তৈরি করিয়ে দিয়েছিলেন দূরদর্শী বিজয়লক্ষ্মী।
০৬১৬
ক্রিকেট শেখার সময় রাহুল দ্রাবিড় এবং রামকৃষ্ণণ শ্রীধরকে প্রশিক্ষক হিসেবে পেয়েছেন হনুমা। তাঁদের প্রশিক্ষণে দক্ষ অলরাউন্ডার হয়ে ওঠেন তিনি। শানদার হয়ে ওঠে তাঁর অফ ব্রেক বোলিংও।
০৭১৬
ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিষেক ২০১০ সালে। তার ৩ বছর পরে আত্মপ্রকাশ আইপিএল-এ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং দিল্লি ক্যাপিটালস-এর হয়ে খেলেছেন তিনি। ২০১২ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি।
০৮১৬
জাতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য খুলে যায় ২০১৮ সালে। টেস্ট অভিষেক হয় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এখনও অবধি ১১ টেস্টে তাঁর মোট রান ৫৯৭। গড় ৩৩.৮৮। সর্বোচ্চ ১১১। উইকেট পেয়েছেন ৫টি।
০৯১৬
ওয়ান ডে এবং টি-২০ ম্যাচে এখনও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ওঠেনি ২৪ বছর বয়সি এই তরুণের। ক্রিকেটের অবসরে তিনি ভালবাসেন বাগানের যত্ন নিতে। সময় পেলে বেরিয়ে পড়েন বেড়ানোর জন্যেও।
১০১৬
বলিউডের ছবির ভক্ত হনুমার প্রিয় অভিনেতা শাহরুখ খান। অভিনেত্রীদের মধ্যে সবথেকে পছন্দ দীপিকা পাড়ুকোনকে। তবে প্রিয় ছবি আমির খানের ‘দঙ্গল’।
১১১৬
ঘরোয়া ক্রিকেটে রেকর্ডের দিক থেকে সেরা হনুমা বিহারী তাঁর আদর্শ মনে করেন সচিন তেন্ডুলকর এবং শেন ওয়ার্নকে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর গড় ৫৯.৪৫। কাছেই আছেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ, ৫৭.২৭ গড় নিয়ে। অলরাউন্ডার বিহারীর দুরন্ত ফিল্ডিংও দলের সম্পদ।
১২১৬
তবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে ভাল ফর্মে ছিলেন না হনুমা। অফ ফর্ম থেকে বেরিয়ে এসে সিডনিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে সম্ভবত জীবনের সেরা ইনিংস খেললেন সোমবার। চোট পাওয়া অবস্থাতেই কার্যত অসাধ্যসাধন করলেন তিনি।
১৩১৬
তাঁর সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত ছিল অশ্বিনের। শরীরের সর্বাঙ্গে আঘাত পেয়েও দাপটে ব্যাটিং করে গেলেন ‘বোলার’ অশ্বিন। চাপের মুখে অশ্বিন-হনুমার দুর্ভেদ্য প্রতিরোধ পরাজয়ের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনল ভারতকে।
১৪১৬
পাহাড়ের মতো মাটি কামড়ে লড়াই করেছেন অশ্বিন এবং হনুমা। অশ্বিন ১২৮ বলে ৩৯ এবং হনুমা ১৬১ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। তাঁদের প্রতিরোধ টেস্ট ম্যাচের সাম্প্রতিক অতীতে ম্যাচ বাঁচানোর সেরা লড়াইয়ের মধ্যে অন্যতম হয়ে থাকল।
১৫১৬
নিজের মেন্টর তথা ভারতীয় দলের অতীতের দুর্ভেদ্য রক্ষণ রাহুল দ্রাবিড়ের জন্মদিনে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিলেন হনুমা। মায়ের আদরের ‘কন্ন’।
১৬১৬
আজ যেখানে তিনি পৌঁছেছেন, তার কৃতিত্ব পুরোটাই মাকে দেন হনুমা বিহারী। তাঁর কথায়, ঝড়বিধ্বস্ত জীবনে সঙ্গে লড়াই করে মা তাঁর পাশে থেকেছেন। অন্য দিকে, তিনি যা করেছেন, তাকে ‘আত্মত্যাগ’ বলতে নারাজ বিজয়লক্ষ্মী। ভারতীয় ক্রিকেটের লড়াকু তারকার মায়ের কথায়, তিনি শুধুমাত্র তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন।