Over 42000 crore of unclaimed money deposits in Indian banks dgtl
Unclaimed Deposit
দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে পড়ে রয়েছে দাবিদারহীন ৪২ হাজার কোটি! কী ভাবে পাওয়া যাবে সেই টাকা?
গত অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে দাবিদারহীন আমানতের পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ৯৩৪ কোটি। এক বছরে যা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৪ ০৮:২২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
দাবিদার নেই এমন ৪২ হাজার ২৭২ কোটি টাকা জমা রয়েছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমন তথ্যই উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক সূত্রে।
০২১৭
দাবিদারহীন সেই বিপুল অর্থের মধ্যে ৩৬ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির হাতে এবং ৬,০৮৭ কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির হাতে জমা রয়েছে।
০৩১৭
২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষের শেষে, দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে দাবিহীন আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭,৭৮৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪২ হাজার ২৭২ কোটি টাকা হয়েছে বলে জানাচ্ছে অর্থ মন্ত্রকের নথি। অর্থাৎ, গত পাঁচ বছরে প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির হাতে থাকা দাবিদারহীন আমানতের পরিমাণ।
০৪১৭
গত অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে দাবিদারহীন আমানতের পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ৯৩৪ কোটি। এক বছরে যা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
০৫১৭
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)-র নিয়ম অনুযায়ী, যে সব সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা থাকা টাকায় ১০ বছর ধরে হাত পড়েনি বা মেয়াদপূর্তির তারিখ থেকে ১০ বছরের মধ্যে দাবি করা হয়নি, এমন মেয়াদf আমানতগুলি (ফিক্সড ডিপোসিট)-কে ‘আনক্লেমড ডিপোজ়িট’ বা দাবিহীন আমানত হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
০৬১৭
শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক নয়, বিদেশি ব্যাঙ্ক, গ্রামীণ ব্যাঙ্ক, সমবায় ব্যাঙ্কের হাতে থাকা দাবিহীন টাকার হিসাবও রাখে আরবিআই।
০৭১৭
সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ় ১৮’-এর প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, অর্থ মন্ত্রকের নথি বলছে, ২০০০ সালের হিসাবে ভারতের সমস্ত ব্যাঙ্কের কাছে দাবিদারহীন টাকার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৩৫ কোটি টাকা। ২০০২ সালের শেষে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৬৮০ কোটি টাকা। কয়েক বছর বাদে সেই অঙ্ক ধারাবাহিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
০৮১৭
১৯৯৯ সালে, দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)’-এর হাতে দাবিহীন ১৪৪.২৬ কোটি টাকা ছিল। ২০১৩ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১,৪৬৯.৯৯ কোটি টাকা।
০৯১৭
২০১৮ সালে সেই টাকার পরিমাণ আরও বে়ড়ে হয় ২,১৫৬ কোটি টাকা। ২০২০ সালে হয় ৩,৫৭৭ কোটি টাকা।
১০১৭
২০২৩ সালে এসবিআইয়ের হাতে দাবিদারহীন অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮,০৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ দু’দশকের ব্যবধানে এসবিআইয়ে গচ্ছিত দাবিহীন আমানত প্রায় ৫৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
১১১৭
অন্য দিকে, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির হিসাব বলছে, ২০০০ সালে সেই ব্যাঙ্কগুলির হাতে এমন ৪০১.৯৪ কোটি টাকা ছিল, যার কোনও দাবিদার ছিল না। ২০১১ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১৯৪৪.৫২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে তা হয় ৯,০১৯ কোটি। ২০২৩ সালে সেই পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫,০১২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
১২১৭
অর্থাৎ, গত দু’দশকে, ভারতের ব্যাঙ্কগুলিতে দাবিহীন আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৯০ গুণ।
১৩১৭
কেন সেই হাজার হাজার কোটি টাকার কোনও দাবিদার নেই? আরবিআই জানাচ্ছে, গ্রাহকের মৃত্যু বা তাঁর এক দেশ থেকে অন্য দেশে চলে যাওয়া, পারিবারিক বিরোধ বা আইনি জটিলতার কারণে ওই টাকার কোনও দাবিদার নেই। কিছু ক্ষেত্রে অন্য কারণও রয়েছে।
১৪১৭
আরবিআই আরও জানিয়েছে, মূলত সেভিংস এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্ট বন্ধ না করার কারণে দাবিহীন আমানতের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
১৫১৭
মৃত গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেও নমিনি বা উত্তরাধিকারীরা দাবি না করায় অনেক দাবিহীন টাকা জমেছে ব্যাঙ্কগুলির কাছে।
১৬১৭
প্রতি বছর এই দাবিদারহীন অ্যাকাউন্টগুলির তালিকা আরবিআইকে জমা দেয় ব্যাঙ্কগুলি। এর পর সেই আমানত ‘ডিপোজিটর এডুকেশন অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস (ডিইএ) ফান্ড স্কিম’ তহবিলে স্থানান্তরিত হয়। যার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকে আরবিআই।
১৭১৭
তবে যে কোনও গ্রাহক বা তাঁদের আইনি উত্তরাধিকারীরা চাইলেই উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে সেই টাকা তুলতে পারবেন। উপযুক্ত সুদও পাবেন।