Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
The Great Blue Hole

The Great Blue Hole: সার সার মৃতদেহ সমুদ্রের ৪০০ ফুট গভীরে! থমকে গেলেন ডুবুরিরা

পৃথিবীর প্রথম পাঁচটি ‘ডাইভিং সাইট’-এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘দ্য গ্রেট ব্লু হোল’।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২২ ১২:৫৪
Share: Save:
০১ ১৪
পৃথিবীর প্রথম পাঁচটি ‘ডাইভিং সাইট’-এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দ্য গ্রেট ব্লু হোল’। মধ্য আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলের বেলিজ সিটি এলাকায় এই পর্যটনস্থলটি স্কুবা ডাইভারদের প্রিয় জায়গা। আয়নার মতো স্বচ্ছ জলের তলায় বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী, হাঙরের দেখা মেলে ইউনেস্কো স্বীকৃত এই এলাকায়।

পৃথিবীর প্রথম পাঁচটি ‘ডাইভিং সাইট’-এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দ্য গ্রেট ব্লু হোল’। মধ্য আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলের বেলিজ সিটি এলাকায় এই পর্যটনস্থলটি স্কুবা ডাইভারদের প্রিয় জায়গা। আয়নার মতো স্বচ্ছ জলের তলায় বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী, হাঙরের দেখা মেলে ইউনেস্কো স্বীকৃত এই এলাকায়।

০২ ১৪
১৯৭১ সালে সমুদ্রের মাঝে এই জায়গাটি প্রথম জ্যাকুয়েস কস্টিউ নামে এক ব্যক্তির নজরে আসে। সমুদ্রের গাঢ় নীল জলের মধ্যে প্রবাল-শৈবাল দিয়ে ঘেরা এই জায়গাটি দেখতে অনেকটা গর্তের মতো। দেখে মনে হয় যেন সমুদ্রের মাঝে থাকা একটি চোখ।

১৯৭১ সালে সমুদ্রের মাঝে এই জায়গাটি প্রথম জ্যাকুয়েস কস্টিউ নামে এক ব্যক্তির নজরে আসে। সমুদ্রের গাঢ় নীল জলের মধ্যে প্রবাল-শৈবাল দিয়ে ঘেরা এই জায়গাটি দেখতে অনেকটা গর্তের মতো। দেখে মনে হয় যেন সমুদ্রের মাঝে থাকা একটি চোখ।

০৩ ১৪
সমুদ্রের মাঝে এর সন্ধান পাওয়ার পর ডুবুরিরা অজানা রহস্যের খোঁজে ব্লু হোলের গভীরে তল্লাশিতে নামে। কিন্তু জলের গভীরে ডুব দিলেও একজন ডুবুরিও ফিরে আসেননি। ব্লু হোলের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া ডুবুরিরাও যেন এই রহস্যের অংশ হয়ে উঠেছিলেন।

সমুদ্রের মাঝে এর সন্ধান পাওয়ার পর ডুবুরিরা অজানা রহস্যের খোঁজে ব্লু হোলের গভীরে তল্লাশিতে নামে। কিন্তু জলের গভীরে ডুব দিলেও একজন ডুবুরিও ফিরে আসেননি। ব্লু হোলের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া ডুবুরিরাও যেন এই রহস্যের অংশ হয়ে উঠেছিলেন।

০৪ ১৪
২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে জ্যাকুয়েসের প্রপৌত্র ফ্যাবিয়েন কস্টিউ আবার এই অঞ্চলে অভিযান চালান। তাঁর সঙ্গ দেন ধনকুবের রিচার্ড ব্রান্সন এবং এরিকা বার্জম্যান।

২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে জ্যাকুয়েসের প্রপৌত্র ফ্যাবিয়েন কস্টিউ আবার এই অঞ্চলে অভিযান চালান। তাঁর সঙ্গ দেন ধনকুবের রিচার্ড ব্রান্সন এবং এরিকা বার্জম্যান।

০৫ ১৪
তাঁদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে গবেষকরা একটি ‘মিনি ডকুমেন্টারি’ তৈরি করেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা ব্লু হোলের একটি ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেন। এই তথ্যগুলি গবেষকদের কাছে এক নতুন আলোর দিশা তুলে ধরেছে।

তাঁদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে গবেষকরা একটি ‘মিনি ডকুমেন্টারি’ তৈরি করেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা ব্লু হোলের একটি ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেন। এই তথ্যগুলি গবেষকদের কাছে এক নতুন আলোর দিশা তুলে ধরেছে।

০৬ ১৪
বার্জম্যান এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ৪০০ ফুট গভীর এই গর্তে প্রবেশ করে তাঁরা বুঝতে পারেন সেখানে অক্সিজেনের লেশমাত্র নেই। প্রায় ২৯০ ফুট গভীরে অক্সিজেনের পরিবর্তে জলের মধ্যে হাইড্রোজেন সালফাইডের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।

বার্জম্যান এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ৪০০ ফুট গভীর এই গর্তে প্রবেশ করে তাঁরা বুঝতে পারেন সেখানে অক্সিজেনের লেশমাত্র নেই। প্রায় ২৯০ ফুট গভীরে অক্সিজেনের পরিবর্তে জলের মধ্যে হাইড্রোজেন সালফাইডের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।

০৭ ১৪
বার্জম্যান আরও জানান ২৯০ ফুটের পর থেকে জলের যত গভীরে যাওয়া গিয়েছে ততই অন্ধকার বেড়েছে। পচা ডিমের দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসটি জলের সঙ্গে এমনভাবে মিশে রয়েছে যা জলের তলায় একটি পুরু আস্তরণ তৈরি করেছে।

বার্জম্যান আরও জানান ২৯০ ফুটের পর থেকে জলের যত গভীরে যাওয়া গিয়েছে ততই অন্ধকার বেড়েছে। পচা ডিমের দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসটি জলের সঙ্গে এমনভাবে মিশে রয়েছে যা জলের তলায় একটি পুরু আস্তরণ তৈরি করেছে।

০৮ ১৪
এই আস্তরণ ভেদ করে জলের তলায় যেতেই ডুবুরিরা দেখেন, জলের তলায় অসংখ্য গুহা। কিন্তু বেশির ভাগ গুহার প্রবেশপথ বন্ধ। অবশেষে, ডুবুরির দল একটি গুহা খুঁজে পান যার মুখ খোলা। খুব সহজেই গুহার মুখ গলে ভিতরে গিয়েছিলেন বার্জম্যানরা।

এই আস্তরণ ভেদ করে জলের তলায় যেতেই ডুবুরিরা দেখেন, জলের তলায় অসংখ্য গুহা। কিন্তু বেশির ভাগ গুহার প্রবেশপথ বন্ধ। অবশেষে, ডুবুরির দল একটি গুহা খুঁজে পান যার মুখ খোলা। খুব সহজেই গুহার মুখ গলে ভিতরে গিয়েছিলেন বার্জম্যানরা।

০৯ ১৪
কিন্তু গুহার ভিতর যা দেখলেন, তা দেখে রীতিমতো চমকে যান তাঁরা। গুহাগুলি স্ট্যালাগটাইট পাথর দিয়ে তৈরি। চুনাপাথর ও অন্য খনিজের সঙ্গে গুহার ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়া জল মিশে কেলাস পদ্ধতিতে এই পাথর তৈরি হয়। কিন্তু জলের তলায় যে গুহার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেই গুহার ছাদ থেকে আবার জল পড়বে কী করে?

কিন্তু গুহার ভিতর যা দেখলেন, তা দেখে রীতিমতো চমকে যান তাঁরা। গুহাগুলি স্ট্যালাগটাইট পাথর দিয়ে তৈরি। চুনাপাথর ও অন্য খনিজের সঙ্গে গুহার ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়া জল মিশে কেলাস পদ্ধতিতে এই পাথর তৈরি হয়। কিন্তু জলের তলায় যে গুহার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেই গুহার ছাদ থেকে আবার জল পড়বে কী করে?

