Russia Ukraine war: A Ukrainian bridal brand is making wedding gowns and army assault vests dgtl
Russia Ukraine War
Ukraine Army: বিয়ের পোশাক ছেড়ে সৈন্যদের রক্ষাকবচ বানাচ্ছে ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড
সংস্থাটি ইতিমধ্যই ১৫০০ সৈন্যের পোশাক তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছে। তাদের তৈরি পোশাকের মধ্যে রয়েছে সেনাদের হুডি, অ্যাসল্ট জ্যাকেটও।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২২ ১৫:২৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ফিনফিনে রেশমের কাপড়ে জরির সুতোর ফোঁড় তুলতেন। এখন সেই হাতই ছোপ ছোপ মোটা কাপড় কেটে তৈরি করছে সৈন্যদের যুদ্ধে যাওয়ার পোশাক, রক্ষাকবচ। যুদ্ধ বদলে দিয়েছে দৃষ্টিভঙ্গি, বদলে দিয়েছে অগ্রাধিকার।
০২১৬
ইউক্রেনে যখন রুশ হামলা প্রতিহত করতে শ’য়ে শ’য়ে যুদ্ধে যোগ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ, তখন রাত জেগে তাঁদের জন্য সেনাবাহিনীর পোশাক তৈরি করছেন কয়েকশো বিয়ের পোশাক তৈরির কারিগর।
০৩১৬
এঁদের কেউ কেউ এখনও দেশে রয়েছেন। কেউ প্রাণের ভয়ে পালিয়ে গিয়েছেন পড়শি দেশে। কিন্তু কাজ থামেনি। ভিনদেশে অস্থায়ী কারখানা তৈরি করে দেশের যোদ্ধাদের প্রয়োজনীয় পোশাকের যোগান দেওয়ার কাজ করে চলেছেন প্রত্যেকে।
০৪১৬
এই কারিগরদের ৯৮ শতাংশই মহিলা। প্রত্যেকেই ইউক্রেনের বিয়ের পোশাক তৈরির নামী সংস্থা ‘মিলা নোভা’র কর্মী। ‘মিলা নোভা’ ইউক্রেনের সংস্থা হলেও আসলে আন্তর্জাতিক মানের ফ্যাশন ব্র্যান্ড। বিশ্বের ৫০টি দেশের নামী বুটিকে এঁদের তৈরি বিয়ের পোশাক থাকে।
০৫১৬
সেই সব পোশাকের চাহিদাও আছে ইউরোপ, আমেরিকা, ফ্রান্সের মতো প্রথম বিশ্বের দেশে। এমনকি যে চিন ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ায় রাশিয়ার সহযোগী, সেখানেও ‘মিলা নোভা’র পোশাক বিশেষ জনপ্রিয়।
০৬১৬
দেশের মাটিতে যুদ্ধ চলছে। কিন্তু বিদেশের হবু কনেদের জন্য কাজ করতে হচ্ছে সংস্থার কর্মীদের। কারণ ইউক্রেনে যুদ্ধ হলেও অন্য দেশে থেমে নেই কিছু। ব্যবসা আচমকা বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব নয়। তবু সেই কাজের ফাঁকেই দেশের জন্য কাজ করে চলেছে কর্মীরা। দরকার হলে রাত জেগে। কারণ দেশই এখন তাঁদের অগ্রাধিকার।
০৭১৬
‘মিলা নোভা’-র অধিকর্তার নাম ইয়ুলিয়ানা কিরিসুক। তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও মূল্যে তিনি ব্যবসাটি টিকিয়ে রাখতে চান। অর্থের জন্য নয়। আসলে তাঁর ব্যবসার সঙ্গে ইউক্রেনের হাজার খানেক পরিবারের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে।
০৮১৬
কম করে ৬০০ কারিগর কাজ করেন ইয়ুলিয়ার সংস্থায়। ইয়ুলিয়া জানিয়েছেন, তিনি যে ভাবে ভেবেছেন, তাতে আগামী কয়েক দিনে পূর্ব ইউক্রেনের বহু শরণার্থীকেও কাজ দিতে পারবেন। এমনকি নিজার সংস্থার কর্মীদের নিরাপত্তার যথাসাধ্য ব্যবস্থাও করেছেন ইয়ুলিয়া।
০৯১৬
রাশিয়া যখন ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন থেকেই সম্ভাব্য বিপদের কথা ভেবে কিছু পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন তিনি। যুদ্ধের এই পরিস্থিতির কথা আাগাম বুঝতে না পারলেও পড়শি দেশ পোল্যান্ডের ওয়ারশয়ে একটি অস্থায়ী কাজের জায়গা তৈরি রেখেছিলেন আগে থেকেই।
১০১৬
যুদ্ধের আবহে বহু কর্মীকেই সেখানে পাঠাতে পেরেছেন তিনি। যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁরা দেশে থেকে কাজ করছেন।
১১১৬
সংস্থাটি ইতিমধ্যই ১৫০০ সৈন্যের পোশাক তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছে। তাদের তৈরি করা পোশাকের মধ্যে রয়েছে সেনাদের হুডি, অ্যাসল্ট জ্যাকেট, অস্ত্র বহনের জ্যাকেট, সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত জাল এবং অন্যান্য নিরাপত্তার পোশাক।
১২১৬
পাশাপাশি সেনাদের অর্থ সাহায্যের জন্য ইউক্রেন ‘থিম’-এর বিয়ের পোশাকও তৈরি করছে ‘মিলা নোভা’। পোল্যান্ডে যে কর্মীদের পাঠানো হয়েছে, তাঁদের নীল-হলুদ ইউক্রেনীয় পতাকার রঙে পোশাক তৈরির নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি। যাতে দেশের বাইরে থেকেও তাঁরা দেশের কাজ করতে পারেন।
১৩১৬
ইয়ুলিয়া জানিয়েছেন, এই সব কর্মীর সন্তানরাও এঁদের সঙ্গেই পড়শি দেশে গিয়েছে। পোশাক তৈরি করতে তারাও সাহায্য করছে মায়েদের।
১৪১৬
ইউক্রেনের পতাকার রঙের ওই বিয়ের পোশাক কিছুটা কম দামে বিদেশের বাজারে বিক্রি করছে ‘মিলা নোভা’। ইয়ুলিয়া জানিয়েছেন, ওই পোশাক থেকে যা আয় হবে, তার পুরোটাই যাবে ইউক্রেন সরকারের তহবিলে।
১৫১৬
তবে ইয়ুলিয়া জানিয়েছেন, তাঁর এই ভাবনা সফল হত না যদি তাঁর কর্মীরা তাঁকে সাহায্য না করতেন। দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ ওই মহিলাদের জন্যই ওই সংস্থা দেশের সেনাবাহিনীর জন্য কাজ করতে পারছে।
১৬১৬
ইয়ুলিয়া জানিয়েছেন, যুদ্ধে মহিলাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যত্ন করার জন্য তাঁদের দরকার, সুরক্ষা দেওয়ার জন্যও তাঁদের দরকার, যুদ্ধে যাওয়া সৈনিকদের উপর ভরসা করার জন্য আর তাঁদের প্রার্থনা করার জন্য মহিলাদের দরকার। ‘মিলা নোভা’ সেই কাজই করছে।