অবশেষে নিউ ব্রুনসউইক এলাকায় তাঁরা স্থায়ী ভাবে থাকতে শুরু করেন। পরে পলিন পড়াশোনার জন্য আলাদা থাকতে শুরু করেন। ২৩ বছর বয়সে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পর পলিন সেন্ট জন সিটির স্থানীয় এক সংবাদপত্রে চাকরি পান। ঠিক তখনই রুথ তাঁর মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে চান। অতীতের সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলে পলিনও দেখা করতে রাজি হন।
রুথ বলতে শুরু করেন, ছোটবেলা থেকেই বাইরের কিছু লোক তাঁদের উপর নজর রাখত। প্রাণহানিরও আশঙ্কা ছিল। তাই বার বার নিজেদের ঠিকানা বদলাতেন রুথ। এর জন্যে দায়ী তাঁর প্রাক্তন স্বামী ওয়ারেন। তিনি মাফিয়া দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন স্ট্যানও। তাঁর কাছে এক জন মাফিয়া দলের লোক চিকিৎসা করানোর জন্য আসেন।
অনেক সময় এ রকমও হয়েছে, রুথকে ফ্রিজের ভেতর থেকে সব খাবার ফেলে দিতে দেখেছেন পলিন। রুথ বলতেন, খাবারগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে তিনি ফেলে দিচ্ছেন, কিন্তু আসল কারণ ছিল অন্য। খাবারের মধ্যে বিষ মেশানো থাকতে পারে কি না, সেই ভয়েই সব খাবার ফেলে দিতেন রুথ। এমনকি, পলিন এবং তাঁর ভাই টেডি স্কুল থেকে ফেরার পর তাদের ভাল করে পা পরিষ্কার করে মোজার উপর প্লাস্টিক ব্যাগ পরে থাকতে বলতেন।
কিন্তু পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, রুথ ও স্ট্যানকেও সন্দেহ করতে থাকেন পলিন। তাঁদের আচরণ অস্বাভাবিক লাগতে শুরু করে পলিনের। তাই তিনি এক অদ্ভুত ফন্দি আঁটেন। পলিনের বাড়িতে কয়েক জন হামলা করে জিনিসপত্র ঘেঁটেছে বলে জানান রুথকে। স্ট্যান ও রুথ কিছু ক্ষণ পরে পলিনকে জানান, তাঁকে বহু দিন ধরেই অনুসরণ করা হচ্ছে, এমনকি পলিনের ফোটোও তুলে রাখা হয়েছে। ‘মর্স কোড’ পড়ে নাকি সব তথ্য জানতে পেরেছেন স্ট্যান।
একটি মনগড়া কাহিনিকেও সত্যি বলে প্রমাণ করতে চাইছেন তাঁরা? তবে কি এত দিন পলিন মিথ্যে নিয়ে বেঁচেছিলেন? প্রশ্নের ভারে জর্জরিত পলিন শেষে স্ট্যানের ব্যাপারে খোঁজ নিতে শুরু করেন। সমাজের সকলেই স্ট্যানকে সম্মান করেন। কিন্তু একটি অদ্ভুত রোগ রয়েছে তাঁর। নিজের ইচ্ছে মতো অবাস্তব জগৎ তৈরি করে বেঁচে থাকেন তিনি। স্ট্যানের সঙ্গে থাকতে থাকতে এই মানসিক ভ্রম রুথের মধ্যেও দেখা দিয়েছিল।
স্ট্যান যা বলতেন, রুথও সেটাকেই বাস্তব বলে মেনে নিতেন। স্ট্যান অবশ্য বেশি দিন বেঁচে থাকেননি। ক্যান্সার ধরা পড়ায় রুথও শেষ জীবনে পলিনের কাছে এসে থাকেন। ওয়ারেনের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন পলিন, ভেবেছিলেন তাঁকে সব জানাবেন। কিন্তু তিনি আবার মদ্যপান শুরু করেছিলেন, এম্ফিসেমা রোগেও ভুগছিলেন ওয়ারেন। তাই পলিন তাঁকে আর কিছু বলেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy