Preparation on way to get A New 3 feet idol of lord Ram for the new Ayodhya temple, stones coming from Nepal dgtl
Ram Mandir
ছ’কোটি বছরের পুরনো শিলায় তৈরি হবে রাম মন্দিরের নতুন মূর্তি! পুরনো বিগ্রহের কী হবে?
নতুন রাম মন্দিরে যেখানে বিগ্রহ বসানো হবে, সেখান থেকে ১৯ ফুটে দূরত্বে দাঁড়াতে পারবেন ভক্তরা। ছোট্ট রামলালার মূর্তিকে সেখান থেকে দেখাই যাবে না।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
ছোট্ট রামলালার মূর্তি ঘিরেই যত কাণ্ড! কিন্তু রামজন্মভূমি অযোধ্যার নতুন মন্দিরে সেই বিগ্রহের দেখা পাবেন না ভক্তরা। বদলে তাঁদের চোখের সামনে থাকবে এক সুঠাম, কৃষ্ণাঙ্গ, পরিণতবয়স্ক রামের মূর্তি।
০২১৯
প্রায় তিন ফুট দীর্ঘ সেই বিগ্রহের জন্য ইতিমধ্যেই নেপাল থেকে অযোধ্যার আনা হচ্ছে বিশেষ শিলাখণ্ড। বুধ কিংবা বৃহস্পতিবারই সেই পাথর পৌঁছে যাওয়ার কথা উত্তরপ্রদেশের রামক্ষেত্রে।
০৩১৯
তবে এই শিলা যেমন তেমন শিলা নয়। হিন্দু শাস্ত্রে যে শালগ্রাম শিলাকে ভগবান বিষ্ণুর প্রতিভূ বলে মানা হয়, সেই শালগ্রাম শিলা দিয়েই তৈরি হবে অযোধ্যার নতুন রাম মন্দিরের নতুন রামের বিগ্রহ।
সম্প্রতি সেই শিলা দু’টি ভারতকে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে নেপাল সরকার এবং নেপালের খনিজ এবং ভূতাত্ত্বিক বিষয়ক মন্ত্রক। চলতি সপ্তাহে সেই শিলা যাচাইও করে এসেছেন রামজন্মভূমি ট্রাস্টের প্রতিনিধি দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক সদস্য।
০৬১৯
২৬ জানুয়ারি পাথর দু’টি সড়ক পথে রওনা হয়েছে নেপাল থেকে। গোটা বিষয়টিই পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের নেতা বিমলেন্দ্র নিধি।
০৭১৯
বিমলেন্দ্র নেপালের জনকপুরের বাসিন্দা। এই জনকপুরকে সীতার জন্মভূমি বলে মনে করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। সেই হিসাবে সীতার জন্মভূমির বাসিন্দার হাত ধরেই রামের মূর্তির পাথর আসছে অযোধ্যায়।
০৮১৯
কিন্তু রামের মূর্তির পাথরের জন্য নেপালের শরণাপন্ন হওয়া কেন? আসলে নেপালের মুক্তি ধামকে ভগবান বিষ্ণুর তীর্থক্ষেত্র বলে মনে করা হয়। সেই মুক্তি ধামেই কালী গণ্ডকীর নদীখাতে পাওয়া যায় শাল গ্রাম শিলা।
০৯১৯
এক সাক্ষাৎকারে বিমলেন্দ্র সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘‘কালী গণ্ডকী নদীতে পাওয়া শিলাকে ভগবান বিষ্ণুর রূপ বলেই মানা হয়। আর ভগবান রাম তো ভগবান বিষ্ণুরই অবতার।’’
১০১৯
নেপালের খনিজ এবং ভূতাত্ত্বিক মন্ত্রক সূত্রে খবর দু’টি শিলাখণ্ডের ওজন ৩৫ টন। বয়স কম করে ৬ কোটি বছর।
১১১৯
রাম জন্মভূমি অছি পর্ষদ হয়তো তা-ই নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রীর মতোই ভেবেছে, রামের মূর্তির জন্য বিষ্ণুর তীর্থ ক্ষেত্র থেকে আনা শালগ্রাম শিলার থেকে ভাল আর কী-ই বা হতে পারে!
১২১৯
কিন্তু পুরনো রামলালার মূর্তির কী হবে? রামলালা যার অর্থ শিশু রাম, তার একটি মূর্তি ১৯৪৯ সালে পাওয়া যায় বাবরির মধ্যবর্তী গম্বুজের নীচে। তার পর থেকেই শুরু নানা বিতর্কের।
১৩১৯
পরে ১৯৮০ সালে অযোধ্যা বিতর্কে আদালতে একটি পক্ষ করা হয় সেই রামলালার মূর্তিকেও। কারণ আদালতে আইনজীবী দাবি করেন, অযোধ্যার বিতর্কিত জমির মালিক আদতে ওই শিশু রামই।
১৪১৯
১৯৮৬ সালে এই শিশুরামের পুজোর জন্য আদালত বিতর্কিত জমির প্রবেশ দ্বার খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
১৫১৯
এরও ৬ বছর নানা বিতর্কের মধ্যে ঘটে যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা। যে বিতর্কে গত ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইতি টানে সুপ্রিম কোর্ট। অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি একটি হিন্দু মন্দির তৈরির জন্য অছি পর্ষদকে দিয়ে অতিরিক্ত ৫ একর জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে মসজিদ তৈরির জন্য দেওয়ার নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।
১৬১৯
২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ভারত সরকার সেই অছি পর্ষদের নামও ঘোষণা করে— শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র। সম্প্রতি সেই অছি কর্তৃপক্ষই রামলালার মূর্তি নিয়ে পড়েন বিষম চিন্তায়।
১৭১৯
আপাতত একটি স্থানান্তরযোগ্য মন্দির তৈরি করে রামলালার পুজো হচ্ছে ঠিকই কিন্তু দিন কয়েক পরে যখন নতুন রাম মন্দিরে বিগ্রহ বসানো হবে, তখন সেখান থেকে ১৯ ফুটে দূরত্বে দাঁড়াতে পারবেন ভক্তরা। ছোট্ট রামলালার মূর্তিকে সেখান থেকে দেখাই যাবে না। ভক্তদের অসুবিধা হবে এই আশঙ্কা থেকেই নতুন মূর্তির সিদ্ধান্ত।
১৮১৯
এর আগেও অছি পর্ষদের কোষাধ্যক্ষ স্বামী গোবিন্দ দেব গিরির তত্ত্বাবধানে নতুন মন্দিরে একটি নতুন মূর্তি তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। তিনি ঠিক করেন শিশু রামেরই একটি তিন ফুটের মূর্তি মন্দিরের গর্ভগৃহে একটি মঞ্চ তৈরি করে তার উপর রাখা হবে। এর মধ্যেই এল নতুন রামমূর্তি তৈরির খবর। শ্রী রামজন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের সিদ্ধান্ত, মন্দিরে রামলালা তো থাকবেই। তবে তার পাশাপাশি ওই নতুন বিগ্রহও থাকবে।
১৯১৯
রামজন্মভূমি সূত্রে খবর, নেপাল থেকে আসা শালগ্রাম শিলার দু’টি খণ্ড দিয়ে রাম এবং সীতা দু’টি বিগ্রহই তৈরি করা যাবে। ফলে ভক্তরা একসঙ্গে সীতা-রামের দর্শন পাবেন অযোধ্যায় এলে। তবে অলক্ষ্যেই থাকবেন রামলালা।