Sanjith Konda House, The 'Dropout Chaiwala', who is earning crores from his tea shop in Melbourne dgtl
Tea Seller
কলেজ ছেড়ে বিদেশের রাস্তায় চা বিক্রি, বছরে দেড় কোটি মুনাফা করছেন এদেশি তরুণ
অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলার বাসিন্দা সঞ্জিৎ কোন্ডার কাহিনি শোরগোল ফেলে দিয়েছে সমাজমাধ্যমে। কর্পোরেট জগতের মোটা অঙ্কের চাকরি ছেড়ে নিজের শর্তে বাঁচার ঝুঁকি নিয়েছেন এই ২২ বছরের তরুণ।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২২ ০৮:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
দেশের বাড়ি ছেড়ে বিদেশে গিয়েছিলেন বিজ়নেসে ডিগ্রি হাসিল করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে বিদেশের রাস্তায় চা বিক্রি করা শুরু করেন অন্ধ্রপ্রদেশের তরুণ। আজ সেই চাওয়ালার আয় শুনলে মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় হতে পারে।
ছবি: সংগৃহীত।
০২১৮
চায়ের দোকান দেওয়ার পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই মুনাফা দাঁড়ায় দেড় কোটি টাকার কাছাকাছি। একটি মাত্র চায়ের দোকান থেকেই ওই তরুণের আয় এখন বছরে প্রায় ৫ কোটি টাকা।
ছবি: সংগৃহীত।
০৩১৮
অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলার বাসিন্দা স়ঞ্জিৎ কোন্ডার এ হেন কাহিনিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে। কর্পোরেট জগতের মোটা অঙ্কের চাকরি ছেড়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ঝুঁকি নিয়েছেন এই ২২ বছরের তরুণ। তাতে সফল হয়েছেন বললেও কম বলা হয়। সমাজমাধ্যমে অবশ্য তিনি পরিচিত সঞ্জিৎ কোন্ডা হাউস নামে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৪১৮
নেল্লোর থেকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের এক নামজাদা কলেজে বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন সঞ্জিৎ। তবে স্নাতকস্তরের সেই কোর্স শেষ করেননি তিনি। তার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সঞ্জিৎ।
ছবি: সংগৃহীত।
০৫১৮
ডিগ্রিলাভের আশা ছেড়ে নিজের স্টার্টআপ খোলার চেষ্টা করেন সঞ্জিৎ। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, ‘‘লা ট্রোব ইউনিভার্সিটিতে বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পড়তে এখানে (মেলবোর্নে) এসেছিলাম। তবে কোর্স শেষ করতে পারিনি। পড়াশোনা ছাড়ার পর নিজের স্টার্টআপ শুরু করতে চেয়েছিলাম।’’
ছবি: সংগৃহীত।
০৬১৮
সাহসে ভর করেই সুদূর মেলবোর্নে নিজের স্টার্টআপ খুলে বসেন সঞ্জিৎ। শহরের খোলা রাস্তায় একটি চায়ের দোকান খোলেন তিনি।
নিজের দোকানের গালভরা নামও রেখেছেন স়ঞ্জিৎ— ‘ড্রপআউট চায়েওয়ালা’। এলিজ়াবেথ স্ট্রিটে ঘুরতে এসে পর্যটকেরাও সেখানে উঁকিঝুকি মারছেন। সেখানকার ভারতীয়দের প্রিয় আড্ডাখানা হিসাবেও নাম কামাচ্ছে সঞ্জিতের চায়ের দোকান।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৮
সব ছেড়েছুড়ে হঠাৎ চায়ের দোকান দিতে গেলেন কেন? তাঁর মা-বাবাই বা এ খবর শুনে কী বলেছিলেন? সংবাদমাধ্যমের এ হেন প্রশ্নের জবাবে সঞ্জিৎ বলেছেন, ‘‘পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার কথা জানতে পেরে গোড়ার দিকে একেবারে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন মা-বাবা। আমি যে নিজের ব্যবসা করার চেষ্টা করছি, তা জেনে কিছুটা চিন্তায়ও পড়েছিলেন।’’
ছবি: সংগৃহীত।
১০১৮
মেলবোর্নের রাস্তায় যে সঞ্জিৎ চায়ের দোকান খুলতে চান, তা জেনে আরও দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন তাঁর মা-বাবা। একে তো ওই শহর বেশি পরিচিত কফিপ্রেমীদের জন্য। তার উপর, সঞ্জিতের মতো আনকোরা তরুণের দেশীয় চায়ের স্বাদ চাখতে কত জন চাইবেন, তা নিয়েও চিন্তায় পড়েছিলেন তাঁরা। যদিও সঞ্জিৎ বলেন, ‘‘মেলবোর্ন কফি ক্যাপিটাল হলেও এখানেই চায়ের জয়েন্ট খোলার কথা ভেবে নিয়েছিলাম!’’
