Rescue operation undergoing at the rat hole mine in Meghalaya dgtl
National News
১৯ দিন খনিগর্ভে ১৫ জন! কীভাবে চলছে রুদ্ধশ্বাস উদ্ধার অভিযান
মেঘালয়ের র্যাট হোল মাইনে ১৯ দিন ধরে আটকে ১৫ শ্রমিক। প্রায় সাড়ে তিনশো ফুট গভীর খনিগর্ভে চলছে উদ্ধারের মহাযজ্ঞ। ১০০ এনডিআরএফ কর্মীর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নৌসেনা, কোল ইন্ডিয়া। একসঙ্গে একাধিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে এনডিআরএফ, নৌসেনা বাহিনীকে। কী ভাবে চলছে সেই উদ্ধার কাজ?
সংবাদ সংস্থা
শিলংশেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
মেঘালয়ের র্যাট হোল মাইনে ১৯ দিন ধরে আটকে ১৫ শ্রমিক। প্রায় সাড়ে তিনশো ফুট গভীর খনিগর্ভে চলছে উদ্ধারের মহাযজ্ঞ। ১০০ এনডিআরএফ কর্মীর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নৌসেনা, কোল ইন্ডিয়া। একসঙ্গে একাধিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে এনডিআরএফ, নৌসেনা বাহিনীকে। কী ভাবে চলছে সেই উদ্ধার কাজ?
০২১৪
র্যাট হোল মাইন: পাহাড়ি এলাকার নীচে যেখানে কয়লা খনি আছে, সেখানে ঢোকার পদ্ধতি অনেকটা ইঁদুরের গর্তের মতো। সেই কারণেই একে ‘র্যাট হোল মাইন’ বলা হয়। প্রথমে পাহাড়ের গায়ে খাড়া গর্ত করা হয়। তার পর আড়াআড়ি ভাবে মাটি কেটে সুড়ঙ্গ বানিয়ে মূল কয়লার স্তরে ঢুকে কয়লা কাটা হয়।
০৩১৪
খনির মানচিত্র: স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে একটি মানচিত্র তৈরি করেছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। তাঁদের অনুমান, কসান খনিতে দুটি সমান্তরাল সুড়ঙ্গ রয়েছে। আড়াআড়ি সুড়ঙ্গের উচ্চতা পাঁচ ফুটের মতো।
০৪১৪
তলদেশে ডুবুরি: অবশেষে ১৯ দিন পর সোমবার সকালেই নৌসেনার এক ডুবুরি প্রথমবার খনির তলদেশে পৌঁছন। তিনি উপরে উঠে জানান, খনির তলদেশের ভুমিতে রয়েছে কাদা। দেওয়ালে কয়লার স্তর। শুধু জলের গভীরতাই প্রায় ২৫০ ফুট।
০৫১৪
কাটল পাম্প-সংকট: খাড়া গর্তটির এত নীচে পাম্পগুলি নামানো এবং সেখানে বসানোর মতো ব্যবস্থা করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল উদ্ধারকারীদের কাছে। প্রাথমিক সেই ধাক্কা কাটিয়ে কাজ শুরু করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
০৬১৪
কাটল পাম্প-সংকট: খাড়া গর্তটির এত নীচে পাম্পগুলি নামানো এবং সেখানে বসানোর মতো ব্যবস্থা করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল উদ্ধারকারীদের কাছে। প্রাথমিক সেই ধাক্কা কাটিয়ে কাজ শুরু করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
০৭১৪
রিমোট গাড়ি: সোমবারই প্রথম রিমোট কন্ট্রোল বা দূর নিয়ন্ত্রিত গাড়ির পরীক্ষামূলক ব্যবহার করেছে নৌসেনা। জলে-স্থলে সমান দক্ষ এই গাড়িগুলি। ভুমির সঙ্গে সমান্তরাল সুড়ঙ্গে পাঠিয়ে তার অবস্থান, উচ্চতা এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য জানা যাবে। ডুবুরিদের সঙ্গেও পাঠানো হবে এই যান। তাঁরা বিপদে পড়লে বোঝা যাবে ওই যানের মাধ্যমে।
০৮১৪
‘অযান্ত্রিক’: এত গভীরে উদ্ধারের অভিজ্ঞতা নৌসেনারও নেই। ফলে সেই ধরনের প্রযুক্তি এবং যন্ত্রপাতিও প্রায় নেই বললেই চলে। এছাড়া এত বড় পাম্প খনির গর্তে নামানো, এতগুলি ডিজেল পাম্প চললে তার ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট হতে পারে, তার থেকে মুক্তির উপায় কী, এসব বুঝতে এবং তার ব্যবস্থা করতেই সময় পার হয়ে যাচ্ছে।
০৯১৪
হড়পা বানে বিপদ: উদ্ধারকারীরা মনে করছেন, সংলগ্ন নদীতে হড়পা বানের জেরেই সুড়ঙ্গে জল জমে খনিমুখ বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ১৬ তারিখ সংলগ্ন নদীতে হড়পা বানের জেরে বন্ধ করে দিতে হয় উদ্ধারকাজ। ফের যে কোনও সময় হড়পা বানে বিপদ ডেকে আনতে পারে।
১০১৪
জল তুললেও বিপদের আঁচ: ওই এলাকায় কসানের মতো আরও অনেক বেআইনি খাদান রয়েছে। সেগুলিতেও রয়েছে বিপুল জলরাশি। কসানের জল তুলে ফেললে পাশের খনির দেওয়াল ফেটে অন্য কোনও খনির জলও ঢুকে পড়তে পারে। বা অন্য কোনও খনির সঙ্গে সুড়ঙ্গপথে যোগ রয়েছে কিনা তাও ভাবতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের।
১১১৪
ঘুটঘুটে অন্ধকার: নৌসেনার ডুবুরি খনির তলদেশে নেমে দেখে এসেছেন, কার্যত ঘুটঘুটে অন্ধকার। দৃশ্যমানতা খুবই কম। ভরসা শুধুই ডুবুরির বিশেষ পোশাকের মাথায় থাকা টর্চের মতো আলো। খনিমুখের যেখান থেকে জল শুরু হয়েছে, সেখানেও পর্যাপ্ত আলো নেই। আরও তীব্র হ্যালোজেন জ্বালানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
১২১৪
চূড়ান্ত প্রস্তুতি: শুরু থেকেই ঘাঁটি গেড়েছিল এনডিআরএফ-এর ১০০ জনের একটি দল। নেতৃত্বে রয়েছেন এনডিআরএফ-এর সহকারী কম্যান্ডান্ট সন্তোষকুমার সিংহ ও এবং খনি উদ্ধার বিশেষজ্ঞ যশবন্ত গিল। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ওডিশার দমকল বাহিনী, কোল ইন্ডিয়া এবং নৌবাহিনী। সোমবার চূড়ান্ত অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
১৩১৪
খনির জালে মেঘালয়: মেঘালয় পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড়ে কার্যত জালের মতো বিছিয়ে রয়েছে কয়লার স্তর এবং খনি। তার অধিকাংশই ‘র্যাট হোল মাইন’। এই পাহাড়ে অন্তত ৫০০০ এরকম খনি রয়েছে। কিন্তু নদী ও জলাশয়গুলিতে দূষণ ছড়ানোয় ২০১৪ সালে মেঘালয়ের খনিগুলি থেকে উত্তোলন বন্ধ করে দেয় সরকার।
১৪১৪
খাদানে নিত্য উত্তোলন: সরকারি ভাবে বন্ধ হলেও থামেনি বেআইনি ভাবে কয়লা তোলা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় প্রতিদিন নেমে পড়েন এই সব ‘মৃ্ত্যুকূপে’। শাবল, গাঁইতি দিয়ে যে কয়লা তোলা হয়, যা বিক্রি করে অনেকের সন্ধান হয় রুজি-রুটির।