Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Cinema Para

কোথাও শপিং মল তো কোনওটি পরিত্যক্ত! রাধা, দর্পণার স্মৃতি সম্বল হাতিবাগানের ‘সিনেমাপাড়া’র

এক সময় যেখানে সিনেমার টিকিটের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত মানুষ, এখন সেখানে মানুষের ভিড় হয় উৎসবের কেনাকাটা করার জন্য।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১১
Share: Save:
০১ ২০
পুরনো কলকাতার ইতিহাসের এক অনন্য নিদর্শন উত্তর কলকাতার হাতিবাগান এলাকা। পলাশির যুদ্ধ থেকে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বা সিনেমা হলে দর্শকের ভিড়, হাতিবাগানের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

পুরনো কলকাতার ইতিহাসের এক অনন্য নিদর্শন উত্তর কলকাতার হাতিবাগান এলাকা। পলাশির যুদ্ধ থেকে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বা সিনেমা হলে দর্শকের ভিড়, হাতিবাগানের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

০২ ২০
ইতিহাসে দু’টি ঘটনা থেকে জানা যায় এই এলাকার নাম ‘হাতিবাগান’ কেন, সে বিষয়ে। প্রথমটি হল— ইংরেজদের দখল থেকে কলকাতাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলার তৎকালীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ফোর্ট উইলিয়াম আক্রমণ করার জন্য হস্তিবাহিনী নিয়ে এই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। তার পর থেকে এলাকার নাম ‘হাতিবাগান’ রাখা হয়।

ইতিহাসে দু’টি ঘটনা থেকে জানা যায় এই এলাকার নাম ‘হাতিবাগান’ কেন, সে বিষয়ে। প্রথমটি হল— ইংরেজদের দখল থেকে কলকাতাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলার তৎকালীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ফোর্ট উইলিয়াম আক্রমণ করার জন্য হস্তিবাহিনী নিয়ে এই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। তার পর থেকে এলাকার নাম ‘হাতিবাগান’ রাখা হয়।

ছবি সংগৃহীত।

০৩ ২০
দ্বিতীয় কারণটি খুবই সাধারণ। কেউ বলে এক ধনী ব্যক্তি, যাঁর পদবি ছিল হাতি, তিনি বাগানবাড়ি বানিয়েছিলেন এই এলাকায়। তার পর থেকেই এই জায়গার নাম ‘হাতিবাগান’ হয়।

দ্বিতীয় কারণটি খুবই সাধারণ। কেউ বলে এক ধনী ব্যক্তি, যাঁর পদবি ছিল হাতি, তিনি বাগানবাড়ি বানিয়েছিলেন এই এলাকায়। তার পর থেকেই এই জায়গার নাম ‘হাতিবাগান’ হয়।

প্রতীকী ছবি।

০৪ ২০
তবে এক সময় কলকাতার হাতিবাগানের পরিচয় ছিল কলকাতার ‘সিনেমাপাড়া’ হিসেবে। রাধা, উত্তরা, শ্রী, মিত্রা ইত্যাদি প্রেক্ষাগৃহে তখন সপ্তাহে তিন দিন— বৃহস্পতি, শনি ও রবিবার জমজমাট হয়ে থাকত। কলকাতার বাবু থেকে শুরু করে গৃহবধূ— সকলেই তখন ভিড় জমাতেন এই এলাকায়।

তবে এক সময় কলকাতার হাতিবাগানের পরিচয় ছিল কলকাতার ‘সিনেমাপাড়া’ হিসেবে। রাধা, উত্তরা, শ্রী, মিত্রা ইত্যাদি প্রেক্ষাগৃহে তখন সপ্তাহে তিন দিন— বৃহস্পতি, শনি ও রবিবার জমজমাট হয়ে থাকত। কলকাতার বাবু থেকে শুরু করে গৃহবধূ— সকলেই তখন ভিড় জমাতেন এই এলাকায়।

ছবি সংগৃহীত।

০৫ ২০
কিন্তু সাম্প্রতিক কালে মাল্টিপ্লেক্সের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকার প্রতিটি সিঙ্গল স্ক্রিন প্রেক্ষাগৃহ একে একে বন্ধ হয়ে যায়। একমাত্র মিনার ও স্টার ছাড়া আর বাকি প্রেক্ষাগৃহ এখন স্মৃতিচিহ্ন। মাল্টিপ্লেক্সের যুগে উত্তর কলকাতার বিখ্যাত সিনেমা পাড়ার ঐতিহ্য এক টুকরো খড়ের মতো বাঁচিয়ে রেখেছে মিনার এবং ষ্টার।

