চিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, সে দেশে আবার হু-হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বাড়ছে আক্রান্ত এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা। বিশ্ব জুড়ে কোভিড ছড়িয়ে পড়ার পর আঙুল উঠেছিল চিনের দিকেই। আর তা জুড়ে তৈরি হয়েছিল একাধিক বিতর্কও। আর সেই কারণেই এ বার চিন যেন একটু বেশি সতর্ক। যেন আড়াই বছর আগে তৈরি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি তারা আর করতে চাইছে না।
কোভিড যাতে কোনও ভাবেই ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেই লক্ষ্যে দেশ জুড়ে ‘কোভিড-শূন্য নীতি’র পথে হাঁটছে শি জিনপিং সরকার। দেশ জুড়ে কড়া কোভিড বিধির জন্য ঘরবন্দি সে দেশের বহু মানুষ। দৈনন্দিন কাজ করতেও অনুমতি নিতে হচ্ছে মানুষকে। কখনও অনুমতি মিলছে, আবার কখনও স্রেফ ‘না’ বলে ঘরের মধ্যেই থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কেবল কোভিড বিধির কারণেই উরুমকির বহুতলের আগুন নেভানোর কাজে দেরি হয়। কোভিডের কড়া বিধিনিষেধের কারণেই অনেক বাসিন্দা আবাসন ছেড়ে বেরোতে পারেননি বলেও অভিযোগ। যদিও স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রশাসন জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুর সঙ্গে লকডাউন বিধির কোনও সম্পর্ক নেই।
মনে করা হচ্ছে, এই কারণেই জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। টানা প্রেসিডেন্টের পদে বসে জিনপিং-এর প্রভাবকে যেন একটু কম পাত্তা দিতে শুরু করেছেন দেশের মানুষ। আবার অনেকের মতে, সরকারে ফেরত এসে রেকর্ড গড়লেও তাঁর শাসননীতি নিয়ে সাধারণের একাংশের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি ‘ভয়’ও কমতে শুরু করেছে।
১৯৮৭ সালে সংস্কারপন্থী চিনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) সাধারণ সম্পাদক হু ইয়াওবাং-এর মৃত্যুর সাধারণ মানুষ আরও সংগঠিত হন। এর পর ১৯৮৯ সালের এপ্রিলে কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং গণতান্ত্রিক সংস্কার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, সংঘবদ্ধতার স্বাধীনতা, সামাজিক সাম্য, অর্থনৈতিক সংস্কারের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ।
প্রথম দিকে সরকার এই বিক্ষোভকে হালকা ভাবে নিলেও পরে দমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। আর সেই দমননীতি ছিল অত্যন্ত নৃশংস। ১৯৮৯-এর ৪ জুন তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে জড়ো হওয়া প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের উপর ট্যাঙ্ক দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। এই ঘটনা প্রায় হাজারের উপর মানুষ মারা গিয়েছিলেন। আহতও হন হাজারো মানুষ। এই ঘটনা তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের গণহত্যা হিসাবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।
তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে, ইরানে মেয়েদের হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের মতো চিনের সরকার বিরোধী আন্দোলনেরও মূল চালিকাশক্তি দেশের তরুণ-যুবদের দল। যার মধ্যে পড়ুয়াদের সংখ্যাই বেশি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও অসন্তোষের আগুন ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে। চিনের অন্দরে অসন্তোষ শুরু হওয়ায় সে দেশের সরকারের পদক্ষেপ দেখতে বহির্বিশ্ব মুখিয়ে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy