New city to reduce pressure on Beijing, after 6 years crores spent but it is still a construction site dgtl
Xiong’an City
বেজিংয়ের চাপ কমাতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে স্বপ্ননগরী! ছ’বছর পরেও কেন ‘ভূতুড়ে’?
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, জিয়োংয়ান তৈরির ধীরগতিই প্রমাণ করে, চিনের অর্থনীতি ভারসাম্য হারাচ্ছে। আর তা লুকিয়ে রাখতেই নাকি ‘শ্রেষ্ঠ’ হওয়ার বুলি আওড়ায় চিন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বেজিংশেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৩ ০৯:০৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
বেজিংকে ‘আরাম’ দিতে চাইছে চিনের শি জিংপিং সরকার। আর সেই কারণে নতুন এক অত্যাধুনিক শহর বানানোর কাজে ছ’বছর আগেই হাত লাগিয়েছিল চিন। কিন্তু ছ’বছর পেরিয়েও এখনও ইট, কাঠ, পাথরে ভর্তি নির্মাণস্থল হয়েই রয়ে গিয়েছে চিনের ‘স্বপ্ননগরী’ জিয়োংয়ান।
০২১৯
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, জিয়োংয়ান তৈরির ধীরগতিই প্রমাণ করে, চিনের অর্থনীতি ভারসাম্য হারাচ্ছে। আর তা লুকিয়ে রাখতেই নাকি ‘শ্রেষ্ঠ’ হওয়ার বুলি আওড়ায় চিন।
০৩১৯
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাস থেকেই নাকি জিয়োংয়ান তৈরিতে বিলম্ব হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর তার পরই নির্মীয়মাণ শহর পরিদর্শনে যান খোদ প্রেসিডেন্ট শি।
০৪১৯
শি-এর সঙ্গে জিয়োংয়ান সফরে গিয়েছিলেন চিনের পলিটব্যুরোর স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য, ডিং জুয়েশিয়াং, লি কিয়াং এবং সাই কুই।
০৫১৯
জিয়োংয়ান প্রকল্পের নির্মাণ সরাসরি চিনা সরকারের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং চিনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। আর সে কারণেই নাকি তড়িধড়ি জিয়োংয়ান যান শি।
০৬১৯
চিনা সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, নির্মীয়মাণ শহরের একাংশ ইতিমধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কিন্তু জিয়োংয়ান পরিদর্শনের পর সবাইকে অবাক করে শি দাবি করেন, শহর নির্মাণের কাজ একদম সঠিক লয়ে এগোচ্ছে।
০৭১৯
জিয়োংয়ান থেকে ঘুরে এসে শি বলেন, ‘‘জিয়োংয়ান শহর নির্মাণ একটি বড় পরিকল্পনা। সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে। অধৈর্য্য হলে চলবে না। সঠিক ফল পেতে আমাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”
০৮১৯
জিয়োংয়ান তৈরির ধারণা শি-এর মস্তিষ্কপ্রসূত। ২০১৭ সালে এই শহর নির্মাণ শুরু হয়। শি-র ইচ্ছা, এই শহরকে শেনজেন বা সাংহাইয়ের থেকেও অত্যাধুনিক শহরে পরিণত করা।
০৯১৯
হেবেই প্রদেশের বাওডিং এলাকায় বেজিং থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে তৈরি হচ্ছে জিয়োংয়ান। ১৭৭০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে তৈরি এই শহর ভবিষ্যতে চিনের নতুন অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসাবে কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
১০১৯
সরকারের তরফে এই শহর তৈরির কথা জানানোর পর এ-ও জানানো হয়েছিল, এই শহর এতটাই উন্নত হবে যে, সেখানে চালকবিহীন বৈদ্যুতিক বাস থাকবে। থাকবে বড় বড় অত্যাধুনিক ইমারত, রাস্তা, শপিং মল।
১১১৯
সে দেশের সরকারি সূত্রে খবর, শি চান জিয়োংয়ানকে সত্যিকারের ডিজিটাল নগরীতে পরিণত করতে। যে শহরের প্রতিটি কোণে সেন্সর এবং ট্র্যাফিক নিরীক্ষণের জন্য রোবট থাকবে।
১২১৯
তবে এই শহর তৈরির নেপথ্যে মূল যুক্তি ছিল, ২০৩৫ সালের মধ্যে সরকারের অতিরিক্ত দফতরগুলি বেজিং থেকে জিয়োংয়ানে স্থানান্তরিত করে বেজিংয়ের যানজটের সমস্যা দূর করা।
১৩১৯
পাশাপাশি শি নাকি এ-ও চান যে, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি তাঁদের নতুন অফিস পার্ল রিভার ডেল্টার বদলে জিয়োংয়ান তৈরি করুক। ফলে পার্ল রিভার ডেল্টার উপরও চাপ কমবে।
১৪১৯
তবে ছ’বছরে শহর তৈরির কাজ সে ভাবে এগোয়নি। ২০১৯ সাল থেকেই এই শহর নির্মাণের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শি-র ‘স্বপ্ন প্রকল্প’ নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে সাধারণের মনে।
১৫১৯
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, জিয়োংয়ান শহরে রাস্তাগুলি পরস্পরের সঙ্গে এখনও সংযুক্ত করা হয়নি। এখনও শহরটিকে প্রাণহীন বলেই মনে হয়। রাতের অন্ধকারে এই শহর ‘ভূতুড়ে’ লাগে বলেও অনেকের দাবি।
১৬১৯
চিনের নব নির্মীয়মাণ শহর তৈরিতে টাকা ঢেলেছে চিনের নামীদামি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। সেই টাকা আসা যেন বন্ধ না হয়, সেই কারণেই জিনপিং সরকার এই প্রকল্প নিয়ে গড়িমসি করছে বলে মত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
১৭১৯
চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘স্বপ্ননগরী’ তৈরিতে ইতিমধ্যেই ৭৮০০ কোটি ডলার খরচ করেছে সে দেশের সরকার। তবে তা দিয়ে নাকি অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি।
১৮১৯
এলাকাটিকে বাসযোগ্য করে তোলার আগে আরও বহু হাজার কোটি খরচ করতে হবে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।
১৯১৯
চিনের সরকার জানিয়েছে, প্রথম থেকে জোরকদমে কাজ শুরু হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে জিয়োংয়ান তৈরির গতি থমকে গিয়েছে। তবে খুব শীঘ্রই বাকি কাজ শেষ হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে জিনপিং সরকার।