কিন্তু সাম্প্রতিক কালে মাল্টিপ্লেক্সের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকার প্রতিটি সিঙ্গল স্ক্রিন প্রেক্ষাগৃহ একে একে বন্ধ হয়ে যায়। একমাত্র মিনার ও স্টার ছাড়া আর বাকি প্রেক্ষাগৃহ এখন স্মৃতিচিহ্ন। মাল্টিপ্লেক্সের যুগে উত্তর কলকাতার বিখ্যাত সিনেমা পাড়ার ঐতিহ্য এক টুকরো খড়ের মতো বাঁচিয়ে রেখেছে মিনার এবং ষ্টার।

০৬ ২০
১৮৮৩ সালে জামশেদজি ফ্রামজি মদন নামে এক পার্সি বণিক থিয়েটার বিষয়ে অভিজ্ঞতা নিয়ে নিয়ে উত্তর কলকাতার হাতিবাগান এলাকায় ব্যবসা শুরু করবেন বলে ‘কর্নওয়ালিস’ এবং ‘ক্রাউন’ নামে দু’টি থিয়েটার হল নির্মাণ করেন।

১৮৮৩ সালে জামশেদজি ফ্রামজি মদন নামে এক পার্সি বণিক থিয়েটার বিষয়ে অভিজ্ঞতা নিয়ে নিয়ে উত্তর কলকাতার হাতিবাগান এলাকায় ব্যবসা শুরু করবেন বলে ‘কর্নওয়ালিস’ এবং ‘ক্রাউন’ নামে দু’টি থিয়েটার হল নির্মাণ করেন।

০৭ ২০
পরে ১৯৩৫ সালে ‘কর্নওয়ালিস’-এর নাম বদলে হয়ে যায় ‘উত্তরা’ (বাঁ দিকে)। আর ‘ক্রাউন’-এর নাম বদলে হয়ে যায় ‘শ্রী’ (ডান দিকে)। উত্তরা ছিল হাতিবাগান এলাকার প্রথম সিনেমা হল।

পরে ১৯৩৫ সালে ‘কর্নওয়ালিস’-এর নাম বদলে হয়ে যায় ‘উত্তরা’ (বাঁ দিকে)। আর ‘ক্রাউন’-এর নাম বদলে হয়ে যায় ‘শ্রী’ (ডান দিকে)। উত্তরা ছিল হাতিবাগান এলাকার প্রথম সিনেমা হল।

০৮ ২০
১৯১৯ সালে রুস্তমজি ধোতিওয়ালা পরিচালিত সাদা-কালো নির্বাক কাহিনিচিত্র বা ফিচার ফিল্ম ‘বিল্বমঙ্গল’ মুক্তি পায়। সেই শুরু, তার পর উত্তরার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় এই এলাকায় একে একে আরও সিনেমা হল তৈরি করতে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন অনেকে।

১৯১৯ সালে রুস্তমজি ধোতিওয়ালা পরিচালিত সাদা-কালো নির্বাক কাহিনিচিত্র বা ফিচার ফিল্ম ‘বিল্বমঙ্গল’ মুক্তি পায়। সেই শুরু, তার পর উত্তরার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় এই এলাকায় একে একে আরও সিনেমা হল তৈরি করতে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন অনেকে।

ছবি সংগৃহীত।

০৯ ২০
প্রায় ৮৫ বছর ধরে সিনেমাপ্রেমীদের মন যুগিয়ে চলার পর ৩১ অক্টোবর ২০০০ সালে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায় এক সময়ের বিখ্যাত এই সব সিনেমা হলের। নেপথ্যে মাল্টিপ্লেক্সের জন্ম। সে বছরে মুক্তি পাওয়া ছবি ‘খওফ’ ছিল উত্তরায় শেষ প্রদর্শিত ছবি। বর্তমানে এই হল ‘উত্তরা মার্কেট’ হয়ে গিয়েছে।

প্রায় ৮৫ বছর ধরে সিনেমাপ্রেমীদের মন যুগিয়ে চলার পর ৩১ অক্টোবর ২০০০ সালে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায় এক সময়ের বিখ্যাত এই সব সিনেমা হলের। নেপথ্যে মাল্টিপ্লেক্সের জন্ম। সে বছরে মুক্তি পাওয়া ছবি ‘খওফ’ ছিল উত্তরায় শেষ প্রদর্শিত ছবি। বর্তমানে এই হল ‘উত্তরা মার্কেট’ হয়ে গিয়েছে।

