Six years of The July 2016 Dhaka Attack in Holey Artisan bakery in Gulshan area, How did it Happen dgtl
Holey Artisan Bakery
July 2016 Dhaka Attack: জঙ্গি-নির্দেশ অমান্য করতেই গুলি, শেষে কুপিয়ে খুন! গুলশনে রেহাই পাননি অন্তঃসত্ত্বাও
ছ’বছরে কি বাংলাদেশে কিছু বদলেছে? বাংলাদেশ প্রশাসনের দাবি, বদলেছে। তারা জানিয়েছে, হামলা থেকে শিক্ষা নিয়ে তৎপর হয়েছে দেশের পুলিশ।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২২ ১৮:৩৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
১ জুলাই। তারিখটা বাংলাদেশ ভুলতে পারবে না। ঠিক যেমন ভারত ভুলতে পারবে না ২৬/১১ বা আমেরিকা চিরকাল মনে রেখে দেবে ৯/১১-র কথা।
০২১৫
ছ’বছর আগে এই দিনেই বাংলাদেশের গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা করেছিল জঙ্গিরা। আতঙ্কের সেই কয়েক ঘণ্টা, একের পর এক গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ, একটি একটি করে আসা মৃত্যু সংবাদ আর চরম আতঙ্কের অপেক্ষা— এমন অভিজ্ঞতা বাংলাদেশবাসীর আগে কখনও হয়নি।
০৩১৫
সে দিন সন্ধে আটটা ৪৫ মিনিট নাগাদ ঢাকার গুলশানের স্প্যানিশ রেস্তরাঁ হোলি আর্টিজানে তখন বিদেশি অতিথিদের ভিড়। হালকা গুঞ্জনের শব্দ ভেদ করে হঠাৎ শোনা গেল চিৎকার ‘আল্লাহু আকবর’। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পণবন্দি হলেন অতিথিরা। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ল খবর।
০৪১৫
রাত সাড়ে দশটা নাগাদ আসতে শুরু করে ছবি। হোলি আর্টিজানের রক্তাক্ত মেঝের। তার কিছুক্ষণ আগেই ভিতর থেকে বিস্ফোরণ আর গুলির শব্দ বাইরে এসেছে। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলি সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন ঢাকা মহানগর ডিবির সহকারী কমিশনার রবিউল করিম এবং বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন।
০৫১৫
কিছুক্ষণ পরেই আইএস জানায়, ঢাকায় তাঁদের জঙ্গিসেনারা অভিযান চালিয়ে ২০ জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। এই ২০ জনের মধ্যে ছিলেন— ন’জন ইতালীয়, সাত জন জাপানি, তিন জন বাংলাদেশি এবং এক ভারতীয়।
০৬১৫
পরে যদিও জানা যায়, আইএস নয়, আইএস আদর্শে অনুপ্রাণিত বাংলদেশেরই জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি এই হামলা চালিয়েছিল। বাংলাদেশের কূটনৈতিক এবং প্রশাসনিক চত্বরে হামলা চালিয়ে গোটা পৃথিবীতে প্রচার পেতে চেয়েছিল তারা।
০৭১৫
কী ভাবে হামলা চালানো হবে তার পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন যিনি, তিনি বাংলাদেশেরই মানুষ। ছোটবেলায় কানাডায় চলে গিয়েছিলেন। সেখানকারই নাগরিক। তবে এই হামলার ঠিক আড়াই বছর আগে আবার বাংলাদেশেই ফিরে আসেন। তাঁর নাম তামিম চৌধুরী।
০৮১৫
আর যাঁরা অভিযান কার্যকর করেছিলেন সেই পাঁচ জঙ্গির তিন জনই বাংলাদেশের উচ্চ এবং উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত সন্তান।
০৯১৫
শোনা যায়, ওই পাঁচ জঙ্গি পণবন্দিদের হত্যা করার আগে কলমা পড়তে বলেছিল। যাঁরা পারেননি, তাঁদেরকে কুপিয়ে, গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সবার চোখের সামনে।
১০১৫
নিহতদের মধ্যে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ছিলেন, ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগী বিদেশি নাগরিক এবং কিছু পর্যটকও।
১১১৫
কিন্তু এঁদের কেন আক্রমণ করা হয়েছিল? বাংলাদেশের থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগপত্র এবং আসামিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে জানা যায়, জঙ্গিদের মূলত তিনটি উদ্দেশ্য ছিল— এক, কূটনৈতিক এলাকায় কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা এলাকার ভিতরে ঢুকে হামলা চালিয়ে নিজেদের ক্ষমতার আস্ফালন, দুই, বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করে বুঝিয়ে দেওয়া, তারা কতটা বেপরোয়া আর নৃশংস হতে পারে। তিন, বাংলাদেশে বিদেশিদের হত্যার ঘটনায় বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা।
১২১৫
সেই হামলা ছ’বছরে পদার্পণ করল শুক্রবার। ছ’বছরে কি বাংলাদেশে কিছু বদলেছে? বাংলাদেশ প্রশাসনের দাবি বদলেছে। তারা জানিয়েছে, ওই হামলা থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশ এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধারাবাহিক জঙ্গি দমন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে।
১৩১৫
হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে জঙ্গি দমনে পুলিশের বিশেষ অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট অনুমোদন পায়। ২০১৯ সাল থেকে তারা কাজ শুরু করে। তবে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট তারও আগে জঙ্গি দমনের অভিযান শুরু করে।
১৪১৫
ওই অভিযান চালিয়ে এ যাবৎ দু’হাজার ৪১০ জনকে গ্রেফতারও করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষীবাহিনী। যার মধ্যে শুধু র্যাবের হাতেই গ্রেফতার হয়েছেন এক হাজার ৬৭৮ জন।
১৫১৫
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মহম্মদ আসাদুজ্জামান সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তৎপরতার কারণে এখন বাংলাদেশে জঙ্গিরা ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েছে। তাদের আর কোনও সংগঠিত হামলা করার ক্ষমতা নেই।