১৯৮৮ সালের ৮ মার্চ। পঞ্জাবের মেহসামপুরে এক অনুষ্ঠানে চলেছেন সস্ত্রীক অমর। এক জায়গায় গাড়ি এসে থামল। গাড়ি থেকে অমর নামার সময় মোটর বাইকে এসে কয়েক জন বন্দুকধারী দুষ্কৃতী তাঁদের ঘিরে ধরল। এর পর প্রকাশ্যেই তাঁদের লক্ষ্য করে চলল গুলি। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় অমরজ্যোৎ এবং তাঁর স্বামীর। সে সময় অমরজ্যোৎ চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
ঘটনার দায় জঙ্গিদের উপর চাপানো হয়। কিন্তু অনেকে মনে করেন, পঞ্জাবের অন্য গায়করা ষড়যন্ত্র করে অমর এবং তাঁর স্ত্রীকে খুন করিয়েছেন। ঘটনার জেরে বেশ কিছু এলাকায় কার্ফু জারি করা হয় এবং বেশ কিছু এলাকায় গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এই খুনের ঘটনায় আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ বা প্রশাসন। খুনি কারা, তা আজও রহস্য হিসেবেই রয়ে গিয়েছে। যদিও খুন হয়েছিল প্রকাশ্য দিবালোকে।
জেএনইউ-তে ভর্তি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে লিবারেশনের সংগঠন গড়ে তোলার পিছনে বড় হাত ছিল চন্দ্রশেখরের। তিন বছর পর পর ছাত্রভোটে জয় লাভ করেছিলেন। তার মধ্যে দু’বার সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৭ সালের ৩১ মার্চ সিবানে এক সভায় বক্তৃতা চলাকালীন গুলি করে হত্যা করা হয় চন্দ্রশেখরকে। অভিযোগের তির ছিল আরজেডি নেতা মহম্মদ শাহাবুদ্দিনের দিকে। কিন্তু তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর কারণ হিসেবে জনসাধারণের মধ্যে তাঁর প্রবল জনপ্রিয়তাকে দায়ী করা হয়। তাঁর মৃত্যুতে দেশের ছাত্র সমাজ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হলেও মূল আসামি আজও অধরা।
তাঁর নেতৃত্বে বেশ কিছু বড় আন্দোলন হয়েছিল। করের বিকেন্দ্রীকরণের জন্যও তিনি লড়াই করেছিলেন। তাঁর মতে, জনসাধারণের করের ৮০ শতাংশ যায় নেতা-মন্ত্রী এবং আমলাদের ভরণপোষণে এবং বাকি ২০ শতাংশ উন্নয়নের কাজ ব্যবহৃত হয়। ৯/১১-র মতো বিষয় নিয়েও তাঁর মত ছিল ‘বিতর্কিত’। ক্রমাগত সরকারের বিরুদ্ধ মতপোষণ এবং ক্ষমতাশালী ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁর অনেক শত্রু তৈরি হয়েছিল। ২০১১ সালের ৩০ মে, ছত্তিসগড়ের ভিলাইয়ে এক বক্তৃতা চলাকালীনই তিনি হৃদ্রোগ আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সবচেয়ে রহস্য, তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত পর্যন্ত করা হয়নি। মারা যাওয়ার পর তাঁর সারা শরীর নীল হয়ে গিয়েছিল। যা কি না বিষক্রিয়ার লক্ষণ। রাজীবের মৃত্যুর কারণ কী, হৃদ্রোগ না বিষক্রিয়া, তা আজও জানা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy