Ajinkya Rahane's best friend is his wife Radhika dgtl
ajinkya rahane
ক্যারাটেতে ব্ল্যাকবেল্ট, স্ত্রী সঙ্গে থাকলেও রাহানের নজর থাকে ‘অন্য’ দিকে
একই পাড়ায় বড় হয়েছেন রাহানে এবং রাধিকা। দু’জনে বিপরীত ব্যক্তিত্বের। সেটাই তাঁদের বন্ধুত্বকে গাঢ় করেছিল। তবে রাহানের দৈনন্দিন জীবনের মতো তাঁর প্রেমপর্বও ছিল আড়ম্বর থেকে দূরে, মধ্যবিত্ত মূল্যবোধের ছাঁচে ফেলা। তাঁদের অজান্তেই বন্ধুত্ব থেকে কবে তাঁদের সম্পর্ক প্রেমে পাল্টে গিয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
বহু দিন অবধি প্রশিক্ষণ চলত স্বল্প পরিসরে। তার থেকে বেশি খরচ করার ক্ষমতা ছিল না মধ্যবিত্ত পরিবারের। তাতেই বাজিমাত করেছিলেন অজিঙ্ক রাহানে। তাঁর প্রতিভা তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। জাতীয় দলে তাঁকে বলা হত ‘নতুন প্রজন্মের রাহুল দ্রাবিড়।’
০২১৭
মহারাষ্ট্রের আহমদনগরে রাহানের জন্ম ১৯৮৮ সালের ৬ জুন। দুই ভাই এবং এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবথেকে বড়। রাহানেকে ৭ বছর বয়সে তাঁর বাবা মধুকর নিয়ে গিয়েছিলেন ছোট একটি ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পে। সেখানে ক্রিকেট পিচ অবধি ছিল না। শিক্ষার্থীরা খেলতেন ম্যাট উইকেটে।
০৩১৭
১৭ বছর বয়স থেকে রাহানে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন প্রাক্তন ক্রিকেটার প্রবীণ আমরের কাছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের দৌলতে ২০১১ সালে তাঁর সামনে খুলে যায় জাতীয় দলের দরজা। সে বছর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচে তাঁর অভিষেক হয়।
০৪১৭
প্রথম টেস্ট খেলেন ২ বছর পরে। ২০১৩ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট খেলেন। ক্রমে ওয়ান ডে-এর তুলনায় টেস্টেই রহানে বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে ওঠেন। ৭ বছরের কেরিয়ারে ৬৫ টেস্টে এখনও অবধি তাঁর মোট রান ৪,২০৩। গড় ৪২.৮৯। সর্বোচ্চ ১৮৮।
০৫১৭
৯০ টি ওয়ানডেতে তিনি মোট ২৯৬২ রান করেছেন। গড় ৩৫.২৬। সর্বোচ্চ ১১১। টেস্টে রাহানে ব্যাট করেন মিডল অর্ডারে। ওয়ান ডে এবং টি-২০ তে তাঁর জায়গা হয় ওপেনিংয়েও। ব্যাটিং ঘরানার দিক থেকে তাঁর তুলনা করা হয় সচিন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড় এবং ভিভিএল লক্ষ্মণের মতো ব্যাটসম্যানের সঙ্গে।
০৬১৭
তাঁর ব্যাটিংয়ের গুণমুগ্ধ প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ ওয় রাহানের তুলনা করেন তেন্ডুলকরের সঙ্গে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মাঠে তাঁর ফিল্ডিংও দুরন্ত। তবে টেস্ট ম্যাচের অন্যতম ভরসা রহানেকে টি-২০ ম্যাচে উপযুক্ত মনে করা হত না। সেই ধারণাও তিনি ভেঙে দেন তাঁর আইপিএল-এর পারফরম্যান্সে।
