Murder of Shakereh Khaleeli shocked the whole country dgtl
Crime
উদ্দাম প্রেম, একাধিক বিয়ে… জীবন্ত পুঁতে দেওয়া হয় শাকিরাকে! চাদর খামচে ধরা অবস্থায় মেলে কঙ্কাল
চেন্নাইয়ে এক পারসি মুসলমান পরিবারে জন্ম শাকিরার। পরে তাঁরা সিঙ্গাপুরে চলে যান। দ্বিতীয় স্বামী তাঁকে খুন করেছিল। প্রথমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তার। কী ভাবে খুলল রহস্যের জট?
সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরুশেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
১৯৯৪ সালে শাকিরা খলিলি হত্যাকাণ্ডের খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসে। তার আগে প্রায় তিন বছর নিখোঁজ ছিলেন ৪৬ বছর বয়সি এই মহিলা। তাঁর খুনের বিবরণ শুনে রীতিমতো শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ।
০২১৫
দু’বার বিয়ে করেছিলেন শাকিরা। তাঁর দ্বিতীয় স্বামীই তাঁকে খুন করেছিল। আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রথমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় মুরলিমনোহর মিশ্রকে। পরে সেই সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
০৩১৫
১৯৯১ সালে শাকিরা নিখোঁজ হন। তাঁর কোনও খোঁজ পাচ্ছিলেন না তাঁর প্রথম পক্ষের সন্তানরা। দ্বিতীয় স্বামী মুরলিকে প্রশ্ন করেও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পুলিশ পরে জানতে পারে, ওই বছরই শাকিরাকে খুন করা হয়েছিল।
০৪১৫
১৯৪৫ সালে চেন্নাইয়ে এক পারসি মুসলমান পরিবারে জন্ম শাকিরার। পরে তাঁরা সিঙ্গাপুরে চলে যান। পরাধীন ভারতে মাইসুরু, জয়পুর এবং হায়দরাবাদের দেওয়ান ছিলেন শাকিরার দাদু মির্জা ইসমাইল।
০৫১৫
১৮ বছর বয়সে প্রথম বিয়ের পিঁড়িতে বসেন শাকিরা। তাঁর স্বামী আকবর মির্জা খলিলি ছিলেন সম্পর্কে শাকিরার তুতো ভাই। প্রেমের টানে ভাইয়ের গলাতেই মালা দেন শাকিরা। দীর্ঘ ১৯ বছর চুটিয়ে সংসার করেন তাঁরা।
০৬১৫
টেনিস খেলোয়াড় হিসাবে খ্যাতি ছিল শাকিরার প্রথম স্বামী আকবর মির্জার। তিনি ভারতীয় বনবিভাগে চাকরি করতেন। পরে ইরানে ভারতীয় দূত হিসাবে চলে যান। এর পরেই তাঁদের বিয়ে ভাঙে। শাকিরা-আকবরের চার সন্তান ছিল।
০৭১৫
১৯৮৪ সালে বিবাহবিচ্ছেদের দু’বছর পর ৮৬-র এপ্রিল মাসে মুরলিমনোহর মিশ্রকে বিয়ে করেন শাকিরা। যদিও তাঁদের পরিচয় ১৯৮২ থেকেই। স্বামী শ্রদ্ধানন্দ নামেও পরিচিত ছিল শাকিরার দ্বিতীয় স্বামী।
০৮১৫
শাকিরার সম্পত্তি, টাকা-পয়সা সব কিছুতেই অধিকার পেয়ে গিয়েছিল মুরলি। আগের পক্ষের সন্তানদের নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি লেগে থাকত, জানতে পারে পুলিশ।
০৯১৫
বিয়ের পাঁচ বছর পর, ১৯৯১ সালে শাকিরা হঠাৎ নিখোঁজ হন। মুরলির সঙ্গে কথা বলেও মায়ের কোনও খোঁজ পাচ্ছিলেন না শাকিরার মেয়েরা। ১৯৯২ সালে বেঙ্গালুরুর অশোক নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও শাকিরা কোথায়, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর দেয়নি মুরলি ওরফে স্বামী শ্রদ্ধানন্দ। সে জানায়, তার স্ত্রী কোথাও ছুটি কাটাতে গিয়েছে। কবে ফিরবে, তা সে জানে না।
১০১৫
১৯৯৪ সালে কর্নাটক পুলিশ শাকিরার কঙ্কাল উদ্ধার করে তারই বাড়ির উঠোন থেকে। সেখানে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯৯১ সালের ২৮ এপ্রিল শাকিরাকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়।
১১১৫
পুলিশ জানিয়েছে, আগে থেকে শাকিরার কবর খুঁড়ে রেখেছিল মুরলি। বাড়ির উঠোনে গভীর গর্ত খুঁড়ে তার মধ্যে রাখা হয়েছিল একটি বড়সড় বাক্স। সেই বাক্সে ছিল একটি মোটা চাদরও। পুলিশ যখন মাটি খুঁড়ে দেহাবশেষ উদ্ধার করে, দেখা যায়, শাকিরার কঙ্কাল খিমচে ধরে আছে সেই চাদরটি। এ ছাড়াও আরও কিছু তথ্য-প্রমাণ খতিয়ে দেখার পর পুলিশের অনুমান, জীবন্ত অবস্থায় পুঁতে দেওয়া হয়েছিল শাকিরাকে।।
১২১৫
খুনের কথা স্বীকার করে মুরলি। শাকিরার দেহ কবর থেকে বার করার ভিডিয়ো করা হয়েছিল, যে নজির খুনের তদন্তে ওই প্রথম। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় এই মামলাটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়।
১৩১৫
২০০৫ সালে কর্নাটকের নিম্ন আদালত শাকিরার খুনিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তাতে সায় দেয় হাই কোর্টও। কিন্তু পরে ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট ফাঁসির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় মুরলিকে।
১৪১৫
কর্নাটকের উচ্চ আদালত শাকিরা হত্যাকাণ্ডকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলে উল্লেখ করেছিল। বলা হয়েছিল, সমাজে তীব্র ভয়ের পরিবেশ করেছে এই হত্যাকাণ্ড। তাই এই অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তিই প্রাপ্য।
১৫১৫
শাকিরার খুনের মামলায় প্রথম ডিএনএ টেস্ট এবং মৃতদেহ কবর থেকে তোলার ভিডিয়ো আদালতে প্রমাণ হিসাবে গ্রাহ্য হয়েছিল। সে দিক থেকেও এই মামলাটি স্মরণীয় হয়ে আছে।