A closer look at some of the fieriest rifts and rivalries in the history of Indian cricket dgtl
India Cricket
সচিন-দ্রাবিড় থেকে সহবাগ-ধোনি, তারকাদের যে সব দ্বন্দ্বে ছড়িয়েছিল বিতর্ক
ভারতীয় ক্রিকেটে বিতর্ক কম নয়। নেই বিতর্কিত ঘটনার অভাবও। তার মধ্যে বেশ কয়েকটির সঙ্গে আবার জড়িয়ে রয়েছে তারকা ক্রিকেটারদের নাম। যাঁদের সংঘাত নিছক মতপার্থক্যের চেয়েও বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। আসলে, ক্রিকেট যতই টিমগেম হোক, ব্যক্তিদের সমষ্টিই গড়ে তোলে দল। সেই ব্যক্তিদের মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরলে তা হয়ে ওঠে আগুনের ফুলকি। ভারতীয় ক্রিকেটের এমনই কিছু মহা বিতর্কিত ঘটনা তুলে ধরা হল।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
ভারতীয় ক্রিকেটে বিতর্ক কম নয়। নেই বিতর্কিত ঘটনার অভাবও। তার মধ্যে বেশ কয়েকটির সঙ্গে আবার জড়িয়ে রয়েছে তারকা ক্রিকেটারদের নাম। যাঁদের সংঘাত নিছক মতপার্থক্যের চেয়েও বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। আসলে, ক্রিকেট যতই টিমগেম হোক, ব্যক্তিদের সমষ্টিই গড়ে তোলে দল। সেই ব্যক্তিদের মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরলে তা হয়ে ওঠে আগুনের ফুলকি। ভারতীয় ক্রিকেটের এমনই কিছু মহা বিতর্কিত ঘটনা তুলে ধরা হল।
০২১২
ভারতীয় ক্রিকেটের প্রথম বড় বিতর্ক ঘটে ১৯৩৬ সালে। সে বার ভিজিয়ানাগ্রামের মহারাজার নেতৃত্বে ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিল দল। ক্রিকেটীয় দক্ষতার জন্য নয়, অন্য দক্ষতার সুবাদে অধিনায়ক হয়েছিলেন তিনি। যার ফলে লালা অমরনাথের মতো আরও অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার তেমন গুরুত্ব দিতেন না তাঁকে। সেই সময় এক ট্যুর ম্যাচে অমরনাথকে তৈরি হতে বলেও ব্যাট করতে পাঠাননি ভিজি।
০৩১২
অমরনাথের তখন চোট ছিল। তা নিয়েই খেলেছিলেন আগের ম্যাচগুলো। বিশ্রাম পাচ্ছিলেন না। এই ম্যাচে আবার তাঁকে তৈরি অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয় অনেক ক্ষণ। পরে তাঁকে ব্যাট করতে পাঠানো হয়। দ্রুত আউট হয়ে ফিরে এসে ড্রেসিংরুমে উত্তেজিত অমরনাথ ক্ষোভ উগরে দেন। ভিজি তার প্রতিশোধ নেন অমরনাথকে প্রথম টেস্ট শুরুর আগেই দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়ে। সেই সময়ের এই দুই মহাতারকার মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রবল বিতর্ক ছড়িয়েছিল।
০৪১২
বীরেন্দ্র সহবাগ হলেন টেস্টে ভারতের শ্রেষ্ঠ ওপেনারদের অন্যতম। অন্য দিকে, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি হলেন দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ অধিনায়কদের অন্যতম। কিন্তু, বীরুর কেরিয়ারের শেষের দিকে তাঁর সঙ্গে ধোনির সম্পর্ক সহজ ছিল না। ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে ধোনি সিদ্ধান্ত নেন যে প্রতি ম্যাচে সহবাগ, সচিন তেন্ডুলকর ও গৌতম গম্ভীরের মধ্যে কোনও এক জনকে বিশ্রাম দেওয়া হবে।
০৫১২
ধোনির যুক্তি ছিল, তিন জনই আউটফিল্ডে মন্থর গতির, ফলে একইসঙ্গে তিন জনকে খেলানো সম্ভব নয়। পরের ম্যাচেই একটা দারুণ ক্যাচ নিয়ে সহবাগ বলে ওঠেন, “আমার ক্যাচটা দেখলে? গত ১০ বছর ধরেই একই রকম রয়েছি। কিছুই বদলায়নি।” ধোনি জবাবে কিছু বলেননি। তবে সহবাগ এর পর ধীরে ধীরে দলের বাইরে চলে যান।