০৭১৭
আইপিএল-এর প্রথম মরসুম থেকে তিনি খেলেছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস, রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্ট এবং দিল্লি ক্যাপিটালস-এর হয়ে। ৯৭ ম্যাচে তাঁর স্কোর ৩৭৮৯। গড় ৩৭.৭৩। সর্বোচ্চ স্কোর ১০৫। তবে জাতীয় দলে রাহানে এখন শুধুমাত্রই টেস্ট ম্যাচে ডাক পান।
০৮১৭
ক্রিকেটীয় উত্থান পতনের পাশে রাহানের ব্যক্তিগত জীবনের ঘাত প্রতিঘাতে প্রথম থেকেই সঙ্গী তাঁর স্ত্রী রাধিকা ঢোপভকর।
একই পাড়ায় বড় হয়েছেন রাহানে এবং রাধিকা। দু’জনে বিপরীত ব্যক্তিত্বের। সেটাই তাঁদের বন্ধুত্বকে গাঢ় করেছিল। তবে রাহানের দৈনন্দিন জীবনের মতো তাঁর প্রেমপর্বও ছিল আড়ম্বর থেকে দূরে, মধ্যবিত্ত মূল্যবোধের ছাঁচে ফেলা। তাঁদের অজান্তেই বন্ধুত্ব থেকে কবে তাঁদের সম্পর্ক প্রেমে পাল্টে গিয়েছে।
১১১৭
অবশেষে পরিবারের তরফেই তাঁদের কাছে বিয়ের প্রস্তাব রাখা হয়। উত্তরে ‘না’ করেননি পাত্র বা পাত্রী কেউই। ২০১৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সাতপাকে বাঁধা পড়েন রাহানে এবং রসিকা। খাঁটি মরাঠি রীতিতে বিয়ের পরে অপেক্ষা করে ছিল রাজকীয় পার্টি।
১২১৭
২০১৯ সালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন রাধিকা। সে সময় রাহানে ব্যস্ত ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় রাধিকা মা হওয়ার আগে ছবি দিয়েছিলেন তাঁর বেবি বাম্প-এরও।
১৩১৭
দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান রাহানে ক্যারাটেতেও ব্ল্যাক বেল্ট। জাতীয় দলের তারকা হয়েও এখনও জীবনে মধ্যবিত্ত পরিসরটুকু রেখেছেন তিনি। তারকাসুলভ আচরণ থেকে দূরেই থাকতে ভালবাসেন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী।
১৪১৭
সাধারণ পরিবার থেকে লড়াই করে উঠে আসা রাহানের গ্যারাজে এখন দাঁড়িয়ে থাকে ভলভো, বিএমডব্লু এবং অডিকিউ ৫। তাঁর আরও একটা গোপন স্বপ্ন হল, একদিন তিনি ল্যাম্বরগিনি এবং অ্যাস্টন মার্টিনের মালিক হবেন।
১৫১৭
রাহানের সব স্বপ্নের শরিক তাঁর অর্ধাঙ্গিনী রাধিকা। তবে রাধিকাকে এখনও আগে তাঁর ‘বন্ধু’, তার পর ‘স্ত্রী’ ভাবেন অজিঙ্ক। দু’জনের মধ্যে লেগেই থাকে খুনসুটি। রাধিকা মাঝে মাঝেই মজা করে বলেন, বাইরে বার হলে তিনি সঙ্গে থাকলেও রাহানের নজর থাকে কোনও বিলাসবহুল গাড়ির দিকেই।
১৬১৭
জীবনের বড় সিদ্ধান্তগুলির ক্ষেত্রেও স্ত্রীকে গুরুত্ব দেন রাহানে। তাঁর উপার্জন কোথায়, কীভাবে বিনিয়োগ করা হবে, সেই সিদ্ধান্তও প্রাথমিকভাবে নেন তাঁর সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বাবা মধুকর এবং স্ত্রী রাধিকা।
১৭১৭
মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে আসা লড়াকু রাহানের কাছে এখনও তাঁর উপার্জনের প্রতিটা পয়সা খুব মূল্যবান।