১০ ২০
১৯৩১ সালে ২৫ এপ্রিলে অমর চৌধুরী (বাঁ দিকে) পরিচালিত বাংলা ভাষার প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘জামাইষষ্ঠী’-র মুক্তি দিয়ে পথচলা শুরু হয় শ্রী-র। তার পর উত্তরার মতোই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই সিনেমা হল। আবার উত্তরার মতো ৩১ অক্টোবর বন্ধ হয়ে যায় শ্রী। শেষ ছবি ছিল হরনাথ চক্রবর্তী পরিচালিত, প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির ‘আশ্রয়’।এখন এই জায়গার নাম হয়ে গিয়েছে ‘শ্রী মার্কেট’ (ডান দিকে)।

১৯৩১ সালে ২৫ এপ্রিলে অমর চৌধুরী (বাঁ দিকে) পরিচালিত বাংলা ভাষার প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘জামাইষষ্ঠী’-র মুক্তি দিয়ে পথচলা শুরু হয় শ্রী-র। তার পর উত্তরার মতোই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই সিনেমা হল। আবার উত্তরার মতো ৩১ অক্টোবর বন্ধ হয়ে যায় শ্রী। শেষ ছবি ছিল হরনাথ চক্রবর্তী পরিচালিত, প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির ‘আশ্রয়’।এখন এই জায়গার নাম হয়ে গিয়েছে ‘শ্রী মার্কেট’ (ডান দিকে)।

১১ ২০
সেই সময়ে ‘সিনেমাপাড়া’-র বিলাসবহুল সিনেমা হল ছিল ‘রূপবাণী’। ১৯৩১ সালে ১৯ ডিসেম্বর অনাদি বসুর অরোরা ফিল্ম কোম্পানি এই হল নির্মাণ করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নটীর পূজা’ ছবিটি এখানে মুক্তি পায়। এমনকি ‘রূপবাণী’ নামটাও নাকি কবিগুরুরই দেওয়া ছিল।

সেই সময়ে ‘সিনেমাপাড়া’-র বিলাসবহুল সিনেমা হল ছিল ‘রূপবাণী’। ১৯৩১ সালে ১৯ ডিসেম্বর অনাদি বসুর অরোরা ফিল্ম কোম্পানি এই হল নির্মাণ করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নটীর পূজা’ ছবিটি এখানে মুক্তি পায়। এমনকি ‘রূপবাণী’ নামটাও নাকি কবিগুরুরই দেওয়া ছিল।

১২ ২০
‘বিলাসবহুল’ বলার কারণ হল, তখনকার দিনে রূপবাণী ছিল শীততাপ নিয়ন্ত্রিত, দর্শকদের প্রবেশ ও নির্গমনের জন্য ছিল তিনটি লবি, গাড়ি পার্ক করানোর জন্য আলাদা জায়গা, সুসজ্জিত একটি বাগান এবং মহিলাদের জন্য বিশ্রামগৃহ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জৌলুস হারিয়ে অবশেষে মাল্টিপ্লেক্সের বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে রণে ভঙ্গ দেয় সিঙ্গল স্ক্রিন হল রূপবাণী।

‘বিলাসবহুল’ বলার কারণ হল, তখনকার দিনে রূপবাণী ছিল শীততাপ নিয়ন্ত্রিত, দর্শকদের প্রবেশ ও নির্গমনের জন্য ছিল তিনটি লবি, গাড়ি পার্ক করানোর জন্য আলাদা জায়গা, সুসজ্জিত একটি বাগান এবং মহিলাদের জন্য বিশ্রামগৃহ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জৌলুস হারিয়ে অবশেষে মাল্টিপ্লেক্সের বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে রণে ভঙ্গ দেয় সিঙ্গল স্ক্রিন হল রূপবাণী।

১৩ ২০
১৯৩১ সালে বিএন সরকারের হাত ধরে পথ চলা শুরু হয় হাতিবাগানের আরও একটি সিঙ্গল স্ক্রিন হলের, যার নাম রাখা হয় ‘চিত্রা’। নিউ থিয়েটার্স স্টুডিয়োর এই হলের উদ্বোধন করেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। সেই বছরই মুক্তি পাওয়া প্রেমাঙ্কুর আতর্থী পরিচালিত বাংলা সবাক ছবি ‘দেনা পাওনা’-র স্ক্রিনিং হয়েছিল এই সিনেমা হলে।

১৯৩১ সালে বিএন সরকারের হাত ধরে পথ চলা শুরু হয় হাতিবাগানের আরও একটি সিঙ্গল স্ক্রিন হলের, যার নাম রাখা হয় ‘চিত্রা’। নিউ থিয়েটার্স স্টুডিয়োর এই হলের উদ্বোধন করেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। সেই বছরই মুক্তি পাওয়া প্রেমাঙ্কুর আতর্থী পরিচালিত বাংলা সবাক ছবি ‘দেনা পাওনা’-র স্ক্রিনিং হয়েছিল এই সিনেমা হলে।

১৪ ২০
১৯৬৩ সালের ৫ এপ্রিল চিত্রা-র নতুন মালিক হন হেমন্তকুমার মিত্র, ফলে চিত্রার নাম বদলে হয় ‘মিত্রা’। প্রায় নয় দশক ধরে চলার পরে অবশেষে ২০১৯ সালে রোহিত শেট্টি পরিচালিত এবং রণবীর সিংহ অভিনীত ছবি ‘সিম্বা’ ছিল এই হলের শেষ ছবি। বর্তমানে শপিং মল হয়ে গিয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই সিনেমা হল।

১৯৬৩ সালের ৫ এপ্রিল চিত্রা-র নতুন মালিক হন হেমন্তকুমার মিত্র, ফলে চিত্রার নাম বদলে হয় ‘মিত্রা’। প্রায় নয় দশক ধরে চলার পরে অবশেষে ২০১৯ সালে রোহিত শেট্টি পরিচালিত এবং রণবীর সিংহ অভিনীত ছবি ‘সিম্বা’ ছিল এই হলের শেষ ছবি। বর্তমানে শপিং মল হয়ে গিয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই সিনেমা হল।

১৫ ২০
উত্তর কলকাতার বিধান সরণীর আরও একটি সিনেমা হল ছিল ‘রাধা’। ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই হলের তৎকালীন মালিক স্বর্গীয় বলাইচাঁদ বিশ্বাস শুধুমাত্র বাংলা ছবি দেখানোর নিয়ম করেছিলেন। বাংলা ছবি ‘অন্নপূর্ণার মন্দির’-এর মুক্তি দিয়ে পথচলা শুরু হয় এই সিনেমা হলের। পরবর্তী কালে দর্শকসংখ্যা দিন দিন কমতে থাকলে অবশেষে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায় এই হলের।

উত্তর কলকাতার বিধান সরণীর আরও একটি সিনেমা হল ছিল ‘রাধা’। ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই হলের তৎকালীন মালিক স্বর্গীয় বলাইচাঁদ বিশ্বাস শুধুমাত্র বাংলা ছবি দেখানোর নিয়ম করেছিলেন। বাংলা ছবি ‘অন্নপূর্ণার মন্দির’-এর মুক্তি দিয়ে পথচলা শুরু হয় এই সিনেমা হলের। পরবর্তী কালে দর্শকসংখ্যা দিন দিন কমতে থাকলে অবশেষে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায় এই হলের।

১৬ ২০
হাতিবাগানের এই সিনেমা হলে তখন যেমন মানুষের ভিড় হত, এখনও তেমনই ভিড় হয়। শুধু তফাত একটাই। আগে এখানে মানুষ সিনেমার টিকিটের জন্য লাইন দিত, এখন জামাকাপড় কেনার ভিড়। তার কারণ, এখন এই জায়গায় কেবলই বড় বড় বিপণি।

হাতিবাগানের এই সিনেমা হলে তখন যেমন মানুষের ভিড় হত, এখনও তেমনই ভিড় হয়। শুধু তফাত একটাই। আগে এখানে মানুষ সিনেমার টিকিটের জন্য লাইন দিত, এখন জামাকাপড় কেনার ভিড়। তার কারণ, এখন এই জায়গায় কেবলই বড় বড় বিপণি।

১৭ ২০
একটা সময় ছিল যখন কোনও সংলাপ ছাড়াই দর্শকদের হাসাতে হাসাতে পেটে খিল ধরিয়ে দিত চার্লি চ্যাপলিনের প্রায় প্রতিটি ছবি। ১৯৩১ সালে মুক্তি পায় তেমনই একটি আমেরিকান ছবি ‘সিটি লাইটস’। আর এই ছবি দেখানো হয়েছিল হাতিবাগানের বিধান সরণীর আরও একটি ঐতিহ্যশালী সিনেমা হল ‘দর্পণা’য়। আর এই ছবি দেখতে হলের বাইরে উপচে পড়েছিল ভিড়। রাজ কপূর অভিনীত বাংলা ছবি ‘একদিন রাত্রে’-র স্ক্রিনিং হয়েছিল দর্পণায়। বাকি হলগুলির মতো এই প্রেক্ষাগৃহটিও একদিন বন্ধ হয়ে যায়। সিনেমা হলটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

