Operation Dost: How india did rescue operation in Turkey and Syria after earthquake, PM Narendra Modi tweets dgtl
Operation Dost
কেউ সন্তান ফেলে গিয়েছেন, কেউ হয়েছেন ‘বাবা’! তুরস্কে বন্ধুত্বের নিশান ওড়াল ‘অপারেশন দোস্ত’
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। ‘অপারেশন দোস্ত’ দলের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই ভিডিয়ো টুইট করেছেন তিনি।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
বিপদের সময় যে বন্ধু পাশে দাঁড়ায়, সে-ই তো প্রকৃত বন্ধু। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়ে সেই প্রকৃত বন্ধুত্বেরই পরিচয় দিয়েছে ভারত। এমনটাই বলেছেন সে দেশের মানুষ। বিপদের সময় তুরস্ক এবং সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে ভারত যে ভাবে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে, তাতে মানবতার জয় হয়েছে। আর দেশের উদ্ধারকারী দলের এ হেন ভূমিকায় আপ্লুত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ছবি সংগৃহীত।
০২১৬
গত ৬ ফেব্রুয়ারি। সে দিন ভোরে বড়সড় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক। কম্পন অনুভূত হয় সিরিয়াতেও। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৮। ভয়াল ভূমিকম্পে দুই দেশ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। দু’দেশ মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার পার করেছে। চারদিকে শুধুই ধ্বংসের ছবি। এমন বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভারত।
ছবি সংগৃহীত।
০৩১৬
যাত্রা শুরু হয় ‘অপারেশন দোস্ত’-এর। ভারতীয় সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ৬ টন ত্রাণসামগ্রী, জীবনদায়ী ওষুধ পাঠায় ভারত সরকার। সেই সঙ্গে পাঠানো হয় উদ্ধারকারী দলকে। উদ্ধারকারী বাহিনীতে ছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-এর ৩টি দল। এ ছাড়াও ছিল ডগ স্কোয়াড।
ছবি সংগৃহীত।
০৪১৬
কম্পন বিধ্বস্ত তুরস্কে গিয়ে কী ভাবে উদ্ধারে হাত লাগিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী? সেই অভিজ্ঞতার কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভাগ করে নিয়েছেন ‘অপারেশন দোস্ত’-এর সদস্যরা। সোমবার ‘অপারেশন দোস্ত’ দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁদের সেই অভিজ্ঞতার কাহিনি নিজেই টুইট করে জানিয়েছেন মোদী।
ছবি সংগৃহীত।
০৫১৬
মোদীর টুইট করা ভিডিয়োতে ‘অপারেশন দোস্ত’-এর সদস্যরা নিজেদের নানা অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন। তেমনই এক অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করেছেন এনডিআরএফের এক কমান্ডিং অফিসার। তিনি বলেছেন, ‘‘তুরস্কে উদ্ধারকাজের তদারকি করছিলাম। সেই সময় এক রোগীর আত্মীয় আমায় দেখে বুঝতে পারেন যে আমি কমান্ডিং অফিসার। তার পর আমার হাত ধরে তাঁর চোখ স্পর্শ করেন। তার পর হাতে চুম্বন করেন।’’
ছবি সংগৃহীত।
০৬১৬
তুরস্কের যুবকের এই ব্যবহারে আপ্লুত হয়ে যান ভারতের কমান্ডিং অফিসার। তাঁর সংযোজন, ‘‘ওই যুবক বলেন, ‘আপনি আমার বাবার মতো। আমি এই প্রজন্মের। আপনাকে এটা বলতে পারি যে, আমাদের দেশের আগামী প্রজন্মও আপনাদের দেশের অবদানের কথা মনে রাখবে।’’
ছবি সংগৃহীত।
০৭১৬
কমান্ডিং অফিসারের মুখে এ কথা শুনে মুগ্ধ হন প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় বাহিনী যে ভাবে কম্পন বিধ্বস্ত তুরস্ক এবং সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে, তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘আজ গোটা বিশ্ব ভারতের প্রতি ভাল মনোভাব দেখায়।’’
ছবি সংগৃহীত।
০৮১৬
‘অপারেশন দোস্ত’ দলে ছিলেন মহিলারাও। তুরস্কে বিপর্যয়ে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিলেন তিনি। সেই উদ্ধারকাজ করতে গিয়ে তিনিও এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘তুরস্কের এক মহিলা আমায় বলেন, আমাদের কাছে সবার প্রথমে রয়েছেন আল্লা। এখন থেকে দ্বিতীয় জায়গায় থাকবেন আপনি।’’
ছবি সংগৃহীত।
০৯১৬
ভূমিকম্পের পর তুরস্কে বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। যে দিকে চোখ যায়, শুধুই ধ্বংসস্তূপ। চারদিকে কান্নার রোল। এই পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। আর সেই কাজ করতে গিয়ে তাঁরাও যে আবেগপ্রবণ হয়েছেন, সে কথাও তুলে ধরেছেন ‘অপারেশন দোস্ত’-এর সদস্যরা। ভারতীয় বাহিনীকে কাছে পেয়ে তুরস্কবাসী যে আপ্লুত, সে কথাও ধরা পড়েছে তাঁদের কাহিনিতে।
ছবি সংগৃহীত।
১০১৬
‘অপারেশন দোস্ত’ দলে ছিল ডগ স্কোয়াডও। উদ্ধারকাজে ভারতের সারমেয় বাহিনীও ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তুরস্কে ঠান্ডা বেশি। ফলে সেই পরিবেশের সঙ্গে ভারতের কুকুররা খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছিল কি না, তাদের স্বাস্থ্য কেমন রয়েছে, এ নিয়ে জানতে চান মোদী। আধিকারিকরা জানান যে, কুকুররা ভাল কাজ করেছে। তাদের স্বাস্থ্যও ভাল রয়েছে।
ছবি সংগৃহীত।
১১১৬
এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা জুলিকে (এনডিআরএফের ডগ স্কোয়াডের সারমেয়) ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছিলাম। সেখানে যে জীবিত কেউ রয়েছেন, তার ইঙ্গিত দেয় ও। জুলি সঠিক ইঙ্গিত দিয়েছে কি না, তা যাচাই করার জন্য রোমিওকে (এনডিআরএফের ডগ স্কোয়াডের সারমেয়) পাঠিয়েছিলাম। রোমিও তা নিশ্চিত করে। এ ভাবে আমরা উদ্ধার কাজ করেছি।’’ অন্য এক আধিকারিক বলেন, ‘‘৮০-১০৪ ঘণ্টা পর আমরা দুই শিশুকন্যাকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করেছিলাম।’’
ছবি সংগৃহীত।
১২১৬
‘অপারেশন দোস্ত’ দলে ছিলেন ভারতীয় সেনার চিকিৎসকরাও। ১২ দিন ধরে ওই দল তুরস্কে ৩৫০০ জনেরও বেশি রোগীর চিকিৎসা করেছে। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কে চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিচালনা করতে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন ভারতীয় সেনার মেজর বীণা তিওয়ারি।
ছবি সংগৃহীত।
১৩১৬
তাঁর কথায়, কম্পনে বিপর্যস্ত তুরস্কে অস্থায়ী ভাবে চিকিৎসা শিবির তৈরি করার কাজ কঠিন ছিল। শেষে ইস্কান্ডেরানে স্থানীয় হাসপাতালের কাছে একটি বাড়িতে সেই শিবির করা হয়। বীণাকে আলিঙ্গন করছেন তুরস্কের এক মহিলা— এমন এক ছবি ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। যদিও সেই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
ছবি সংগৃহীত।
১৪১৬
‘অপারেশন দোস্ত’-এর এক মহিলা সদস্য শিশুসন্তানকে ছেড়ে তুরস্ক পাড়ি দিয়েছিলেন। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘শুনেছি, আপনাদের মধ্যে কেউ এক জন নিজের শিশুসন্তানকে রেখে তুরস্ক গিয়েছিলেন?’’ যা শুনে সেই মহিলা সদস্য ঘাড় নেড়ে জবাব দেন। মোদী বলেন, ‘‘এটা দেশের জন্য একটা প্রেরণা।’’
ছবি সংগৃহীত।
১৫১৬
ভারতীয় উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের সঙ্গে খুনসুটিও করতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। হাসতে হাসতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আপনাদের অনেকে তো প্রথম বার বিদেশ গেলেন। প্রথম বার পাসপোর্টও বানালেন।’’
ছবি সংগৃহীত।
১৬১৬
ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্কের পাশে দাঁড়ানোয় নয়াদিল্লিকে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়েছে সে দেশ। ভারতে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ফিরাত সুনেল বলেছেন, ‘‘বিপদের সময় এক জন প্রকৃত বন্ধুই পাশে দাঁড়ায়।’’ আর ‘অপারেশন দোস্ত’-এর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মোদী বললেন, ‘‘অপারেশন দোস্ত মানবতার প্রতি ভারতের সমর্পণ। সঙ্কটজনক দেশের পাশে দাঁড়ানোর এক অঙ্গীকার। যেখানে আমরা তেরঙা নিয়ে যাব, সেখানে এই আশ্বাস মিলবে যে ভারতীয় বাহিনী পৌঁছে গিয়েছে মানে সব ভাল হবে।’’