Ri Sol-ju is wife of North Korean dictator Kim Jong-un and has several limitations as First Lady of the country dgtl
Kim Jong-un Wife Ri Sol-ju
মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত বন্দি! স্বেচ্ছায় কোথাও যেতেও পারেন না কিমের স্ত্রী
নাগরিকেরা তো বটেই, উত্তর কোরিয়ায় কিমের কঠোর অনুশাসন থেকে রেহাই পান না দেশের ফার্স্ট লেডিও। নিজের স্ত্রীর জন্যও একগুচ্ছ কঠোর নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন কিম। তার অন্যথা হওয়ার জো নেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৩ ০৮:৪৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
উত্তর কোরিয়া। কিম জং উনের আপন দেশ। ‘শিবঠাকুরের আপন দেশ’-এর মতো সেখানে হাঁচতে গেলে টিকিট কাটতে হয় না ঠিকই, তবে নিয়ম কানুন সেখানেও ‘সর্বনেশে’।
০২১৯
উত্তর কোরিয়ার সীমান্তের বাইরে যেন আস্ত প্রাচীর তৈরি করে রেখেছেন একনায়ক কিম। দেশের ভিতরে কী হচ্ছে না হচ্ছে, তার খুব কম তথ্যই বাইরে থেকে জানা যায়। কিমের প্রশাসন খুব সতর্ক ভাবে উত্তর কোরিয়ায় তৈরি করেছে ‘অচলায়তন’।
০৩১৯
নাগরিকেরা তো বটেই, উত্তর কোরিয়ায় কিমের কঠোর অনুশাসন থেকে রেহাই পান না দেশের ফার্স্ট লেডিও। নিজের স্ত্রীর জন্যও একগুচ্ছ কঠোর নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন কিম। তার অন্যথা হওয়ার জো নেই।
০৪১৯
কিমের স্ত্রী রি সোল জু। ২০০৯ সালে তাঁদের বিয়ে হয়েছে। ২০১২ সালে উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমে কিমের পাশে প্রথম তাঁকে দেখা যায়। তাঁর আগে তিনি জনসমক্ষে আসেননি বলেই মনে করা হয়। বাড়ির বাইরে পা রাখলেও প্রচারের আলোয় তাঁকে দেখা যায়নি।
০৫১৯
উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বিয়ের আগে রি ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী। চিয়ারলিডার হিসাবেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। বিয়ের পরে অবশ্য সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁর দৈনন্দিন যাপন সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায় না।
০৬১৯
অসমর্থিত সূত্রে দাবি, কিম এবং রি-এর মোট তিন সন্তান। কিন্তু তাঁদের একটি মাত্র পুত্রের কথাই জানা যায়। তার নাম কিম জু-এই। ২০১৩ সালে তার জন্ম। কিমের অন্য সন্তানদের সম্পর্ক আর কোনও তথ্য মেলে না।
০৭১৯
শোনা যায়, রি-কে একপ্রকার জোর করেই বিয়ে করেছেন কিম। বিবাহে তাঁকে বাধ্য করা হয়। স্বামী নির্বাচনের ক্ষেত্রে পাত্রীর কোনও মতামতই নাকি গ্রহণ করা হয়নি। তাঁদের বিয়ের সময় উত্তর কোরিয়ার শাসক ছিলেন কিমের বাবা কিম জং ইল। তাঁর নির্দেশেই রি-কে বিয়ে করেন কিম।
০৮১৯
কিমকে বিয়ে করার পর যেন রি-এর পুনর্জন্ম হয়। তাঁর পূর্ব জীবনের স্মৃতি ‘মুছে দেওয়া হয়’। রি-কে নতুন নাম নিতে হয়। বিয়ের আগে কিমের স্ত্রীর অন্য একটি নাম ছিল। কী সেই নাম? কেউ তা জানেন না। এমনকি, রি-এর জন্মসালও অজানা। ফলে তাঁর বয়স অনুমান করা যায় না।
০৯১৯
রি কোনও সাধারণ পরিবারের মেয়ে নন। তাঁর বাবা পেশায় অধ্যাপক। মা দেশের এক বিখ্যাত হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক। তাঁদের সম্পদের পরিমাণ কম নয়। কিন্তু অভিযোগ, রি-কে তাঁর নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। মা, বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ বিয়ের পর থেকেই।