১০ ১৪
গবেষণা করে জানা যায়, এই এলাকাটি এক সময় জলের উপরে ছিল। বহু বছর ধরে তৈরি হওয়া এই গুহার চারদিকে জলস্তর বেড়ে যাওয়ার কারণে সেগুলি জলের তলায় ডুবে যায়। জলের তলায় কিছু শাঁখ এবং ঝিনুকের খোঁজ মেলে যা সচরাচর দেখা যায় না।

গবেষণা করে জানা যায়, এই এলাকাটি এক সময় জলের উপরে ছিল। বহু বছর ধরে তৈরি হওয়া এই গুহার চারদিকে জলস্তর বেড়ে যাওয়ার কারণে সেগুলি জলের তলায় ডুবে যায়। জলের তলায় কিছু শাঁখ এবং ঝিনুকের খোঁজ মেলে যা সচরাচর দেখা যায় না।

১১ ১৪
এই ধরনের অবাক করা দৃশ্যের সাক্ষী থাকার কৌতূহলেই তাঁরা গুহার আরও ভিতরের দিকে যেতে থাকেন। কিন্তু তাঁরা যে টর্চগুলি নিয়ে নীচে নেমেছিলেন, তাতে ব্যাটারির চার্জ খুব বেশি ছিল না। সেই কারণেই অন্ধকারের মধ্যেও বুঝেশুনে টর্চ জ্বালাতে হচ্ছিল তাঁদের।

এই ধরনের অবাক করা দৃশ্যের সাক্ষী থাকার কৌতূহলেই তাঁরা গুহার আরও ভিতরের দিকে যেতে থাকেন। কিন্তু তাঁরা যে টর্চগুলি নিয়ে নীচে নেমেছিলেন, তাতে ব্যাটারির চার্জ খুব বেশি ছিল না। সেই কারণেই অন্ধকারের মধ্যেও বুঝেশুনে টর্চ জ্বালাতে হচ্ছিল তাঁদের।

১২ ১৪
অন্ধকারে এগিয়ে যেতেই একটা ভারী জিনিসের সঙ্গে ধাক্কা খান বার্জম্যান। টর্চ জ্বালাতেই যা দেখলেন, তা দেখে নিজেদের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তাঁরা। জলের তলায় রয়েছে মৃতদেহের সারি।

অন্ধকারে এগিয়ে যেতেই একটা ভারী জিনিসের সঙ্গে ধাক্কা খান বার্জম্যান। টর্চ জ্বালাতেই যা দেখলেন, তা দেখে নিজেদের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তাঁরা। জলের তলায় রয়েছে মৃতদেহের সারি।

১৩ ১৪
যে ডুবুরিরা ব্লু হোলের গভীরে অভিযান চালাতে গিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন এই মৃতদেহগুলি তাঁদেরই। এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখার পর তাঁরা আর বেশিক্ষণ জলের তলায় থাকতে পারেননি।

যে ডুবুরিরা ব্লু হোলের গভীরে অভিযান চালাতে গিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন এই মৃতদেহগুলি তাঁদেরই। এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখার পর তাঁরা আর বেশিক্ষণ জলের তলায় থাকতে পারেননি।

১৪ ১৪
জলের উপরে উঠে আসতেই তাঁদের কাছ থেকে গবেষকরা তথ্য সংগ্রহ করেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে ব্লু হোল সম্পর্ককে ঘিরে অনেক অজানা রহস্যের সমাধান হয়। বার্জম্যানের মতে, যে ডুবুরিরা এত বছর ধরে নিরুদ্দেশ ছিলেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অবশেষে তাঁদের সম্বন্ধে জানতে পারলেন।এটাই তাঁর মনকে শান্তি দেয়।

জলের উপরে উঠে আসতেই তাঁদের কাছ থেকে গবেষকরা তথ্য সংগ্রহ করেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে ব্লু হোল সম্পর্ককে ঘিরে অনেক অজানা রহস্যের সমাধান হয়। বার্জম্যানের মতে, যে ডুবুরিরা এত বছর ধরে নিরুদ্দেশ ছিলেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অবশেষে তাঁদের সম্বন্ধে জানতে পারলেন।এটাই তাঁর মনকে শান্তি দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy