Papua New Guinea visit of Indian PM Narendra Modi is more important than Japan and Australia dgtl
PM Modi Papua New Guinea Visit
চিনকে রুখতে সাগরপাড়ি? জাপান, অস্ট্রেলিয়ার চেয়েও কেন একটি দ্বীপ মোদীর কাছে বেশি জরুরি?
প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে অন্যতম বৃহৎ দ্বীপ পাপুয়া নিউ গিনি। অস্ট্রেলিয়া থেকে ২৩৬৯ কিমি উত্তর পূর্বের এই দ্বীপরাষ্ট্রই মোদীর এ বারের বিদেশ সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৩ ১২:১৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
দীর্ঘ দিন পর বিদেশ সফরে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গন্তব্যের তালিকায় রয়েছে তিন তিনটি দেশ। তিন ক্ষেত্রেই মোদীর সফরকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
০২১৮
সফরের শুরুতেই জাপানে গিয়েছিলেন মোদী। তাঁর এই বিদেশ সফর শেষ হবে অস্ট্রেলিয়াতে। এই দুইয়ের মাঝে মোদীর ভ্রমণের তালিকায় আছে একটি দ্বীপরাষ্ট্র, যা আলাদা করে আকর্ষণের কেন্দ্রে।
০৩১৮
প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে অন্যতম বৃহৎ দ্বীপ পাপুয়া নিউ গিনি। অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে ২ হাজার ৩৬৯ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বের এই দ্বীপরাষ্ট্রই মোদীর এ বারের বিদেশ সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
০৪১৮
পাপুয়া নিউ গিনি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির মধ্যে সবচেয়ে জনবহুল। এই দ্বীপটি খনিজ সম্পদের দিক থেকেও অত্যন্ত সমৃদ্ধ। যে কারণে দ্বীপ হলেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় পাপুয়া নিউ গিনির আধিপত্য রয়েছে।
০৫১৮
এই দ্বীপে মোদীর পা রাখাকে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক চাল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পাপুয়া নিউ গিনির গুরুত্ব কম নয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দ্বীপটি অবহেলিত হয়।
০৬১৮
পাপুয়া নিউ গিনিতে প্রচুর পরিমাণে সোনা এবং তামার খনি রয়েছে। আমেরিকার নজর এড়িয়ে গেলেও এই দ্বীপকে গত কয়েক বছর ধরে পাখির চোখ করেছে চিন।
০৭১৮
দ্বীপটিকে কেন্দ্র করে বেজিংয়ের পরিকল্পনায় বাদ সাধতেই কি সেখানে পা রেখেছেন মোদী? অনেকে তা-ই মনে করছেন। সেই কারণেই এই সফর আলাদা মাত্রা পেয়েছে।
০৮১৮
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সহযোগিতা সম্মেলনে যোগ দিতে পাপুয়া নিউ গিনিতে গিয়েছেন মোদী। রাজধানী পোর্ট মোরেসবিতে আয়োজিত এই সম্মেলনে প্রশান্ত মহাসাগরের আরও ১৪টি দ্বীপরাষ্ট্র যোগ দেবে।
০৯১৮
সম্মেলনের পর মোদী এবং পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। সেখানে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও উন্নত করার বিষয়ে আলোচনা করবেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান।
১০১৮
এর আগে গত নভেম্বরে মারাপের সঙ্গে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সাক্ষাৎ হয়েছিল। ব্যাঙ্ককের সেই সাক্ষাতে জিনপিং দাবি করেছিলেন, চিন এবং পাপুয়া নিউ গিনি ‘ভাল বন্ধু, ভাল সহকারী এবং পরস্পরের ভাই’। দুই দেশের সম্পর্কের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল তখনই।
১১১৮
পাপুয়া নিউ গিনিতে নতুন ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড কোঅপারেশন’ প্রকল্প চালু করার বিষয়ে বেজিং আগ্রহী, জানিয়েছিলেন জিনপিং। এ ছাড়া, দ্বীপরাষ্ট্রটিতে কৃষি, মৎস্যচাষ, অর্থনীতি এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে চিন আগ্রহ প্রকাশ করেছিল।
১২১৮
পাপুয়া নিউ গিনিতে চিনের এই তৎপরতার মাঝেই কিন্তু দ্বীপরাষ্ট্রে সফর বাতিল করেছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভারত আমেরিকার মিত্র রাষ্ট্র। ভারতের তরফে মোদী সেখানে যাওয়ায় তা আমেরিকার পক্ষে লাভজনক হতে পারে।
১৩১৮
এর আগে ২০১৬ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় পাপুয়া নিউ গিনিতে গিয়েছিলেন। তার আগে এবং পরে ভারতের রণতরী এই দ্বীপরাষ্ট্রের মাটি ছুঁয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী গেলেন এই প্রথম।
১৪১৮
প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় দ্বীপরাষ্ট্রটিকে ঘিরে চিনের তৎপরতা সম্প্রতি পশ্চিমের দেশগুলি বিশেষত আমেরিকার কাছে যেন অ্যালার্ম ঘড়ির মতো কাজ করেছে। ওই দ্বীপে প্রভাব বিস্তার করতে পারলে প্রশান্ত মহাসাগরে তো বটেই, সেই সঙ্গে দক্ষিণ চিন সাগরের কূটনীতিতেও অনেকটা এগিয়ে থাকা যাবে।
১৫১৮
ভারতের এক প্রাক্তন কূটনীতিবিদের মতে, আমেরিকা, ভারত কিংবা পশ্চিমের দেশগুলির অনুপস্থিতি, অবহেলা প্রশান্ত মহাসাগরে চিনকে খোলা মাঠে গোল দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল। দেরিতে হলেও সে কথা বুঝতে পেরেছেন রাষ্ট্রনেতারা।
১৬১৮
চিন পাপুয়া নিউ গিনিতে সামরিক তৎপরতাও শুরু করে ফেলেছে বলে দাবি ওই কূটনীতিবিদের। অর্থাৎ, প্রশান্ত মহাসাগরে চেনা ছন্দেই এগোচ্ছে বেজিং। তাদের সেই ছন্দ এলোমেলো করতেই কি মোদীর যাত্রা?
১৭১৮
ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্য উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী। রবিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা নাগাদ মোদী সেখানে পা রাখেন। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান মারাপে। এমনকি, ভারতীয় কায়দায় মোদীর পা ছুঁয়ে প্রণামও করেন তিনি।
১৮১৮
পাপুয়া নিউ গিনি থেকে অস্ট্রেলিয়া যাবেন মোদী। সেখান থেকে দেশে ফিরবেন। তাঁর বিদেশযাত্রা ফলপ্রসূ হবে কি না, সেই উত্তর লুকিয়ে সময়ের গর্ভে।