১০১৯
পরনের পোশাকের ক্ষেত্রেও রি ‘বন্দি’। প্রথম দিকে তাঁকে জিন্স, টপ এবং পাশ্চাত্যের অনুকরণে নানা আধুনিক ফ্যাশনের পোশাক পরতে দেখা যেত। কিন্তু পরে তাঁর জিন্স পরা নিষিদ্ধ করে দেন কিম। নিজের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক রি পরতে পারেন না। তাঁর জন্য রক্ষণশীল, শরীর ঢাকা পোশাক নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
১১১৯
কিমের স্ত্রীর চুলের স্টাইলও গতে বাঁধা। অভিযোগ, রি-কে নিজের ইচ্ছামতো চুল আঁচড়াতে দেওয়া হয় না। চুল বাঁধার ক্ষেত্রেও তাঁকে ‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম’ নীতি মেনে চলতে হয়।
১২১৯
রি-কে সব সময় কিমের সঙ্গেই দেখা গিয়েছে। একা কখনও উত্তর কোরিয়ার ফার্স্ট লেডিকে দেখা যায় না। সূত্রের দাবি, রি কখন কোথায় যাবেন, কখন বাড়ি থেকে বেরোবেন, তা ঠিক করে দেন কিম। নিজের ইচ্ছায় তিনি কিছু করতে পারেন না। সব অনুষ্ঠানে রি-এর যাওয়ার অনুমতি নেই। তাঁর সন্তানদেরও যেখানে সেখানে বেরোতে দেওয়া হয় না।
১৩১৯
দেশের ফার্স্ট লেডি রি, একনায়কের স্ত্রী। কিন্তু তাঁকে ঘিরে দেশের সংবাদমাধ্যমের যে জনপ্রিয়তা স্বাভাবিক, তা সচরাচর দেখা যায় না। সংবাদমাধ্যমের কেউ রি-এর নাগাল পান না। তাঁকে দেখা গেলেও ছবি তোলার সাহস করেন না কেউ। রি এবং কিমের পরিবারের অন্য সদস্যদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।
১৪১৯
উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিয়ের আগে একাধিক বার রি বিদেশে গিয়েছিলেন। চিয়ারলিডার হিসাবে এক বার দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন তিনি। এমনকি, রি উচ্চশিক্ষার জন্য যান চিনেও।
১৫১৯
কিন্তু কিমকে বিয়ে করার পর রি-এর বিদেশযাত্রায় দাঁড়ি পড়ে গিয়েছে। তিনি দেশের বাইরে আর পা রাখতেই পারেন না। কিমও কখনও স্ত্রীকে নিয়ে দেশের বাইরে যাননি।
১৬১৯
সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি, উত্তর কোরিয়ার কোনও রাজনৈতিক নেতার মৃত্যু হলে শেষকৃত্যে কিমের সঙ্গে থাকেন রি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই সূত্রেই ফার্স্ট লেডি ঘরের বাইরে পা রাখতে পারেন।
১৭১৯
অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কখনও রি-কে চার দেওয়ালের বাইরে বেরোতে দেননি কিম। তিনি যে অন্তঃসত্ত্বা, তা গোপন রাখা হয়েছে বার বার। কাকপক্ষীতেও যাতে তা টের না পায়, সেই বন্দোবস্ত করা হয়েছিল।
১৮১৯
২০০৯ সালে বিয়ের পর ২০১০ সালের শেষ দিকে রি প্রথম সন্তানের জন্ম দেন বলে খবর। তার পর নির্দিষ্ট সময় অন্তর আরও এক সন্তান হয় তাঁর। কিন্তু রি-এর প্রথম দুই সন্তানই ছিল কন্যা। অভিযোগ, পুত্র সন্তানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে সন্তানধারণ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
১৯১৯
কিমের ‘আপন দেশ’-এ যেন চিরবন্দিনী রি। অথচ, কঠোর অনুশাসন সত্ত্বেও তাঁকে যত বার প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছে, রি-এর মুখে লেগে ছিল চওড়া হাসি। বিমর্ষ মুখে প্রকাশ্যে হাঁটাচলা করাও হয়তো তাঁর জন্য নিষিদ্ধ।