০৬১২
২০০৪ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পাকিস্তানে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু, সৌরভ অসুস্থ থাকায় প্রথম দুই টেস্টে নেতৃত্ব দেন রাহুল দ্রাবিড়। মুলতানে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে সচিন তেন্ডুলকর যখন ১৯৪ রানে অপরাজিত, তখন ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করেন দ্রাবিড়। যা মানতে পারেননি সচিন। যদিও মনে করা হয় যে সচিনকে অনেক বার বার্তা পাঠানোর পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
০৭১২
ওই ঘটনার এক দশক পর আত্মজীবনীতে সচিন লেখেন, “রাহুল বলেছিল যে, দলের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আমরা যে জিততে আগ্রহী তা বোঝাতেই ওই সিদ্ধান্ত। কিন্তু তা আমার বিশ্বাস হয়নি।” সচিনের মতে, আরও দুই ওভার পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাঁকে। দ্রাবিড় অবশ্য এই বিষয়ে কখনও মুখ খোলেননি।
০৮১২
সুনীল গাওস্কর ও কপিল দেব হলেন ভারতীয় ক্রিকেটের দুই কিংবদন্তি। কিন্তু, দু’জনের মধ্যেই ছিল ব্যক্তিত্বের সংঘাত। ১৯৮৩ সালে গাওস্করের জায়গায় কপিল অধিনায়ক হওয়ার পর তার তিক্ততা বাড়ে। ১৯৮৩ সালে তৎকালীন মাদ্রাজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে গাওস্কর ২৩৬ রানে ব্যাট করার সময় ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করেছিলেন কপিল। যা মানতে পারেননি গাওস্কর।
০৯১২
১৯৮৪ সালে গাওস্কর ক্যাপ্টেন হয়ে ইডেন টেস্টে বাদ দেন কপিলকে। বলা হয়, দিল্লিতে তার আগের টেস্টে কপিলের বেহিসেবি শটের মাসুল হিসেবে হারতে হয়েছে দলকে। কপিলের বিশ্বাস ছিল, তাঁর বাদ যাওয়ায় গাওস্করেরই হাত ছিল। যদিও গাওস্করের দাবি, তিনি সেই নির্বাচনী বৈঠকে ছিলেনই না। পরে অবশ্য গাওস্কর-কপিল দু’জনেই বলেন যে তাঁদের সম্পর্ক ততটা খারাপ ছিল না, যতটা প্রচারিত হয়েছিল।
১০১২
সচিন তেন্ডুলকর যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন, তখন মহম্মদ আজহারউদ্দিন ছিলেন দলের সেরা ব্যাটসম্যান। বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানও ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড সফরের পর আজহারের জায়গায় সচিন অধিনায়ক হওয়ার পর দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। সচিন মনে করেন যে আজহার নিজের সেরাটা দিচ্ছেন না।
১১১২
১৯৯৮ সালে আজহার ফের অধিনায়ক হন। কিন্তু, ১৯৯৯ বিশ্বকাপের পর আবার সরানো হয় তাঁকে। নেতৃত্বে আনা হয় সচিনকে। কিন্তু, সচিন আর দলে আজহারকে ফেরাতে চাননি। ২০০০ সালের শুরুতে আজহারকে আনা হয় দলে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুই টেস্টের সিরিজের আগেই সচিন বলেন, নেতা হিসেবে এটাই তাঁর শেষ টেস্ট সিরিজ।
১২১২
সেই বছরই ম্যাচ গড়াপেটার দায়ে অভিযুক্ত হন আজহার। শুরু হয় সিবিআই তদন্ত। সচিন সাক্ষ্য দেন যে, বুকিদের সঙ্গে আজহারের সম্পর্কের ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। অধিকাংশ সময় তিনি যে ম্যাচে ১০০ শতাংশ উজাড় করে দিতেন না, সেটাও বলেন সচিন। আজহারকে এর পর চিরনির্বাসিত করে বোর্ড। যদিও পরে তিনি আদালতে অভিযোগ থেকে মুক্তি পান। কিন্তু আজহারের টেস্ট কেরিয়ার থেমে যায় ৯৯-তেই।