Bhupinder Singh: ‘চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে যো দিল কো’র গিটারবাদক ভূপিন্দরের ‘দিল’ জুড়ে বাঙালি মিতালি
১৯৮২ সালে ভূপিন্দরকে বিয়ে করেন মিতালি মুখোপাধ্যায়। দু’জনের রবীন্দ্রনাথের গানের অ্যালবাম বেশ জনপ্রিয় হয়।
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২ ১১:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
ভূপিন্দর সিংহ সঙ্গীতজীবনের শুরুটা করেছিলেন ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ দিল্লিতে। গিটার বাজাতেন। মাঝেমধ্যে গানও গাইতেন। তবে গোড়ার দিকে মূলত যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী হিসাবেই ছিল মূল পরিচিতি।
০২১৯
গজলের প্রতি ভালবাসা একেবারে ছোট থেকে। বই বা খবরের কাগজে প্রকাশিত কবিতা খাতায় টুকে তাতে সুর দিতেন। তার পর সেই গান বন্ধুদের শোনাতেন।
০৩১৯
১৯৬০। সেই সময় বিখ্যাত কবি বাহাদুর শাহ জাফরের জন্মবার্ষিকী পালন করছিল ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’। সে সময়ই কবির লেখা গান গাওয়ার সুযোগ হয় ভূপিন্দরের।
০৪১৯
সেই গান সঙ্গীত পরিচালক মদনমোহনের কানে পৌঁছয়। তিনি ভূপিন্দরকে মুম্বই ডেকে পাঠান। ১৯৬৪ সালে চেতন আনন্দ পরিচালিত ছবি ‘হকিকত’-এ একটি গান গাইতে দেন তিনি।
০৫১৯
ভারত-চিন যুদ্ধের উপর নির্মিত এই ছবিটি জাতীয় পুরস্কারও পায়। সেই ছবির একটি গান ‘হো কে মজবুর মুঝে উসনে ভুলা হোগা’ ভূপিন্দরের কণ্ঠে বেশ জনপ্রিয় হয়।
০৬১৯
তার পর বাকিটা ইতিহাস। সেই ইতিহাসের ছত্রে ছত্রে রয়েছেন এক এক জন জনপ্রিয় পরিচালক আর ভূপিন্দরের অনন্য গায়কী।
এই সব জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালকের সুরের সঙ্গে তাঁর ভারী কণ্ঠে ঈষৎ সানুনাসিক স্বর মিশে তৈরি হয়েছে একের পর এক মনে মোচড় দেওয়া গান।
০৯১৯
সিনেমার জন্য গান গাইলেও কোনও দিন তাঁর ভালবাসার গজলকে কণ্ঠছাড়া হতে দেননি। নিয়মিত গজলের এলপি রেকর্ড প্রকাশিত হত তাঁর।
১০১৯
গায়ক পঙ্কজ উধাস জানিয়েছেন, তাঁরা দু’জনে এক সঙ্গে ২১ বছর ধরে ‘খাজানা’ নামে একটি গজলের উৎসবও পরিচালনা করতেন।
১১১৯
স্বতন্ত্র গলার স্বর এবং গায়কীতে তিনি নিজেকে বলিউডে অন্যান্য গায়কের থেকে নিজেকে আলাদা করেছেন। তাঁর জনপ্রিয় গানগুলির মধ্যে ‘দিল ঢুনডতা হ্যায়’ (মৌসম), ‘থোড়ি সি জমিন থোড়া আসমান’(সিতারা), ‘এক অকেলা ইস শহর মে’ (ঘরোন্দা), ‘নাম গুম যায়ে গা (কিনারা) অন্যতম।
১২১৯
শুধু হিন্দি নয়, অন্যান্য ভাষাতেও তিনি গান গেয়েছেন। বাংলা ছবি ত্রয়ীর গান ‘কবে যে কোথায় কী যে হল ভুল’ আজও মন টানে।
১৩১৯
গানের সঙ্গে সঙ্গে গিটার বাজানোও তাঁর অন্যতম পছন্দের বিষয় ছিল। রাহুল দেব বর্মণের একাধিক গানে গিটার বাজিয়েছেন তিনি।
১৪১৯
পণ্ডিত যশরাজের কন্যা দুর্গা যশরাজ জানিয়েছেন, ‘চুরালিয়া হ্যায় তুমনে যো দিল কো’ গানটির প্রথম থেকে শেষ অবধি গিটার বাজিয়েছেন ভূপিন্দর।
১৫১৯
তাঁর সঙ্গীতজীবনে বাঙালি স্ত্রী মিতালি মুখোপাধ্যায়ও তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেছেন। দু’জনে একের পর পর এক মঞ্চ অনুষ্ঠান করেছেন, অ্যালবাম বের করেছেন।
১৬১৯
মিতালির জন্ম বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। ছোট থেকেই গানের প্রতি ছিল তাঁর টান। ছোট থেকে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে তালিম নেন। সঙ্গীতই একে অপরের কাছে এনে দেয় মিতালি-ভূপিন্দরকে।
১৭১৯
১৯৮২ সালে ‘দুই পয়সার আলতা’ চলচ্চিত্রে ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’ গানে সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান মিতালি। শেষে ১৯৮২ সালে বিয়ে।
১৮১৯
দু’জনের গলার রবীন্দ্রনাথের গানের উপর অ্যালবাম বেশ জনপ্রিয় হয়। এক সঙ্গীত পরিচালক ভূপিন্দর সম্পর্কে বলেছিলেন, যে হেতু উনি গিটার বাজাতে পারদর্শী, তাই খুব সহজে গান তুলে নিতে পারতেন। ভাষা তাঁর কাছে কোনও সমস্যার ছিল না।
১৯১৯
১৯৪০ সালে পঞ্জাবের অমৃতসরে জন্ম হয় ভূপিন্দরের। বাবা ছিলেন শিক্ষক। প্রথম দিকে গান বা বাদ্যযন্ত্র কোনওটাই ভাল লাগত না। তবু বাড়ির চাপের গান শিখতে হত। কখন যে সেই গানকেই ভালবসে ফেললেন ভূপিন্দর! তাঁর সেই সুরেলা সফর শেষ হল সোমবার সন্ধ্যায়। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ভূপিন্দর সিংহ।