ছবি: সংগৃহীত।
১১১৮
প্রসঙ্গত, ‘গ্লোবাল টাইমস’ নামে চিনের এক দৈনিক সংবাদপত্র দাবি, মেলবোর্ন নয়, সাংহাইকেই বিশ্বের ‘কফি ক্যাপিটাল’ বলা হয়। সে শহরে ৭,৮৫৭টি কফি শপ রয়েছে বলে দাবি তাদের।
ছবি: সংগৃহীত।
১২১৮
মেলবোর্নে এই চায়ের দোকান খোলার পিছনে যে পরোক্ষে হলেও তাঁর মায়ের হাত রয়েছে, তা জানিয়েছেন সঞ্জিৎ। ওই শহরে তাঁর কাছে ঘুরতে গিয়ে শত খুঁজেও নাকি ঘরের চায়ের স্বাদ পাননি সঞ্জিতের মা-বাবা। সে সময়ই ওই শহরের রাস্তায় একটা চায়ের দোকান খোলার কথা ভেবে নেন সঞ্জিৎ।
ছবি: সংগৃহীত।
১৩১৮
ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে সঞ্জিৎ বলেছেন, ‘‘মেলবোর্নে ঘুরতে এসে আমাদের ঘরের মতো চায়ের স্বাদ পেতে ঘাম ঝরে গিয়েছিল মা-বাবার। সে সময়ই এখানে চায়ের দোকান খোলার কথা মনে হয়েছিল।’’
ছবি: সংগৃহীত।
১৪১৮
চায়ের দোকানের এ হেন নাম কেন? সংবাদমাধ্যমের কাছে সঞ্জিৎ বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই চায়ের প্রতি টান ছিল। ফলে এই নাম দেওয়ার কথা মনে এসেছিল।’’ দোকানের নামের সঙ্গে যে তাঁর পড়াশোনা ছাড়ার বিষয়টিও জড়িত রয়েছে!
ছবি: সংগৃহীত।
১৫১৮
সঞ্জিতের বিষয়ভাবনার উপর ভরসা রেখেছিলেন আসরার নামে এক অনাবাসী ভারতীয়। তাঁর দোকানের যাবতীয় খরচপাতি তিনিই জুগিয়েছেন। সে ভরসার ফসলও ফলেছে। সঞ্জিৎ বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, পরের মাসে আমাদের মুনাফা ৫.২ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। আয়কর এবং অন্যান্য খরচাপাতির পর হাতে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার মুনাফা থাকবে।’’
ছবি: সংগৃহীত।
১৬১৮
ডিগ্রিহীন চাওয়ালার সাফল্যে যারপরনাই খুশি সঞ্জিতের মা-বাবা। সঞ্জিৎ বলেন, ‘‘যে ভাবে শুরু করেছিলাম আর এখন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি, তাতে আমাকে নিয়ে মা-বাবা গর্বের অন্ত নেই।’’
ছবি: সংগৃহীত।
১৭১৮
সঞ্জিৎ জানিয়েছেন, তাঁর চায়ের দোকানের ‘বম্বে কাটিং চা’ ভারতীয়দের মধ্যে সুপারহিট। বিদেশিরা আবার ‘মশলা চা’ বা পকোড়া বেশ তারিয়ে তারিয়ে খান। খদ্দের টানতে এ বার ‘চায়পুচিনো’ নামে এক পাঁচমেশালি চা তৈরি করছেন সঞ্জিৎ। এ যেন খানিকটা ক্যাপুচিনোর চায়ের সংস্করণ!
ছবি: সংগৃহীত।
১৮১৮
নিজের দোকানে কি তাঁর মতো ডিগ্রিহীনদের কাজ দেবেন? সঞ্জিতের সাফ জবাব, ‘‘ডিগ্রি নয়, কাজের প্রতি টান রয়েছে এমন কঠোর পরিশ্রমীদেরই কাজে রাখতে চাই।’’ সঞ্জিতের স্বপ্ন, ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি শহরে তাঁর অন্তত একটি চায়ের দোকান থাকবে। সেই সঙ্গে সোশ্যাল ওয়ার্ক নিয়ে ডিগ্রিও হাসিল করতে চান তিনি।