একটা সময় ছিল যখন কোনও সংলাপ ছাড়াই দর্শকদের হাসাতে হাসাতে পেটে খিল ধরিয়ে দিত চার্লি চ্যাপলিনের প্রায় প্রতিটি ছবি। ১৯৩১ সালে মুক্তি পায় তেমনই একটি আমেরিকান ছবি ‘সিটি লাইটস’। আর এই ছবি দেখানো হয়েছিল হাতিবাগানের বিধান সরণীর আরও একটি ঐতিহ্যশালী সিনেমা হল ‘দর্পণা’য়। আর এই ছবি দেখতে হলের বাইরে উপচে পড়েছিল ভিড়। রাজ কপূর অভিনীত বাংলা ছবি ‘একদিন রাত্রে’-র স্ক্রিনিং হয়েছিল দর্পণায়। বাকি হলগুলির মতো এই প্রেক্ষাগৃহটিও একদিন বন্ধ হয়ে যায়। সিনেমা হলটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

১৮ ২০
কাছেই ফড়িয়াপুকুর এলাকায় আরও একটি সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল ছিল ‘টকি শো হাউস’। ১৯৩০ সালে দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই হল। তৎকালীন হাতিবাগান এলাকায় বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় ছবি দেখতে হলে সাধারণ মানুষ ভিড় করত ‘টকি শো হাউস’-এ। বাংলা ছাড়াও হিন্দি, ইংরেজি ছবিও দেখানো হত এখানে।

কাছেই ফড়িয়াপুকুর এলাকায় আরও একটি সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল ছিল ‘টকি শো হাউস’। ১৯৩০ সালে দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই হল। তৎকালীন হাতিবাগান এলাকায় বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় ছবি দেখতে হলে সাধারণ মানুষ ভিড় করত ‘টকি শো হাউস’-এ। বাংলা ছাড়াও হিন্দি, ইংরেজি ছবিও দেখানো হত এখানে।

১৯ ২০
১৯২৮ সালে উইলিয়াম নাই পরিচালিত ছবি ‘অ্যাক্রস টু সিঙ্গাপুর’ মুক্তি পায়। তার ঠিক দু’বছর পর এই ছবি দিয়ে পথচলা শুরু হয় ‘টকি শো হাউস’-এর। পরবর্তী কালে মাল্টিপ্লেক্সের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে সিঙ্গল স্ক্রিন থেকে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কমতে থাকলে প্রায় নয় দশক ধরে পরিষেবা দেওয়ার পর ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায় এই হল।

১৯২৮ সালে উইলিয়াম নাই পরিচালিত ছবি ‘অ্যাক্রস টু সিঙ্গাপুর’ মুক্তি পায়। তার ঠিক দু’বছর পর এই ছবি দিয়ে পথচলা শুরু হয় ‘টকি শো হাউস’-এর। পরবর্তী কালে মাল্টিপ্লেক্সের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে সিঙ্গল স্ক্রিন থেকে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কমতে থাকলে প্রায় নয় দশক ধরে পরিষেবা দেওয়ার পর ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায় এই হল।

২০ ২০
‘সিনেমাপাড়া’-র অন্তর্ভুক্ত ছিল ‘খন্না’, ‘বিধুশ্রী’ ও ‘পূর্ণশ্রী’ নামে তিনটি সিনেমা হল। বাকি হলগুলির মতো এই তিনটি সিনেমা হলও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এক সময়কার বিখ্যাত ‘খন্না’ সিনেমা হল বর্তমানে মানুষের স্মৃতিতে একটি বাস স্টপের নাম হয়ে রয়ে গিয়েছে।

‘সিনেমাপাড়া’-র অন্তর্ভুক্ত ছিল ‘খন্না’, ‘বিধুশ্রী’ ও ‘পূর্ণশ্রী’ নামে তিনটি সিনেমা হল। বাকি হলগুলির মতো এই তিনটি সিনেমা হলও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এক সময়কার বিখ্যাত ‘খন্না’ সিনেমা হল বর্তমানে মানুষের স্মৃতিতে একটি বাস স্টপের নাম হয়ে রয়ে গিয়েছে।

এই প্রতিবেদনের অধিকাংশ ছবি গোপাল পাল এবং রনি মুখোপাধ্যায়ের তোলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE