অদ্ভুত ভাবে গালার্দোর জীবন শুরুও হয়েছিল এমনই একটা ঘুপচি ঘর থেকে। অত্যন্ত গরিব ছিলেন বাবা-মা। যেখানে সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়াও ছিল প্রায় দুঃসাধ্য। গালার্দো সহানুভূতিকদের মত, এই অতি দারিদ্রই তাঁকে ভুল পথে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। কঠিন আর সঠিক পথের বদলে সহজ উত্তরণের ভুল পথ বেছে নিয়েছিলেন। তাঁদের মতে, গালার্দো আসলে পরিস্থিতির শিকার।
যদিও গালার্দো নিন্দকদের বক্তব্য, পরিস্থিতির শিকার হলেও একসময় প্রচণ্ড নৃশংস হয়ে উঠেছিলেন গালার্দো। তার জন্য পরিস্থিতি দায়ী হতে পারে না। ওয়েব সিরিজে তাঁকে সহানুভূতির আলোয় দেখানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু বাস্তবে গালার্দোর গোপন কথা জেনে যাওয়া এক সরকারি গোয়েন্দাকে অমানবিক অত্যাচার করে খুন করা হয়েছিল তাঁরই নির্দেশে। এই খুন থেকেই গালার্দোর জীবনের শেষের অধ্যায় লেখা শুরু হয়।
১৯৪৬ সালে উত্তর পশ্চিম মেক্সিকোর একটি খামারে জন্ম গালার্দোর। মাদক সম্রাট হয়ে একের পর এক আইন ভেঙেছেন গালার্দো। দুর্নীতিগ্রস্ত আইনরক্ষকদের হাতের পুতুল করে রেখেছিলেন দীর্ঘ দিন। অথচ গালার্দো তাঁর চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন আইনরক্ষক হিসেবেই। ১৭ বছর বয়সে মেক্সিকোর ফেডারেল জুডিসিয়াল পুলিশ এজেন্ট হিসেবে তিনি সরকারি কাজে যোগ দেন।
ওই বিভাগের অধিকাংশ পুলিশ কর্তাই ছিলেন দুর্নীতিগ্রস্ত। গালার্দো দ্রুত তাঁদের সংস্পর্শে আসেন। সিনালোয়ার গভর্নরের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ছিলেন তিনি। অন্ধকার জগতের সঙ্গে তাঁর পরিচয় করান আর এক দেহরক্ষী পেড্রো অ্যাভিলেস পেরেজ। কুখ্যাত মাদক পাচারকারী পেরেজ তাঁর হেরোইন এবং মারিজুয়ানা ব্যবসার দায়িত্ব দেন গালার্দোকে।
১৯৭৮ সালে পুলিশের গুলিতে পেরেজের মৃত্যু হলে তাঁর মাদক সাম্রাজ্যের মাথায় বসেন গালার্দো। তৈরি করেন মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক সাম্রাজ্য গুয়াডালাজারা কার্টেল। ‘গড ফাদার’ তকমাও পান। সেই শুরু। ১৯৮০ সালে, দু’বছরের মধ্যেই পেরেজের ব্যবসাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলেন গালার্দো। তাঁর ১৩৪৪ একর মারিজুয়ানো ফলানো জমিতে প্রতি বছর ৮০০ কোটি ডলারের উৎপাদন শুরু হয়।
অঘটন ঘটে ঠিক পাঁচ বছরের মাথায়। গালার্দোর ড্রাগ ব্যবসার খোঁজ পাওয়া এক সরকারি গোয়েন্দাকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। কিকি কামারেনা নামে ওই গোয়েন্দার খুলি, চোয়াল, নাক এমনকি গালের হাড়ও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। শ্বাসনালিও থেঁতলে গিয়েছিল। পাঁজরের প্রতিটা হাড় ছিল ভাঙা। আর মাথার ঠিক মাঝ বরাবর একটি গর্ত ছিল, যেটা গুলির নয় বলেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy