Police found the missing cell phone of Ayan Mandal on Sunday when Ayans girlfriend claimed may some offensive photos have to this phone dgtl
Haridevpur Murder Case
বান্ধবী, মায়ের ‘আপত্তিকর’ ছবি কি অয়নের মোবাইলে? তা দেখিয়েই ব্ল্যাকমেল? তদন্তে পুলিশ
পুলিশি সূত্রে খবর, অয়নের বান্ধবী দাবি করেছিলেন, অয়নের ফোনে ‘আপত্তিকর’ ছবি রয়েছে। তাঁর দাবি কতটা সঠিক, তা ফোনটি পরীক্ষা করে দেখার পরেই বলা সম্ভব বলে মত তদন্তকারীদের।
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২২ ১৩:০৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
হরিদেবপুর-কাণ্ডে রহস্যের কিনারা করতে মৃত অয়ন মণ্ডলের ফোনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার পরে শনিবার রাত পর্যন্ত সেই ফোনের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
০২২০
ফোনে বান্ধবী এবং তাঁর মায়ের ‘আপত্তিকর’ কোনও ছবি ছিল কি না, সে দিকেই আপাতত নজর তদন্তকারীদের। ‘আপত্তিকর’ ছবি দেখিয়ে অয়ন ক্রমাগত ব্ল্যাকমেল করতেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
০৩২০
পুলিশ সূত্রে খবর, অয়নের বান্ধবী দাবি করেছিলেন, অয়নের ফোনে ‘আপত্তিকর’ ছবি রয়েছে। তাঁর দাবি কতটা সঠিক, তা ফোনটি পরীক্ষা করে দেখার পরেই বলা সম্ভব বলে মত তদন্তকারীদের।
০৪২০
শুধু ‘আপত্তিকর’ কোনও ছবি বা ভিডিয়োই নয়, অয়ন ‘খুন’ হওয়ার আগে এবং পরে ওই ফোন থেকে কাদের ফোন করা হয়েছিল, কারা অয়নকে ফোন করেছিলেন, তারও তথ্যপ্রমাণ মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
০৫২০
প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, অয়নের বান্ধবীর নির্মীয়মাণ বাড়ির দোতলায় অয়নকে খুন করা হয়। তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার জন্য দোতলার বিশেষ জায়গাটি জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছিল।
০৬২০
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তের কোনও দাগ পাননি। রক্তের দাগ থেকে থাকলেও তা আগেই ধুয়ে ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
০৭২০
অয়নের বন্ধু রাজু প্রামাণিক ওরফে টাবলু দাবি করেন, খুন হওয়ার আগে তাঁকে ফোন করে কাঁদো কাঁদো গলায় অয়ন জানিয়েছিলেন, বান্ধবীর মা বুকে ঘুষি মেরেছে, ব্যথা করছে।
০৮২০
রাজুর আরও দাবি, বান্ধবীর মা-ই ডেকে পাঠিয়েছিলেন অয়নকে। রাজুর কথায়, ‘‘বান্ধবীর মা ডেকে পাঠানোয় দশমীর দিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অয়ন বান্ধবীর বাড়িতে পৌঁছয়। যাওয়ার আগে আমাকে দায়িত্ব দিয়ে যায় বান্ধবীর বাবা বাড়ির দিকে আসছে কি না, তা দেখে জানানোর। এর পর বান্ধবীর বাড়ি থেকে বার বার আমাকে ফোন করেছিল অয়ন।’’
০৯২০
রাজু বলেন, ‘‘আমাকে পাহারা দিতে বলে অয়ন ওর বান্ধবীর বাড়িতে গিয়েছিল। মাঝেমাঝেই আমাকে ফোন করে জানছিল, বান্ধবীর বাবা বাড়ির দিকে আসছে কি না। রাত দেড়টা নাগাদ ফোন করে অয়ন বলে, ‘ওর (বান্ধবীর) মা বুকে ঘুষি মেরেছে। বুকে ব্যথা করছে।’’’
১০২০
রাজু আরও বলেন যে, “অয়নের বান্ধবীর বাবা বাড়ি ফিরে এলে ও বাড়িতেই আটকে যায়। বাড়ির ছাদে উঠে যায়। বান্ধবীর বাড়ির ছাদ থেকে ও আমাকে হাতও নাড়ে। ৩টের পর আমার সঙ্গে ওর শেষ বার ফোনে কথা হয়।’’
১১২০
রাজু জানিয়েছেন, এর পর সব বন্ধু মিলে বান্ধবীর বাড়ি থেকে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার কথা বললে অয়ন আসতে বারণ করেন। এর পর রাজু ঘুমিয়ে যান। পরের দিন সকালে অয়নের নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে তিনি অয়নের বাড়িতে পৌঁছন। গিয়ে দেখেন অয়নের বান্ধবীও সেখানে উপস্থিত।
১২২০
অয়নের বান্ধবী তখন দাবি করেছিলেন যে, রাত আড়াইটে নাগাদ অয়ন তাঁদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাজুর দাবি, তিনি তখনই বুঝেছিলেন যে, অয়নের খারাপ কিছু হয়েছে। রাজুর আফসোস, ‘‘ওই সময় বন্ধুদের নিয়ে সদলবলে অয়নকে উদ্ধার করতে গেলে এমন ঘটনা ঘটত না।’’
১৩২০
রাজুর দাবির পর এই প্রশ্নও উঠছে যে, এত ক্ষণ বান্ধবীর বাড়িতে কী করছিলেন অয়ন? প্রসঙ্গত, ত্রিকোণ সম্পর্কের জেরেই ছেলে খুন হয়েছে বলে অয়নের বাবা দাবি করেছেন। একই দাবি রাজুরও। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এল ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত ফোনে বন্দি করার তত্ত্ব। যা নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
১৪২০
অয়নের বাবা সংবাদমাধ্যমের সামনে আগেই বলেছিলেন, “মা এবং মেয়ে দু’জনেই তাঁর ছেলেকে ভালবাসত। একটাই তো ছেলে। সে আর কী করবে?”
১৫২০
পাশাপাশি, দশমীর দিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অয়ন বান্ধবীর বাড়িতে পৌঁছেছিলেন দাবি করলেও পুলিশের দাবি, অয়ন সেখানে পৌঁছন রাত ১১টা নাগাদ। পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, দশমীর রাতে বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান অয়ন।
১৬২০
সেখানে মত্ত অবস্থায় তিনি বান্ধবীর হরিদেবপুরের নতুনপল্লির বাড়িতে পৌঁছে বান্ধবী এবং তাঁর মা রুমাকে হেনস্থা করেন। এমনই উল্লেখ রয়েছে পুলিশি রিপোর্টে। কিন্তু অয়নের মায়ের দাবি, তাঁদের বাড়ি গিয়ে অয়নের বান্ধবী দাবি করেন, রাতে নেশা করেননি অয়ন। পুলিশি রিপোর্টে বলা হয়েছে, দিদি এবং মাকে হেনস্থা হতে দেখে বান্ধবীরই কিশোর ভাই ইট জাতীয় কোনও ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে অয়নকে খুন করে। পরে বান্ধবীর বাবা দীপক ঘটনাস্থলে পৌঁছন।
১৭২০
অয়নের বান্ধবীর ভাইদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অয়নের মৃতদেহ পাচার করার জন্য ভাড়া করা হয় একটি পণ্যবাহী গাড়ি। এর পরই মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে মগরাহাটের করিমাবাদে ফেলে দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকেই পুলিশ অয়নের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
১৮২০
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতেই নিহত অয়নের বান্ধবী, তাঁর মা রুমা জানা এবং ভাইকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার সকালে গ্রেফতার করা হয় বান্ধবীর বাবা দীপক জানা, বান্ধবীর ভাইয়ের এক বন্ধু এবং পণ্যবাহী গাড়ির চালককে। শনিবার বেলায় অয়নের বান্ধবীর ভাইয়ের আরও এক বন্ধুকে ওড়িশার জাজপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের পাশাপাশি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
১৯২০
এর মধ্যে অয়নের মা দাবি করেন, তাঁদের বাড়ি এসে অয়নের বান্ধবী দাবি করেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা। অয়নের বান্ধবীর ব্যবহারে কিছু অস্বাভাবিকতাও লক্ষ্য করেছিলেন বলে দাবি করেন অয়নের মা।
২০২০
পুলিশ সূত্রে খবর, অয়নের মা যে দাবি করেছেন, তা তদন্ত করে দেখা হবে। সব মিলিয়ে, অয়ন-মৃত্যুরহস্য ক্রমেই জটিল হচ্ছে। পরতে পরতে উঠে আসছে দাবি-পাল্টা দাবি।